শিক্ষার জন্য বয়স যে কোনো বাধা নয়, সেটা আরেকবার প্রমাণ করলেন বেলায়েত শেখ। ৫৫ বছর বয়সী এ ব্যক্তি অংশ নিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায়।
ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য বেলায়েত ফরম পূরণ করেছেন। আগামী ১১ জুন এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে।
বেলায়েতের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরে। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিবাহিত বড় ছেলে ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন।
বেলায়েতের বড় ছেলের স্ত্রীও একটা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। গাজীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় ২০১৭ সালে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন বেলায়েত।
নতুন করে শুরু
বেলায়েত শেখের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সে সময় বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। পরে তিনি আর শিক্ষাজীবন সচল রাখতে পারেননি।
বেলায়েত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি নিজে যেহেতু পড়তে পারিনি, তাই ভাইদের লেখাপড়া করিয়ে উচ্চশিক্ষিত করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটাও পারিনি। এরপর নিজের সন্তানদের পড়াতে চেয়েছিলাম। তারাও অর্ধেক করে আর আগ্রহ দেখায়নি।
‘পরে তাদের প্রতি রাগ করে ৫০ বছর বয়সে ২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করি। সে সময় আমার ছোট ছেলে ক্লাস এইটে পড়াশোনা করছে।’
২০১৯ সালে বেলায়েত ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করেন। আর ২০২১ সালে তিনি রাজধানীর রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এসএসসিতে বেলায়েত হোসেনের জিপিএ ৪.৪৩। আর এইসএসসিতে তার জিপিএ ছিল ৪.৫৮।
বেলায়েত বলেন, ‘এইচএসসিতে সাত মাস পড়ে পরীক্ষা দিয়েছি। অনেক সময় রাত জেগেও পড়ালেখা করেছি।’
বর্তমানে বেলায়েত শ্রীপুরের মাওনার সাইফুর’স শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করছেন।
পরিবার চলছে কীভাবে
বর্তমানে পরিবারের ব্যয়ভার কীভাবে বহন করছেন জানতে চাইলে বেলায়েত বলেন, ‘এক মাস ধরে আমার বড় ছেলেই সংসার চালাচ্ছে। সে স্যানিটারির ব্যবসা করে।
‘আর আমি দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় শ্রীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কিছু নিউজ করলে মানুষজন কিছু টাকা-পয়সা দেয়।’
কেমন ছিল ক্লাসে ফেরার অভিজ্ঞতা
২০১৭ সালের যে সময় থেকে বেলায়েত শেখ পড়াশোনা শুরু করেন, তখন থেকে এই পর্যন্ত অভিজ্ঞতা কেমন জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুরুর দিকে এটা আমার জন্য একটু কঠিনই ছিল। কারণ সে সময় আমার কাছের মানুষজনও আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত, তবে একটা সময় গিয়ে সেটা ঠিক হয়ে যায়। এখন আমার বউ আমি কোন সময় ক্লাসে যাব, সেটা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
সহপাঠীদের আচরণ কেমন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যাদের সঙ্গে ক্লাস করেছি, তাদের কাছ থেকে খারাপ কোনো অভিজ্ঞতার শিকার হইনি। আমার সঙ্গে যেসব মেয়ে ক্লাস করে, তারা আমাকে ‘আঙ্কেল’ ডাকে। আর আমি তাদের ‘আম্মু’ ডাকি।
“এক ছেলে আমাকে ‘বুড়া’ ডেকেছিল। পরে তাকে আমি ঝাড়ি দিয়ে বলেছি, ‘এই ছেলে আমি কি বুড়া হইছি? আমাকে ‘দাদা ভাই’ না হয় ‘বড় ভাই’ বা ‘আঙ্কেল’ ডাকবি।’ এটা নিয়ে তারা হাসাহাসি করে বেশি।”
বেলায়েত বলেন, ‘আমার নিজেকে বয়স্ক লাগে না; ইয়ংয়ের মতোই লাগে। কিছু চুল পেঁকে গেছে। এগুলো কালি দিয়ে রাখি। কারণ কালি দিয়ে না রাখলে এগুলোর জন্য নিজেকে বয়স্ক মনে হয়। আর তখন মনটা দুর্বল হয়ে যায়।’
সংসার পরিচালনা এবং কাজ করেও যে লেখাপড়া করা যায়, সেটা বর্তমান প্রজন্মকে দেখাতে চান বেলায়েত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেতে সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:এ বছরের এসএসসি বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার দুপুরে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খোঁজ রাখছি নিয়মিত। এখনও কিছু কিছু এলাকায়… শহর থেকে পানি নেমে গেছে। গ্রাম পর্যায়ে এখনও কোথাও কোথাও হয়তো আছে, সেটাও নেমে যাবে। কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিছু জায়গায়। আমাদের অনেক পরীক্ষার্থী… আমাদের কাছে তথ্যও আসছে.. বইপত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
