সিলেটে বানভাসি মানুষের সাহায্যার্থে পথনাটক প্রদর্শনের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নাট্যকলা বিভাগের সপ্তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের ভেতর, মূল ফটক, বাহাদুর শাহ পার্ক, আইনজীবী সমিতি, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ও সিএমএম কোর্টের সামনে এবং রায়সাহেব বাজার মোড়ে নাটকটি প্রদর্শন করা হয়।
রাস্তায় ঘুরে ঘুরে মঞ্চায়ন করা নাটকটির প্রতিপাদ্য বন্যার্তদের বর্তমান জীবনাবস্থা। নাটকটির মূল ভাবনায় ছিলেন রোহান, শান্ত, অর্ঘ্য ও বাবলু এবং নির্দেশনায় সৌমিক ও অর্ক রুদ্র।
অভিনয় করেছেন বিভাগের সপ্তম আবর্তনের অনামিকা, মিম, বাবলু, মারুফ, ঈশিতা, রোহান, শান্ত, সৌমিক, অর্ক রুদ্র, অর্ঘ্য এবং অষ্টম আবর্তনের হিয়া, মোস্তাকিন, ঐশী ও শৈলী। সংগীতে তাকরিম, পলক, নাভিদ, সুরাজ ও মৃদুল।
নাটকটি প্রদর্শনের সময় অর্থ সংগ্রহ এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নিশা, প্রীতি, মিঠুন, রাজিন ও সায়মা।
নাটকের নির্দেশক সৌমিক ও রুদ্র বলেন, ‘নাটক মানবিকতা ও আন্দোলনের কথা বলে। সুতরাং একজন নাট্যকর্মী হিসেবে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে এটা একার দায়িত্ব নয় বরং দর্শকদের মধ্যেও চেতনা ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টির উদ্যোগ থাকা দরকার। সেই তাগিদ থেকেই এমন আয়োজন।’
নাট্যকলার শিক্ষার্থী তাকরিম জানান, ‘আমরা পথনাটক করেছি। মানুষকে এটা বুঝাতে যে বন্যাদুর্গত এলাকায় কী কী সমস্যা হচ্ছে। তাদের অবস্থাটা আমরা পথনাটক এবং গানের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরেছি। পাশাপাশি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছি।’
নাটকটির প্রথম দিনের প্রদর্শনে অর্থ সংগ্রহ হয় ২৭ হাজার ৮২০ টাকা। বুধবারও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নাটকটি প্রদর্শন করা হবে।
ডেঙ্গু মশার বাহক এডিসের উৎস খুঁজতে দশ দিনব্যাপী ড্রোনের মাধ্যমে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন- ডিএনসিসি।
শনিবার থেকে শুরু হয়ে ১১ জুলাই পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সকাল থেকে ডিএনসিসির অঞ্চল-১, অঞ্চল-৩ ও অঞ্চল-৫ এ ড্রোনের সাহায্যে বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদ, ছাদ বাগান, ছাদে জমা পানি, চৌবাচ্চা এবং বৃষ্টির পানি বা পরিস্কার পানি জমতে পারে এ ধরনের স্থান ও পাত্র সার্ভে করা শুরু হয়েছে।
অঞ্চল-১ এর আওতাধীন উত্তরা সেক্টর-৪ এলাকায় মোট ৩২২টি বাড়িতে ড্রোন সার্ভে করা হয়। ১৮টি ছাদ বাগান সার্ভে করে ৫টিতে জমা পানি পাওয়া গেছে এবং একটি বাড়ির ছাদে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। সেসব বাড়ির মালিককে সাবধান করে দেয়া হয়েছে।
অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন এলাকায় ২৯১টি বাড়িতে ড্রোন সার্ভে করা হয়। ২৫টি ছাদ বাগান সার্ভে করে তিনটিতে জমা পানি পাওয়া গেছে, তবে লার্ভা পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন লালমাটিয়া এলাকায় ২৬৭টি বাড়িতে ড্রোন সার্ভে করা হয়। ১২টি ছাদ বাগান সার্ভে করে ৪টিতে জমা পানি পাওয়া গেলেও সেগুলোতে মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, অঞ্চল-৩ ও ৫ এর ড্রোনের সাহায্যে পরিচালিত সার্ভে কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক অঞ্চল-৫ লালমাটিয়া এলাকায় সার্ভে কার্যক্রম পরিচালনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা সেক্টর-৪ এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস সনাক্তকরণ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে মশার উৎস খুঁজতে দশ দিনব্যাপী ড্রোনের মাধ্যমে চিরুনি অভিযানের ঘোষণা দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যকার-গবেষক ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয়ের ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে সে মামলায়।
শুক্রবার উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করেন অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর স্ত্রী বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা হক।
মামলার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (অপারেশন) পার্থ প্রতিম।
