দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়ছে ৯৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ৫৭৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আর আগামী অর্থবছরে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা।
সোমবার ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমের সভাপতিত্বে পূর্ণ কমিশন সভায় এ বাজেট অনুমোদিত হয়। সভার কার্যপত্র তুলে ধরেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
সভায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন ইউজিসি অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।
জানা গেছে, দেশের ৫১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ১০ হাজার ৫১৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে। বাজেটে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং ইউজিসির জন্য ৭১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেটে ৬ হাজার ২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট ও ৪০টি প্রকল্পের অনুকূলে ৪ হাজার ৪২০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫৭৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। সে হিসাবে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে ৯৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব বাজেট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৬৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং সবচেয়ে কম বাজেট পেয়েছে খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
উচ্চ শিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ৩২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মূল বাজেটে গবেষণা খাতে ১১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে ইউজিসির জন্য বাজেটে বরাদ্দকৃত ৭১ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ কোটি টাকা বেশি।
গবেষণা খাতে বেশি বরাদ্দের বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ইউজিসির মূল লক্ষ্য দেশে গুণগত উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত ও গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তোলা। দেশের উন্নয়নে গুণগত গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য ইউজিসি গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে জোর দিচ্ছে এবং এ খাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে জনগণের কষ্টার্জিত প্রতিটি অর্থ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সর্বোত্তম ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক সুফিয়া বেগম এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান পূর্ণ কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (আর্থ সামাজিক অবকাঠোমো) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের মনোনীত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগাম অবসর চেয়ে সহকারী অধ্যাপক সামিয়া রহমানের আবেদন গ্রহণ করে তাকে অবসরের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তার কাছ থেকে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পাবে জানিয়ে এই টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত বুধবার ইস্যু করা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করা সামিয়াকে চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার ৩১-০৩-২০২২ তারিখের পত্রের বরাতে এবং ২৬-০৪-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জানানো যাচ্ছে যে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আপনাকে দেনাপাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে ১৫-১১-২০২১ তারিখ হতে বিধি মোতাবেক আগাম অবসর (আর্লি রিটায়ারমেন্ট) গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
‘সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
চিঠিতে জানানো হয়, ‘আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২১৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আপনার দেনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা।’
বকেয়াগুলো কিসের টাকা জানতে চাইলে সহকারী রেজিস্ট্রার মোখতার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি যে তারিখ থেকে (গত ১৫ নভেম্বর) আর্ন লিভে গিয়েছিলেন সেই তারিখ থেকে উনার স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর থেকে উনি যে বেতন ভাতা পেয়েছেন সেগুলো। তবে তিনি যদি আবার অর্জিত ছুটির জন্য আবেদন করেন তাহলে ছুটির পরিবর্তে অর্থ মঞ্জুর পাবেন।’
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগের মধ্যে ২০২১ সালের নভেম্বরে চার মাসের অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান সামিয়া রহমান। গত ৩১ মার্চ তার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মার্চ মাসের শুরুতে তিনি বিনা বেতনে আরও এক বছরের ছুটির জন্য আবেদন করেন। তবে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না করার পর তিনি আগাম অবসরের আবেদন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ার পর সামিয়ার পদাবনতি ঘটায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। তবে এই আদেশের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যান। গত ৪ আগস্ট সামিয়া রহমানকে পদাবনতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
তবে আগেই সামিয়া আগাম অবসরের আবেদন করায় এবং সেটি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করায় আপাতত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষকতা করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোখতার হোসেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘উনি (সামিয়া রহমান) আর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারবেন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় যদি নতুন করে শিক্ষকের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় আর তখন যদি তিনি আবেদন করেন সে সময় ওনাকে নিয়োগ দেয়া হলে তারপর শিক্ষকতা শুরু করতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি জোবায়ের হোসেন রাহাত ও সাধারণ সম্পাদক রাফিয়া রহমান স্বাক্ষরিত মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হেলাল উদ্দিন এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রায়হান রিয়াজ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে পরিসংখ্যান বিভাগের মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।
কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের ইব্রাহিম শেখ। বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে আছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তামিম মাহমুদ।
অন্যান্য নেতাদের মধ্যে সহ-কোষাধ্যক্ষ পদ পেয়েছেন মো. সুলাইমান। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন মো. মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া পল্লব কুমার সরকার ও মৃন্ময় রায় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, রেজাউল করিম দপ্তর সম্পাদক এবং সৌরভ রায় সহ-দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন।
প্রচার সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন আবদুল্লাহ আল রাফি সাকিব। সহ-প্রচার সম্পাদক হয়েছেন সৈয়দ মো. আল আমিন ও ইলমা আফরিন কথা। শাহাদাৎ হোসেইন সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
দায়িত্বরত সভাপতি জোবায়ের হোসেন রাহাত বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানচিন্তা বিকশিত করতেই আমরা কাজ করে যাব। অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞানচিন্তা কেবল বিজ্ঞান নিয়ে যারা পড়াশোনা করে, তাদেরই কাজ। এই ভুল ধারণা থেকে বের করার জন্যই বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি, জবি শাখা কাজ করবে।’
‘আজকের কল্পনা আগামীর বিজ্ঞান’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি, জবি শাখা। এ নিয়ে দুইবার কমিটি গঠন হলো জবি শাখার।
