নড়াইলে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা এবং সাভারে শিক্ষক হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক নির্যাতনে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ হয়।
‘শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: নৈতিকতার অবক্ষয় ও সাম্প্রদায়িকতার ছড়াছড়ির শেষ কোথায়’ শীর্ষক সমাবেশে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহাও অংশ নেন।
মিহির লাল সাহা বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে আমি এখানে বক্তব্য দিচ্ছি, জানি না আমি কতটুকু নিরাপদ। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করছি। কারণ আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী। সনাতন ধর্মের প্রত্যেকটি শিক্ষক আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সাম্প্রদায়িকতাকে যদি শেকড় থেকে তুলে না আনা যায়, তাহলে এই সমসার সমাধান হবে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশ হয় পাকিস্তান হবে, নয় আফগানিস্তান হবে। এর সঙ্গে যে কুচক্রী মহল যুক্ত আছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।
‘উন্মুক্ত রাস্তায় জনসম্মুখে তাদের বিচার করা উচিত। তাহলেই শিক্ষা হবে।’
মিহির লাল বলেন, ‘বিচারহীনতার সমাজে কখন বিচার হবে? যারা বিচার করবেন, দেখা যায় তারাই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। প্রশাসন বলছে, ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।
‘ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আগে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরাতে হবে। তাদের আগে জুতার মালা পরিয়ে শিক্ষকের সামনে দাঁড় করাতে হবে। এটি হলে বিচারের প্রথম কাজ এগোবে।
'প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, শিক্ষক লাঞ্ছনার দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।'
শিক্ষক নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নীরবতার সমালোচনা করে অচিরেই ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার আহ্বান জানান অধ্যাপক মিহির লাল।
সমাবেশে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস বলেন, ‘যে প্রজন্ম শিক্ষককে জুতার মালা গলায় পরায়, শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে, সেই প্রজন্মের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ না জানানোর সমালোচনা করে কাজল দাস বলেন, ‘আজকে আমরা লজ্জিত। যেখানে শিক্ষক সমাজ এখানে দাঁড়ানোর কথা, সেখানে আমরা দাঁড়িয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা এই সাম্প্রদায়িকতাকে কখনো মেনে নেয়নি, নেবে না। যেকোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব।’
জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন বলেন, ‘শিক্ষকরা জাতির মেরুদণ্ড। স্ট্যাম্পের আঘাতে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া হচ্ছে। আমরা দেখছি, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে নিরীহ শিক্ষক। আজকে তারা মন খুলে পড়াতে পারেন না।
‘মনের ভাব প্রকাশ করতে গেলে, কথিত ধর্ম অবমাননার অপবাদ দিয়ে হয় গণপিটুনি খেতে হয়, নতুবা জেলে যেতে হয়। এই বিষদাঁত আমাদের ভেঙে দিতে হবে।’
আরও পড়ুন:নিরাপদ হলের দাবিতে অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে অধ্যক্ষের কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তিনটি করে আলাদা ছয়টি হল রয়েছে; যার প্রতিটি হলের অবস্থাই জরাজীর্ণ। প্রায় প্রতিনিয়তই হলগুলোর ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে অনেক সময় অনেক শিক্ষার্থী আহত হচ্ছেন।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, শিগগির তারা সংস্কারকাজ শুরু করবে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লিসা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রী হলের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের। এখন নিরাপদ হল আমাদের দাবি।’
শিক্ষার্থী এহসান উল্লাহ বলেন, ‘ছেলেদের তিনটি ছাত্রাবাসের মধ্যে হাবিবুর রহমান ছাত্রাবাসের অবস্থা খুবই খারাপ। গত রাতেও আমাদের এক সহপাঠীর রুমের পলেস্তারা খসে পড়ে, অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় সে। আমাদের একটাই দাবি, আমরা নিরাপদ হল চাই।’
তাহসিন আহম্মেদ বলেন, ‘হাবিবুর রহমান ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। দ্রুত এই ছাত্রদের পুনঃ আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
আবাসনসংকট নিরসনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, কিন্তু হল নির্মাণ করা হয়নি। আবাসনসংকট নিরসনে নতুন হল নির্মাণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাগর হোসেন বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে হল নির্মাণের দৃশ্যমান কাজ দেখতে চাই। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ হলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদ স্থানে রাখার দাবি জানাই। তা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সচিব মহোদয় কিছুক্ষণ আগে ফোন করে হোস্টেল সংস্কারের কথা বলেছেন। আমরা অতি দ্রুত কাজ শুরু করব। এ ছাড়া কলেজে দুটি হোস্টেল নির্মাণকাজ শিগগির শুরু হবে।’
