নিজেদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে একাট্টা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। সামনের দিনে আন্দোলন আরও জোরদার করতে এরই মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই দলটির ছাত্র সংগঠন- জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাসমুখী করতে গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটেও দেয়া হচ্ছে ছাত্রদলের নতুন কমিটি। তারই অংশ হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণের ছয় বছর পর কমিটি পেতে যাচ্ছে ছাত্রদলের ‘সুপার ইউনিট’ খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এরই মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকেও বসেছে। তবে কমিটি ঘোষণার খবরে নেতা-কর্মীরা আনন্দিত হলেও ‘অঞ্চলপ্রীতি’ ও বয়স্কদের দিয়ে কমিটি গঠনের গুঞ্জনে হতাশ হয়েছেন তারা।
এদিকে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটে বিবাহিত, অছাত্র ও বরিশাল ব্লকের আধিপত্য নিয়ে নানা বিতর্কের শেষ হচ্ছে না। সদ্যঘোষিত আটটি ইউনিটের ১৬টি শীর্ষপদের মধ্যে ১০টিতেই বরিশাল অঞ্চল থেকে এবং তিনটিতে যশোর অঞ্চল থেকে নেতাদের পদায়ন করা হয়েছে, যা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতেও করা হতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন পদপ্রত্যাশীরা। এমনকি বরিশাল অঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত জুনিয়র পদপ্রত্যাশী না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পরও কলেজের শিক্ষার্থী দিয়ে কমিটি দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। চলতি মাসেই এই কমিটির ঘোষণা হতে পারে।
এর আগে গত ১৮ মে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পাস করা নেতা-কর্মীদের থেকে সিভি চেয়েছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর ২ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এক বৈঠকে বসে ছাত্রদলের সুপার ফাইভ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সেখানে মোটামুটিভাবে কারা পরবর্তী এই ইউনিটের নেতৃত্বে আসছেন তা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে অভিযোগ আছে, গত খোকন-শ্যামল কমিটিতে ছাত্রদলের পদ পেতে ২০০৫-এর পরবর্তী সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষ ক্রাইটেরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। তবে অঞ্চলপ্রীতির কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ২০০১ সালের মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষ থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়নের জন্য ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষ ক্রাইটেরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতৃত্বের জন্য ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এই বর্ষের শিক্ষার্থীরা মূলত জগন্নাথ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। সে হিসাবে ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নেতৃত্ব আসা মানে হলো কলেজের শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা। এ ছাড়া ২০০১ সালে যারা মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের বয়স এখন প্রায় ৩৮-এর কাছাকাছি।
সর্বশেষ ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন এফ এম শরিফুল ইসলাম। সেই কমিটিসহ পরে ছাত্রলীগের তিনটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের বয়স্কদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়ার গুঞ্জনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুনিয়র পদপ্রত্যাশী ও নেতা-কর্মীরা।
তারা বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরাই ক্যাম্পাসমুখী ছিলাম। নানা বাধা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছি। কলেজের বড় ভাইয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। ছাত্রলীগের রোষানলে তারা পড়েন না। আমরা ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসি এবং জুনিয়রদের সংগঠিত করেছি। অছাত্র আর নির্দিষ্ট অঞ্চলের লোক দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল চলতে পারে না।
তবে অঞ্চল সিন্ডিকেট বাদ দিয়ে ত্যাগী ও অভিজ্ঞ তরুণদের দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। তিনি বলেন, যারা প্রার্থী তারা দৌড়ঝাঁপ করছে, তবে এখনো কমিটি চূড়ান্ত করা হয়নি। অঞ্চল দেখে নয়, বরং যারা যোগ্য ও ত্যাগী তাদের দিয়েই কমিটি হবে বলে তিনি জানান।
কলেজ থেকে কমিটি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অভিজ্ঞ তরুণদের দিয়েই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি। এমন কমিটি দেওয়া হবে, যাতে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের শীর্ষ পদে আলোচনায় আছেন ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আলী হাওলাদার আলী, আসাদুজ্জামান আসলাম, মিল্লাত ভূইয়া ও সুজন মোল্লা। তারা চারজনই জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ২০০৫ সালের আগের মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ফিন্যান্স বিভাগের কাজী জিয়াউদ্দিন বাসেত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হিমেল আলোচনায় রয়েছেন। তারা উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ ব্যাচ ও ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে আলোচনায় থাকা শামসুল আরেফিন ও শাহাদাত হোসেন ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদের সবাই ২০০৫ সালের পরবর্তী সময়ে মাধ্যমিক শেষ করেছেন।