বাংলাদেশ সোসাইটি ফর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাকাডেমিকস (বিএসপিইউএ) ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের কর্মশালার আয়োজন করেছে।
বিএসপিইউএ দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সংগঠন।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ট্রপিক্যাল ডেইসিতে আলোচনা সভা ও কর্মশালা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্ঞানমনস্ক শিক্ষার পরিবেশের বিকল্প নেই।
সভায় বক্তারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সুষম সমন্বয়, মেধার সঠিক মূল্যায়ন, কল্যাণমূলক গবেষণা এবং শিক্ষার্থীদের সঠিক কর্মদক্ষতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
আলোচনা সভার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক কর্মক্ষেত্রে নিজেকে কীভাবে তৈরি করা হবে এর ওপর একটি কর্মশালা হয়। এতে বেসরকারি বিদ্যালয়ের ৭০ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য এবং বিএসপিইউএর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য ড. এইচ এম জহিরুল হক, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য ড. আনোয়ারুল কবির, উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ড. ইয়াসমিন আরা লেখা এবং আইসিডিডিআরবি মানবসম্পদ প্রধান মোশাররফ হোসেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসনের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
এর আগে ১৮ মার্চ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেয়া হচ্ছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ দেন শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম।
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ১৯ মার্চ একই অভিযোগে প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে আবেদন করেন এই শিক্ষার্থী।
জবি’র ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এই ছাত্রী আবেদনে বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উপাচার্যের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করে তিনি এখনও বিচার পাননি। তার বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। ওই শিক্ষকের সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে স্নাতক পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেল করিয়েছেন।
সহপাঠীদের কাছ থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। তারা মৃত্যুর হুমকি দিয়ে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন, ইনস্টিউটের পরিচালক এবং হলের প্রাধ্যক্ষকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। সেই চিঠি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
চিঠিটি দেয়া ১৫ মার্চ, শুক্রবার। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে বুধবার থেকে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আইন বিভাগের কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ভবনে জমায়েত করে।
“সেখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে এবং আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছে।”
চিঠিতে বলা হয়, ‘পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিবর্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে।’
চিঠিতে সবশেষে বলা হয়েছে, এমতাবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না দেয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
চিঠির শেষাংশে উল্লেখ করা ‘এ ধরনের কোন কর্মকাণ্ড’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে সেটি স্পষ্ট না হওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
অনেকে বলছেন, এটির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘রমজান’ শীর্ষক কোনো প্রোগ্রাম আয়োজনের অনুমতি না দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে।
আবার অনেকে বলছেন, অনুমতি না দেয়া মানেই তো অনুষ্ঠান আয়োজনে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া। তাই এটা বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রমজানকেন্দ্রিক কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আর এই শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করলে বৃহস্পতিবার সেসব প্রতিবেদনকে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রক্টর অফিস থেকে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটি এই বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও উল্লেখ নেই।
প্রকৃতপক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বলাবাহুল্য, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতিনীতি লঙ্ঘিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিধিবদ্ধ রীতিনীতি ও নির্ধারিত স্থান রয়েছে, যা আমাদের সবারই মেনে চলা উচিত।
বিজ্ঞপ্তি এবং ওই চিঠিতে কোন ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজনে অনুমতি না দেয়ার কথা বলা হয়েছে সেটি স্পষ্ট করেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আর অনুমতি না দিতে বলার বিষয়টি এক নয়। নিষেধাজ্ঞা মানে হচ্ছে সবকিছু নিষেধ। আর আমাদের চিঠিতে একটি পার্টিকুলার বিষয়েকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে শুধু এ ধরনের অনুষ্ঠান...।
‘এ ধরনের কোন কর্মকাণ্ড’ বলতে কোন ধরনের প্রোগ্রাম বুঝানো হয়েছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড বলতে প্রোডাক্টিভ রমাদান নামটি ব্যানারে আনা এবং যে জায়গায় প্রোগ্রাম করা হবে সে জায়গার অনুমতি না নেয়াকে বুঝানো হয়েছে। যাতে আমরা জানতে পারি কে কোন জায়গায় কী প্রোগ্রাম করছে। এছাড়া আর কোনো প্রোগ্রামকে বুঝানো হয়নি। আর বর্তমানেও তো ক্যাম্পাসে প্রতিদিন রমজানের কোনো না কোনো প্রোগ্রাম হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ মার্চ, শুক্রবার। এই ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের আবেদনকারীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আবেদনকারী প্রার্থীদের নিজ নিজ জেলায় ২৯ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত জানান, প্রার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে যথাসময়ে ০১৫৫২-১৪৬০৫৬ নম্বর থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোডের এসএমএস পাঠানো হবে।
