পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম কর্মজীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোই কর্মজীবনে কাজে আসবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা করবে। সহশিক্ষা শুধু মেধার বিকাশ ঘটায় না, সামাজিক মূল্যবোধেও দক্ষ করে তোলে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত বেশি ক্রীড়া-সংস্কৃতি, বইপড়া ও সহশিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে, শিক্ষার্থীরা তত বেশি সামাজিক ব্যাধি, মাদক, অসামাজিক কাজ থেকে বিরত থাকবে। এসব প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করেছে, তারা পাঠ্যবইয়ের বাইরেও কিছু না কিছু শিখেছে।’
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২ এর জাতীয় পর্যায়ের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমদ এবং আরও অনেকে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যত বেশি ক্রীড়া-সংস্কৃতি, বইপড়া ও সহশিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে, শিক্ষার্থীদের তত বেশি অসামাজিক কাজ থেকে বিরত রাখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সকল প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করে তারা পাঠ্যবইয়ের বাইরেও কিছু না কিছু শেখে যা কর্মজীবনে পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে কাজে লাগে। এতে শিক্ষার গুণগতমানও বাড়ে।’
‘এবারের শিক্ষাসপ্তাহের পুরষ্কারপ্রাপ্তদের বেশিরভাগ ঢাকার বাইরের। প্রতিভা কোনো নিদিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে না। আজকের ফলাফল সেটাই প্রমাণ করে।’
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক গতানুগতিক শিক্ষার গন্ডির বাইরে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে। শ্রেণী কক্ষের দক্ষতা কর্মজীবনে খুব একটা কাজে আসে না। কর্মজীবনে মূলত কাজে আসে ক্লাসের বাইরের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের অর্জনগুলো।’
‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, জাতির পিতার যে দর্শন ছিল 'এপ্লাইড স্কিল, এপ্লাইড নলেজ, বিজ্ঞান মনস্কতা' এগুলো আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ও কারিকুলামে নিয়ে আসা। আমাদের শিক্ষকমণ্ডলীকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আগামী প্রজন্মকে এসব দক্ষতা অনুযায়ী শিখিয়ে নলেজ ইকোনমিতে প্রস্তুত করা। সেই নলেজ ইকোনমিকতে সবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৮১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ২০০৬ সালের মোট বাজেটের থেকেও ২১ হাজার কোটি টাকা বেশি। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অধীনেও শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়ে চলছে। এই বিনোয়োগকে সুষ্ঠ ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত সকল পর্যায়ে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচ করতে হবে।’
সচিব কামাল হোসেন বলেন, ‘আলোকিত মানুষ হতে হলে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই, খেলাধুলাসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে হবে। কিন্তু এখনকার বাচ্চারা মোবাইল-ইন্টারনেট ও ভার্চুয়াল গেমে মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ছে। যা জাতির জন্য অশুভ ইঙ্গিত। তাই শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত করতে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাজেট ২০২২-২৩ : শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি।
সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধে কোভিড-পরবর্তী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বলা হয়, এ ক্ষেত্রে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে বরাদ্দ অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিক্ষার মাধ্যমে একটি কল্যাণকর ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য তিনি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্ভাবনের প্রাণকেন্দ্র। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও গবেষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত ছাত্রকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ রোববার দুই দিনের রিমান্ড শেষে সাত আসামিকে আদালতে হাজির করে। আসামিদের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। অন্যদিকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নওশের আলী।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা ইসলাম উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আসামিদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান সাব্বির, অন্তর সরকার, নাজমুল হক, হাসিবুর রহমান, তুষার আহমেদ বাপ্পি, শফিকুল আলম খন্দকার ও ফরহাদ হোসেন শান্ত। পুলিশ গত বুধবার রাতে একটি মেসে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে তাদের।
