ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে এক নারীকে হেনস্তা করার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন।
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলে নারী গণমাধ্যমকর্মী হেনস্তার বিচার চাই’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক অর্ণি আনজুম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাস দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক নারী গণমাধ্যমকর্মী। তিনি রিকশা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমানের সামনে এলে মোটরসাইকেলে আসা এক ব্যক্তি টান দিয়ে তার পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এরপর তাকে গালি দিতে দিতে চলে যায় ওই নারী হেনস্তাকারী।’
অর্নি বলেন, ‘একের পর এক নারী হেনস্তার ঘটনার বিচার না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা আমাদের দেখতে হয়েছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্ত করে এই হেনস্তাকারীর উপযুক্ত বিচার করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের দাবি, ক্যাম্পাসে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আর তা করতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।’
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি শ্যামজিৎ পাল শুভ্র বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নারী শিক্ষার্থীর জন্য জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি মোড়ে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। কিন্তু ঘটনার এতোদিন পরও কারা এই ঘটনায় জড়িত সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শনাক্ত করতে পারেনি।
শুধু এই ঘটনা নয়, পহেলা বৈশাখেও এই ক্যাম্পাসে নারীদের হেনস্তা করা হয়। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। আমি এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকছি যেখানে আমার ছোট বোনকে পড়াবো সেই সাহস পাই না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক দাবি করছি।’
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৯ বছরের এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে দুই জনকে আসামি করে মামলাটি করেন শিশুর মা। শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী। আল মাহি নামে এক যুবকের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ২৯ জুন রাতে শিশুটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, আড়াইহাজার উপজেলার ছনপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে আল মাহি ও আব্দুর রশিদের ছেলে মোহাম্মদ আছলাম।
এজাহারে বলা হয়েছে, শিশুটি ২৯ জুন রাত আটটার দিকে প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল আসামি আল মাহির বাড়িতে। সেখানে অবস্থান করছিল আছলাম নামের এক ছাত্র। পড়ার রুমে শিশুকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে মাহি ও আছলাম। পরে তাকে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে কসম করানো হয় ঘটনা কাউকে না জানাতে।
শিশুটি রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়িতে ফিরে মাকে ঘটনা জানায়। এরপর বাবাসহ অন্য আত্মীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন।
ওসি আজিজুল হক বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে প্রথমে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়। সেখানে তারা নিজেরা মিমাংসার চেষ্টা করেন। মিমাংসা না হলে শিশুর মা থানায় মামলা করেন। এর আগেই আসামিরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।’
শিশুর মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পরদিন স্থানীয় কয়েকজন আমাদের বাড়িতে মিমাংসা করতে এসেছিলেন। কিন্তু আমি বিচার চাই, তাই মামলা করেছি।’
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের সালথায় পাঁচ টাকার লোভ ধরিয়ে সাত বছরের এক শিশুকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তের নাম দেলোয়ার হোসেন কুমকুম, বয়স ৫০ বছর।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু জানান, শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার সময় দেলোয়ার শিশুটির হাতে পাঁচ টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে বাড়ির পাশে একটি গরুর ফার্মে নিয়ে ‘ধর্ষণ’ করে।
এভাবে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকবার শিশুটিকে ‘ধর্ষণ’ করা হয়েছে জানিয়ে ওই চেয়ারম্যান বলেন, ‘শিশুটি নিজে আমাকে ঘটনাটি জানায়। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেলে শুক্রবার রাতে দেলোয়ারকে ধরে মারধর করে ছেড়ে দেয়।’
শিশুটির মা বলেন, ‘স্থানীয় মাতুব্বরেরা ঘটনা মীমাংসা করে দিতে চাইলে তাতে প্রথমে রাজি না হওয়ায় আমার গলায় দেলোয়ার ছুরি ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ভয়ে আমি মীমাংসা করতে বাধ্য হই, তবে এখন আমি চাই মামলা করতে।’
পরে এ খবরটি স্থানীয় সংবাদকর্মী ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে থানা পুলিশ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। পরে শিশুর বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অভিযুক্ত দেলোয়ারকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, ‘শিশুকে ধর্ষণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন কুমকুম মিয়াকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরের বিএসএমএমসি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও মামলা করা হয়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যকার-গবেষক ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয়ের ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে সে মামলায়।
শুক্রবার উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করেন অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর স্ত্রী বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা হক।
মামলার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (অপারেশন) পার্থ প্রতিম।
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় হামলার অভিযোগে তার স্ত্রী অধ্যাপক ফাহমিদা হক বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করেছেন।’
এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরে ৬এ রোডের একটি মসজিদ থেকে শতাধিক মুসল্লি বেরিয়ে রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা চালায়।
বাসার সামনে মোটরসাইকেল রাখা ও দোকান বসতে না দেয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয় বলে পুলিশ জানায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রতন সিদ্দিকী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।
রতন সিদ্দিকী ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চায়না আক্তার নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাবার বাড়িতে গলায় ফাঁস নিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা পুলিশের।
