প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সরকার যে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরির জন্য গঠিত আলাদা কমিটির যৌথ সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এনসিসিসির সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘যৌথ সভায় (প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি কমিটি) নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে আর কোনো বাধা নেই। আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। বর্তমানে মাধ্যমিকের পাইলটিং ক্লাস চলছে। প্রাথমিকেও খুব শিগগিরই পাইলটিং শুরু হবে।’
মশিউজ্জামান বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে ভাষাগত কয়েকটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। কমিটি অনুমোদন দেয়ায় সেটিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন দুই মন্ত্রণালয়ের এনসিসিসিতে অনুমোদন দেয়ায় এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো।
মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির সারাদেশে ৬১টি স্কুল, কারিগরি ও মাদ্রাসায় পাইলটিং শুরু হয়েছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাইলটিং ক্লাস ভালোভাবে চলছে বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়।
নতুন শিক্ষাক্রমে যেভাবে মূল্যায়ন
প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, তৃতীয় শ্রেণির আগে স্কুলে কোনো পরীক্ষা রাখা হয়নি। পুরোটাই হবে শিখনকালীন মূল্যায়ন। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান- এই বিষয়গুলোয় শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ, আর সামষ্টিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) হবে ৪০ শতাংশ।
একইভাবে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। বাকি বিষয়গুলোয় সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ।
এ ছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতির মতো বাকি বিষয়গুলোর শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ১০০ শতাংশ।
নবম ও দশম শ্রেণিতে গিয়ে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ দশম শ্রেণির মোট ১০টি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটির পরীক্ষা হবে এসএসসিতে। বাকি বিষয়গুলোয় ১০০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন।
বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হয়। এখন গড়ে ৩২ কর্মদিবস লাগে এসএসসি পরীক্ষা নিতে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে পাঁচ কর্মদিবসেই পরীক্ষা নেয়া শেষ হবে।
শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী, একাদশ ও দ্বাদশে আবশ্যিক বিষয়গুলোয় শিখনকালীন মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। প্রায়োগিক বা ঐচ্ছিক বিষয়গুলোয় শিখনকালীন মূল্যায়ন ১০০ শতাংশ। এই দুই শ্রেণিতে সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্প ও ব্যবহারিক ভিত্তিতেও শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে।
উচ্চ মাধ্যমিকে (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) ছয়টি বিষয়ে ১২টি পত্র থাকবে। একাদশ শ্রেণিতে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে বাংলা, ইংরেজি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী যে শাখায় পড়বে, সেই শাখার প্রতিটি বিষয়ের প্রথম পত্রের (মোট তিনটি) পরীক্ষা হবে। অর্থাৎ একাদশ শ্রেণিতে মোট ছয়টি বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা হবে।
আর দ্বাদশ শ্রেণিতে নিজ নিজ শাখার তিনটি বিষয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পত্রের মোট ছয়টি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সম্মিলিত ফলের ভিত্তিতে উচ্চ মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমানসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন:বিছানায় শুয়ে মোবাইল চালাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগেরই দুই নেতা।
এমনই একটি ছবি সোমবার দিনজুড়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা।
শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষের চিত্র এটি। এই কক্ষে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। অন্যদিকে পা টিপতে থাকা দুই নেতা হলেন, উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ ও উপক্রীড়া সম্পাদক শফিউল ইসলাম।
তবে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের দাবি ছবিটি আড়াই বছর আগের। তার অসুস্থ থাকাকালীন এই ছবি দিয়ে অপরজনীতি করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
রুবেল বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম, আমার ছোট ভাই দুইজন আমার সেবা করেছে। এটা মানবিক বিষয়। ছাত্রলীগের সভাপতি বলে কি কেউ আমার সেবা করতে পারবে না? আমার সঙ্গেরই কেউ সেই সময় ছবি তুলে এখন অপরাজনীতি করছে।
তিনি বলেন, অসুস্থ হলে মানুষ মানুষকে এমনিতেই দেখতে আসে, সেবা-যত্ন করে। এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। ছবিতে ওষুধপথ্য দেখা যাচ্ছে। যারা অপরাজনীতি করছেন তারা অমানবিক কাজ করছেন। আমি নিজেও প্রেসিডেন্ট হয়ে পা টিপেছি, সেবা করেছি, এমন ছবিও আমার ওয়ালে দিয়েছি। সেটা ভাইরাল করুক।
পা টেপার বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ বলেন, রুবেল ভাই অসুস্থ ছিলেন। আমরা ওনার পায়ে মলম লাগিয়ে দিয়েছি। পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে অন্যরা যেমন সেবা করেন, এটাও তেমন।
বিশ্ববদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেজাউল হক রুবেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি স্নাতক পাস করেন ২০১০ সালে। স্নাতকোত্তর পাস করেছেন ২০১৩ সালে। আর ২০১৯ সালে ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। সভাপতির মেয়াদ এক বছর হলেও তিনি এখনো এই পদে রয়ে গেছেন। তার শিক্ষাবর্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। তবে তিনি এখনও ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন:দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ইন্ধনের অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর পদত্যাগ এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে বসেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী।