সংগঠনটি বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে নিয়মিত বিজ্ঞান আড্ডার আয়োজন করে আসছে।
কুইজে অংশ নিয়ে বিজয়ীদের মধ্যে তিনজনকে কলকাতা ভ্রমণের সুযোগ করে দেয় সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি। এ ছাড়াও ভাবনায় বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ নানাবিধি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের (একাংশ) নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। কার্যনির্বাহী এই কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদ।
সোমবার নীল দল কার্যনির্বাহী পর্ষদ নির্বাচন-২০২২-এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. সৈয়দ আলম এ ফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে কোনো পদেই বিরোধী প্রার্থী না থাকায় সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
মোট ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সদস্যরা হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছগীর হোসেন খন্দকার, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামাল হোসেন।
এ ছাড়া রয়েছেন সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ঝুমুর আহমেদ, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমাম হোসেন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেওয়ান বদরুল হাসান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কে এম সুজাউদ্দিন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী পর্ষদের প্রথম সভায় সদস্যদের মধ্য থেকে সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে।
নির্বাচনে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এম এম গোলাম আদম ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পাশে না থাকলে দেশ এতো দ্রুত স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন বঙ্গমাতা গেরিলা হিসেবে কাজ করতেন।’
সোমবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ কথা বলেন।
এর আগে হল প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখনই কারাবরণ করেছেন তখন বঙ্গমাতা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষকবৃন্দ, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা, হলের হাউজ টিউটরবৃন্দ এবং হলের ছাত্রীরা।
এ সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে ছাত্রী হল মিলনায়তনে একটি কর্নারের উদ্বোধন করা হয়।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মওলানা ভাসানী হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের ঘটনায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের সাত কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর জানান, ‘মারধরের ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুণ্ডুকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হোসনে আরা, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাজউদ্দিন শিকদার এবং সদস্য সচিব প্রক্টর অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার গৌতম কুমার বিশ্বাস। কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন- উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাব্বির হোসেন সাগর ও তোফায়েল আহমেদ গালিব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কামরুল হোসেন চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের সৌরভ ও খালিদ হাসান ধ্রুব, মার্কেটিং বিভাগের খালিদ সাইফুল্লাহ এবং ইংরেজি বিভাগের শাহরিয়ার হিমেল। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী।
গত বৃহস্পতিবার গায়ে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধর করেন মওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। এ ঘটনার জের ধরে মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলের সামনে মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগ কর্মী সজিব হাসান সাজকে মারধর করেন। এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন সজিব।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘র্যাগ ডে’ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়।
রেজিস্ট্রার জানান, হাইকোর্টের একটি রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট পিটিশনের আদেশে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘র্যাগ ডে’ উদযাপনের নামে সব ধরনের অশ্লীলতা, ডিজে পার্টি, অশোভন আচরণ, নিষ্ঠুর ও নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড এবং বুলিং অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
সাধারণত কোনো ব্যাচের শিক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর র্যাগ ডে উদযাপন করা হয়। সাধারণত এটি অনার্স অথবা মাস্টার্স শেষে হয়ে থাকে। এটিকে অনেকে শিক্ষা সমাপনী উৎসবও বলা হয়ে থাকে।
এর আগে গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগ ডের নীতিমালা অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, র্যাগ ডের নতুন নাম হবে ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’। এই উৎসব উদযাপনে শিক্ষার্থীদের মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম।
গত ১৭ এপ্রিল ‘র্যাগ ডে’ উদযাপনের নামে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টিসহ অশ্লীল, উন্মত্ত, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
মিশ্র প্রতিক্রিয়া
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছে অনেকেই। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশনার আগেই শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিকটুভাবে র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধ করা উচিত ছিল।’
এছাড়াও ফেসবুকে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলে বাহবা দিচ্ছেন।
আবার অনেকেই র্যাগ ডে উদযাপন বন্ধ হওয়ায় বিরূপ মনোভাব পোষণ করেছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘সবাই তো অশ্লীলতা করে না, গুটি কয়েকজনের কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা সবাই একটি স্মরণীয় মুহূর্তের অনুষ্ঠান উদযাপন থেকে বঞ্চিত হলাম।’
আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) মনিটরিং কমিটি গঠন, সপ্তাহে এক দিন অনলাইন ক্লাস নেয়াসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে শুক্রবার এসব বিষয় জানানো হয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, আগামী ৯ আগস্ট থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার এক দিন অনলাইনে ক্লাস হবে। এদিন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরিবহন সুবিধা বন্ধ থাকবে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার সঠিক হচ্ছে কি না, তা তদারকি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং দপ্তর প্রধানদের নেতৃত্বে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং দপ্তরপ্রধানরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ ছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কতিপয় ব্যয় স্থগিত বা হ্রাসের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনগুলো যে স্থান থেকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আনার জন্য যাত্রা শুরু করবে, সে স্থানে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন ব্যয় বরাদ্দকৃত অর্থের এবং প্রশিক্ষণ ও টিএডিএর ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগের নবীনবরণ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান কেন্দ্ৰীয় অডিটোরিয়ামে না করে নিজ নিজ ইনস্টিটিউট ও বিভাগে করতে হবে। তবে শুধু অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় সীমিত এসি চালিয়ে (২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নয়) অডিটোরিয়াম ব্যবহার করা যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন বাজেট ও নিজস্ব তহবিলের আওতায় সব ধরনের প্রকল্পের কমিটির সভায় সম্মানী বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করা যাবে না।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য