দেশের তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হবে আগামী ৬ জুন। চলবে ১৯ জুন বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আর পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৬ আগস্ট ভর্তি পরীক্ষা হবে।
মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কে এম আজহারুল হাসান এবং সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আবু ইউসুফের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষাসংক্রান্ত ওয়েবসাইট https://www.admissionckruet.ac.bd/ এই লিংকে আবেদন করা যাবে। আগামী ৪ জুলাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। অনলাইনে ভর্তি আবেদন শুরু হবে ৬ জুন সকাল ১০টা থেকে এবং শেষ হবে ১৯ জুন বিকেল ৫টায়।
ভর্তি ফি
ভর্তি পরীক্ষার জন্য ‘ক গ্রুপের (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা আর ‘খ’ গ্রুপের (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ) জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আসন সংখ্যা
গতবারের চেয়ে এবার আসন বেড়েছে মোট ৩০টি। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন থাকবে ৩ হাজার ২৩১টি, যা গতবার ছিল ৩ হাজার ২০১টি।
অন্যান্য তথ্য
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মেধাস্থান অনুযায়ী মেধাতালিকা প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ পছন্দ প্রদানের নির্দেশনা, ভর্তির নিয়মাবলি ও ভর্তির তারিখ প্রকাশ করা হবে ২৩ আগস্ট।
ভর্তির তারিখ, ওরিয়েন্টেশন, ক্লাস শুরুর তারিখ ও সময় এবং ভর্তিসংক্রান্ত অন্যান্য বিজ্ঞপ্তি প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ড, নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে (https://admissionccruet.ac.bd) জানানো হবে।
যে তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা হবে সেগুলো হলো চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
গত বছরও এসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছিল। এবার ভর্তি পরীক্ষার নেতৃত্বে থাকবে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। গতবারের পরীক্ষার নেতৃত্বে ছিল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)।
আরও পড়ুন:বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে মাথা ফেটে গেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীর।
পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ছাত্রীর নাম সুমাইয়া মোস্তফা প্রাপ্তি। তিনি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী।
জবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার জানান, ভেঙে পড়া বিলবোর্ডটি মোবাইল কোম্পানির। সেটি জরাজীর্ণ হওয়ায় হঠাৎ ভেঙে ওই ছাত্রীর মাথায় পড়ে।
তিনি আরও জানান, গুরুতর আহত ছাত্রীকে শুরুতে ন্যাশনাল মেডিক্যালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। ঢামেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তার মাথায় ২০টি সেলাই করেন। সিটি স্ক্যান করে তাকে শঙ্কামুক্তও ঘোষণা করা হয়।
ওই ছাত্রীকে ঢামেক থেকে আবার ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়েছে বলেও জানান প্রক্টর।
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বসে থাকাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধর করে কান এবং নাক ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭-৮ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক এ কে এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি একই হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।
অবশ্য মারধরের শিকার হলেও অভিযুক্তদের নাম জানাতে পারেননি সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন মারা হচ্ছে, তখন তারা বলেছে এটা ঢাবি ক্যাম্পাস। আমি সেখানে কী করছি? এ সময় তাদের গায়ে ঢাবির লোগো সংবলিত টিশার্ট ছিল।’
এই ঘটনায় সাজ্জাদ মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় জিডি এবং আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমি হাসপাতালের রিডিংরুমে পড়াশোনা করি। ৯টার পর ইচ্ছে হলো, একটু চা খেয়ে আসি। এরপর চা খেতে শহীদ মিনারে যাই। চা খেয়ে শহীদ মিনারের নিচে বসে বাদাম খাচ্ছিলাম।
‘কিছুক্ষণ পর দেখি, সাত-আটজন ছেলে এসে সেখানে বসা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। আর কাউকে কাউকে তুলে দিচ্ছিল। তাদের কয়েকজনের গায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত টিশার্ট ছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরে দুই-তিনজন ছেলে আমার কাছেও আসে। এসে জিজ্ঞেস করে, আমি সেখানে কী করছি? আমার পরিচয় কী, আমি কোথাকার? আমি নিজের পরিচয় দিলে তারা আমার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। সে সময় আমার সাথে কার্ড ছিল না।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘আমার কাছে পরিচয়পত্র নেই জানালে তারা আমাকে বলে, পরিচয়পত্র নেই কেন? আমাদের কাছে তো পরিচয়পত্র আছে। তখন আমি বললাম, সবাই কি সব সময় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘোরে?’
