চলতি বছরের নভেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে রোববার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশার কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মাঝখানে দুই মাসের বিরতির প্রয়োজন হয়। সে হিসাবে এসএসসি পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি হলে এইচএসসি নভেম্বরের মাঝামাঝি হওয়ার কথা। কিন্তু এবার শিক্ষা বোর্ডগুলো একটু বেশি কষ্ট করবে। তারা চেষ্টা করবে এসএসসি শুরুর ৪৫ দিন পর এইচএসসি শুরু করতে। এ ক্ষেত্রে নভেম্বরের গোড়ায় এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছি।’
এর আগে মন্ত্রী জানান, বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা এখনও নেয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া গেলেও এইচএসসিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয় সরকার।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে আগামী ২০ আগস্ট থেকে।
ওইদিন বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এই কার্যক্রম শুরু হবে। পরীক্ষার্থীদের এ জন্য ফি দিতে হবে দুই হাজার টাকা।
গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শুক্রবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে তাদের ফলাফলে অসংগতি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে তারা ফল চ্যালেঞ্জের সুযোগ পাবে। তবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে অর্থাৎ আগামী ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদের পরীক্ষা শেষে ফল চ্যালেঞ্জের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি শিক্ষার্থীকে দুই হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ করার পর কোনো শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হলে সে আবেদন ফি অর্থাৎ দুই হাজার টাকা ফেরত পাবে। আর পরিবর্তন না হলে সব একই থাকবে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধা বিবেচনায় এই সুযোগ দেয়া হবে।’
আগামী ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার প্রথম পরীক্ষায় বিজ্ঞান ‘ক’ ইউনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে উপস্থিতির হার ছিল ৯৪.১০ শতাংশ।
এই ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সমন্বয়কারী ও জবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান নিউজবাংলাকে রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অন্য কেন্দ্রের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আটটি কেন্দ্রেও সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে পরীক্ষায় অংশ নেননি ৫.৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী।
অধ্যাপক ড. শাহজাহান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আটটি কেন্দ্রে শনিবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৬০ হাজার ৬৪৯ জন শিক্ষার্থী। অনুপস্থিতির হার ৫.৯ শতাংশ। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
যেসব ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্ধারণ করেছিলেন তাদের আসন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট আটটি কেন্দ্রে সাজানো হয়েছিল।
বাকি কেন্দ্রগুলো হচ্ছে ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ, গভর্মেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স, ইডেন মহিলা কলেজ, নটর ডেম কলেজ ও ভিকারুননেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
এই আটি কেন্দ্রে মোট ৬৪ হাজার ৪৫৮ জন পরীক্ষার্থীর আসন সাজানো হয়েছিল। সে হিসাবে বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৯৪.১০ শতাংশ ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিউজবাংলার এক প্রশ্নে গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, প্রথমবার শিক্ষার্থীদের আসনবিন্যাস নিয়ে যে সমস্যাগুলো হয়েছিল এবার কষ্টের বিনিময়ে হলেও আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি। যার ধারাবাহিকতায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু শিক্ষার্থী কেন্দ্র ভুল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে এসেছিল। তাদের যেন ভোগান্তি না হয় সে জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিট এবং ২০ আগস্ট বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটে পরীক্ষার জন্য মোট আবেদন পড়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছিল বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে। এই ইউনিটে এক লাখ ৬১ হাজার ৭২৬ জন ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী ভর্তি আবেদন করেছিলেন।
আরও পড়ুন:২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার অঙ্কন অংশের ফল প্রকাশ হয়েছে।
গত ২ জুলাই অনুষ্ঠিত অঙ্কন পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১ হাজার ৫০২ জনের মধ্যে ২৪১ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
পরীক্ষায় পাসের হার ১৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। ১৩০ পরীক্ষার্থী এবার এই ইউনিটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ ফল প্রকাশ করেন।
ওই সময় চারুকলা অনুষদের ডিন ও ‘চ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক নিসার হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষার বিস্তারিত ফল ওয়েবসাইটে জানা যাবে। এ ছাড়া টেলিটক, রবি, এয়ারটেল ও বাংলালিংক নম্বর থেকে DU CHA <roll no> টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে সেন্ড করলে ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে।
দুই ধাপে চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হয়। গত ১৭ জুন ‘চ’ ইউনিটের সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা হয়। এতে ৬ হাজার ১৫৬ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