আরও পড়ুন:প্রশাসনের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে মধ্যরাতে হলে ফিরে গেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
হল থেকে রাইস কুকার ও রান্নার অন্যান্য সরঞ্জাম সরানোর নির্দেশনা বাতিলসহ ১১ দফা দাবিতে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন অপরাজিতা হলের ছাত্রীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে অবস্থান নেন তারা। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেন অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও।
রাত দেড়টার দিকে শিক্ষর্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে লিখিত দেন অপরাজিতা হলের প্রভোস্ট রহিমা নুসরাত রিম্মি। পরে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যান।
শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে অপরাজিতা হলের টয়লেটে গিয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে গলায় বঁটি চালান। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় অপরাজিতা হলে দা, বঁটি, চাকু এমনকি রাইস কুকারও নিষিদ্ধ করে হল কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের রুমে রুমে গিয়ে সরঞ্জামগুলো জব্দ করা হয়। সবাইকে ডাইনিংয়ের খাবার খেতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরাজিতা হলের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের ডাইনিংয়ের খাবারের মান খুবই খারাপ। তার মধ্যে রাইস কুকার নিষিদ্ধ করা হলো। রান্নার সব সরঞ্জামও হলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।’
লীমা নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আন্দোলনে আসতে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছিল। আমরা হলের দুটি তালা ভেঙে নেমেছিলাম।’
আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক মো. শরীফ হাসান লিমন এসেছিলেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে ফিরে যান।
পরে রাত দেড়টায় প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে লিখিত দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১. রাইস কুকার ও হলের রান্নার সরঞ্জামাদি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
২. সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলায় ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও মহিলা আত্মীয়দের থাকার অনুমতি প্রদান করতে হবে।
৪. পানির পোকা ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
৫. প্রভোস্ট তার নিজ ডিসিপ্লিনের স্টুডেন্টদের ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত এবং অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করতে হবে ও ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৭. যেকোনো পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেয়া বন্ধ করতে হবে।
৮. যেকোনো পরিস্থিতিতে হলের ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৯. হলের মিল খাওয়া বাধ্যতামূলক করা যাবে না।
১০. আন্দোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেয়া যাবে না।
১১. এ দাবিগুলো না মানলে প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে রাইসকুকার ও রান্নার সরঞ্জাম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হল গেটের সামনে মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে ছাত্রীরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্ররাও। রাত ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে অপরাজিতা হলের টয়লেটে গিয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে গলায় বটি দিয়ে পোচ দেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় অপরাজিতা হলে দা, বটি, চাকু এমনকি রাইসকুকারও নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের রুমে গিয়ে সরঞ্জামগুলো জব্দ করা হয়। সবাইকে ডাইনিংয়ের খাবার খেতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরাজিতা হলের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের ডাইনিংয়ের খাবারের মান খুবই খারাপ। তার মধ্যে রাইসকুকার নিষিদ্ধ করা হলো। রান্নার সব সরঞ্জামও হলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হলে ফিরব না।’
লীমা নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আজকে আন্দোলনে আসতে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছিল। আমরা হলের দুটি তালা ভেঙে নেমেছি।’
আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক মো. শরীফ হাসান লিমন সেখানে যান।
তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রীদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেছিলাম। তবে তারা রাজি হয়নি।’
গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ‘বি’ ইউনিটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে পাসের হার ৫৬.২৬ শতাংশ।
মঙ্গলবার বিকেলে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ওয়েবাসাইটে ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ফলাফল দেখতে পারবেন।