‘তাকে এই প্রশ্ন কেন করলাম সে জন্য একজন সাথে সাথে আমাকে থাপ্পড় মেরে বলে আমার সাথে তো আইডি কার্ড আছে, তোর সাথে থাকবে না কেন? এরপর পাশে থাকা দুই-তিনজন এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করে।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে আমি চিৎকার করে বলি, আমি কী করেছি? আমাকে মারছেন কেন? আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে আমার পরিচয়পত্র দেখে আসতে পারেন।
‘এই কথা বলার পর তাদের একজন বলে, আপনি আবার কথা বলেন! এটা বলেই আরও কয়েকটা থাপ্পড় দিল। এ সময় আমার চিল্লানি শুনে তাদের সাথে আসা বাকিরাও আমার সামনে চলে আসে। তারা এসে ইচ্ছেমতো আমাকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। এর মধ্যে একজন কানের নিচে থাপ্পড় দিলে আমি ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাই।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘আমি কেন বসে যাই এবং কেন সেখান থেকে যাচ্ছি না, সে কথা বলে একজন আমাকে তার জুতা পায়ে মুখ বরাবর লাথি মারে। আমার মুখে স্যান্ডেলের বালি পর্যন্ত লেগে ছিল।
‘এরপর তারা আমাকে ধাক্কিয়ে ফুটপাত পর্যন্ত নিয়ে আসে। এই আনা পর্যন্ত যে যেভাবে পারছে আমারে মারছে। পরে তারা আমাকে একটা রিকশায় তুলে দিলে আমি আমার হলে ফিরে আসি।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘হলে আসার পর আমি এক কানে কম শুনতেছি, নাক থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। মাড়িও কেটে গেছে। গালের পাশে ফুলে আছে। চোখ ডান পাশেরটা লাল হয়ে আছে। এরপর ইমার্জেন্সিতে গেলাম। পুলিশ কেস সিলসহ ইঞ্জুরি নোট লিখল। নাক-কান-গলায় রেফার করল। নাক দেখে বলল, নাকের সেপ্টাম ইনজুর্ড হয়েছে।
‘কান দেখে বলেছে, কানের পর্দায় ব্লিডিং স্পট আছে, হিয়ারিং লস আছে কি না বুঝতে অডিওগ্রাম করতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কেউ থানায় অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের শনাক্ত করতে সার্বিক সহযোগিতা করবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি জোবায়ের হোসেন রাহাত ও সাধারণ সম্পাদক রাফিয়া রহমান স্বাক্ষরিত মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হেলাল উদ্দিন এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রায়হান রিয়াজ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে পরিসংখ্যান বিভাগের মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।
কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের ইব্রাহিম শেখ। বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে আছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তামিম মাহমুদ।
অন্যান্য নেতাদের মধ্যে সহ-কোষাধ্যক্ষ পদ পেয়েছেন মো. সুলাইমান। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন মো. মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া পল্লব কুমার সরকার ও মৃন্ময় রায় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, রেজাউল করিম দপ্তর সম্পাদক এবং সৌরভ রায় সহ-দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন।
প্রচার সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন আবদুল্লাহ আল রাফি সাকিব। সহ-প্রচার সম্পাদক হয়েছেন সৈয়দ মো. আল আমিন ও ইলমা আফরিন কথা। শাহাদাৎ হোসেইন সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
দায়িত্বরত সভাপতি জোবায়ের হোসেন রাহাত বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানচিন্তা বিকশিত করতেই আমরা কাজ করে যাব। অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞানচিন্তা কেবল বিজ্ঞান নিয়ে যারা পড়াশোনা করে, তাদেরই কাজ। এই ভুল ধারণা থেকে বের করার জন্যই বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি, জবি শাখা কাজ করবে।’
‘আজকের কল্পনা আগামীর বিজ্ঞান’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি, জবি শাখা। এ নিয়ে দুইবার কমিটি গঠন হলো জবি শাখার।
সংগঠনটি বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে নিয়মিত বিজ্ঞান আড্ডার আয়োজন করে আসছে।
কুইজে অংশ নিয়ে বিজয়ীদের মধ্যে তিনজনকে কলকাতা ভ্রমণের সুযোগ করে দেয় সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি। এ ছাড়াও ভাবনায় বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ নানাবিধি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সেই মিছিলে ছাত্রলীগ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদের নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুক্রবার রাত পৌনে ২টার দিকে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা মশাল মিছিল বের করেন।