‘আমরা এখন পুরো অ্যাসেস করছি যে, আমাদের কতপরীক্ষার্থীকে নতুন করে বই দিতে হবে। আমরা দেখছি হিসেব করছি, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বইও ছাপিয়ে ফেলব। তারপর আমরা আমাদের পরীক্ষার্থীদের হাতে বইগুলো পৌঁছে দেব, যাদের বইগুলো নষ্ট হয়েছে। আমরা তথ্যগুলো নিচ্ছি। তাদের হাতে বইগুলো দিয়ে অন্তত ২ সপ্তাহ তাদের সময় দিতে হবে। এটা আমাদের টাইমলাইন। কিন্তু এটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে এটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব না।’
এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নয়
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হলেও আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে যখন শিশুদের ভ্যাকসিনের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারব, তারপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আমরা চিন্তা করতে পারব। এটা ঠিক যে সংক্রমণ বাড়ছে। আমাদের সচেতন হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখব কি না… আমাদের তো ১২ বছরের ওপর সবার টিকা দেয়া আছে।
‘১২ বছরের নিচের টিকাটা যদি আমরা দেয়ার ব্যবস্থা করে ফেলতে পারি তাহলে হয়তো সেটার আর প্রয়োজন হবে না। যেহতু আমরা চাই যতোটা সম্ভব স্কুল খোলা রেখেই আমরা আমাদের সমস্যা সমাধানের দিকে যাবো। কাজেই এই মুহূর্তে স্কুল বন্ধের কথা আমরা ভাবছি না বরং অনেক বেশি সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রমটাকে চালিয়ে নেবার কথা ভাবছি। তবে সবকিছু নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর। আমার শিক্ষার্থী, তার পরিবার ও শিক্ষকের জীবনটাই আমাদের কাছে জরুরি।’
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে পঞ্চগড়ে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার পর মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই তিনজন হলেন গণ-উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলাল উদ্দীন, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বড়দাপ এলাকার মোকসেদুর রহমান এবং ছোটদাপ এলাকার আহসান হাবিব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে তাদের নামে সদর থানায় এই মামলা করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। সে সময় পরীক্ষার খাতার লেখার সঙ্গে তাদের হাতের লেখার মিল পাওয়া যায় না।
এরপর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিখিত পরীক্ষায় ১৮ লাখ টাকায় প্রক্সি দেয়ানোর কথা স্বীকার করেন। এই কাজের হোতা বেলাল ছিলেন বলে জানান।
বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা জালিয়াতির কথা স্বীকার করলে দুজনকেই আটক করা হয়। সবার পরীক্ষা শেষে কৌশলে বেলালকে ডেকে এনে তিনজনকেই পুলিশে দেয়া হয়।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিনজনকে পুলিশে দেয়ার পর তাদের নামে মামলা হয়। বুধবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
পুলিশ জানায়, বেলালের নামে বিভিন্ন থানায় চেক ডিজ-অনার মামলাসহ মিথ্যা ও ভুয়া মামলা দেয়ার অভিযোগ আছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় শীর্ষ তিনজনই সমান নম্বর পেয়েছেন।
১২০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রত্যেকে পেয়েছেন ১১৫ নম্বর। প্রাপ্ত নম্বর সমান হওয়ায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে যিনি বেশি নম্বর পেয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
নম্বর সমান হওয়ায় ক্রম নির্ধারণ করার পদ্ধতি সম্পর্কে এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় আমরা তিনটি বিষয়ে নম্বর দেখেছি। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে কে নম্বর বেশি পেয়েছে। সেভাবেই তাদের মধ্যে থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এই পদ্ধতিতে মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছেন আসীর আনজুম খান, দ্বিতীয় খালিদ হাসান তুহিন আর তৃতীয় জারিফা তাবাসসুম।
আসীর আনজুম এবং খালিদ হাসান দুইজনই নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আর জারিফা তাবাসসুম জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত এই ইউনিটে প্রথম হওয়া আসীর আনজুম বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রথম হয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ষষ্ঠ ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ভর্তি পরীক্ষায় অষ্টম স্থান অধিকার করেন।