শনিবার বেলা ৩টার দিকে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের বেরুন্ডী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সিংগাইর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনোহর আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘চায়না আক্তার সিংগাইর পৌরসভার গোবিন্দল এলাকার জাফর মিয়ার স্ত্রী। শনিবার দুপুরে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন চায়না। সেখানে একটি বসতঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাকে দেখে থানায় খবর দেন স্বজনরা।
‘তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার জেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি আমিন মোহাম্মদ হিলালীর নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে শুক্রবার রাতে বের হওয়ার পর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে করা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে দুদকের করা মামলার ছয় নম্বর আসামি আমিন মোহাম্মদ হিলালী। তিনি আশালয় হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আমিন মোহাম্মদ নিখোঁজ হওয়ার কথা উল্লেখ করে তার ভাই রফিকুল ইসলাম হিলালী শুক্রবার রাত ১টায় উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) র্যাব, ডিবি, পিবিআই, কয়েকটি থানা ও দুদকে যোগাযোগ করা হলে সবাই জানিয়েছেন যে ভাই তাদের হেফাজতে নেই।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১১ নম্বর সেক্টরে আমার বাসা। ভাই আমার বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে তিনি অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। আমার বাসা থেকে অফিস কাছাকাছিই। হেঁটে যেতে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে। কিন্তু তিনি অফিসে যাননি।
‘শুক্রবার রাত ৮টা ২২ মিনিটে ড্রাইভারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ভাই ড্রাইভারকে ১০ মিনিট পর অফিসে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু ড্রাইভার অফিসে গিয়ে দেখেন যে ভাই অফিসে যাননি। তখন ড্রাইভার ফোন দিয়ে দেখেন ভাইয়ের নম্বরটি বন্ধ। ড্রাইভার বিষয়টি আমাকে জানানোর পর থানায় গিয়ে জিডি করলাম।’
রফিকুল ইসলাম জানান, ৮টা ২৯ মিনিটে আমিন মোহাম্মদ হিলালীর শেষ লোকেশন ছিল ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডে। এ জায়গাটির অবস্থান তার অফিস থেকে ২ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে।
আপনারা কাউকে সন্দেহ করছেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে সন্দেহ করছি না। কারণ আমাদের জানামতে তার কোনো শত্রু নেই। কারও সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদও হয়নি।’
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াসিন গাজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিন হিলালী নিখোঁজ হয়েছেন মর্মে গত রাতে তার ভাই থানায় এসে জিডি করেছেন। এখনও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’
অর্থ আত্মসাৎ মামলা যেভাবে
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামির তালিকায় আমিন মোহাম্মদ হিলালী ছাড়াও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন। পরবর্তীতে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন তারা।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী মানবাধিকারকর্মীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মুরাদনগর থানায় শনিবার সকালে মামলার পর বিকেলে উপজেলার ত্রিশগ্রাম থেকে জামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাশিম জানান, শনিবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের পরিদর্শক মজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুমিল্লার ৮ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ ওমর ফারুক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
গ্রেপ্তার ৩০ বছরের জামাল হোসেনের বাড়ি উপজেলার ত্রিশগ্রামে। মামলার এজাহারভুক্ত ৭ নম্বর আসামি তিনি।
২৮ জুন রাতে নবীপুর (পশ্চিম) ইউনিয়নের কোম্পানীগঞ্জ বাজারে ইউপি চেয়ারম্যানের সালিশে ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশনের কর্মী মরিয়ম বেগমকে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
মরিয়ম বলেন, ‘নবীপুর (পশ্চিম) ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেনের সামনে তার ভাতিজা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার দেলোয়ার হোসেন দলবল নিয়ে আমার ওপর চড়াও হয়।’
এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, দোকানের সামনে কয়েকজন মানুষের জটলা। এর মধ্যে থেকে তিন ব্যক্তি বোরকা পরা এক নারীকে ধরার চেষ্টা করলে তিনি ওই দোকানের ভেতর ঢুকে পড়েন। এ সময় দেলোয়ারের লোকজন তার বোরকা ধরে টানাটানি করতে থাকলে তাদের বাধা দেন জাকির। একপর্যায়ে দেলোয়ার ও তার লোকজন দোকান থেকে ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যান।
শনিবার সকালে মুরাদনগর থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছেন মরিয়ম।
আসামিরা হলেন উপজেলার উত্তর ত্রিশগ্রামের মেম্বারের ছেলে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন, তার ছোট ভাই সুমন সরকার, রাসেল মিয়া, সুধন মিয়ার ছেলে হাবিব মিয়া, হাসু মিয়ার ছেলে হেলাল মিয়া, তবদল মিয়ার ছেলে রনি মিয়া, লতু মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন।
যদিও ঘটনার পর থানায় গেলেও পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
ওসি আবুল হাশিম বলেন, ‘একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসমিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে স্থানীয় এক কাউন্সিলরের বাসা থেকে তার পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মধ্যম সরাইপাড়ার আমিন ভবন থেকে শনিবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
২২ বছর বয়সী নিহত রেহনুমা ফেরদৌস সরাইপাড়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আমিনের ছেলে নওশাদ আমিনের স্ত্রী। রেহনুমার বাবা তারেক ইমতিয়াজ ইমু আলকরন ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি।
পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকালে বাসার খাটে মরদেহটি পেয়েছি। নিহতের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল, তবে শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বশুরবাড়ির লোকের দাবি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
‘এখনও রেহনুমার পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি রেহনুমার পরিবারের।
তার বাবা তারেক বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে তারা আমার মেয়েকে মানসিক নির্যাতন করত। কয়েকবার পারিবারিকভাবে বৈঠক করে এটা সমাধানের চেষ্টা করেছি আমরা।
‘এমনকি গত ঈদের তিন দিন পর সর্বশেষ বৈঠকটা করেন সাবেক সিটি মেয়র নাছির ভাই। তার পরও ওরা আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। এটা পরিকল্পিত হত্যা, আমরা মামলা করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর নুরুলকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য