হামলার প্রতিবাদে ছাত্রদলের ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আসতে পারে, এই ধারণায় স্ট্যাম্প, লাঠিসোঁটা নিয়ে ও হেলমেট মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
তাদের একটি অংশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মোটরসাইকেলের শোডাউনও দিতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, অন্যদিনের তুলনায় আজকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢিলেঢালা অবস্থায় ছিলেন। লাঠিসোঁটাগুলো একপাশে রাখা ছিল, সবার হাতে হাতে ছিল না।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ছাত্রদল আসেনি। তারা বলছেন, আজকের কর্মসূচি জেলা এবং মহানগর ইউনিটের জন্য।
গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এলাকায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় শনিবার দেশের সব জেলা ও মহানগর ইউনিটে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে ছাত্রদল।
রোববার সব উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও কলেজে মিছিল করবে সংগঠনটি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক নেতা জানান, আজকের কর্মসূচি শুধু জেলা ও মহানগর ইউনিটের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।
এদিকে হল ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মীরা সকাল ৯টায় হল থেকে বের হয়ে ছাত্রদলকে রুখে দেয়ার স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) জড়ো হতে থাকেন। ওই সময় সব হল থেকে লাঠিসোঁটাও বের করা হয়।
এরপর বিভিন্ন হল ইউনিট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। এসব লাঠিসোঁটা যে হলের, যেখানে অবস্থান, তার একপাশে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য, ডাস চত্বর, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, আইন অনুষদ, কার্জন হল এবং চাঁনখারপুলের সামনে নেতাকর্মীদের অবস্থান দেখা গেছে। ওই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গানও পরিবেশন করেন।
বেলা পৌনে একটা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান ছিল।
সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনার আগে তারা পয়েন্টগুলো থেকে অবস্থান সরিয়ে নেয়।
পরে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানিয়ে হলে ফিরে আসেন।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এমন অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ আচরণ এবং সহযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যাশা করে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণার্থে যেসব জিনিস আমাদের কাজে লাগবে সেগুলোই শিক্ষার্থীরা গ্রহণ করবে।’
ছাত্রলীগের এই অবস্থানকে সহযোগিতা হিসেবে দেখছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো সংগঠনের নাম উল্লেখ করিনি। শিক্ষার পরিবেশ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেই শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের স্বার্থে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থেকে সহযোগিতা করাটাই বড় উন্নয়ন।
‘আমরা সবার কাছে সহযোগিতা চাইছি। কেউ যদি সহযোগিতা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সুস্পষ্ট অনুরোধ এবং নির্দেশনা দেয়া আছে। এতে কার কী পরিচয় সেটা আমাদের কাছে বড় নয়।’
আরও পড়ুন:সায়াহ্নে এসে পদ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে অন্তত পাঁচ থেকে আটশ জনকে পদ দেয়ার অভিযোগ করছেন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তিন বছরের জায়গায় পাঁচ বছরে পড়েছে। তার ওপর গঠনতন্ত্র লংঘন করে এতো জনকে পদ দিয়ে কমিটির কলেবর বাড়ানো হয়েছে। স্বয়ং সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও বলতে পারবেন না এখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কতসংখ্যক সদস্য রয়েছেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আকার হওয়ার কথা ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট। কমিটির মেয়াদ তিন বছর।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত ৩১ জুলাই সহ-সভাপতি, সহ-সম্পাদক, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক উপ-সম্পাদক এবং সদস্য পদ দিয়ে অনেককে চিঠি দেয়া হয়। পদ পেয়ে অনেকেই নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইলেও সে খবর পোস্ট করেন। নিউজবাংলার অনুসন্ধানেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এ প্রতিবেদকের কাছে এমন পাঁচটি চিঠির কপি রয়েছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কয়েকজন সহ-সভাপতি, দু’জন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সহ-সম্পাদক অভিযোগ করেন, কমিটির মেয়াদের শেষ দিকে এসে বঞ্চিতদের পদ দেয়া একটা রেওয়াজ। কিন্তু এবার যা হয়েছে সেটা ন্যক্কারজনক। কেননা ছাত্রলীগে অবদান আছে সব মিলিয়ে বৈধভাবে এমন সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হবে না। কিন্তু এবার পদ দেয়া হয়েছে আট শতাধিক।
এ বিষয়ে লেখক ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের প্র্যাকটিস। বিগত কমিটিগুলোও আকারের বাইরে অনেককে পদ দিয়ে সংযোজন করত।
‘ছাত্রলীগে হাজারও নেতাকর্মীর অবদান রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে সবাইকে পদ দেয়া সম্ভব হয় না। বাদ পড়াদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়নের চেষ্টা করা হয়। তারপরও যারা বাকি রয়েছেন তাদের রাজনৈতিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্যই এসব পদ দেয়া হয়েছে।’
তবে কোনো ধরনের পদ-বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করেন লেখক।
কতজনকে ৩১ জুলাই পদ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে লেখক সঠিক সংখ্যা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘তালিকা সংরক্ষিত আছে। সেটা দেখে বলতে হবে।’
পদ-বাণিজ্যের এই অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