এর আগে বৃহস্পতিবার সাত শিক্ষার্থীকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
মামলায় বলা হয়েছে, গত ১২ মে সকালে যাত্রাবাড়ী এলাকায় জামায়াত-শিবিরের দুই শতাধিক নেতাকর্মী রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। তারা একটি লেগুনা গাড়ি ভাঙচুর করে। বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। যাত্রাবাড়ী থানার এসআই সাব্বির এ ঘটনায় মামলা করেন। সে মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে জবির সাত শিক্ষার্থীকে।
আরও পড়ুন:শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তর ও দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবার মান বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। একই অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘সেবার মান বাড়াতে হবে। কোনো সেবাগ্রহীতা যেন আমাদের কাছে বিমুখ হয়ে ফিরে না যান। যদি সেবাগ্রহীতাকে তার কাজ করে দেয়া সম্ভব নাও হয়, তবু তিনি যেন তৃপ্তি নিয়ে ফেরত যেতে পারেন।’
রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন ২৩ টি অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘সেবা নিয়ে পাবলিক পারসেপশন ভালো না, প্রভাবমুক্ত ও ভোগান্তিহীন সেবা দিতে হবে। যারা প্রন্তিক পর্যায়ের সেবা গ্রহিতা তারা সেবা পাচ্ছে না। আমরা ভোগান্তিহীনভাবে সেবা দিতে পারছি না।
‘জেলা ও উপজেলার শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের বাজেট বাড়ছে কিন্তু সেবার মান বাড়ছে না। অর্থ অনেক খরচ হচ্ছে অথচ প্রভাবমুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে পারছি না। প্রভাবমুক্ত ও ভোগান্তিহীন সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
সেবার মান ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমরা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিয়েছি ২৩৩ জনকে। এই পদোন্নতির জন্য আমরা ছাড়পত্র পেয়েছিলাম ডিসেম্বর মাসে। আমরা যদি জানুয়ারিতে পদোন্নতি দিয়ে দিতাম, কোনো সমস্যা ছিল না। এতে কোনও বাধা ছিল না আমাদের। আমরা দিতে দেরি করায় আট জন মারা গেছেন, ২৪ জন পিআরএল এ গেছেন। শেষ পর্যন্ত যখন প্রস্তাব পাঠাই তখন আরও একজন পিআরএল এ চলে গেছেন। আমার মনে হয়, তাদের এ ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করায় আমাদের জবাব দিতে হবে।’
২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপ্রিএ) চূড়ান্ত মূল্যায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সরকারের ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ফল সোমবার প্রকাশ করা হবে।
রোববার বিকেলে জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করবেন।
চলতি মাসের ৪ তারিখ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সাতটি বিভাগীয় শহরে খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়।
‘খ’ ইউনিটে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৫৫১ জন। আর মোট আসন সংখ্যা ১৭৮৮টি। সেক্ষেত্রে এ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়েছেন প্রায় ৩৩জন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) সই করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে রোববার বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক ও ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সফলতা ও দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে সনদপত্র পায় ইউজিসি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ড. ফেরদৌস জামান অভিনন্দন ও সনদপত্র নেন।
এপিএ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অধীন ২৩টি দপ্তর/অধিদপ্তর/সংস্থার সঙ্গেও রোববার চুক্তি সই করে।
ইউজিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, এপিএর মূল উদ্দেশ্য সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎকর্ষ সাধন।
