শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ না থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বটতলায় ক্লাস নিয়েছেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ। তবে কোনো প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এই ক্লাস নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটারের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়ার কথা ছিল অধ্যাপক তাহমিনার। তবে ক্লাসে এসে অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ দেখেন, বিদ্যুৎ নেই। শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত আলোও ছিল না। গরমে ক্লাসরুমে অবস্থান করাও কঠিন। তাই শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ক্লাস নেন এই অধ্যাপক।
ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত স্থানে ক্লাস করে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস প্রতিনিধি আতিক আহমেদ ডালিম বলেন, ‘আজ আমাদের দুটি শাখার দুটি ক্লাস ১০টা ও ১১টায় হওয়ার কথা ছিল। তবে ম্যামের কাজ থাকায় তিনি ১১টার সময় দুই শাখার যৌথ ক্লাস করাবেন বলে জানান।
‘লেকচার থিয়েটারে ক্লাস করার জন্য সবাই যখন উপস্থিত হচ্ছিল, তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। আর রুমে আলোও একটু কম ছিল। গরমও ছিল। পরে ম্যাম এসে বলেন- যেহেতু বিদ্যুৎ নেই তাই চলো আমরা বটতলায় ক্লাস করি।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা মূলত শেক্সপিয়ারের কিং লেয়ার নাটকটা পড়ছিলাম। নাটকটা বুঝতে গেলে ক্লাস যদি বাইরে হয় আমাদের জন্যও ভালো হয়। ফলে বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা সেটাও পেলাম। আমাদের নতুন একটা অভিজ্ঞতা হলো, ভালোও লেগেছে।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ‘এটা এমন কোনো বড় বিষয় নয়। রবিঠাকুর তার শান্তি নিকেতনে তো শিক্ষার্থীদের বাইরেই ক্লাস নিয়েছেন। মূলত বিদ্যুৎ ছিল না বলেই বাইরে ক্লাস নিয়েছি।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণসভা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা এই শোকসভার আয়োজন করেন।
সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন।
শিক্ষার্থীরা দুপুরে পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। আসরের নামাজের পর বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণ সভা।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিয়াত রিজওয়ানা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ নিয়ে স্মৃতিচারণ পড়েন।
এরপর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে ১৯৫২ সালের একটি ঘটনা পড়ে শোনান ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়া আফরিন তাসমীন।
বক্তব্য দেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. মো. আশিকুর রহমান।
বাংলাদেশ আইসিটি ডিভিশনের নির্মাণ করা মুজিব আমার প্রেরণা শিরোনামের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠান আয়োজকদের মধ্য থেকে রাফিয়াত রিজওয়ানা বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় কম ছিল, এই সময়ের মধ্যে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাপী জ্বলানি সংকট ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে পাঁচ দিন ক্লাস হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সোমবার বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, ‘পাঁচ দিনের মধ্যেই ক্লাসগুলোকে এমনভাবে বিন্যাস করতে চাই, যাতে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।’
এ সময় কাগজের সংকট ও দাম বাড়ার ফলে নতুন বছরে বই ছাপানোর কাজটিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘চেষ্টা করছি যেন আমরা সময়মতো বই-পুস্তক দিতে পরি।’
এ ছাড়া আগামী মাস থেকেই লোডশেডিং কমে যাবে কিংবা থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেখানে যদি আমরা এখন থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসগুলো পাঁচ দিন করি তাহলে এক দিন সাশ্রয়ের সুযোগ পাব। অর্থাৎ শহরে এক দিন শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা-নেয়ার জন্য যে পরিমাণ যানবাহন চলে সেটারও সাশ্রয় হবে।’
তবে এখনও এই বিষয় সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, পিআইবি পুলিশ সুপার রেজওয়ানা নূর, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ।
আরও পড়ুন:‘ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত শোক সভা আয়োজনে বিরোধিতার মুখে পড়ার দুই দিন পরই বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক জমায়েতের আয়োজন করল সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি।
জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কর্মসূচির বিরোধিতাকারীদের দেখা যায়নি।
সোমবার বেলা একটার দিকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ৩০ জন নেতা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেন। বেলা দেড়টার দিকে আসেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
এ সময় সংগঠনের কোনো ব্যানার ব্যবহার করা হয়নি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। যদিও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা ফুলে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ’ এবং ‘বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ’ লেখা ছিল।
নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ‘শিবিরের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জঙ্গিবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জামায়াত-শিবির, রাজাকার, এই মূহূর্তে বুয়েট ছাড়’ ইত্যাদি স্লোাগান দেন।
বুয়েট ছাত্রলীগের সত্তর ও আশির দশকের সাবেক নেতারা গত শনিবার বুয়েটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করলে সেখানে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। একদল শিক্ষার্থী ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে সভাস্থলের বাইরে অবস্থান নেয়।
রাত ৮টার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা যখন ক্যাফেটরিয়া থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা এই বুয়েটে হবে না’ বলেও স্লোগান দেন।
এই ঘটনা ছাত্রলীগকে ক্ষুব্ধ করে। তারা অভিযোগ করতে থাকে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বুয়েটে শিবির ও ধর্মভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে তারাই এই বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
এরপর থেকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বুয়েটে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাতে থাকে। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মীদের পিটুনিতে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মারা যান আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থী। এর প্রতিক্রিয়ায় বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের এক রায়ে এই ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, যাদের সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের আয়োজনকে ঘিরে বিক্ষোভকারীরা আবরার হত্যার বিষয়টি সামনে এনেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রলীগের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক শেখ স্বাধীন শাহেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামধারী জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মারা কয়েকদিন আগে আমাদের বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দকে অপমান করেছেন। তাদেরকে বার্তা দিতেই আমরা এখানে এসেছি। আমাদের বার্তা এই যে, যেখান থেকে যেভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম মুছে ফেলতে চেষ্টা করবে, তাদেরকে আমরা এক বিন্দুও ছাড় দেব না।’
বুয়েটের সাবেক সভাপতি হাবিব আহমেদ হাবিব মুরাদ বলেন, ‘মুক্তবুদ্ধি ও বিজ্ঞানচিন্তার অন্যতম পীঠস্থান বুয়েট। অথচ এইখানে অবিজ্ঞানমনষ্ক জামায়াত-শিবির এবং জঙ্গিবাদের বীজ বপন হচ্ছে। আমরা শপথ নিতে চাই বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদের সকল আস্তানা নির্মূল করব। বুয়েট প্রশাসনের প্রতি আবেদন, এই বুয়েটকে বিজ্ঞানমনষ্কতার পথে পরিচালিত করতে হবে।’
‘আমরা কেউ ভেসে আসিনি’
বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী খাইরুল বাশার বলেন, ‘সেদিন আমাদেরকে যারা বাধা দিয়েছে তারা জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মা। এই প্রেতাত্মারা সেদিন অনলাইনে বুয়েটের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে জড়ো করেছে। এই প্রেতাত্মাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে ‘
তিনি বলেন, ‘আমরা এই বুয়েটের শিক্ষার্থী। আমরা কেউ ভেসে আসিনি। ছোট ভাইদের বলব, তোমরা পড়ালেখা কর, শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির পথে আসো।’
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘গতকাল শিক্ষার্থীদের প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন শিক্ষার্থীকে বলতে শুনেছি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন। কে বলে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন? ছাত্রলীগকে চেন তুমি? এই সংগঠনের ইতিহাস জান তুমি? কী বলো তুমি? আমাদের শেষ রক্ত থাকা পর্যন্ত এটির বিচার এই বুয়েটে ক্যাম্পাসে হবেই হবে।
‘যারা এই ঘটনার কুশীলব তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। সেদিন আমাদের সঙ্গে যেটা করা হয়েছে সেটা অন্যায় করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য আমরা এখানে এসেছি।’
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে মাদ্রাসাশিক্ষকের পিটুনিতে ১২ বছর বয়সী ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
জেলা শহরের কাউতলীর ইব্রাহিমীয়া হাফিজিয়া কোরআন মাদ্রাসা থেকে রোববার দুপুরে মোহাম্মদ আলী নামে ওই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আলীর বাড়ি কাউতলীতেই। তার বাবা কাউসার মিয়া জানান, আড়াই বছর আগে এই মাদ্রাসায় তাকে ভর্তি করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি ঘটনার সততা নিশ্চিত করেন।
তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, রোববার সকালে আলীকে মাদ্রাসায় দিয়ে যান তার বাবা। দুপুরে ছেলের জন্য খাবার নিয়ে এলে তার মরদেহ দেখতে পান মেঝেতে। বাবার চিৎকারে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশে খবর দেন।
