প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের দেয়া উন্নয়ন ফির টাকা বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের এক কর্মকর্তাকে পদাবনতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্য অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বুধবার রাতে সিন্ডিকেট সভা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার সভাপতিত্ব করেন।
পদাবনতি পাওয়া কর্মকর্তার নাম মাহবুব আলম। তিনি ইংরেজি বিভাগের প্রধান সহকারী। এখন থেকে তিনি সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকের দায়িত্ব পালন করবেন।
অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান জানান, সাধারণত প্রতি সেমিস্টারে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা বিভাগের উন্নয়ন ফি নামে একটা ফি দেয়। এই কর্মকর্তা সেই টাকা (২ লাখ ১৫ হাজার টাকা) বিভাগের ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন।
দীর্ঘদিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভাগ তদন্ত শুরু করে। এরপর তিনি সেই টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে চিঠি দিয়ে বিভাগের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। নজরে না এলে হয়তো তিনি নিজের কাছে রেখে দিতেন।
অধ্যাপক মিজান বলেন, ‘যেহেতু এটা একটা ফাইন্যান্সিয়াল অফেন্স, তাই বিভাগ এটি সিন্ডিকেটের নজরে এনেছে। আর সিন্ডিকেট তাকে শাস্তি দিয়েছে।’
জানা যায়, এই শাস্তি ছাড়াও সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য প্রণয়ন করা নয়টি নীতিমালা পাস করেছে।
এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে র্যাগ ডে অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। পরে এই সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উপউপাচার্যকে (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নয়টি নীতিমালা প্রণয়ন করেন। আজ সিন্ডিকেট সভায় সেসব নীতিমালা উপস্থাপন করা হলে সিন্ডিকেট এসব নীতিমালা পাস করেন।
এ বিষয়ে অন্য এক সিন্ডিকেট সদস্য মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা র্যাগ ডে নামে যে অনুষ্ঠান উদযাপন করে এটির নাম এখন থেকে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান এখন থেকে কিছু নীতিমালার মধ্যে থেকে করতে হবে। নীতিমালাগুলো হলো, ক্লাস চলাকালে উচ্চস্বরে বাদ্য-বাজনা পরিহার করতে হবে অর্থাৎ কাউকে ডিস্ট্রার্ব করা যাবে না।’
সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা করে অনুষ্ঠানসূচি চূড়ান্ত করা, স্ব-স্ব বিভাগ/ইনস্টিটিউটের ভবন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা; ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সমবেত হয়ে পথচারীদের চলাচল স্বাভাবিক রাখা, বিভাগের/ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টতায় দুপুরে অথবা রাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, উৎসবের দিন রাত ১০টার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা এসবও নীতিমালার আওতাধীন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের বাবা অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৯ এপ্রিল)।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৫১ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কো দিল্লির বিজ্ঞান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফলিত রসায়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির সভাপতি।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১ আগস্ট বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কুমিল্লা জেলার কুঞ্জ শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল আজিজ চৌধুরী একজন শিক্ষাবিদ, মাতা আফিফা খাতুন।
বরেণ্য এ অধ্যাপকের মেয়ে হয়েছেন বাবার মতো গুণী। অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বুয়েটে অবশ্যই ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত। তেমনই শিক্ষার পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
বাংলাদেশের সব অর্জনের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি ও ছাত্রলীগ যুক্ত বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশ গঠন এবং এরশাদ ও জিয়া যখন আমাদের গণতন্ত্রকে শেকল পরিয়েছিলেন তখন গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি অবদান রেখেছে। সেই ছাত্র রাজনীতি থেকে অনেক দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদের জন্ম হয়েছে- যারা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দিচ্ছেন। কিন্তু আমি অবাক যে সেখানে একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা হয়। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য আবার সেখানে আন্দোলনও হয়।
