কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মার গাফিলতির কারণেই চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শুরুর পাঁচ-সাত দিন আগে কেন্দ্র সচিব বা তার প্রতিনিধি এবং ট্যাগ অফিসারের মাধ্যমে ট্রাংকে রক্ষিত প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের সঙ্গে প্রশ্নপত্রের চাহিদা সঠিকভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। কোনো গরমিল থাকলে সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে লিখিতভাবে জানাতেও বলা হয়।
‘...ইউএনও সেই কাজ না করে এক-দুই দিনের মধ্যে একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে প্রশ্নপত্র সর্টিং করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। একজন কর্মকর্তার পক্ষে হাজার হাজার প্রশ্নপত্র এক-দুই দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই, কাগজে স্বাক্ষর করা এবং নজরদারি-হিসাব করে প্রতিবেদন দেয়া প্রায় অসম্ভব। আর এই সুযোগে অসাধু কিছু শিক্ষক প্রশ্নপত্র কৌশলে বের করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএনও যদি শুরুতেই তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতেন, তাহলে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটার সম্ভাবনা ছিল না। এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাকে গুরুত্ব না দেয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের দায় ইউএনও এড়াতে পারেন না।’
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চলতি এসএসসি, দাখিল, এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সেটের প্যাকেট সর্টিং এবং যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব ছিল ইউএনও দীপক কুমারের। তার সই করা একটি পত্রে গত ১১ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য গোপনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহমানকে বলা হয়।
এতে বলা হয়, ভূরুঙ্গামারী থানায় প্রশ্নপত্র ও অন্য গোপনীয় কাগজপত্র সংরক্ষিত রয়েছে। সিলগালাকৃত এসব প্রশ্নপত্র বিবরণী মোতাবেক ঠিক আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করে ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
পত্রে আরও বলা হয়, পরীক্ষার সময়সূচি অবশ্যই খামের ওপর লিখতে হবে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসিসহ উপজেলার ছয়টি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবদেরও এই পত্রের অনুলিপি দেয়া হয়।
একই তারিখে ইউএনওর স্বাক্ষরিত আরও একটি অফিস আদেশে ভূরুঙ্গামারী পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে কৃষি কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ ও সমবায় কর্মকর্তা নুর কুতুবুল আলম, নেহাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রায়হান হক, সোনাহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ও প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ, সোনাহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর আতিকুর রহমান ও সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা কেন্দ্রে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, দিয়াডাঙ্গা আইডিয়াল টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সহকারী প্রোগ্রামার রুবেল সরকার এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমানকে ট্যাগ অফিসার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
তারা পরীক্ষার দিনগুলোতে থানা থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্র উত্তোলন নিশ্চিত এবং পরীক্ষা চলাকালীন সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে পরীক্ষা গ্রহণ করবেন বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ভূরুঙ্গামারী থানায় প্রশ্ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের যোগসাজশে বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের ভেতর বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন ঢুকিয়ে নেন। একই সঙ্গে প্যাকেট সিলগালা করেন। ওই সময় তারা গণিত, কৃষিবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্নপত্রও নিয়ে নেন। এ ছাড়া মোবাইলে জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতের প্রশ্নের ছবি তুলে নেন।
সিলগালা করা প্রশ্নপত্রের ওই প্যাকেটের ওপর স্বাক্ষর করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও বেরিয়ে আসে, ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার দিন যথানিয়মে থানা থেকে বাংলা প্রথম পত্রের প্যাকেট এনে তা থেকে ওই প্রশ্নগুলোর খামটি সরিয়ে ফেলেন কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানসহ তার সহযোগীরা। কেন্দ্রে দায়িত্বরত ট্যাগ কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমানকে বোর্ডের দেয়া তালিকা অনুযায়ী পাঠানো প্রশ্নপত্রের খাম গণনা করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি।
পরে এই প্রশ্নগুলোর কয়েকটি হাতে লেখা উত্তরপত্র তৈরি করে তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। পরীক্ষার আগের রাতে ফাঁস হওয়া উত্তরপত্রের সঙ্গে পরের দিন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হুবহু মিলে যায়। আর এসব উত্তরপত্র অনেকেই মোবাইলের মাধ্যমে গোপনে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছে কোনো চিঠি নেই। প্রশ্নপত্রে আমরা শুধু এসকর্ট (নিরাপত্তা) দিয়ে থাকি। বাকিটা সভাপতি (ইউএনও) এবং তার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা করেন। সিলগালা রাখা না রাখা তাদের দায়িত্ব।’