প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হওয়া সবাই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সকলেরই স্কোর ৯৫ নম্বর।
আসীর আনজুম এমসিকিউ অংশে রসায়ন এবং গণিতে সম্পূর্ণ ১৫ নম্বরই পেয়েছেন।
আর পদার্থবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞানে পেয়েছেন ১৩.৭৫ নম্বর।
এ ছাড়া লিখিত অংশে তিনি পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে ১০ নম্বর, রসায়নে ৯ আর জীববিজ্ঞানে ৮.৫ নম্বর পেয়েছেন।
ফলে পদার্থবিজ্ঞানে তার সর্বমোট নম্বর ২৩.৭৫, রসায়নে ২৪, গণিতে ২৫ এবং জীববিজ্ঞানে ২২.২৫।
দ্বিতীয় হওয়া খালিদ হাসান নৈর্ব্যক্তিক অংশের রসায়ন এবং গণিতে সম্পূর্ণ ১৫ নম্বরই পেয়েছেন। পদার্থবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞানে পেয়েছেন ১৩.৭৫ নম্বর।
এ ছাড়া লিখিত অংশে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে ১০, রসায়নে ৯.৫, গণিত এবং জীববিজ্ঞানে ৯ নম্বর পেয়েছেন।
ফলে পদার্থবিজ্ঞানে তার সর্বমোট নম্বর ২৩.৭৫, রসায়নে ২৪.৫, গণিতে ২৪ এবং জীববিজ্ঞানে ২২.২৫।
তৃতীয় হওয়া জারিফা তাবাসসুম এমসিকিউ অংশে পদার্থ বিজ্ঞানে ১২, রসায়নে ১৫, গণিতে ১৪ এবং জীববিজ্ঞানে পেয়েছেন ১৩.৭৫ নম্বর।
এ ছাড়া লিখিত অংশে তিনি পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানে ১০ নম্বর আর গণিতে পেয়েছেন ৯.৫ নম্বর।
ফলে পদার্থ বিজ্ঞানে তার সর্বমোট নম্বর ২২.৭৫, রসায়নে ২৫, গণিতে ২৩.৫ এবং জীববিজ্ঞানে ২৩.৭৫।
এর আগে সোমবার দুপুরে ‘ক’ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১ লাখ ১০ হাজার ৩৭৪ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১ হাজার ৪৬৬ জন। পাসের হার ১০ দশমিক ৩৯।
অর্থাৎ ৮৯ দশমিক ৬১ (প্রায় ৯০ শতাংশ) শতাংশই ফেল করেছে।
‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৯ জন।
সর্বমোট ১ হাজার ৭৮১ জন পরীক্ষার্থী এবার এই ইউনিটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
দেশে বন্যা পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি না হওয়ায় জুলাই মাসেও চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হবে না।
এ ক্ষেত্রে পরীক্ষাটি আগস্টে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আন্তশিক্ষা বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
নিউজবাংলাকে রোববার এ তথ্য জানান আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
তিনি বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়। তাই এখনই কোনো নির্দিষ্ট তারিখ আমরা বলতে চাই না, তবে ঈদের পর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার নতুন রুটিন প্রকাশ করা হবে।’
কবে নাগাদ পরীক্ষাটি আয়োজন করা হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজকের আন্তশিক্ষা বোর্ডের সভায় সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সবাই আশা প্রকাশ করেছে চলতি মাসে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা পরীক্ষাটি আগস্ট মাসে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, এসএসসি পেছানোর কারণে পিছিয়ে যাবে এইচএসসি পরীক্ষাও।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল গত ১৯ জুন, কিন্তু দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থগিত করা হয় এ পরীক্ষা।
এবারের পরীক্ষার সময় ৩ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ২ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশের জন্য ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল অংশের জন্য ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট নির্ধারিত থাকবে।
এ বছর ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ বোর্ডে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন, দাখিলে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন ও কারিগরিতে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ জন।
গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন। এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের চেয়ে প্রায় সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর করোনার কারণে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা এখনও নেয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া গেলেও এইচএসসিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয় সরকার।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে৷
পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৯ হাজার ৯৯৭ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ হাজার ২৮৯ জন।
এ ইউনিটে চলতি বছর পাসের হার ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর মানে দাঁড়াচ্ছে পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রায় ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন।
গত ৩ জুন ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা হয়েছিল। ৯৩০ জন পরীক্ষার্থী এবার এ ইউনিটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফল ঘোষণা করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ফল জানতে পারছেন। এ ছাড়া রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক বা টেলিটক নম্বর থেকে ‘DU GA Roll NO’ ফরম্যাটে ১৬৩২১ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফল জানা যাচ্ছে৷
‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাক্রম ১ থেকে ১ হাজার ১০০ পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে আগামী ৬ জুলাই বেলা তিনটা থেকে ২১ জুলাই বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ঢাবির ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে৷
কোটায় আবেদনকারীদের ৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম বাণিজ্য অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তা যথাযথভাবে পূরণ করে ওই সময়ের মধ্যে ডিন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে৷
কারও ফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা নিরীক্ষার জন্য ১ হাজার টাকা ফি দিয়ে ৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত বাণিজ্য অনুষদের ডিন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন:২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে।
এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রতিটি শিক্ষার্থী তার উচ্চমাধমিক পরীক্ষার রোল নম্বর, বোর্ডের নাম, পাসের সাল এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বরের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক অথবা টেলিটক নম্বর থেকে DU KHA টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে সেন্ড করে ফিরতি মেসেজে তাদের ফল জানতে পারবেন।
উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে আগামী ৪ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে ২১ জুলাই বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয়ের পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীদের ১৭ থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম কলা অনুষদের ডিন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। যথাযথভাবে ফরম পূরণ করে সে সময়ের মধ্যে ডিন অফিসে জমা দিতে হবে।
ফল নিরীক্ষণের জন্য ফি প্রদান সাপেক্ষে আগামী ২৯ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত কলা অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করা যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ৯.৮৭ শতাংশ। এর মানে দাঁড়াচ্ছে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৯০.১৩ শতাংশই অকৃতকার্য হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে।
এ পরীক্ষায় পাস করেছে ৯.৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এর মানে দাঁড়াচ্ছে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৯০.১৩ শতাংশই অকৃতকার্য হয়েছে।
কলা অনুষদভুক্ত এই ইউনিটে গতবার পাসের হার ছিল ১৬.৮৯ শতাংশ। গত ৪ জুন ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষা হয়েছিল।
সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এবার তৃতীয়বারের মতো নৈর্ব্যক্তিকের পাশাপাশি লিখিত অংশও ছিল।
‘খ’ ইউনিটে ১ হাজার ৭৮৮ আসনের বিপরীতে ৫৮ হাজার ৫৭৩ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করেন। পরীক্ষায় অংশ নেন ৪৬ হাজার ৯৭২ জন।
ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত ও নৈর্ব্যক্তিক অংশে সমন্বিতভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৫ হাজার ৬২২ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার ফল জানা যাবে ওয়েবসাইটে।
দুপুর ১টার দিকে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ফল ঘোষণা করেন।
ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ‘খ’ ইউনিট পরীক্ষার সমন্বয়ক এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরসহ ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য