‘এটা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক নয় এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত বলেই আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই আদেশ বাতিল করেছে এবং সেখানে ছাত্র রাজনীতির দুয়ার খুলেছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে বলবো- সেখানে যেন নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি হয়, হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি যেন না ঢোকে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি থাকা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের নেতা তৈরি হয়।
এ সময় নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘আমি ১৫ বছর বয়সে ক্লাস টেনে পড়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের কর্মী। আর ১৬ বছর বয়সে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি।’
মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘রাজনীতি যে দেশ ও মানুষের সেবা এবং সমাজ পরিবর্তনের একটি ব্রত, সেটি অনেক রাজনীতিবিদ ভুলে গেছেন। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি কারও পেশা হওয়া উচিত নয়।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বস্তুগত উন্নয়নের সঙ্গে একটি মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু-কন্যা বহু কল্যাণ ভাতা চালু করেছেন। সেই ব্রত ধারণ করেই আজকে ছাত্রলীগ দুস্থ অসহায় মানুষের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য তাদেরকে অভিনন্দন।’
সভা শেষে সমবেতদের মাঝে ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন:বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বীর হলের সিট ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছে।
এর আগে রোববার ইমতিয়াজ হোসেনের পক্ষে হলের সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটে বুয়েটের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে ইমতিয়াজের হলে সিট ফেরত দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। সোমবার ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ নিজেই রিটের পক্ষে শুনানি করেন।
জানা যায়, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে ২৭ মার্চ বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের একটি দল প্রবেশ করে। এর প্রতিবাদে ২৯ মার্চ বেলা আড়াইটা থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেনকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল (আবাসিকতা) বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
পরে ২৯ মার্চ রাতে বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের নির্দেশে ইমতিয়াজ হোসেনের হলের আসন বাতিলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. ফোরকান উদ্দিন।
একইসঙ্গে জানানো হয়, সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এদিকে ১ এপ্রিল বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই বলে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বীর করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেয়। ২০১৯ সালে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে যে প্রজ্ঞাপন জারি করে তা স্থগিত করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে থাকা ভাসমান সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের পক্ষ থেকে এই উপহার বিতরণ করেছেন।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের সুইমিংপুল সংলগ্ন মাঠে বিতরণের এ আয়োজন করা হয়। আয়োজন শেষে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছে নতুন কাপড় তাদের ঈদের খুশি এনে দিয়েছে।
ঈদ উপহার পেয়ে টিএসসির এক সুবিধাবঞ্চিত শিশু রাব্বি বলেন, আমাদের সবাইকে অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড় দিয়েছে। অনেক খুশি লাগছে আমার। এবার ঈদের দিন এই পাঞ্জাবিটা পরে ইদ করবো আমি৷
এই আয়োজনের দায়িত্বে থাকা শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম বাসেত বলেন, প্রত্যেক বাগান মালিই তার বাগানের ফুলগুলোর যত্ন করে। ওরা আমাদের বাগানের ফুল, আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ ওদের যত্ন নেয়া। আমাদের সভাপতি শয়ন ভাই সবসময় ওদের খোঁজ খবর রাখেন।
এসময় সেখানে অন্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন, রেজাউল করিম রিয়াদ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মাউনজিরা বিশ্বাস সুরভী, নাট্য ও বিতর্ক উপসম্পাদক সাইফ আকরাম, মানবসম্পদ উপসম্পাদক মিজানুর রহমান, গণযোগাযোগ উপসম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ তিতাস প্রমুখ।
মনিরুল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা (ববি) ছাত্রলীগের কমিটি শিগগিরই গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
তিনি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