টানা ১০ দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেও কোনো ফল না আসায় শেষ পর্যন্ত অনশনের পথ বেছে নিয়েছেন তারা।
রোববার বিকেল ৪টায় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু ভাষ্কর্যের পাদদেশে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ, আইসিটি বিভাগের দুই শিক্ষার্থী কাজল হোসেন ও ইমতিয়াজ শাহরিয়া এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান চৌধুরী অনশনে বসেন।
সন্ধ্যা ৭টায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন উপাচার্য। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙবেন না বলে জানিয়ে দেন তারা।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তাদের এই আমরণ অনশন চলমান রয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৮টায়ও বৃষ্টিতে ভিজে তাদেরকে অনশন করতে দেখা যায়।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ‘৮ মার্চ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক সংলগ্ন তাজান্না ভূঁইয়া কনফেকশনারির সামনে ‘প্রক্টর সমর্থিত’ ছাত্রলীগের ক্যাম্পাসের বাইরের অংশের হাতে হামলার শিকার হন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান চৌধুরী হৃদয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ইমতিয়াজ শাহরিয়া ও কাজল হোসাইন।
এর আগে ১৬ মার্চ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর জাস্টিস’-এ রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি আদায়ে তারা আল্টিমেটাম দেন। একই সময়ে প্রক্টরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা।
আল্টিমেটাম দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়ে অনশনে বসেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে অনশনকারী শিক্ষার্থী কাজল হোসাইন বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন।
বিকেল সাড়ে ৫টায় অনশনকারী শিক্ষার্থীদেরকে দেখতে এসে সান্ত্বনা দিয়ে চলে যান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান। সে সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনও অনশনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেন। ভিসির সামনে অনশনে অনড় থাকার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে অনশনরতরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন উপাচার্য।
সে সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগ এবং চরকির সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়েছে অলটাইম প্রেজেন্টস নতুন ওয়েব সিরিজ ‘ইন্টার্নশিপ’ ।
রোববার সিইউব-এর মিলনায়তনে ওয়েব সিরিজের প্রথম আটটি পর্বের প্রথম দুইটির প্রদর্শনী করা হয় ।
‘ইন্টার্নশিপ’ ওয়েব সিরিজের অভিনেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান চরিত্রে থাকা সৌম্য জ্যোতি, তাসলিমা হোসেন নদি, মোরশেদ মিশু, মীর রাব্বি, কারিনা কায়সার প্রমুখ। এছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন ওয়েব সিরিজের নির্মাতা রেজাউর রহমান।
প্রদর্শনীর সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ'র অধ্যাপক ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক, লামিয়া সেলিম, হেড অফ এক্সটার্নাল আফ্যেয়ারস এন্ড পার্টনারশিপ এবং চরকির টিম থেকে ছিলেন মার্কেটিং অ্যান্ড গ্রোথের প্রধান জনাব ফয়সাল মুজিবুর রহমান।
প্রফেসর মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক তার বক্তব্যে বলেন- ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কখনই ইন্টার্ন ছিলেন না বা হুমায়ূন আহমেদও ছিলেন না কিন্তু আজকের এই সময়ের সুযোগ গুলোই ভবিষ্যতের দুয়ার উন্মোচিত করতে সাহায্য করবে। আমরা এমন একটি সুন্দর আয়োজনের জন্য একত্রিত হতে পেরে খুবই আনন্দিত।’
প্রদর্শনী শেষে ইন্টার্নশিপ ওয়েব সিরিজের অভিনেতারা তাদের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং কেক কাটা হয়।
সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও মানবীয় যোগাযোগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীর লক্ষ্যে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু করলো ‘মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম’ বিভাগ।
বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান বুধবার সকালে ইউআইইউ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।
ইউআইইউর মাননীয় উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার এবং দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট উন্নয়ন সাংবাদিক এবং চ্যানেল আই’র পরিচালক ও বার্তা প্রধান জনাব শাইখ সিরাজ।
সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইউআইইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের উপদেষ্টা এবং প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউআইইউ’র ‘মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম’ বিভাগের প্রধান ড. শেখ শফিউল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বরা মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষার উপর জোর দিতে আহ্বান জানান। এছাড়াও অতিথিরা মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগ চালুর জন্য ইউআইইউ’কে ধন্যবাদ জানান এবং এই বিভাগ দেশের দক্ষ গণমাধ্যমকর্মী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের সাত নেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার।