২০১৮ সালের মে মাসে সম্মেলন হলেও ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয় জুলাইয়ে। এতে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও গোলাম রাব্বানী। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পদ হারান দুজন। তাদের স্থলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জয় ও লেখককে ‘ভারমুক্ত’ করা হয়। তাদের দু’জনকে মেয়াদের বাকি সময় দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলা হয়।
জয়-লেখক নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালেই। কিন্তু করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে তখন সম্মেলন হয়নি। ২০২১ সালের শেষের দিকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হলেও সম্মেলনের উদ্যোগ নেননি জয়-লেখক। এ অবস্থায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সম্মেলনের দাবি ওঠে।
নেতাকর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ছাত্রলীগকে দ্রুত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার নির্দেশ দেন অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু জয় ও লেখক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।
দ্রুত সম্মেলনপ্রত্যাশীরা গত ১৪ মে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার দাবি নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে জয় এবং লেখকের সঙ্গে উচ্চ-বাচ্যও করেন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটে ছাত্রদলের ‘তথাকথিত’ আগমন। মারামারিতে লিপ্ত হয় দুই সংগঠন, হাওয়া হয়ে যায় ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা।
তবে সম্মেলন অচিরেই অনুষ্ঠিত হবে বলে নিউজবাংলাকে জানান অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ থেকে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার অন্যতম বি এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে গত দু’বছর ছাত্রলীগের সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। শোকের মাস আগস্টে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্টরা কোনো সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করে না।’
আগস্ট মাস পার হলে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের আরও কিছু সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের অন্যতম এই সাংগঠনিক সম্পাদক।
ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার আরেকজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে নিউজবাংলাকে জানান। তিনি বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনোভাবেই ৩০১ জনের বেশি সদস্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারে না।’
আরও পড়ুন:ফেনী মডেল থানার ওসি, তিন এসআই এবং স্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে যুবদল নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আশিকুর রহমানের আদালতে বুধবার বিকেলে এই মামলার আবেদন করেন জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেনের স্ত্রী লুৎফুন নাহার।
বিচারক আবেদন আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক গোলাম মোহাম্মদ জিলানী এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, যুবদল নেতা জাকিরকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।
আসামি করা হয়েছে ওসি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, এসআই মো. ইমরান হোসেন, নারায়ণ চন্দ্র দাশ, হাবিবুর রহমান এবং ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন ও মো. সৈকতকে।
যুবদল নেতা জাকিরকে ফেনী মডেল থানা পুলিশ গত ২১ জুলাই রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ফেনী শহরের রামপুরে তার বাসায় শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে একটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৪ রাউন্ড গুলি এবং ২টি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে ফেনী মডেল থানা পুলিশ। থানা পুলিশ তার নামে এরপর অস্ত্র মামলা করে।
এই অভিযোগ শুরু থেকে অস্বীকার করে আসছিল জাকিরের পরিবার। তাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন স্বজনরা।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ নয় বরং বিএনপিরই রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
‘সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে’ বলে ৮ আগস্ট বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বুধবার এ কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার নয়, নেতিবাচক রাজনীতি ও নির্বাচন-বিমুখতার জন্য বিএনপিরই রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার সময় এসেছে। দলটি যেমন সরকারে ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি বিরোধী দলেও দায়িত্বহীন আচরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘মিথ্যার মোড়কে বিএনপির অগণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বরূপ জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট। তাদের শাসন আমলেই তো দেশ মগের মুল্লুকে রূপান্তরিত হয়েছিল।
‘ধর্মীয় উগ্রবাদ আর সাম্প্রদায়িকতার ডালপালার বিস্তার ঘটেছিল তাদের আমলেই। সার চাইতে গিয়ে কৃষকেরা প্রাণ দিয়েছিলেন। বিএনপির শাসনামলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছিল, সংখ্যালঘু নির্যাতনের রেকর্ড করেছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মতো জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের মুখের কথায় জনগণের এখন আর কোনো আস্থা নেই। বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই মিটিং- মিছিল করছে, সমাবেশ করছে, অথচ তারা অভিযোগ করছে তাদের নাকি সভা সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না, তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