মোহাম্মদ আলীর চাচা মোস্তাক অভিযোগ করেন, শিক্ষক হোসাইন আহমেদের পিটুনির কারণে তার ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আলী হেফজখানায় পড়ছিল। কোরআন শরিফের অর্ধেক সে মুখস্থ করে ফেলেছিল। প্রতিদিনকার মতো আজও আলীর বাবা তাকে সকালে মাদ্রাসায় দিয়ে যায়। পড়া না পারায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে হত্যা করে বাথরুমে আটকে রাখে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আলী কোরআন শরিফের ২৬ পাড়া মুখস্থ করে ফেলেছিল...। কিছুদিন ধরে সে আধা পৃষ্ঠা পড়াও ঠিকভাবে দিতে পারছিল না। আজ সকালেও ঠিক এমনই হয়েছে।
‘পড়া দিতে না পারায় তার হাতে ও পায়ের ঊরুতে দুইবার বেত্রাঘাত করি। পরে দুপুরে নামাজ শেষে সে বাথরুমে যায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বাথরুম থেকে বের না হলে দেয়ালের ফাঁক দিয়ে অন্য এক ছাত্র উঁকি দিয়ে দেখে সে গলায় ফাঁস দিয়ে পড়ে আছে। তাকে বাথরুম থেকে বের করি। এরই মধ্যে তার বাবা মাদ্রাসায় এসে ছেলের লাশ দেখতে পায়।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হোসাইন আহমেদ বেত্রাঘাতের কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর আসল কারণ জানা যাবে।’
আরও পড়ুন:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে হোটেল কক্ষে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির এক নেতার বিরুদ্ধে।
নির্যাতনের অভিযোগ করা রাব্বি খান রাজ নামে ওই ছাত্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়েন।
রাব্বি জানান, রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি হোটেলে নির্যাতনের এই ঘটনা ঘটে।
রাব্বি আরও জানান, তিনি বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী অমিত হাসান রক্তিম গ্রুপের কর্মী। প্রতিপক্ষ গ্রুপ বরিশাল সিটির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী মহিউদ্দীন আহমেদ সিফাতের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা হয়েছে। তবে মহিউদ্দিন অভিযোগ নাকচ করেছেন।
হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাব্বি বলেন, ‘রোববার ১২টায় আমার ক্লাস টেস্ট ছিল। প্রক্টরের আশ্বাসে আমি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে যাই। পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে দুপুর ১টার দিকে আমি উপাচার্যের বাসভবনের ফটক থেকে নগরীতে আসার জন্য গাড়ির অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় চার সন্ত্রাসী এসে আমাকে ধরে ফেলে। পেছনে আরও ১০-১২ জন ছিল। আমাকে তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের নাজেমস নামের একটি হোটেলে নিয়ে যায়।
‘সেখানে মহিউদ্দীন আহমেদ সিফাত ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে অপেক্ষা করছিল। সে এক অনুসারীকে হলে তার কক্ষ থেকে দা নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয়। সেটি আনা হলে মহিউদ্দীন নিজেই দায়ের কাঠের হাতল দিয়ে আমার বাঁ পায়ের হাঁটুতে এবং ডান পায়ের হাঁটুর নিচে পেটায়। তার সহযোগীরাও আমার মাথায় ও পিঠে কিল-ঘুষি মারে। এভাবে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা আটকে আমার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।’
রাব্বি জানান, প্রক্টর এ ঘটনার খবর পেয়ে মহিউদ্দীনকে কল দিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার পরও নির্যাতন চলতে থাকে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে প্রক্টর খোরশেদ আলম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
রাব্বির পক্ষে ছাত্রলীগ কর্মী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নাজেমস ভবনে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসী সিফাত ও তার দলবল ওই ভবনেই আড্ডা দেয়। তাদের সব অস্ত্র ওই ভবনেই থাকে। আমাদের চার ছাত্রলীগ কর্মী নিরাপত্তার আবেদন করেও এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’
নির্যাতনের বিষয়ে ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেয়া মহিউদ্দীন আহমেদ সিফাত বলেন, ‘আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম এই ঘটনা। আর এই ধরনের কিছুই শুনিনি। আমার কোনো লোকজন এমনটা করলে জানতাম। যদি কেউ এই ধরনের অভিযোগ করে থাকে, তবে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম জানান, গত ৭ আগস্ট তার ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘রাব্বি খান আমাদের কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাকে বলা হয়েছিল পরীক্ষা থাকলে সেই সময় নিরাপত্তাহীনতা বোধ করলে আমাদের জানাতে। রোববার তার পরীক্ষা ছিল কি না, সে বিষয়টি আমাদের জানায়নি।
‘দুপুরের দিকে রাব্বিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের একটি বাসা থেকে বের করে আনা হয়। এরপর সে জানায় শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং সে শহরে যেতে চায়। তারপর তাকে শহরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তবে তার সঙ্গে কী হয়েছিল সে বিষয়ে আমাদের কিছু বলেনি। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেব এবং রাব্বির সঙ্গে ফের কথা বলব।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের বিরোধিতা করা শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ নামে নতুন ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় স্মরণসভা করার ঘোষণা দিয়েছেন নতুন এই ব্যানারের সংগঠকেরা। সেই সঙ্গে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মাহফিল আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনে অবিচল থাকবেন।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে শনিবার আয়োজিত কর্মসূচির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদকে ভিন্ন দিকে নেয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের গতকালের (শনিবার) কর্মসূচি কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানবিরোধী ছিল না। ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেন। তার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সদা প্রস্তুত।’