৫৯ ব্যাচের অভিজিৎ দাশকে তিন বছরের জন্য, ৫৯ ব্যাচের রিয়াজুল ইসলাম, ৬২ ব্যাচের সাজু দাশ ও একই ব্যাচের সৌরভ দেবনাথকে দুই বছরের জন্য, মাহিন আহমেদ, জাকির হোসেন ও ইব্রাহিম খলিলকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কার হওয়া সাতজনের মধ্যে ইব্রাহিম খলীল ছাড়া বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে আগেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে কিছুদিন পর তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি মওকুফ করা হয়। এদের প্রত্যেকেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারিতে হোস্টেলে যে ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। তদন্তে প্রতিবেদনে দেয়া সেই কমিটির সুপারিশেই এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটা সাধারণ ছাত্রদের জন্য একটা সতর্কবার্তা।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বের শাস্তি মওকুফের পরও তারা না শোধরানোয় ১ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতদের ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।’
চমেক সূত্রে জানা যায়, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ছাড়াও ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে আরো কিছু সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে বহিষ্কৃত ছাত্রদের অভিবাকদের ডেকে এনে কঠোরভাবে সতর্ক করা, প্রধান ছাত্রাবাসে সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়াতে একজনের পরিবর্তে একাধিক হোস্টেল সুপার নিয়োগ, হোস্টেলে আগত সবার জন্য রেজিষ্ট্রার খাতার ব্যবস্থা করা বিষয় রয়েছে।
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত হলেই হোস্টেলের সিট বরাদ্দ বাতিল করা, সম্পূর্ণ ছাত্রাবাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা এবং পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত ছাত্রাবাস ও কলেজ ক্যাম্পাস পুলিশ প্রশাসনের উপর ন্যাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ৬২ তম ব্যাচের ৪ শিক্ষার্থীকে হল থেকে ডেকে নিয়ে পৃথক কক্ষে মারধর করেন কলেজ থেকে বহিষ্কৃত কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা। পরদিন দুপুরে পুলিশের সহযোগিতায় দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করায় কলেজ প্রশাসন। বাকি দুজনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মারধারকারীরা।
মারধরের শিকার চারজন হলেন ৬২ তম ব্যাচের এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেন। এরমধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেনকে শুরুতে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বাড়িতে নিয়ে যান অভিবাবকরা।
আরও পড়ুন:ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইইএলটিএস ২০২২-২৩-এর পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন ইংরেজি ভাষা-ভাষী বিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আইইএলটিএস পরীক্ষার্থীদের সহায়তা করতে এ পুরস্কার দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা যেন তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন, এজন্য এ পুরস্কারের মাধ্যমে তাদের ৩ হাজার পাউন্ডের আর্থিক সহায়তা দেয় ব্রিটিশ কাউন্সিল।
বাংলাদেশ, কলম্বিয়া, ঘানা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা- এ ছয়টি দেশের আইইএলটিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য এ বছরের প্রতিযোগিতা উন্মুক্ত ছিল।
প্রতিযোগিতামূলক আবেদন প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এ পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে সাতজন বিজয়ী নির্বাচিত করা হয়; যারা তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা লাভ করবেন। বিজয়ীরা হলেন- সোয়াবিবা সোয়াদ, ইতমাম মির্জা, কাজী রাকিব হাসান, সাজিদ আই আউয়াল, জয়শ্রী চৌধুরী, জাকিয়া নিশাত এবং আহমেদ আল মাহবুব তালুকদার।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টম মিশসা বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা এ বছর আইইএলটিএস পুরস্কার পেয়েছেন, তাদের অভিনন্দন। শিক্ষার্থীদের বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সহায়তার পাশাপাশি আইইএলটিএস পুরস্কার তাদের নতুন দেশ ভ্রমণের, নতুন সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার এবং বৈশ্বিক আইইএলটিএস কমিউনিটির অংশ হওয়ার সুযোগ করে দেবে।
বাংলাদেশের আবেদনকারীরা পুরস্কার ও আবেদন প্রক্রিয়াসহ এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে ভিজিট করতে পারেন: https://takeielts.britishcouncil.org/take-ielts/study-work-abroad/ielts-prize.
চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজিসহ পাঁচজনের নামে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে মামলাটি করেন মশিউর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জহির কামাল নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ১৬ এপ্রিল প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফরহাদ ব্যাপারী, আরশাদ আকাশ, রাসেল চাকলাদার ও টুটুল আহম্মেদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট আসামি ফরহাদ ব্যাপারী বাদীর কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ৪ লাখ টাকা ধার নেন এবং ব্যবসায় লাভ হলে লভ্যাংশ দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিছু দিন পর বাদী আসামির কাছে টাকা চাইলে তিনি জানান, ব্যবসায় লোকসান হয়েছে এবং শিগগিরই টাকা ফেরত দেবেন। এরপর গত বছরের ৫ অক্টোবর পাওনা টাকা চাইলে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন ফরহাদ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ইব্রাহিম ফরাজি বাদীকে তাদের সমস্যার সমাধান করে দেবেন বলে জানান এবং তাকে দেখা করতে বলেন। ১৮ নভেম্বর ফরাজির কথা মতো তার ঠিকানায় পৌঁছালে আসামিরা তাকে রুমের ভেতর নিয়ে মারধর করেন। এর মধ্যে আসামি আরশাদ আকাশ পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদীকে পিস্তল ঠেকিয়ে একটি আইফোন এবং ১১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন এবং তার হাতে পিস্তল দিয়ে ছবি তুলে তার বিরুদ্ধে মামলা দেবে বলে হুমকি দেন। তার মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং এসব বিষয়ে কাউকে কিছু জানলে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাদীকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য