দেশের ১৮ জেলার ৮৫টি উপজেলায় এক হাজার ১২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৪ জন শিক্ষার্থী বন্যার কবলে পড়েছে।
মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইং থেকে এ তথ্য জানা যায়।
মাউশির প্রতিবেদনের তথ্যমতে, দেশের ১৮টি জেলার ৮৫টি উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ১ হাজার ১২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৪ জন শিক্ষার্থী বন্যার কবলে পড়েছে। তবে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কবলে পড়েনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর ১২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে। আংশিকভাবে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে ১০৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আর ৮৮৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও পাঠদান সম্ভব নয়। বন্যাকবলিত এলাকার ৬৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
সিলেটসহ সারা দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির পর ২২ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইং থেকে সব আঞ্চলিক পরিচালক ও উপ-পরিচালককে তথ্য পাঠানোর অফিস আদেশ জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, বর্তমানে অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে পানি নেমে আসায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মাউশির আওতাধীন জেলা/উপজেলায় কতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত এবং কতসংখ্যক শিক্ষার্থী বন্যাকবলিত রয়েছে তার তথ্য সংযুক্ত ছক অনুযায়ী মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইংয়ের ই-মেইলে ([email protected]) পাঠানোর অনুরোধ করা হলো।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সপ্তাহে এক দিন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন।
শুধু বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেয়া হবে। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে। সপ্তাহের অন্য দিনও পরিবহন সেবা কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।
তিনি বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশের আলোকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘সপ্তাহে এক দিন অনলাইনে ক্লাস নিলে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় হবে। সাশ্রয়ের লক্ষ্যে প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। সপ্তাহের অন্য দিনও পরিবহন সেবা কিছুটা হ্রাস করা হবে।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে সৃষ্ট জাতীয় এ সমস্যায় আমরা দেশবাসীর পাশে থাকতে চাই। করোনা মহামারিতে ক্যাম্পাসে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেশের মানুষের পাশে ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। এবারও জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে আমরা মানুষের পাশে থাকব।’
এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা যেন কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ভিসি।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আট বছর পর শুক্রবার হতে যাচ্ছে ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) প্যানেল নির্বাচন।
নির্বাচনে তিনটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি প্যানেলে তিনজন করে প্রার্থী। তিনটি প্যানেলই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের। প্যানেল তিনটি হলো, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের দুইটি প্যানেল।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের একাংশের প্যানেলে নেতৃত্বে আছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মো. নূরুল আলম। প্যানেলের অন্যরা হলেন, গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ্।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ হেল কাফি বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আরেক অংশের প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ।
এই প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তপন কুমার সাহা এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইন্সটিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১১(১) ধারা অনুযায়ী এ নির্বাচন হবে। শুধু নির্বাচিত সিনেট সদস্যরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজনের প্যানেল মনোনয়ন শেষে তা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের কাছে পাঠানো হবে।
রাষ্ট্রপতি ক্ষমতাবলে প্যানেলের যে কাউকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন। এবারের নির্বাচনে ৮১ জন সিনেটর ভোট প্রদান করবেন।
২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ভিসি প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম নির্বাচিত হন। পরে রাষ্ট্রপতি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেন।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাংবাদিককে তথ্য দেয়ার অভিযোগে এক ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হলকর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বুধবার ওই ছাত্রীকে নোটিশ দেন।
নোটিশে বলা হয়, হল প্রশাসনকে না জানিয়ে রুম পরিবর্তন ও প্রভোস্টকে না জানিয়ে ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের কাছে তথ্য দিয়েছেন। এর কারণ লিখিতভাবে জানিয়ে আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে হল অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী বলেন, ‘হলে রুম পরিবর্তন করা নিয়ে রাতভর র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছি। সেই অভিযোগ প্রভোস্টের কাছে দিয়েছি। সাংবাদিকরা হয়ত অন্য কোনো সোর্স থেকে এ তথ্য পেয়েছে। পরে তারা আমার কাছে জানতে চাইলে আমি ঘটনা নিশ্চিত করেছি। এখানে দোষের কিছু দেখছি না।’
এ বিষয়ে জানতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট মুজিবুর রহমানকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। পরে এসএমএস করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
বুধবার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ এনে প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী।
সেখানে তিনি বলেন, ‘শ্বাস কষ্ট জনিত সমস্যার কারণে গত মঙ্গলবার হলের ৬৩১ নম্বর রুম পরিবর্তন করে ২১৬ নম্বরে উঠি। জিনিসপত্র নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর রুমের আপু প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের উম্মে হাবিবা (ফুর্তি) আমাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। না হলে বের করে দেয়ার হুমকি দেন তিনি।
‘হল সুপারকে এ কথা জানাতে গেলে সেই সুযোগে তিনি আমার জিনিসপত্র রুম থেকে বের করে দেন। পরে রুম থেকে বের না হলে হাবিবা আপু এবং একই ব্লকে থাকা তার সহপাঠী ওলিজা ও বিথী আমাকে গালিগালাজ ও অপদস্ত করেন।’
খাগড়াছড়ি সদরের একটি স্কুলের গেট ভেঙে পড়ে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
খবংপুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার সকাল ৯টার দিকে প্রবেশের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৬ বছর বয়সী শ্রাবণ দেওয়ান ওই বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী। নারায়ণখাইয়া গ্রামের প্রণয় দেওয়ানের ছেলে শ্রাবণ।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, স্কুলে ঢোকার সময় গেট ভেঙে পড়ে মারাত্মক জখম হন। ঘটনার পরপর রক্তাক্ত অবস্থায় শ্রাবণকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ‘মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত ও পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এদিকে দুর্ঘটনার জন্য এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন।
স্বণির্ভর বাজারের ব্যবসায়ী কলিন চাকমা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গেটটি ভাঙা ছিল। শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়ার সময় গেট ধরে খেলত। এরপরও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেটটি না সরিয়ে বাঁশের খুঁটি দিয়ে লাগিয়ে রেখেছিল। তাদের অব্যবস্থাপনার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
খাগড়াছড়ির প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, ‘ঘটনার পরই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক বা অন্য কারো কোনো দায় আছে কি না তা তদন্তে কমিটি করতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের সদর উপজেলার চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট আবুল হোসেন খলিফার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সরেজমিনে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ১২১ নং চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৯৫০ টাকা এবং প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা তাদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
উপবৃত্তির এই টাকা পেতে অভিভাবকদের প্রত্যেকেই মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এই সুযোগটিই কাজে লাগান বিদ্যালয়ের পাশে বাংলাবাজার এলাকার এজেন্ট আবুল হোসেন খলিফা। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় তিনি কৌশলে সবার গোপন পিন নম্বর জেনে নিয়েছিলেন।
এ অবস্থায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি ও স্কুল ড্রেসের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন খলিফা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালিশের মাধ্যমে তাকে জরিমানা করেন এবং শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
কিন্তু কয়েকজনকে ফেরত দিলেও বাকিদের টাকা দিতে গড়িমসি করছেন খলিফা। এ জন্য তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়ার মা সাফিয়ে বেগম জানান, তার মোবাইলে টাকা আসছে, কিন্তু তিনি কোনো টাকা পাননি। পরে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটির অফিসে গেলে তারা জানায়, তার মোবাইলে টাকা আসছিল, কিন্তু কেউ তা উঠিয়ে নিয়ে গেছে।
সাফিয়ের দাবি, তার পিন নম্বর শুধু আবুলই জানতেন।
শিক্ষার্থী রোহান ও শ্রাবণীর ফুপু চায়না বেগম বলেন, ‘আমার ভাতিজার টাকা আসেনি। আর ভাতিজি ১ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে ১ হাজার পেয়েছে। এই ঘটনার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, ‘শিক্ষার্থীদের বই, খাতা ও স্কুল ড্রেস কেনার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দিয়েছে সরকার। সেই টাকা এজেন্ট আবুল আত্মসাৎ করেছে বলে অভিভাবকরা স্কুলে এসে অভিযোগ করেছেন। পরে আমরা স্থানীয় ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’
কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত আবুল বলেন, ‘আমি কিছু টাকা নিয়েছিলাম। আমার ভুল হয়েছে। এ জন্য আমি ক্ষমা চাই। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের কথামতো কিছু টাকা আমি দিয়ে দিয়েছি।’
ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও যদি কোনো শিক্ষার্থী টাকা না পায় তা হলে তাদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দাতুন নেছা রুপা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা হাতিয়ে নেয়ায় ওই এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলার ইউএনও মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী বা তাদের পরিবারের কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের (একাংশ) নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। কার্যনির্বাহী এই কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদ।
সোমবার নীল দল কার্যনির্বাহী পর্ষদ নির্বাচন-২০২২-এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. সৈয়দ আলম এ ফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে কোনো পদেই বিরোধী প্রার্থী না থাকায় সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
মোট ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সদস্যরা হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছগীর হোসেন খন্দকার, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামাল হোসেন।
এ ছাড়া রয়েছেন সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ঝুমুর আহমেদ, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমাম হোসেন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেওয়ান বদরুল হাসান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কে এম সুজাউদ্দিন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী পর্ষদের প্রথম সভায় সদস্যদের মধ্য থেকে সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে।
নির্বাচনে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এম এম গোলাম আদম ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার দায়ে বরিশালের এক শিক্ষককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শামিম আহমেদ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রহমান।
তিনি জানান, আপিল শর্তে আসামিদের ১৫ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আদালত।
সাজা পাওয়া আসামি হলেন বরিশাল সদর উপজেলার কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতিও।
২০১৯ সালে কাউনিয়া থানায় এই মামলা করেছিলেন কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আব্দুল বারেক।
সে বছর প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের অনুরোধ জানান বাদী। স্কুলে এই অনুষ্ঠান করায় অনীহা প্রকাশ করেন শফিকুল। পরে বাদী ও অন্য শিক্ষকদের চাপে জন্মদিন উদযাপনে রাজি হন তিনি।
ওই বছরের ১৭ মার্চ সকালে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে শিক্ষকরা শ্রদ্ধা জানান। এ সময় প্রধান শিক্ষক শফিকুল তাচ্ছিল্য করে বাম হাত দিয়ে একটি ফুল বঙ্গবন্ধুর ছবির সামনে ধরেন। উপস্থিত লোকজন এর প্রতিবাদ জানান। তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।
এতে বঙ্গবন্ধুর সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে বাদী মামলা করেন। সাতজনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত প্রধান শিক্ষক শফিকুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য