কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাচ্ছেন ৫ কোটি টাকার অনুদান। এর মধ্যে রয়েছেন ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, ৩০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫০০ শিক্ষক। এ অর্থ বিতরণ করা হবে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের মাধ্যমে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবিনা ইয়াসমিনের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত পরিচালন বাজেটে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ অনুদান হিসেবে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বরাদ্দ র্অথ হতে আর্থিক অনুদান বাবদ নির্বাচিতদের এ অর্থ প্রদান করা হবে।
আরও বলা হয়, মনোনীত প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার করে মোট ৭৫ লাখ টাকা, শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে এই টাকা দেয়া হবে।
এ ছাড়া ইবতেদায়ী স্তরের (১ম থেকে ৫ম) ৭৬৬ শিক্ষার্থীকে ৩ হাজার করে প্রায় ২৩ লাখ টাকা, দাখিল ও ভোকেশনাল পর্যায়ে ৪ হাজার ৫০১ শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার করে ২ কোটি ২৫ লাখ ৫০০ টাকা, এইচএসসি (বিএম) আলিম ও ডিপ্লোমা পর্যায়ে ১ হাজার ৪৯২ শিক্ষার্থীকে ৬ হাজার করে সাড়ে ৮৯ লাখ এবং কামিল, ফাজিলসহ তদুর্ধ্ব শ্রেণি পর্যন্ত ৫৩৫ জনকে ৭ হাজার করে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা প্রদান করা হবে।
অনুদানের শর্তে বলা হয়, কেউ দুইবার মঞ্জুরি হয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে তাকে এক দফায় অর্থ ছাড় করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে দিতে হবে।
অনুদান প্রদানে গত বছরের মার্চে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়। এরপর আবেদন যাচাই-বাছাই করে আলাদাভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি মাদ্রাসা বিভাগ থেকে অনুদানের অর্থ ছাড় দেয়া হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন সাবেক উপ উপাচার্য (প্রশাসন) ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আমির হোসেন।
শুক্রবার বিকেলে ভোট শেষে সন্ধ্যায় এই ফল ঘোষণা করেছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।
তিনি জানান, সর্বোচ্চ ৪৮ ভোট পেয়েছেন অধ্যাপক আমির। ৪৬ ভোট পেয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম দ্বিতীয় এবং ৩২ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার।
এই ফল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। এর মধ্য থেকে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন আচার্য ও রাষ্ট্রপতি।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে সিনেটের বিশেষ সভা শুরু হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের ভোট শুরু হয়।
ভোট শুরুর আগে অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেন তার প্রার্থিতা বাতিল করে নেন।
নির্বাচনে শিক্ষকদের ৩টি প্যানেল থেকে মোট ৮জন প্রার্থী ছিলেন।
আরও পড়ুন:খুলনার রূপসায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার ডোবা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপ্তিস্বর বিশ্বাসকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এসব নিশ্চিত করেছেন রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন।
প্রধান শিক্ষক দীপ্তিস্বরকে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট পড়ানোর সময় দীপ্তিস্বর ছাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ করতেন। সবশেষ তিনি এক ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার সবাই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে বিদ্যালয়ে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অফিসকক্ষে ঢুকে বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, ব্যাবহারিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। তারা প্রধান শিক্ষককে মারধরেরও চেষ্টা করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
ওসি মোশাররফ বলেন, ‘ওই শিক্ষককে থানায় আনার পর তার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর বাবা বুধবার রাতেই মামলা করেন। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।’
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৯ আগস্ট স্কুল শেষে প্রাইভেট পড়ানোর সময় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌনতার প্রস্তাব দেন দীপ্তিস্বর। তাতে রাজি না হওয়ায় ছুটির পর মেয়েটিকে তিনি শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রীর চিৎকারে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে শিক্ষক সেখান থেকে চলে যান।