ইনান বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত ইউনিট। এটি গঠনতন্ত্র মোতাবেক পরিচালিত হয়। আমরা গত এক যুগের অবসান ঘটিয়ে আশা করছি খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ববি শাখার সাংগঠনিক কমিটির রূপদান করতে পারব।’
এ বিষয়ে ববি ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘ববির সমসাময়িক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছে আরও আগে, তবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বেশ কয়েকবার আশ্বস্ত করলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। সবসময়ই সরব ভূমিকা দেখা যায় ববি ছাত্রলীগকে।
‘বিভিন্ন দিবস পালনসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয় ববি ছাত্রলীগের ব্যানারে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নজন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। কালের বিবর্তনে এখন অনেকে হারিয়ে গেছেন, কিন্তু তাদের কেউ ছাত্রলীগের কমিটিতে জায়গা পাননি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের নামে ভুয়া ইমেইল আইডি খুলে করে বিভিন্ন মানুষকে স্ক্যাম মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটি অসাধু মহল [email protected] নামের ইমেইল অ্যাড্রেসটি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে স্ক্যাম মেসেজ পাঠাচ্ছে। এই ইমেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নয় এবং এর সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়র কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই।
স্ক্যামের উদ্দেশ্যে তৈরি করা এ ইমেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া সবাইকে এই অসাধু উদ্দেশ্যে তৈরি ইমেইল থেকে আসা সব বার্তা পরিহার করে চলতে এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি শাহীনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের অধীনে পরিচালিত সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
‘তারা বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। তদন্তের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ জিডির বিস্তারিত গোপন রেখেছে।’
নিরাপদ ক্যাম্পাস, নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা এবং সাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতি চর্চা করার অধিকার চেয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রলীগমনা শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই খোলা চিঠি পাঠ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বুয়েটের ২১ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে আমাদের এই খোলা চিঠি।’
এর আগে প্রয়োজনে আইন সংস্কার করে হলেও বুয়েটকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েছিল ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রলীগমনা শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠিতে বলা হয়, ‘হে দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধু তনয়া, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা স্বাভাবিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই। আমরা চাই না যে আমাদের ক্যাম্পাস জঙ্গী তৈরির কারখানা হোক। আমরা চাই না দেশে দ্বীপ ভাই, সনি আপু ও আবরার ফাহাদ ভাইয়ের মতো নির্মম ঘটনা ঘটুক। আমরা দ্বিতীয় কোনো হলি আর্টিসান ঘটনাও চাই না। আমরা চাই না তন্ময় ভাইয়ের মতো কেউ শিবিরের নৃশংস হামলার ক্ষতচিহ্ন নিয়ে জীবনযাপন করুক।’
হিজবুত তাহারীর বা শিবিরের সন্ত্রাসী আক্রমণ থেকে কতটা নিরাপদ বুয়েটের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি- এমন প্রশ্ন তুলে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র মেধাবীদের এই ক্যাম্পাসকে কতটা নজরদারিতে রেখেছে বা এর প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করছে আমরা জানি না। যেকোনো বড় ধরনের নাশকতার ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলে হলি আর্টিসানের মতো কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশংকা করছি আমরা ক্যাম্পাসের প্রগতিশীল ছাত্রসমাজ।’
তারা বলেন, ‘এ বিষয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা কতটুকু তাও আমরা জানি না। অতিসত্ত্বর বুয়েট নিয়ে তাদের কার্যক্রম জোরদার করার দাবি জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খোলা চিঠিতে বলা হয়, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতিকে একপ্রকার নিষিদ্ধ কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমরা প্রগতিশীল রাজনৈতিক চিন্তাধারায় বিশ্বাসী এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমরাও অংশ নিতে চাই দেখে আমাদের ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক নিপীড়ন চলে আসছে, যা বর্তমানে আমাদের জীবনের হুমকিতে রূপ নিয়েছে।