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় হামলার অভিযোগে তার স্ত্রী অধ্যাপক ফাহমিদা হক বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করেছেন।’
এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরে ৬এ রোডের একটি মসজিদ থেকে শতাধিক মুসল্লি বেরিয়ে রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা চালায়।
বাসার সামনে মোটরসাইকেল রাখা ও দোকান বসতে না দেয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয় বলে পুলিশ জানায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রতন সিদ্দিকী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।
রতন সিদ্দিকী ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি আমিন মোহাম্মদ হিলালীর নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে শুক্রবার রাতে বের হওয়ার পর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে করা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে দুদকের করা মামলার ছয় নম্বর আসামি আমিন মোহাম্মদ হিলালী। তিনি আশালয় হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আমিন মোহাম্মদ নিখোঁজ হওয়ার কথা উল্লেখ করে তার ভাই রফিকুল ইসলাম হিলালী শুক্রবার রাত ১টায় উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) র্যাব, ডিবি, পিবিআই, কয়েকটি থানা ও দুদকে যোগাযোগ করা হলে সবাই জানিয়েছেন যে ভাই তাদের হেফাজতে নেই।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১১ নম্বর সেক্টরে আমার বাসা। ভাই আমার বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে তিনি অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। আমার বাসা থেকে অফিস কাছাকাছিই। হেঁটে যেতে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে। কিন্তু তিনি অফিসে যাননি।
‘শুক্রবার রাত ৮টা ২২ মিনিটে ড্রাইভারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ভাই ড্রাইভারকে ১০ মিনিট পর অফিসে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু ড্রাইভার অফিসে গিয়ে দেখেন যে ভাই অফিসে যাননি। তখন ড্রাইভার ফোন দিয়ে দেখেন ভাইয়ের নম্বরটি বন্ধ। ড্রাইভার বিষয়টি আমাকে জানানোর পর থানায় গিয়ে জিডি করলাম।’
রফিকুল ইসলাম জানান, ৮টা ২৯ মিনিটে আমিন মোহাম্মদ হিলালীর শেষ লোকেশন ছিল ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডে। এ জায়গাটির অবস্থান তার অফিস থেকে ২ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে।
আপনারা কাউকে সন্দেহ করছেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে সন্দেহ করছি না। কারণ আমাদের জানামতে তার কোনো শত্রু নেই। কারও সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদও হয়নি।’
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াসিন গাজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিন হিলালী নিখোঁজ হয়েছেন মর্মে গত রাতে তার ভাই থানায় এসে জিডি করেছেন। এখনও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’
অর্থ আত্মসাৎ মামলা যেভাবে
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামির তালিকায় আমিন মোহাম্মদ হিলালী ছাড়াও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন। পরবর্তীতে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন তারা।
আরও পড়ুন:জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের এক নম্বর গেটের সামনে বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীর মাতব্বর নামের যুবক নিহত হয়েছেন।
তানজিল পরিবহনের বাসের ধাক্কায় শনিবার সকালে নিহত হন তিনি।
৩৫ বছর বয়সী জাহাঙ্গীরের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পূর্বদি গ্রামে।
জাহাঙ্গীরের মামা মুহিদুল ইসলাম বলেন, বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন তার ভাগ্নে। সে লক্ষ্যে মেডিক্যাল পরীক্ষার উদ্দেশ্যে ফকিরাপুলে পানির ট্যাংকি এলাকায় যাচ্ছিলেন তিনি। পথে বায়তুল মোকাররমের এক নম্বর গেটের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় তানজিল পরিবহন একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জাহাঙ্গীর।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য যুবকের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, যুবককে ধাক্কা দেয়া বাসটি জব্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার সময় একাধিক ব্যাগ, লাগেজ নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে বিপাকে পড়েন অনেকে। ভারী ব্যাগ নিজে থেকে টানতে গেলে পোহাতে হয় ভোগান্তি। কুলি দিয়ে টানাতে গেলে খরচ করতে হয় টাকা।