২৩ জুন সাধারণ জ্ঞান অংশের ফল প্রকাশ করা হয়। ফলে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম এক হাজার ৫০২ জন পরীক্ষার্থীকে অঙ্কন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।
ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২৪১ শিক্ষার্থীকে আগামী ২৪ থেকে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে।
বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারী উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোটার ফরম আগামী ২৪ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে চারুকলা অনুষদের ডিন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে ওই সময়ের মধ্যে একই অফিসে জমা দিতে হবে।
আর ফল নিরীক্ষণের জন্য নির্ধারিত ফি দিয়ে আগামী ২৪ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে চারুকলা অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করা যাবে।
আরও পড়ুন:ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নানা অসংগতি ও বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জীবনব্যাপী শিক্ষার কথা বলছি, তখন জায়গায় জায়গায় দেয়াল তুলছি কেন! এই বয়সের পর আর ভর্তি হওয়া যাবে না, একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যাবে না, এই বিষয়ে ভর্তি হবার পর অন্য বিষয়ে পড়া যাবে না। এগুলো আমরা কেন বলছি, সেটা আমার বোধগম্য নয়।’
‘আইন বিষয়ে পড়ার পর আমি চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ব, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার পর আমি চাইলে সাহিত্য নিয়ে পড়ব, কিন্তু কেন আমি পড়তে পারব না। আমাদের কেন দেয়াল তুলতে হবে!’
বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক সম্মেলন ও অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ছবি: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে আমরা শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করে যাচ্ছি। কত বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারছি, সেটা নিয়ে ব্যস্ত আমরা।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যানের পাশাপাশি একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যানের কথা বলেছেন। তারপরও আমরা তা করছি না। আমরা মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছি।’
দীপু মনি বলেন, ‘১৮ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি সাহিত্য, পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়ন নিয়ে পড়ব। ছয় মাস, এক বছর, তিন বছর পর আমার মনে হল আমি এই বিষয়ে পড়তে চাই না। কিন্তু আমার সামনে পথ খোলা নেই। আমাকে ধরে নিতে হবে, এটা আমার ব্রেক অফ স্টাডি। সারা বিশ্বে এটা পারলে বাংলাদেশে কেন পারবে না!
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘১০০ বছর পূর্ণ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ১০০ বছর আগে যে বিষয়গুলো চালু হয়েছিল, আজকের দিনে তার প্রতিটি বিষয় একইভাবে প্রাসঙ্গিক কিনা সেটা আমাদের দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সমাবর্তনের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে সুন্দর একটা সার্টিফিকেট তুলে দিচ্ছি। কিন্তু এই সার্টিফিকেট সে তার জীবনে কতটা কাজে লাগাতে পারছে, কর্মজগতে তার শেখাটা কত ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারছে, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই আমাদের কর্মজগতের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেকে তৈরির আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের নিজেদের তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষায় গুণগত মান আমাদের অর্জন করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। সেজন্য অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়া অনেক বেশি জরুরি। অ্যাক্রিডিটেশন একটা ফলপ্রসূ প্রক্রিয়া।
‘শুধু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নির্ণয় হবে, এমনটি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সেল্ফ অ্যাসেসমেন্টের মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু শিখবে। নিজেদের ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়ায় আসলে খুব দ্রুত সুফল পাবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং আমাদের মূল লক্ষ্য নয়। বিশাল যুব সমাজকে কর্মমুখী করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের দক্ষ যুব সমাজ দরকার। উচ্চ শিক্ষায় দক্ষতা নিশ্চিত করার ফ্রেমওয়ার্ক হতে পারে অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে গুণগত মানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন:দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হওয়া চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৫ সেপ্টেম্বর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে মন্ত্রী দীপু মনি নতুন এ তারিখ ঘোষণা করেন।
শিক্ষামন্ত্র বলেন, ‘আগস্টের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বড় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে আগস্ট মাসকে বাদ দিয়ে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আশা করছি, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলো অতি দ্রুত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করবে।’
শিখন ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী বুধবার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করবে এনসিটিবি। সেখান থেকে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। তারা আমাদের কর্মপরিকল্পনা দিলে সে অনুযায়ী তারিখ নির্ধারণ করে আমরা কাজ শুরু করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস সবই এক থাকবে। তবে কোন পরীক্ষার আগে-পরে কতটা গ্যাপ থাকবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে হয়তো পরিবর্তন আসবে। লম্বা সময়ে না নিয়ে যতটুকু কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া যায়, সে চেষ্টা থাকবে। তরে এতে পরীক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা যাতে না হয়, সেটাও আমরা বিবেচনা করব।’