প্রধামন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়ে খোলা চিঠিতে বলা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার প্রতি এবং আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা আমাদের আকূল আর্জি রাখলাম, আমাদের নিরাপদ ও স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্যাম্পাস উপহার দিন। দেশ ও দশের প্রতি ভালোবাসা রেখে সকলের কল্যাণকে মাথায় রেখে আমরা ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি চাই এবং জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপদে এবং সৎ সাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে চাই।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অপদস্ত হতে হচ্ছে দাবি করে চিঠিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আমরা বলতে চাই, শুধুমাত্র স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য যে পরিমাণ বুলিং করা হয়েছে আমাদের ওপর, তা অকথ্য। আবরার ফাহাদ ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়, কিন্তু এরপর র্যাগিং বা এর সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আইনভঙ্গের অভিযোগ না থাকলেও সংখ্যালঘু ছাত্রদের ওপর শুরু হয় পাবলিক হিউমিলিয়েশন (গণ অপদস্ত) এবং ডিফেমেশন (সম্মানহানি) যা হয় শুধুমাত্র স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার কারণে।
শিবির এবং হিজবুত তাহরীরের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে শিক্ষার্থীদের জবাবদিহিতা, বুলিং এবং সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে খোলা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মনন চর্চার মুক্তমঞ্চ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলবাদ-বিরোধী অবস্থান রাখাকে কীভাবে অভিযোগ হিসেবে তুলে ধরা হয় তা আজও জবাবদিহিতা চাওয়া প্রত্যেক ছাত্রের প্রশ্ন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের দুইজন সহপাঠীকে আহসান উল্লাহ হলে রাত এগারোটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত জবাবদিহিতার নামে প্রহসনমূলক র্যাগিং বা বুলিং এবং কমন রুম ও মাঠে একটানা অপমান করা হয়। আমাদের নিচু দেখিয়ে কথা বলাও শুরু হয় এবং হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র মতপ্রকাশ করেছিলাম। স্বধীন এই বাংলায় এই অধিকার কি আমাদের নেই? পরবর্তীকালে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছাত্ররা এক রাতে একসঙ্গে বসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা ও খাওয়া-দাওয়া করলে আবারও ছুটে আসে সোশ্যাল ডিফেমেশন এর কালো ছায়া। এতে প্রমাণবিহীনভাবে রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিত থাকার বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল গ্রুপ থেকে বের করে দেয়া হয়।
‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের ক্লাব থেকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি ক্লাস শিডিউল ও পরীক্ষার রুটিন সঠিক সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রদের না জানানোর আদেশ দেয়া হয়। আমরা এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও কোনো মীমাংসা আজও পাইনি।’
চিঠিতে বলা হয়, সর্বশেষ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের ক্যাম্পাসে আসা এবং তার সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাতের কারণে ইমতিয়াজ রাব্বিকে বহিষ্কারের দাবি করা হয় এবং উপাচার্য মহোদয় কোনো তদন্ত ছাড়াই সেই দাবি গ্রহণ করেন। এই আন্দোলন ক্যাম্পাসে শান্তির পরিবেশ নষ্ট করে যা পরীক্ষা বয়কটের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এরই সঙ্গে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি এবং ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের উক্তিতে উঠে আসা ঘটনাগুলোতে সবসময়ই হোতা কিছু নির্দিষ্ট মানুষই, যাদের সঙ্গে শিবির সন্দেহে আটককৃতদের সম্পৃক্ততা এবং মৌলবাদী চিন্তা পালনের দৃষ্টান্ত মেলে। অনেক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক মতামত প্রতিষ্ঠার জোরও চালানো হয় তাদের দ্বারা। তবে এই অন্ধকার রাজনীতি আড়াল নেয় আবরার ফাহাদ ভাইকে হারানোর বেদনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী এবং ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা’ বিষয়ক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে- দাবি করে চিঠিতে বলা হয়, এর জন্যই কি আমাদের এই স্বাধীনতা? জাতির জনকের জন্মবার্ষিকীতে ইফতার বিতরণ কীভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়?
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে এই সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় আমাদের জীবন হুমকিসহ নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। শিবির দ্বারা পরিচালিত ‘বাঁশের কেল্লা’র পক্ষ থেকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আমাদের জীবন হুমকিতে। হে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের রক্ষক, আপনি সহযোগিতা করুন, আমাদের আবেদন শুনুন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য