এমন বাস্তবতা মাথায় রেখে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রীদের জন্য দেয়া হয়েছে ৫০টি ট্রলি। এখন থেকে এসব ট্রলিতে করে ব্যাগ নিতে পারবেন যাত্রীরা।
চীন থেকে আমদানি করা এসব ট্রলি শনিবার রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের কাছে হস্তান্তর করে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রেল মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজাতে চান। রেল মন্ত্রণালয়ে এবার ১৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে কক্সবাজার যাব (রেললাইন সম্পন্ন হবে); ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যেতে পারব।’
উপহারের ট্রলির বিষয়ে সুজন বলেন, ‘একসময়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের মালামাল আনা-নেয়ায় কুলির সিস্টেম ছিল। এখন সেটা নেই। ট্রলির মাধ্যমে লাগেজ-ব্যাগ আনার জন্য অত্যন্ত উন্নতমানের ট্রলি উপহার দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিমানবন্দরে গেলে যেমন নিজেদের মাল নিজেরাই বহন করি, সে রকমভাবে রেলেও যাত্রীদের সুবিধার্থে ট্রলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে মধুমতি ব্যাংক কিছু ট্রলি দিয়েছিল। এবার চায়না থেকে আমদানি করে উন্নতমানের ৫০টি ট্রলি দিল ইসলামী ব্যাংক।
‘ইসলামী ব্যাংকের এমডি আমার সঙ্গে দেখা করতে এলে আমি তাকে বলেছিলাম কিছু ট্রলি দেয়ার জন্য। তিনি কথা রেখেছেন। যাত্রীদের সেবায় সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারটি সবাইকে জানানোর জন্য আমিই বলেছিলাম আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রলিগুলো হস্তান্তরের জন্য। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই অনুষ্ঠান।’
মন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন পর ঈদুল আজহায় যাত্রীদের প্রধান চাহিদা এখন ট্রেন। এবার গার্মেন্টস কারখানায় একটা স্পেশাল ট্রেন যাবে, যাদের জন্য জয়দেবপুর থেকে টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের ডুয়েল গেজ ৬০টি কোচ আসছে। আরও ১০০টি পাইপলাইনে আছে।
‘আমাদের ডাবল লাইন এবং পদ্মা সেতু হয়ে গেলে (সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে) আমাদের সক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। তখন নিরাপদে সব যাত্রী ট্রেনের মাধ্যমে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন।’
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে অভিযোগ আসেনি দাবি করে সুজন বলেন, ‘গত ঈদুল ফিতরের সময় অনলাইনে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। এবার এখন পর্যন্ত সে ধরনের অভিযোগ পাইনি। গণমাধ্যমে দেখলাম অনেকেই অনলাইন মাধ্যমে টিকিট কাটতে পেরেছেন, তবে অনলাইনে কোনো ফাঁকফোকর পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।’
ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুল মওলা বলেন, ‘৪০ বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং সেক্টরে নম্বর ওয়ান। সারা দেশে একটি মেডিক্যাল কলেজ, পাঁচটি নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ ১৯টি হাসপাতাল আছে।
‘জাতির প্রয়োজনে সব সেক্টরে সহযোগিতা করবে ইসলামী ব্যাংক। আজকে তারই ধারাবাহিকতায় রেলওয়ে যাত্রীদের জন্য ট্রলি উপহার দিচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার মিজানুর রহমান ভূঁইয়াসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের শীষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:টিকিটের জন্য শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন আব্দুর রহিম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি না পেয়ে রাত কাটান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনেই। শনিবার সকাল হতেই ফের শুরু হয় টিকিট পাওয়ার লড়াই।
লাইনে দাঁড়িয়ে ‘সোনার হরিণের’ অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের এ ছাত্র। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অবসান হয় প্রতীক্ষার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে অবশেষে টিকিট ওঠে আব্দুর রহিমের হাতে।