মিছিলটি ডাস চত্বর ঘুরে শামসুন নাহার হল হয়ে ফের রাজু ভাস্কর্যে জমায়েত হলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বাইকের বহর নিয়ে তাদের সামনে অবস্থান নেন।
ঢাবির জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ কর্মী কর্মসূচিতে বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা।
তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের বাধার কারণে পরিষদের নেতা-কর্মীরা রাজু ভাস্কর্যে মিছিল শেষে সমাবেশ করতে পারেননি। তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শহীদ মিনারের দিকে এগোতে থাকলে পেছন থেকে বাইক নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন।
পরে পরিষদের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সামনে সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করেন।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা মোটর বাইকে এসে আমাদের ওপর আক্রমণের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। তাদের লুটের টাকার ডিজেল আর পেট্রল। তারা সেই টাকা পুড়িয়ে মহড়া দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই ছাত্রলীগ আমাদের ২০ জন ছাত্রের সামনে দাঁড়ানোর সাহস দেখাতে পারেনি, আগামীকাল যখন ১০ লাখ মানুষ রাজপথ দখল করবে, তখন তাদের জাঙ্গিয়াও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
আখতার বলেন, ‘ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে দেশের সব টাকা-পয়সা লুটপাট করে আওয়ামী লীগ সরকার পদে পদে প্রতিটি মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ডিজেল-পেট্রলসহ প্রতিটি জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লুটের কর্মফল জনগণের ওপর চাপানোর জন্যই এই দাম বৃদ্ধি।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের এই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণজোয়ার শুরু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে আছে। শিগগিরই দেশের জনগণ রাজপথে নেমে এই ভোট চোর আওয়ামী লীগ সরকারকে পদচ্যুত করেই ছাড়বে।’
কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমরা কাউকে বাধা দিয়েছি এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের হলে আজ একটা প্রোগ্রাম ছিল। সেটি শেষ করে আমরা চা খেতে গেছিলাম। খেয়ে চলে আসছি।’
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে আগামী ২০ আগস্ট থেকে।
ওইদিন বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এই কার্যক্রম শুরু হবে। পরীক্ষার্থীদের এ জন্য ফি দিতে হবে দুই হাজার টাকা।
গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শুক্রবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে তাদের ফলাফলে অসংগতি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে তারা ফল চ্যালেঞ্জের সুযোগ পাবে। তবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে অর্থাৎ আগামী ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদের পরীক্ষা শেষে ফল চ্যালেঞ্জের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি শিক্ষার্থীকে দুই হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ করার পর কোনো শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হলে সে আবেদন ফি অর্থাৎ দুই হাজার টাকা ফেরত পাবে। আর পরিবর্তন না হলে সব একই থাকবে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধা বিবেচনায় এই সুযোগ দেয়া হবে।’
আগামী ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।
আরও পড়ুন:সহপাঠীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এই শিক্ষার্থীর নাম কবির আহমেদ কৌশিক। তিনি যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারে পড়েন।
বৃহস্পতিবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টররা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এক ছাত্রী কৌশিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন প্রক্টরের কাছে।
তিনি জানান, কৌশিক গত ২৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় ফোন করে সেমিনার লাইব্রেরিতে পড়াশোনাসংক্রান্ত আলোচনার জন্য দেখা করতে বলেন। বেলা আড়াইটা থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের অষ্টম তলায় বিভাগীয় সেমিনারে অপেক্ষা করেন তিনি।