রোববার দুপুরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেয়া শিক্ষার্থী তার পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি। এ সময় বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আবরার ফাহাদ হত্যার পর রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া বুয়েটে শনিবার সভা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন ছাত্রলীগের সাবেক একদল নেতা। এ ঘটনা নিয়েই পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এলেন শিক্ষার্থীরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমাদের কর্মসূচি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চলছে। এই অপপ্রচার আমাদের ভীত এবং একইসঙ্গে ব্যথিত করেছে।
‘আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন। তার চেতনা ধারণ করতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় প্রয়োজন পড়ে না। বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় দিবসগুলোর অনুষ্ঠান নিয়মিত হয়ে আসছে।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকার পরেও শনিবার রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার দেখে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে জানান এবং কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থান নেন।
‘লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কালো থাবা আমাদের নিরাপদ ক্যাম্পাসকে যেন পুনরায় ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না করতে পারে, সেই আশঙ্কার জায়গা থেকে গতকাল আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হই। বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহি আদায় করা।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বুয়েটের সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, বুয়েটের সব শিক্ষার্থী এবং সাবেক শিক্ষার্থী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নাটোরে কলেজশিক্ষকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী মামুন হোসেনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধারের পর মামুনকে আটক করা হয়।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা।
তিনি বলেন, ‘কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে আট মাস আগে বিয়ে করেন শিক্ষক খাইরুন নাহার। আজ (রোববার) সকালে ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে আটক করা হয়েছে।’
৪২ বছর বয়সী খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২২ বছরের মামুনের বাড়ি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, রাত তিনটার দিকে মামুন তাদের ডেকে বলেন, তার স্ত্রী খায়রুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় খায়রুনের মরদেহ দেখতে পায়।
এ ঘটনায় সন্দেহ হলে এলাকাবাসী মামুনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়।
বাসার কেয়ারটেকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘রাত দুইটার দিকে মামুন বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনটার দিকে বাসায় ফিরে সবাইকে ডাকাডাকি করে বলেন, তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সবাই ঘরে ঢুকে মেঝেতে মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।’
নাটোর মডেল থানা পুলিশ জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর এক ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন খায়রুন। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় খাইরুন নাহারের। পরিচয়ের ছয় মাস পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে গোপনে তাকে বিয়ে করেন খায়রুন।
বিয়ের ছয় মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি জানাজানি হলে দেশ জুড়ে আলোচনায় আসেন এই দম্পতি।
বিয়ের পর খাইরুন নাহার জানিয়েছিলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সে সময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। তখন ফেসবুকে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয়। মামুন খারাপ সময়ে পাশে থেকে তাকে উৎসাহ দিয়েছেন; নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাই পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
বিয়ের পর মামুন হোসেন বলেছিলেন, ‘মন্তব্য কখনও গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। খাইরুনকে বিয়ে করে আমি খুশি ও সুখী। সবার দোয়ায় সারা জীবন এভাবেই থাকতে চাই।’
থানার ওসি মো. নাছিম আহমেদ বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য