কাউন্টারের সামনের ভিড় ঠেলে হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন জয়পুরহাটের টিকিট পাওয়া এ শিক্ষার্থী; নিউজবাংলার কাছে প্রকাশ করেন অভিব্যক্তি।
‘এত দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পেলাম! টিকিট তো নয়, মনে হচ্ছে সোনার হরিণ দিচ্ছে তারা। এত ভিড়!’, ক্লান্তি আর শঙ্কা ভুলে এক চিলতে হাসি দিয়ে কথাগুলো বলছিলেন আব্দুর রহিম।
‘গতকাল বিকাল ৪টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। তারপরও যে পেলাম, এতেই আলহামদুলিল্লাহ!’, যোগ করেন এ শিক্ষার্থী।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শুক্রবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দ্বিতীয় দিনের টিকিট বেচা শুরু হয় শনিবার সকাল ৮টা থেকে।
আগের দিনের মতো শনিবারও কমলাপুরে টিকিটপ্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বাড়ি ফেরার টিকিটের জন্য মরিয়া এসব মানুষের একজন দিনাজপুরের পার্বতীপুরের তানভীর।
অগ্রিম টিকিটের আশায় তিনিও লাইনে দাঁড়ান শুক্রবার বিকেলে। শনিবার সকালে টিকিট পাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন তিনি।
নিউজবাংলাকে তানভীর বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাব। গতকাল বিকেলে এসেছি, যাতে টিকিট পাই। কারণ সড়কপথে যানজট, দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। টিকিট পেয়ে ভালো লাগছে।’
শনিবার ভোররাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সিরাজগঞ্জের মানিক। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অপেক্ষার পর ৬ জুলাইয়ের কাঙ্ক্ষিত সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের টিকিট পান তিনি।
হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘টিকিট হাতে পাওয়ার পর কষ্ট ভুলে গেছি। এখন বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারব।’
লাইনে রেলের কর্মীও
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের অনুসন্ধান বিভাগের কর্মী আনিসুরও অন্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছেন টিকিটের লাইনে। রেলওয়ের শৃঙ্খলার উদাহরণ দিতে গিয়ে গর্বিত স্বরে তিনি বলেন, ‘রেলের কর্মী বলেই যে লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকিট পাব, তা নয়। আমাদেরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে টিকিট নিতে হচ্ছে।’
কবে কোন দিনের টিকিট
টিকিট বিক্রি শুরুর দিন ১ জুলাই দেয়া হয় ৫ জুলাইয়ের টিকিট। ২ জুলাই দেয়া হচ্ছে ৬ জুলাইয়ের টিকিট।
৩ জুলাই ৭ জুলাইয়ের, ৪ জুলাই দেয়া হবে ৮ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট। ৫ জুলাই দেয়া হবে ৯ জুলাইয়ের টিকিট।
ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওই দিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে।
এর বাইরে ৮ জুলাইয়ে ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে।
১১ জুলাই সীমিত পরিসরে কয়েকটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করবে। ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলবে।
কোথায় কোন গন্তব্যের টিকিট
ঢাকায় ছয়টি স্টেশন এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে থেকে ঈদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কমলাপুর শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মিলছে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে মিলছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে পঞ্চগড়ের ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট।
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলিস্তানে ট্রাকের ধাক্কায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১২টার দিকে গুলিস্তান পাতাল মার্কেটের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, আহত অবস্থায় ৩০ বছর বয়সী ওই পথচারীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পথশিশুরা। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা পথশিশুরা জানিয়েছে, রাতে পাতাল মার্কেটের সামনে একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। তারা দেখতে পেয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম পরিচয় জানাতে পারেনি তারা।’
মন্তব্য