ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সোমবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
তপন কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ওপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তা পালনে সচেষ্ট থাকব। এ ছাড়া বর্তমান সরকার নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা যথাযথ বাস্তবায়নে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হওয়ার পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়েন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি নতুন পদে নিয়োগ পান চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি। এরপর প্রায় তিন মাস ধরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব তপন কুমার সরকার নিজের দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে বোর্ডপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, নিজ বেতনক্রম অনুযায়ী তিনি বেতন-ভাতা পাবেন। পদসংশ্লিষ্ট ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন তিনি। শিক্ষা বোর্ড বিনা ভাড়ায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করলে তিনি কোনো বাড়ি ভাড়া নিতে পারবেন না। সরকারি বাসায় বাস করলে বাড়ি ভাড়ার যাবতীয় সরকারি পাওনা নিজ দায়িত্বে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট খাতে দিতে হবে।
অপরদিকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার। তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন।
প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের দেয়া উন্নয়ন ফির টাকা বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের এক কর্মকর্তাকে পদাবনতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্য অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বুধবার রাতে সিন্ডিকেট সভা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার সভাপতিত্ব করেন।
পদাবনতি পাওয়া কর্মকর্তার নাম মাহবুব আলম। তিনি ইংরেজি বিভাগের প্রধান সহকারী। এখন থেকে তিনি সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকের দায়িত্ব পালন করবেন।
অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান জানান, সাধারণত প্রতি সেমিস্টারে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা বিভাগের উন্নয়ন ফি নামে একটা ফি দেয়। এই কর্মকর্তা সেই টাকা (২ লাখ ১৫ হাজার টাকা) বিভাগের ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন।
দীর্ঘদিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভাগ তদন্ত শুরু করে। এরপর তিনি সেই টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে চিঠি দিয়ে বিভাগের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। নজরে না এলে হয়তো তিনি নিজের কাছে রেখে দিতেন।
অধ্যাপক মিজান বলেন, ‘যেহেতু এটা একটা ফাইন্যান্সিয়াল অফেন্স, তাই বিভাগ এটি সিন্ডিকেটের নজরে এনেছে। আর সিন্ডিকেট তাকে শাস্তি দিয়েছে।’
জানা যায়, এই শাস্তি ছাড়াও সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য প্রণয়ন করা নয়টি নীতিমালা পাস করেছে।
এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে র্যাগ ডে অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। পরে এই সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উপউপাচার্যকে (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নয়টি নীতিমালা প্রণয়ন করেন। আজ সিন্ডিকেট সভায় সেসব নীতিমালা উপস্থাপন করা হলে সিন্ডিকেট এসব নীতিমালা পাস করেন।
এ বিষয়ে অন্য এক সিন্ডিকেট সদস্য মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা র্যাগ ডে নামে যে অনুষ্ঠান উদযাপন করে এটির নাম এখন থেকে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান এখন থেকে কিছু নীতিমালার মধ্যে থেকে করতে হবে। নীতিমালাগুলো হলো, ক্লাস চলাকালে উচ্চস্বরে বাদ্য-বাজনা পরিহার করতে হবে অর্থাৎ কাউকে ডিস্ট্রার্ব করা যাবে না।’
সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা করে অনুষ্ঠানসূচি চূড়ান্ত করা, স্ব-স্ব বিভাগ/ইনস্টিটিউটের ভবন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা; ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সমবেত হয়ে পথচারীদের চলাচল স্বাভাবিক রাখা, বিভাগের/ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টতায় দুপুরে অথবা রাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, উৎসবের দিন রাত ১০টার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা এসবও নীতিমালার আওতাধীন।
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আগামী ৫ জুলাই থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে। ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলও ঈদের ছুটিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ইনস্টিটিউট, বিভাগীয় অফিস ও প্রশাসনিক দপ্তর বন্ধ হচ্ছে ৯ জুলাই থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুজ্জামান ও ছাত্রীহলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীমা বেগম নিউজবাংলাকে ছুটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ও হল বন্ধের বিষয়ে দুটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আগামী ৫ জুলাই মঙ্গলবার থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সব ক্লাস বন্ধ থাকবে এবং ৯ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সব ইনস্টিটিউট, বিভাগীয় অফিস এবং প্রশাসনিক দপ্তর বন্ধ থাকবে।
ছুটির পর ১৫ ও ১৬ জুলাই যথাক্রমে শুক্র ও শনিবার হওয়ায় এবার মোট বন্ধ থাকছে ১২ দিন। ১৭ জুলাই থেকে যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম চলবে।
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট শামীমা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী ৫ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল বন্ধ থাকবে। ছাত্রীদের ৬ জুলাই বিকাল পাঁচটার মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য বলা হয়েছে।’