কৌশিক সোয়া ৩টায় সেমিনারে এসে অতর্কিতভাবে তাকে জড়িয়ে ধরেন বলে অভিযোগ করেন নেই ছাত্রী। তখন সেমিনারে কেউ ছিলেন না বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
সেই ছাত্রী বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন এবং রেগে যান। কৌশিক তখন ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করেন।
নিজেকে সামলে নিয়ে সেমিনার থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় কৌশিক তার পথ আগলে ধরে আটকানোর চেষ্টা করেন বলেও উল্লেখ করেন সেই ছাত্রী। জানান, এ সময় আবার অশালীনভাবে তার কোমর, বুক ও পেটে হাত দেন।
সেই ছাত্রী বলেন, তখন কী করবেন বুঝতে না পেরে কৌশিককে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে সেমিনার থেকে বের হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় কৌশিক পেছন থেকে এসে আবার তার পথরোধ করেন এবং সপ্তম তলার সিঁড়িতে তাকে যৌন নির্যাতন করেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘আমি তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য যতই অনুনয় বিনয়, ততই সে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আমার শরীরে রীতিমতো স্পর্শ করতে থাকে। সে সময় আমার মনে হয়েছে সে আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করছে।
‘ধ্বস্তাধস্তির একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দিলে সিঁড়িতে পড়ে যাই। আমি কোনোভাবে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ঢুকে পড়ি এবং সে আমার পিছু নেয় লাইব্রেরি পর্যন্ত। লাইব্রেরিতে উপস্থিত আমার সিনিয়র আপুদের কাছে বিষয়টা জানালে তারা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।’
সেই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে তার বাসায় এসেও তাকে হেনস্তার চেষ্টা করেন কৌশিক।
এ বিষয়ে জানতে কৌশিকের মোবাইলে কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে নক দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় বহিষ্কার হওয়া দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
২০২১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে ৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। পরে অভিযুক্ত চারজনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল তাদের ১ বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দেয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জান্নাতুল ইসলাম রুবেল, দর্শন বিভগের ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান রাজু এবং আরবি বিভাগের জুনায়েদ আহমেদ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
এদের মধ্যে দর্শন বিভগের মো. ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান রাজু বুধবার তাদের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দাবি করেছে, বহিষ্কারের চিঠি এখনও তাদের হাতে না পৌঁছানোর কারণে পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, চিঠি ইস্যু প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পেরেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদকালে ক্লাস ও পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞাসহ বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না।
দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দর্শন বিভাগের সভাপতি মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘বহিষ্কার হয়েছে শুনেছি। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো চিঠি আসেনি। তাই তারা পরীক্ষায় বসতে পেরেছে। ওই ছাত্রদের অ্যাডমিট কার্ড আছে। সেটি বাতিল করলেই আমরা বলতে পারতাম কেন পরীক্ষা দিচ্ছে। এখন আমরা কোন এখতিয়ারে বলব। দেখি, তারা হয়তো লিখিত নির্দেশ পাঠাবে।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘উনারা (বহিষ্কৃতরা) পরীক্ষায় বসেছেন, আমরা শুনেছি। এই পরীক্ষা আবার ক্যানসেল হয়ে যাবে।’
বহিষ্কারের চিঠি কেন সংশ্লিষ্ট বিভাগে যায়নি- সে বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা রেজ্যুলেশন আকারে এখনও আসেনি। এটা না আসলে চিঠি দেয়া যায় না। এটা অফিশিয়াল প্রসিডিউর। প্রসিডিউরটা মেনে চিঠি যাবে। এখন আমরা টেলিফোন করে বলে দিয়েছি। এখন পরীক্ষা দিলেও সেটি ক্যানসেল হয়ে যাবে।’
চিঠি কবে যাবে এই জবাবে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘প্রসিডিউর শেষ করেই চিঠি যাবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য