এসব মিথ্যা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে বলেন, ‘বিএনপির নিজেদের ব্যর্থতা ও নানান অপকর্মের দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করা পুরোনো স্বভাব।’
বিএনপি আবারও দেশকে অরাজকতায় ডুবিয়ে দিতে চায় অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণ বর্ণচোরা বিএনপিকে চেনে, জনগণ সেই সুযোগ তাদের আর দেবে না।’
আরও পড়ুন:অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
এ আদেশের ফলে তার জামিন বাতিল হয়ে গেল বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে সম্রাটের পক্ষে শুনানি করেন মুনসুরুল হক চৌধুরী, দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে বিশেষ জজ আদালত জামিন দেয়। ওই জামিনাদেশের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করলে হাইকোর্ট তার জামিন বাতিল করে দেয়। তখন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে সম্রাট। ওই আপিলের শুনানি শেষে আজকে আপিল বিভাগ তার আপিল খারিজ করে দেয়। ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকল।’
এর আগে গত ২৩ মে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।
গত ১৮ মে হাইকোর্ট সম্রাটের জামিন বাতিল করে সাত দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন সম্রাট।
গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দেন ঢাকার বিশেষ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান।
সম্রাটের বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়। এগুলো হলো অস্ত্র, মাদক, অর্থপাচার ও দুদকের করা মামলা। সব মামলায়ই তিনি জামিনে ছিলেন।
দুদকের মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন:রাজনীতি কিংবা ভোটের মাঠে নবগঠিত রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর কোনো গুরুত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততাহীন ও রাজনীতিতে পরিত্যাজ্যরা মিলে এই জোট গঠন করেছে।
রাজধানীর মিণ্টো রোডের সরকারি বাসভবনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মূলত সাত দলের জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ গঠন নিয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের ঘোষণার জবাব দেন।
সোমবার জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন- এই সাত দলের সমন্বয়ে এই জোটের ঘোষণা দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ নামে ৭ দলীয় একটি জোট গঠিত হয়েছে দেখলাম। যারা এই জোট গঠন করেছে তারা সবাই রাজনীতিতে পরিত্যক্ত ব্যক্তিবিশেষ এবং রাজনীতিতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন। এরা প্রত্যেকেই নানা দল করে, নানা ঘাটের পানি খেয়ে আজকের এ অবস্থায় এসেছেন। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এখন তারা একটি জোট গঠন করে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন মাত্র।
হাছান মাহমুদ এর আগে সকালে মহাখালীতে পদ্মা সেতু নিয়ে ছেলেধরা গুজবের জের ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা দেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন পদ্মা সেতুর কাজ পুরোদমে শুরু হয় তখন বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে পদ্মা সেতুতে মানুষের রক্ত লাগবে, নরবলি দিতে হবে।
‘তসলিমা বেগম রেনু সে সময় বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে নির্মম হত্যার শিকার হন। শুধু তসলিমা বেগমই নন, বিএনপি-জামায়াতের ওই গুজবের কারণে আরো অনেককে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মহাখালী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিদল।
দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পলিটিক্যাল চিফ স্কট ব্রান্ডন এবং পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও কালচারাল কাউন্সিলর আর্টুরো হাইন্স জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে গেলে জি এম কাদের তাদের স্বাগত জানান।
এ সময় তারা বন্ধুপ্রতিম যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
সভায় আশা প্রকাশ করা হয়, আগামী দিনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত ও উপদেষ্টা মাসরুর মওলা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এত সহজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
ভোলা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তোফায়েল বলেন, ‘বিএনপি কথায় কথায় বলে আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। অথচ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবৃতি দিয়েই তার দলকে টিকিয়ে রেখেছেন।
‘প্রেস রিলিজ আর সংবাদ সম্মেলন ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। মির্জা ফখরুল বলেছেন আওয়ামী লীগ যেকোনো সময় বিদায় নেবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এত সহজ নয়। বিএনপি ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছিল, আন্দোলনের মুখে ৩১ মার্চ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই দল।’
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির ওপর কোনো অত্যাচার-নির্যাতন করেনি। অথচ বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেননি। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।
‘বিএনপি যখনই সুযোগ পায় তখনই মানুষের ওপর অত্যাচার করে। ভোলায় সমাবেশে পুলিশের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি, ১৪ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিটি অঙ্গসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ কিছুই করতে পারবে না। বিএনপি অত্যাচার শুরু করলে পাল্টা জবাব দিতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি দোস্ত মাহামুদ।
বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম, ভোলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিবুল্লাহ নাজু, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলী নেওয়াজ পলাশ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য