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি করা হয়। এতে রফিকুল ইসলাম রফিককে সভাপতি ও আসিফ রহমান বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। গত বছরের ১৫ অক্টোবর শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে নিম্ন মানে শীর্ষে না থাকলেও অস্বাস্থ্যকরই রয়ে গেছে ঢাকার বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ১২০ স্কোর নিয়ে ১২২টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে অষ্টম ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল নেপালের কাঠমান্ডু, চীনের বেইজিং, ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১২০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল ঢাকার বাতাস।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেটে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে আহত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের বাম পায়ের কোনো আঙুলই রাখার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রোববার ঢাকা মেডিক্যাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আহত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের বাম পায়ের আঙুল যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে পাঁচটা আঙুলের কোনটাই রাখা সম্ভব না। এছাড়া ডান পায়ের বুড়ো আঙুল ও হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ডা. বিধান সরকার বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগ, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ ও ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। বর্তমানে তিনি অপারেশন থিয়েটারে আছেন। তবে তার অবস্থা স্ট্র্যাবল। এ ছাড়া বাম পায়ের পাতার টিস্যুগুলো নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেটে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পায়ের আঙুল কাটা পড়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের (৬০)।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মো. হারুন অর রশিদ জানান, দিনাজপুর ফুলবাড়িয়া গিয়েছিলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিভিন্ন সময় কয়লা খনির শ্রমিকদের মৃত্যুতে দিনাজপুরে শনিবার একটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। রোববার দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থেকে থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন।
আনু মুহাম্মদের সাথে থাকা মো. মাহাতাব বলেন,‘ট্রেনটি খিলগাঁও ক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে গতি কমিয়ে দেয়। তখন সেখানে ট্রেন থেকে নামছিলেন তিনি। তবে নামার সময় তার পা পিছলে মাজা পর্যন্ত চাকার নিচে চলে যায়। এমন সময় ট্রেনটি চলতে শুরু করে। দেখতে পেয়ে দ্রুত ট্রেনের নিচ থেকে বের করতে করতে চাকার নিচে পায়ের আঙুলগুলো কাটা পরে।
দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল ক্যায়াজুয়ালিটি বিভাগের ১০৫ নম্বর কক্ষে আহত আনু মুহাম্মদকে অপারেশন থিয়েটার (ওটিতে) নেয়া হয়। দুই ঘণ্টা অস্ত্রোপচার শেষে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে পোস্ট অপারেটিভ নেয়া হয় তাকে। তিনি বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে বাম পায়ের আঙুল কাটা পড়েছে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের।
কমলাপুর যাওয়ার জন্য ট্রেনে ওঠার সময় রোববার বেলা ১১টার দিকে অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ শিক্ষক।
পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় তাকে, যেখানে এই মুহূর্তে চিকিৎসা চলছে তার।
আনু মুহাম্মদকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী মাহতাব বলেন, ‘খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ধীরগতিতে চলা একটি ট্রেন কমলাপুরের দিকে যাওয়ার সময় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ওই ট্রেনে উঠতে যান। ওই সময় পা পিছলে চাকার নিচে পা চলে যায়। এতে তার বাম পায়ের আঙুল থেঁতলে যায় এবং কাটা পড়ে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ মিয়া বলেন, ‘খিলগাঁও রেলগেট থেকে ট্রেনে পায়ের আঙুল কাটা অবস্থায় আনু মুহাম্মদকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
রাজধানীর কদমতলীর একটি বাসায় শনিবার এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) সুইচ অন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
নামা শ্যামপুর এলাকায় গতকাল রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ওই সময় আহত হয়েছে ১০ বছর বয়সী এক শিশু।
প্রাণ হারানো তুলি আক্তার (৩২) এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী ছিলেন।
তুলির স্বামী শাহিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাসা কদমতলী থানাধীন নামা শ্যামপুর বরইতলা হাজী কফিল উদ্দিন রোডে। রাতে আমার স্ত্রী বাথরুম থেকে এসে এসির সুইচ দিতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শরীর ঝাঁকুনি দেয়ার সময় আমার মেয়ে সায়না উদ্ধার করতে যায়।
‘পরে তারা দুজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে ফ্লোরে পড়ে গেলে আমার স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় দ্রুত ঢামেকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে ঘণ্টাখানেক পরে সে সুস্থ হয়ে ওঠে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ মিয়া বলেন, ‘মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য