সামনের বছরের পরীক্ষা কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার পরীক্ষা পিছিয়ে জুনে নিতে যাওয়ায় বর্ষার মধ্যে পড়ে গেছে। এ কারণে আমরা ফেব্রুয়ারির যত কাছাকাছি পারি, পরীক্ষা নিয়ে নিব, যাতে বর্ষার মধ্যে না পড়ে।
কোচিং সেন্টারের বিষয়ে দিকনির্দেশনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন পরীক্ষা চলবে, তখন কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল গত ১৯ জুন। কিন্তু দেশে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তা স্থগিত করা হয়।
এবার পরীক্ষার সময় ৩ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ২ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশের জন্য ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল অংশের জন্য ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট নির্ধারিত থাকবে।
এ বছর ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ বোর্ডে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১, দাখিলে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ ও কারিগরিতে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন। এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের চেয়ে প্রায় সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা এখনও নেয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া গেলেও এইচএসসিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয় সরকার।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
আরও পড়ুন:কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০ সেপ্টেম্বর।
শিক্ষার্থীরা ১৭ জুলাই রোববার থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করা যাবে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত। ফি ধার্য করা হয়েছে ১২০০ টাকা।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া কৃষি গুচ্ছ ভর্তি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ বা ২০১৮ বা ২০১৯ সালে এসএসসি অথবা সমমান ও ২০২০ বা ২০২১ সালে এইচএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় যারা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত বিষয়সহ উত্তীর্ণ হয়েছেন, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীর এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রতিটিতে চতুর্থ বিষয় ব্যতীত ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ ও সর্বমোট ন্যূনতম জিপিএ ৮.৫০ থাকতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, জিসিই ও এ লেভেল পাসকৃত প্রার্থীর ক্ষেত্রে ও লেভেল পরীক্ষায় অন্তত ৫টি বিষয়ে ও এ লেভেল পরীক্ষায় বিজ্ঞানের অন্তত ২টি বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। উভয় পরীক্ষায় প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ এবং সর্বমোট ন্যূনতম জিপিএ ৮.৫০ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে এ ও বি গ্রেডের জন্য যথাক্রমে ৫ ও ৪ জিপিএ গণনা করা হবে।
কৃষি গুচ্ছে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে এইচএসসি বা সমমান পর্যায়ে ইংরেজিতে ১০, প্রাণিবিজ্ঞানে ১৫, উদ্ভিদবিজ্ঞানে ১৫, পদার্থবিজ্ঞানে ২০, রসায়নে ২০ এবং গণিতে ২০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য এক নম্বর দেয়া হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে।
মোট ১৫০ নম্বরের ভিত্তিতে ফল প্রস্তুত করা হবে। ভর্তি পরীক্ষার ১০০ নম্বরের সঙ্গে এসএসসি বা সমমানের জন্য ২৫ ও এইচএসসি বা সমমানের জন্য ২৫ নম্বর যোগ করে ফল প্রস্তুত করে মেধা ও অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি করা হবে।
অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ৩০ থেকে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সাতটি কেন্দ্র ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এক বা একাধিক উপকেন্দ্রের অধীনে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো সিলেকশন করা হবে না।’
তিনি জানান, এ বছর অষ্টম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বাকি ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র হবে।
ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো হলো
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর; শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী; চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম; সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা।
পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর তালিকা অনুযায়ী আবেদনকারীকে ১ থেকে ৭ পর্যন্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের পছন্দক্রম উল্লেখ করতে হবে। তবে আবেদনকারীর পছন্দক্রম অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে।
ওয়েবসাইটের ভর্তি নির্দেশিকা অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য www.acas.edu.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত আসন
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বমোট আসন রয়েছে ৩ হাজার ৫৩৯টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১ হাজার ১১৬টি।
এছাড়া শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০৪, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬০, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪৩, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪৫, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩১, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০ এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০টি আসন রয়েছে। এ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০টি ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০টি আসন যোগ হয়েছে।
মন্তব্য