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. কামাল উদ্দীন বাদশা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবাইয়া তাছনিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছিল। আমি সেটা থানায় ফরওয়ার্ড করেছি। ওই প্রধান শিক্ষকের কার্যকলাপ তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগাম অবসর চেয়ে সহকারী অধ্যাপক সামিয়া রহমানের আবেদন গ্রহণ করে তাকে অবসরের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তার কাছ থেকে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পাবে জানিয়ে এই টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত বুধবার ইস্যু করা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করা সামিয়াকে চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার ৩১-০৩-২০২২ তারিখের পত্রের বরাতে এবং ২৬-০৪-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জানানো যাচ্ছে যে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আপনাকে দেনাপাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে ১৫-১১-২০২১ তারিখ হতে বিধি মোতাবেক আগাম অবসর (আর্লি রিটায়ারমেন্ট) গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
‘সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
চিঠিতে জানানো হয়, ‘আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২১৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আপনার দেনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা।’
বকেয়াগুলো কিসের টাকা জানতে চাইলে সহকারী রেজিস্ট্রার মোখতার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি যে তারিখ থেকে (গত ১৫ নভেম্বর) আর্ন লিভে গিয়েছিলেন সেই তারিখ থেকে উনার স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর থেকে উনি যে বেতন ভাতা পেয়েছেন সেগুলো। তবে তিনি যদি আবার অর্জিত ছুটির জন্য আবেদন করেন তাহলে ছুটির পরিবর্তে অর্থ মঞ্জুর পাবেন।’
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের মধ্যে ২০২১ সালের নভেম্বরে চার মাসের অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান সামিয়া রহমান। গত ৩১ মার্চ তার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মার্চ মাসের শুরুতে তিনি বিনা বেতনে আরও এক বছরের ছুটির জন্য আবেদন করেন। তবে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না করার পর তিনি আগাম অবসরের আবেদন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ার পর সামিয়ার পদাবনতি ঘটায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। তবে এই আদেশের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যান। গত ৪ আগস্ট সামিয়া রহমানকে পদাবনতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
তবে আগেই সামিয়া আগাম অবসরের আবেদন করায় এবং সেটি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করায় আপাতত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষকতা করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোখতার হোসেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘উনি (সামিয়া রহমান) আর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারবেন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় যদি নতুন করে শিক্ষকের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় আর তখন যদি তিনি আবেদন করেন সে সময় ওনাকে নিয়োগ দেয়া হলে তারপর শিক্ষকতা শুরু করতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় মাদ্রাসাশিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।
অসুস্থ অবস্থায় ১৫ বছরের মো. শিহাবকে শুক্রবার সকালে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে বেলা ১টা ১২ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
তথ্যগুলো নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার।
শিহাবের বাড়ি বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামে। সে ইউনিয়নের মেড্ডা আল মাতিনিয়া নূরানী মাদ্রাসায় পড়ত।
তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রবের বিরুদ্ধে।
শিহাবের ভাবি সাবিকুন নাহার ঝুমুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার দেবরকে কয়েক দিন আগে শিক্ষক আব্দুর রব বেত দিয়ে মারেন। এ সময় সিহাব অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ এনে খাওয়ান। তাতেও সে সুস্থ না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে ফোন করে শিহাবের অসুস্থতার খবর জানানো হয়।
‘আমার শ্বশুর গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার সকালে উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তাকে কুমিল্লা মেডিক্যালে পাঠায়। ওইখানে নিলে দুপুরে সে মারা যায়।’
শিহাবের মা খালেদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, “আমার ছেলেকে যখন বাসায় আনা হয় তখন তার অনেক জ্বর। অনেক রাতে সে আমাদের বলে, ‘আমার কেন জ্বর তোমরা কেউ জানতে চাইলে না? আমার হাত থেকে ভাত পড়ে গেছে দেখে হুজুর আমাকে জোড়া বেত দিয়ে অনেক পিটিয়েছে।’
“আমার ছেলের ছোট থেকে হাত ভাঙা। আমগাছ থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙে। তাই হয়তো হাত থেকে ভাত পড়ে গেছে। এ জন্য তাকে মারল আব্দুর রব হুজুর। আমার ছেলে জ্বরে সকালে বমি করে দেয়। এরপর আমরা হাসপাতাল নিই।”
তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার ঘরে এত ভাত, আমার ছেলেকে ভাতের জন্য মারল!’
ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি স্থানীয় মেম্বারের কাছে শুনেছি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক তাকে প্লেট দিয়ে আঘাত করেছে। মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে শুনেছি এমন কিছুই, তবে সিরিয়াস কিছু হয়নি। আমি এখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, সেখানে গিয়ে জেনে বিস্তারিত বলতে পারব।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রবের মুঠোফোনে দুপুরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিউজবাংলার পরিচয়ে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
মেড্ডা আল মাতিনিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আহমেদ শফি বলেন, ‘আমি সিহাবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। আপনি পরে ফোন করলে খুশি হব।’
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জানান, শিহাবকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
মরদেহ থানায় নেয়া হয়েছে জানিয়ে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বলেন, ‘আমরা মরদেহের পিঠে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। ওই শিক্ষককেও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়েছি। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বরিশালের বাকেরগঞ্জে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বাকেরগঞ্জের জিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ইদ্রিসুর রহমান খান স্বপন অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে শ্লীলতাহানি করেছেন। ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার থানায় অভিযোগ দেয়া হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ছাত্রীর মায়ের দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিতেন প্রধান শিক্ষক ইদ্রিসুর। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে পরীক্ষায় পাস না করানোর হুমকিও দিতেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, গত ১ আগস্ট শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে মেয়েটিকে শারীরিকভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করেন। সে সময় সহপাঠীরা গিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি জানালে মা পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় অভিযোগ করেন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আকমল হোসেন বলেন, ‘আমরা স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও বাকেরগঞ্জ দুধল মৌ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে নারীঘটিত অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিসের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আশুতোষ ব্রক্ষ্ম জানিয়েছেন, অভিযোগ সত্য নয়। স্থানীয় একটি পক্ষ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে না পেরে প্রধান শিক্ষককে অপসারণের জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনা সাজিয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার জানান, ওই ছাত্রীর মায়ের দেয়া অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:অভিভাবককে জুতাপেটা, অনিয়মসহ নানা অভিযোগে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার পশ্চিম সারডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
পশ্চিম সারডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবির বিরুদ্ধে যথাযত পদক্ষেপ নেয়ার দাবিতে গত ১৯ জুলাই ঢাকা-বুড়িমারী মহাসড়কে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা।
তারা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবি দেরিতে স্কুলে আসেন, এক অভিভাবককে তিনি জুতাপেটা করেছিলেন, স্কুলের অর্থ আত্মসাতেও তিনি জড়িত। এরপর প্রধান শিক্ষক ১১ জন অভিভাবকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
অভিভাবক আবদার আলী বুধবার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার কীভাবে একজন অভিভাবককে মারেন, আবার মামলাও দেন? যতদিন ওনার অপসারণ না হবে, ততদিন আমরা আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাব না।’
আফরোজা বেগম নামে আরেক অভিভাবক সে সময় বলেন, ‘স্কুলের হেড ম্যাডাম বাচ্চাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। অভিভাবককে তার জুতা দিয়ে পেটানোর কারণে আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাব না। উনি বদলি হলে পাঠাব।’
অভিভাবকরা জানান, গত ১৮ জুলাই দেরিতে স্কুলে যাওয়ার অভিযোগ তুলে এর কারণ জানতে প্রধান শিক্ষকের কাছে যান এক অভিভাবক। তখন প্রধান শিক্ষক তাকে জুতাপেটা করেন। এ ঘটনা শুনে অভিভাবকরা মানববন্ধন করেন।
১৯ জুলাইয়ের পর থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাননি অভিভাবকরা।
সরেজমিন বুধবার স্কুলে দেখা যায়, কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় শিক্ষকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
এই স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে। প্রধান শিক্ষকসহ আছেন সাতজন শিক্ষক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার ছবিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসায় আমরা প্রত্যেকে হোম ভিজিট করেছি। কিন্তু অভিভাবকদের দাবি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না। আমরা প্রতিদিনই তাদের বাড়িতে যাচ্ছি, কিন্তু একই কথা বলছেন।
‘আমরাও অতিষ্ঠ তার আচরণে। দুপুর ১২টায় আসেন ১টায় যান। প্রধান শিক্ষকের একক আধিপত্য, স্বেচ্ছাচারিতা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, রুটিন মেইনটেন্যান্সে অনিয়ম, এমনকি স্কুলের ফ্যান খুলে বাড়িতে নিয়ে যাওয়াসহ বহু অভিযোগ আছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ব্যালট পেপার নিয়ে সংঘটিত ঘটনায় ব্যার্থতার দায়ে পদাবনতি পায় তৎকালীন হল প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহান। তাকে স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড মো. হারুনুর রশীদ খান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার সভাপতিত্ব করেন।
২০১৯ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের সময় কুয়েত মৈত্রী হলে সিল দেয়া বস্তাভর্তি ব্যালট পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এসব ব্যালটে ছাত্রলীগের হল সংসদের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়া ছিল।
এরপর হলের ভোট গ্রহণ সাময়িক স্থগিত হয়ে যায় এবং ওই সময় এই হলের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ ড. শবনম জাহানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে শবনম জাহানকে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরে ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ শবনম জাহানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
পরে ওই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
এক বছরের বেশি সময় পর ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০২০ সালে এই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত না করে পদাবনতি অর্থাৎ ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে অবনমিত করা হয়।
সিন্ডিকেট সভার এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন শবনম জাহান।
সেই রিটের রায়ে তাকে 'প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাসহ' ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
রায়ের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান অধ্যাপক হারুনর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় বিচার বিশ্লেষণ করে সিন্ডিকেটের সকল সদস্য একমত হয়ে তাকে স্বপদে পুনর্বহালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য