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি বর্তমানে হসপিটালাইজড আছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
এসব বিষয়ে জানতে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মাকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিধি মোতাবেক ইউএনওকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
আরও পড়ুন:২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ৩০ জুন।
মঙ্গলবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল বাশার স্বাক্ষরিত পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে।
পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। প্রথম দিন হবে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১১ আগস্ট এবং ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে।
গত বছর আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে তা পিছিয়ে ৩০ জুন করা হয়।
এর আগে ২০২৩ সালে আটটি শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা ১৭ আগস্ট শুরু হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ২৭ আগস্ট। এবার ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরম পূরণ করেছিল।
২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন:শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে ৯৬ হাজার ৭৩৬ পদে শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
রোববার বিকেলে এনটিআরসিএ-এর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান সদস্য (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাসসের
এতে বলা হয়, স্কুল ও কলেজে ৪৩ হাজার ২৮৬টি এবং মাদ্রাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫৩ হাজার ৪৫০টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী নিবন্ধনধারীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী প্রার্থীর বয়স ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ৩৫ বছর বা তার কম হতে হবে। প্রত্যেক আবেদকারী নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী একই পর্যায়ে (স্কুল/কলেজ) একটি মাত্র আবেদন করতে পারবেন।
এতে বলা হয়, প্রার্থী শূন্য পদের তালিকা থেকে তার আবেদনে ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পছন্দ দিতে পারবেন। ই-এপ্লিকেশন পূরণ ও ফি জমা প্রদান শুরু হবে ১৭ এপ্রিল দুপুর ১২টা থেকে। অন্যদিকে ই-এপ্লিকেশন জমা দেয়ার শেষ সময়সীমা ৯ মে রাত ১২ টা পর্যন্ত। তবে, রাত ১২টা থেকে শুধু আইডি প্রাপ্ত প্রার্থীরা পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অর্থাৎ ১০ মে রাত ১২ টা পর্যন্ত এসএমএস এর মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল প্রকাশ করেন।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন গভর্নমেন্ট এম এম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী মণ্ডল। তার স্কোর ১০৫ দশমিক ৭৫।
এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুবায়দা জাহান। তার স্কোর ১০২ দশমিক ৩৪।
আর বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের ইসরাত জাহান ইকতা। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯৬।
ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন অথৈ ধর। তিনি চট্টগ্রামের গভর্নমেন্ট কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। তার প্রাপ্ত স্কোর ১০৫ দশমিক ৫০।
এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন বি এ এফ শাহীন কলেজের মাহতাব সরকার জামি। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯২ দশমিক ৫০। আর মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের রিদোয়ানুল করিম রাইয়ান। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ১০১।
বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। তার স্কোর ১১১ দশমিক ২৫। তিনি নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এই ইউনিটে মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের নাফিসা তাবাসসুম। তিনি মোট নম্বর পেয়েছেন ৯৮ দশমিক ৫। আর বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন। তিনি পেয়েছেন ৯৪ নম্বর।
এছাড়া চারুকলা ইউনিটে প্রথম হয়েছে বাঁধন তালুকদার। তিনি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৮ দশমিক ১৬।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল প্রকাশ করেন।
ফল ঘোষণার শুরুতে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ফল প্রকাশের পর তা ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২ হাজার ৯৩৪ আসনের বিপরীতে ১ লাখ ২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাস করেছেন ১০ হাজার ২৭৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ১০ দশমিক ০৭ শতাংশ।
এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন গভর্নমেন্ট এম এম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী মণ্ডল। তার স্কোর ১০৫ দশমিক ৭৫।
আর ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। ১ হাজার ৫০ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩৪ হাজার ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী। পাস করেন ৯ হাজার ৭২৩ শিক্ষার্থী। পাসের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছে অথৈ ধর। তিনি চট্টগ্রামের গভর্নমেন্ট কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী। তার প্রাপ্ত স্কোর ১০৫ দশমিক ৫০।
বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১ মার্চ। ১ হাজার ৮৫১টি আসনের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ১ লাখ ৯ হাজার ৩৬৩ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছেন ৯ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থী। পাসের ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন প্রতীক রসুল। তার স্কোর ১১১ দশমিক ২৫। তিনি নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৯ মার্চ। ১৩০ আসনের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ৪ হাজার ৫১০ জন শিক্ষার্থী। আর পাস করেছেন ৫৩০ জন। পাসের হার ১১ দশমিক ৭৫।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছে বাঁধন তালুকদার। তিনি বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৮ দশমিক ১৬।
যেভাবে ফল জানা যাবে
ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ শিক্ষার্থী তার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বর, বোর্ডের নাম, পাসের সন এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বরে মাধ্যমে https://admission.eis.du.ac.bd ওয়েবসাইট থেকে পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন।
তাছাড়া যেকোনো মোবাইল নম্বর থেকে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য DU ALS , বিজ্ঞান ইউনিটের জন্য DU SCI , ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের জন্য DU BUS , চারুকলা ইউনিটের জন্য DU FRT টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে send করে ফিরতি SMS-এ ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
উত্তীর্ণ ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো
উত্তীর্ণ ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ৩ এপ্রিল বিকেল ৩টা থেকে ২৫ এপ্রিল রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করবেন।
বিষয় পছন্দক্রম অনলাইনে দেয়ার সুবিধার্থে ১ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা তার ভর্তিযোগ্য বিষয়ের তালিকা ওয়েবসাইট থেকে নামাতে পারবেন। তালিকাটি প্রিন্ট করে তাতে পছন্দক্রম আগে লিখে রাখলে পছন্দক্রম অনলাইনে প্রদানে ভুল এড়ানো যাবে।
উত্তীর্ণ বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীদের ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে কোটার ফরম সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের অফিস থেকে সংগ্রহ এবং যথাযথভাবে তা পূরণ করে ডাউনলোডকৃত বিষয় পছন্দক্রমের কপিসহ ওই সময়ের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ডিনের অফিসে জমা দিতে হবে।
ফল নিরীক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের অফিসে এক হাজার টাকা ফি প্রদান সাপেক্ষে ৩১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস চলাকালীন আবেদন করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর ট্রান্সজেন্ডার কোটায় কোনো শিক্ষার্থী আবেদন করেননি। আর প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া সব শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বছর থেকে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে বৃত্তি প্রদানের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে।
আরও জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক্সটেনশন ভবনটি আগামী জুনের শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে বুঝে পাবে। সেখানে এক হাজার শিক্ষার্থীর আসন সংকুলান করা হবে। এতে কিছুটা কমবে আসন সমস্যা।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সব ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট; বিজ্ঞান ইউনিট; ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট এবং চারুকলা ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষার ফল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রকাশ করা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশাসনিক ভবনে অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করবেন।
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা। বিভিন্ন ইউনিটের পরীক্ষা চলে ৯ মার্চ পর্যন্ত।
ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বর এবং মাধ্যমিক (এসএসসি) বা সমমান ও উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ওপর ২০ নম্বর বরাদ্দ দেয়া ছিল।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বুয়েটের ওয়েবসাইটে ভর্তি পরীক্ষার এ ফল প্রকাশ করা হয়।
বুয়েটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কমিটির সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জীবন পোদ্দারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এবং অপেক্ষমান প্রার্থীদের তালিকা বুয়েটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। মেধাতালিকা ও পছন্দক্রম অনুসারে প্রার্থীদের বিভাগ বন্টনও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এবং অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ওয়েবসাইটে বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীগণকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভর্তি ফি প্রদান এবং মূল সনদ, স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট এবং ভর্তি ফি-র রশিদ জমা প্রদান সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও দুই ধাপে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এ পরীক্ষায় মনোনীত শিক্ষার্থীরা গত ৯ মার্চ মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য