হল ত্যাগ করার আগে ছাত্রীদের নিজেদের মূল্যবান জিনিসপত্র নিজ দায়িত্বে রাখা, নিজ কক্ষে তালা দেয়া, নিজ কক্ষের জানালা বন্ধ রাখা, নিজ কক্ষের লাইট ও ফ্যানের সুইচ বন্ধ রাখা, বাথরুম ও টয়লেটের পানির কল বন্ধ রাখা এবং বেসিন ও ফিল্টারের কল বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা ও নড়াইলের শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর মতো ঘটনাকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায় হিসেবে দেখছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল।
এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে শিক্ষকরা বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়ন সাধন করছে এবং বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে তখন কিছু কুচক্রিমহল এই অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল এই অশুভচক্রকে শক্ত হাতে দমনের জন্য জোর দাবি জানিয়েছে।
বুধবার নীলদলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ জুন ২০২২ তারিখ কথিত ধর্ম অবমাননার পোস্টে সমর্থনের অভিযোগে নড়াইলের সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সম্মানিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানো হয়। ২৫ জুন সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জনাব উৎপল কুমার সরকার একজন উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীর দ্বারা আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে ২৭ জুন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দুটি ঘটনাই সামাজিক অস্থিরতার চরম বহিঃপ্রকাশ যা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায়।’
দুটি ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুষ্কৃতিকারীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুন:পরীক্ষার উত্তরপত্রে অযাচিত এক বাক্য লিখে বেকায়দায় পড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সেই ছাত্রকে বিভাগীয় তলবের পর এবার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই ছাত্রের এমন আচরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ায় ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তানভীর মাহতাবকে আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তার এ কর্মকাণ্ড অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থি।
‘ওই শিক্ষার্থী একাধিক অপরাধ করেছে। সেগুলোর কারণ তাকে দর্শাতে হবে। যথাযথ কারণ উল্লেখ করতে না পারলে তাকে প্রশাসনিকভাবে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে গত রোববার তাকে ডেকে পাঠায় বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। ওই ছাত্র সেদিনই ভুল স্বীকার করে মার্জনা পেতে তার বিভাগের কাছে আবেদন করেন। তারপর তার লিখিত বক্তব্য প্রক্টর অফিসে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল আরও বলেন, ‘বিভাগ থেকে আমরা একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দীন বলেন, ‘তাকে বিভাগ থেকে ডাকা হয়েছিল। তার কাছ থেকে লিখিত নিয়ে প্রক্টর অফিসে জমা দেয়া হইছে। বিভাগ তো আর শাস্তি দিতে পারে না। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন (শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে) ব্যবস্থা নেবে।’
বিষয়টিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হলে ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বহিষ্কার করতে পারি না। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। আর ভাইরাল হওয়া ওই অতিরিক্ত উত্তরপত্রে ইনভিজিলেটরের স্বাক্ষরটি ইংরেজি বিভাগের কোনো শিক্ষকের নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভাগের মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে এম আক্তারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিভাগ যা বলবে তার ওপর পদক্ষেপ নির্ভর করছে। তা ছাড়া উত্তরপত্রটি আমি দেখিনি। তাই এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
এর আগে তানভীর মাহতাব নামের ওই ছাত্র পরীক্ষার অতিরিক্ত উত্তরপত্রে ‘স্যার, আজকে আমার মন ভালো নেই’ লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হাসিঠাট্টা তামাশার পাত্রে পরিণত হয়েছেন তিনি।
মিডটার্ম পরীক্ষা শেষে অতিরিক্ত একটি উত্তরপত্র সঙ্গে নিয়ে আসেন তানভীর মাহতাব। বুধবার রাতে সেই উত্তরপত্রে ‘আজকে আমার মন ভালো নেই’ লিখে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন তিনি। তারপর বিষয়টি সব জায়গায় ভাইরাল হয়ে যায়। পরে তিনি পোস্টটি ডিলিট করলেও এ নিয়ে চলছে হাসি-তামাশা।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে টাইমলাইনে ফানি পোস্ট দেয় তানভীর। উত্তরপত্রে ইনভিজিলেটরের সইও তার দেয়া ছিল বলে নিউজবাংলাকে তিনি জানিয়েছেন।
ওই ছাত্র জানান, তিনি বুঝতে পারেননি বিষয়টি এভাবে ভাইরাল হয়ে যাবে। পরে বেকায়দা বুঝতে পেরে পোস্টটি ডিলিট করে দেন।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। পরে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী সংহতি জানিয়ে তাদের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, চৌধুরী শামীম আফফান, মোস্তফা কামাল রনি, মেহেদী হাসান ও নাঈম পারভেজ।
অনশনে বসা পাঁচজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তরিকুল, আফফান ও রনি ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ এবং নাঈম ও মেহেদী ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
শিক্ষক উৎপল কুমারের হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা অনশনস্থলের পেছনে একটা ব্যানারও স্থাপন করেছেন। তাতে লেখা- ‘দেশ গড়ার কারিগর উৎপল কুমার স্যারের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরণ অনশন।’
ব্যানারের এক পাশে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ছবি এবং অন্য পাশে খুনের দায়ে অভিযুক্ত ছাত্রের ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের হাতে ধরা রয়েছে বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লাকার্ডও।