আরও পড়ুন:সিলেটের সবচেয়ে বড় বইয়ের মার্কেট রাজা ম্যানশন। গত ১৮ জুন এই মার্কেটে বন্যার পানি ঢুকে নিচের তলা পুরোপুরি ডুবে যায়। এতে কোটি টাকার বই নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গত ১৫ জুন থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। এর দুদিন পর থেকে ভয়ংকর রূপ নেয় বন্যা। ১৮ জুন সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরের উঁচু এলাকাগুলোও। ওইদিন পানি ঢুকে পড়ে নগরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজারের বেশির ভাগ শপিং মল ও দোকানপাটে।
পানি ঢোকে জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশনেও। মার্কেটের নিচতলার অর্ধশত বইয়ের দোকান, ছাপাখানা ও কম্পিউটারের দোকানে পানি ঢুকে পড়ে।
রাজা ম্যানশনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১৬ জুন বৃহস্পতিবার রাতে তারা জিন্দাবাজার এলাকা পানিশূন্য অবস্থায় দেখে ঘরে ফেরেন। পরের দিন শুক্রবার মার্কেট বন্ধ ছিল। আর ১৮ জুন শনিবার সকালে এসে দেখতে পান পানিতে তলিয়ে গেছে মার্কেট। পানি ঢুকে পড়েছে নিচতলার সব দোকানে। অনেক দোকানে কোমর সমান পানিও জমা হয়।
তারা আরও জানান, পানিতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বই ব্যবসায়ীরা। বইয়ের দোকানের নিচের তাকগুলোয় থাকা সব বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে।
শনিবার রাজা ম্যানশনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেট থেকে পানি নেমে গেছে। ভিজে নষ্ট হওয়া বই ভ্যানে করে সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু বই আবার রোদে শুকানোর চেষ্টা করছেন তারা।
এ সময় কথা হয় মার্কেটের শুভেচ্ছা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী তানজিল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার দোকান মার্কেটের একেবারে সম্মুখে। তাই বন্যার পানি প্রথমে আমার দোকানেই ঢুকে পড়ে। পানিতে দোকানের প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আর ব্যবহারের উপযোগী নয়।’
তিনি বলেন, ‘রাজা ম্যানশনে বন্যার পানি ঢুকবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। অথচ নিমিষেই পানিতে তলিয়ে গেল মার্কেটের পুরো নিচতলা। এখন ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবো তা বুঝতে পারছি না।’
প্যারাগন লাইব্রেরির বিক্রেতা আকাশ আহমদ বলেন, ‘আমাদের অন্তত ৭ লাখ টাকার বই নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হওয়া বইগুলো পুরনো কাগজের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। যেগুলো অল্প ভিজেছে সেগুলো শুকিয়ে ঠিক করা যায় কি না সে চেষ্টা করছি।’
জানা গেছে, বইয়ের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে মার্কেটের নিচতলার ছাপাখানা ও কম্পিউটার ব্যবসায়ীদেরও।
প্যারাডাইস প্রেস নামের একটি ছাপাখানার কর্মকর্তা সুমন বক্স বলেন, ‘আমাদের প্রেস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশে পানি ঢুকে গেছে। এগুলোর মেরামত কাজ চলছে। ফলে ছাপাখানা আপাতত বন্ধ আছে।’
রাজা ম্যানশন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন রহিম বলেন, ‘বন্যার পানিতে মার্কেটের নিচতলার সব দোকান এবং প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কেবল বই ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার মতো।’
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিহিত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার আগেও আমরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। এবার বন্যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হলো। বন্যা আমাদের সব মূলধন নিয়ে চলে গেল।’
আরও পড়ুন:বিশ্বাবিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলেক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সচিবালয়ে 'মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার এ কথা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছিলেন, তার আগেই আমরা পুলিশের ডোপ টেস্ট শুরু করে দিয়েছিলাম। এরপর আমরা প্রধানমন্ত্রী কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, চাকরিতে যারা নিয়োগ পাবে তাদের ডোপ টেস্ট করার। সিভিল সার্জন যে সকল পরীক্ষা করেন, সেখানেও ডোপ টেস্ট করবে। সেটাও আমাদের কাছে চলে আসছে। এটা ব্যাপকভাবে চালু করতে অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। সেই প্রচেষ্টা আমরা শুরু করেছি।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন করা হচ্ছে। আইনে যা থাকবে, সে অনুযায়ী তাদের ডোপ টেস্ট করা হবে। তাদের ভর্তির সময়
যে মেডিকেল টেস্ট করা হবে, তার এই ডোপ টেস্ট থাকবে।’
মন্তব্য