গুচ্ছভুক্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাছিম আখতার এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাছিম আখতার জানান, বি ইউনিটের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাওয়া নম্বর ৮২.২৫ এবং সর্বনিম্ন মাইনাস (-) ১২.২৫। প্রথম স্থান অধিকার করেছেন দিগন্ত বিশ্বাস। তার রোল ৩০২২৪৯ ও কেন্দ্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার কলেজ ছিল দিনাজপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ।
এই ইউনিটে মোট আবেদন করেন ৯৫ হাজার ৬৩৭ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৮৫ হাজার ৫১২ জন যা মোট আবেদনকারীর ৯৪.৩৫ শতাংশ। এ ছাড়াও অনুপস্থিত ছিলেন ৫ হাজার ১২৫ জন অর্থাৎ ৫.৬৫ শতাংশ।
এই ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছেন ৪৮ হাজার ১০৬ জন। যা পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর ৫৬.২৬ শতাংশ। এ ছাড়াও অকৃতকার্য হয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৫১ জন। অর্থাৎ পরীক্ষার্থীদের ৪৩.৬৮ শতাংশ। অকৃতকার্য সকলেই ৩০ এর কম নম্বর পেয়েছেন।
এদিকে ৫৫ জন পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল হয়েছ। যা মোট পরীক্ষার্থীর ০.০৬ শতাংশ৷ এদের মধ্যে ৭ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার, রোল নম্বর ভুল লেখায় ১২ জনের খাতা বাতিল ও সেট নম্বর ভুল লিখায় ৩৬ জনের খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৩ জন শিক্ষার্থীকে ১০ লাখ টাকার শিক্ষা বৃত্তি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে সোমবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকবর হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতিত্ব করেন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ।
তিনি বলেন, ‘আমি খুব গরিব ঘর থেকে বড় হয়েছি। নতুন বই ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো। শিক্ষার্থীরা যেন বিদ্যানন্দের সহায়তা নিয়ে পড়াশোনা করে একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারেন, এই আশা করছি।’
উপ-উপাচার্য বলেন, ‘বিদ্যানন্দ শিক্ষা প্রকল্পের বাস্তবায়নে দরিদ্র, প্রতিবন্ধী ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বাছাই করায় খুশি। আশা রাখছি, বিদ্যানন্দ এ ধরনের কাজ অব্যাহত রাখবেন।’
চবি উপাচার্য বলেন, ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য যেভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে, তাতে আমরা এই প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ববোধ করি। বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশকে ধন্যবাদ এই মহতী উদ্যোগের জন্য।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণসভা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা এই শোকসভার আয়োজন করেন।
সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন।
শিক্ষার্থীরা দুপুরে পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। আসরের নামাজের পর বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণ সভা।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিয়াত রিজওয়ানা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ নিয়ে স্মৃতিচারণ পড়েন।
এরপর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে ১৯৫২ সালের একটি ঘটনা পড়ে শোনান ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়া আফরিন তাসমীন।
বক্তব্য দেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. মো. আশিকুর রহমান।
বাংলাদেশ আইসিটি ডিভিশনের নির্মাণ করা মুজিব আমার প্রেরণা শিরোনামের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠান আয়োজকদের মধ্য থেকে রাফিয়াত রিজওয়ানা বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় কম ছিল, এই সময়ের মধ্যে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-দর্শন নতুন প্রজন্ম ও যুবসমাজের কাছে পৌঁছে দিতে ‘বঙ্গবন্ধু চর্চা’ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
উপাচার্য বলেছেন, বঙ্গবন্ধু চর্চা বাড়ালে অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজসহ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের এক ঘৃণ্য দিন। এ দিনেই ঘাতকের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে শাহাদত বরণ করতে হয়। তাকে হত্যার মাধ্যমে জাতির ইতিহাসকে উল্টোপথে নেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়।’
জাতির পিতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের নানান দিক তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে তিনি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই শিক্ষা-দর্শনের হুবহু বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং তার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবন ও হলগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়, সেই সঙ্গে উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা।
সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকালে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়া উপাচার্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘মহাকালের খেরো খাতায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য