অনশনরত তরিকুল বলেন, ‘শিক্ষকরা জাতির মেরুদণ্ড। স্টাম্পের আঘাতে তাদেরই মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া হচ্ছে। যে প্রজন্ম শিক্ষককে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে, সেই প্রজন্মের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। উৎপল স্যারের হত্যাকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।’
আরও পড়ুন:দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহজে সেবা পেতে সেবার তালিকা প্রণয়ন এবং এ সেবা কীভাবে পাওয়া যাবে তা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটসহ দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বুধবার সিটিজেন চার্টার বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসির সদস্য এবং এপিএ টিমের সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের এ নির্দেশনা দেন।
ইউজিসি বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নকারী টিমের আহ্বায়ক আবু তাহের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ/অনুষদ/হল/দপ্তরে কী কী সেবা আছে, কীভাবে এসব সেবা পাওয়া যাবে সেটি পরিষ্কারভাবে সিটিজেন চার্টারে বা নাগরিক সনদে যুক্ত করতে হবে।
‘এটি ওয়েবসাইট ও দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে। নাগরিকের সুবিধার্থে সেবা প্রদানকারী ব্যক্তির পূর্ণ যোগাযোগ ঠিকানা সিটিজেন চার্টারে উল্লেখ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিককে নির্বিঘ্ন ও যথাসময়ে সেবা-প্রাপ্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন এবং সভা সঞ্চালনা করেন কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও সিটিজেন চার্টারের ফোকাল পয়েন্ট মো. ইউসুফ আলী খান।
ড. ফেরদৗস জামান বলেন, ‘সেবা সহজ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পর্যায়ক্রমে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে ই-নথিসহ বিভিন্ন সেবা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান শুরু করা হয়েছে।’
তিনি সিটিজেন চার্টারে নাগরিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবার তালিকা প্রণয়ন, লক্ষ্য নির্ধারণ এবং এটি অর্জনে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ফোকাল পয়েন্টেদের আহবান জানান।
কর্মশালায় ২৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিজেন চার্টারের ফোকাল পয়েন্টরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:সারা দেশে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে সারা দেশের বিক্ষুব্ধ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূর করতে ঈদের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়াসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবিও জানিয়েছে বিটিএ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বুধবার বিটিএর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে আগামী শনিবার বেলা ১১টায় সারা দেশে জেলা সদরে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এতে বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে বজলুর বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তা ছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোনো সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে অমানবিকভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদর বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে।
‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো বদলি এবং পদোন্নতির সুবিধা নেই। একই কারিকুলামের অধীন সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য রয়েছে। তা ছাড়া বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রদান করা হয়।’
স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স বাড়ানোর দাবি জানিয়ে বিটিএ সভাপতি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স আগের মতোই রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ না করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা সমস্যা বিরাজ করছে।
‘শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ন্যায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের বক্তব্যে শিক্ষক নির্যাতনের বিষয়টি উঠে আসে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি শিক্ষক নির্যাতনের মাত্রা অনেক গুণে বেড়েছে। ঢাকার সাভারে শিক্ষক হত্যা, নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। এর বাইরে বগুড়া, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নারায়গঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মেরুদণ্ড ও জাতি গঠনের স্থপতি শিক্ষকরা আহত, নিহত, নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন।
কাওছার আরও বলেন, শিক্ষকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে বিটিএ।
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
১১ দফা দাবি
১. মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।
২. ঈদুল আজহার আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেয়া।
৩. পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালু করা এবং পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর নেয়ার ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা দেয়া। একই সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা।
৪. স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।
৫. সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ষষ্ঠ ও সপ্তম গ্রেডে প্রদান।
৬. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা।
৭. শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা।
৮. পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন।
৯. করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে শিক্ষাসহায়ক ডিভাইস দেয়া।
১০. ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বড়ির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ।
১১. শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি ২০১০-এর দ্রুত বাস্তবায়ন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য