তৃতীয় ধাপের এই পরীক্ষার জন্য প্রার্থীরা ২৩ মার্চ থেকে এসএসসির রোল, বোর্ড ও পাসের সন দিয়ে লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রঙিন প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
এছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদেরকে অবশ্যই ডাউনলোডকৃত প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট এবং নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (মূল এনআইডি/স্মার্ট কার্ড) সঙ্গে আনতে হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা ঘড়িজাতীয় বস্তু, ইলেক্ট্রনিক হাতঘড়ি বা যে কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, কমিউনিকেটিভ ডিভাইস, জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) ব্যতীত কোনো ধরনের ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড অথবা অন্য কোনো কার্ড বা এ জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা বা সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কোনো পরীক্ষার্থী উল্লিখিত দ্রব্যাদি সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করলে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে সাময়িকভাবে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসানের লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে চলতি বছরের ১৮ মার্চ অপরাহ্ন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হলো। তিনি প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন।’
নতুন দায়িত্ব পালনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীর। তিনি বলেন, ‘আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি উত্তরণে আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।’
প্রসঙ্গত, ১১ মার্চ থেকে ৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’। ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট সাব্বির আলমকে ১৭ মার্চের মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। পরে উপাচার্য ১৮ মার্চ অব্যাহতি দেয়ার আশ্বাস দিলে নতুন প্রশাসনিক ভবনের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।
শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করা ও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মেসেঞ্জারে ‘অপ্রীতিকর বার্তা’ পাঠিয়ে হেনস্তার দায়ে অভিযুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতির সুপারিশ করেছে বিভাগের একাডেমিক কমিটি।
অব্যাহতির সুপারিশপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহা. আশরাফ উজ জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজ (মঙ্গলবার) একাডেমিক কমিটির সভা হয়। সভায় কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে পাঁচ বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে অভিযোগ করেন যে সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করেন। পাশাপাশি তিনি কয়েকজন ছাত্রীকে মেসেঞ্জারে ‘অপ্রীতিকর বার্তা’ পাঠিয়ে হেনস্তা করেন। এ সময় তারা ওই শিক্ষককে পাঠদান থেকে অব্যাহতি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা বিভাগের সভাপতির কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা বসে। সভায় অভিযোগগুলো আলোচনা সাপেক্ষে ওই শিক্ষককে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতির সুপারিশ করেন কমিটির সদস্যরা।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে প্যারিস রোডে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে ওই শিক্ষককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এ সময় ওই শিক্ষককে ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারেরও দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইনের বিরুদ্ধে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রোববার কলেজ ক্যাম্পাসে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মোশারেফা খানম বলেন, ‘অধ্যক্ষের মদদপুষ্ট হোছাইন স্যার এভাবে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করার সাহস কোথায় পেলেন? একজনের জন্য আমরা কি কলেজে আসতে পারব না?’
আরেক শিক্ষার্থী নাইয়া ইসলাম নিহা বলেন, ‘আমরা নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন চাই। যৌন হয়রানিকারী শিক্ষকের শাস্তি চাই।’
শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষকের হাতে যদি ছাত্রীরা নিরাপদ না থাকে তাহলে কোথায় নিরাপদ থাকবে? আমাদের সহপাঠীরা, মেয়েরা যদি নিরাপত্তা না পায় তাহলে বাসা থেকে কলেজে আসবে কিভাবে? আমরা নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন চাই৷’
শিক্ষক হয়ে ছাত্রীর সঙ্গে এমন অশোভন আচরণে ক্ষুব্ধ কলেজটির শিক্ষকরাও।
আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আকতার জাহান কাকলী বলেন, ‘ব্যাপারটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার ও দুঃখজনক। আমাদের অধ্যক্ষও খুব লজ্জিত।
‘আমরা তো ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক। ওরা যদি আমাদের কাছেই নিরাপদ না থাকে তাহলে মা-বাবারা তাদের সন্তানদের আমাদের কাছে কিভাবে পাঠাবে?’
অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, অভিভবাবকরা যেন আমাদের কাছে তাদের সন্তানদের পাঠিয়ে কোনোরকম দুশ্চিন্তায় না থাকেন, সুন্দর একটা পরিবেশ যাতে আমাদের মাঝে বিরাজ করে সেই উদ্যোগ নেয়া জরুরি।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ওহিদুল কবির বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে আমরা খুবই লজ্জা বোধ করছি। কোথাও বের হতে পারছি না। ফোনে বা সামনাসামনি আমাদের শুনতে হচ্ছে- শিক্ষক হয়ে আপনারা কিভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটান? এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এটা দুঃখজনক। আশা করি অধ্যক্ষ মহোদয় বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রতিম বড়ুয়া বলেন, ‘অধ্যক্ষ মহোদয় জরুরি কাজে বাইরে আছেন। যৌন নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার কলেজে ৭ মার্চের কর্মসূচি ছিল। কিন্তু বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইন কর্মসূচিতে অংশ না নিয়ে দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কবিতা চত্বর এলাকায় যান। সেখানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মোবাইলে কল করে যেতে বলেন। এ খবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানান। পরে ঝাউবাগানের ভেতর থেকে ভুক্তভোগীর ১৫-২০ জন সহপাঠী মোহাম্মদ হোছাইনকে ধরে কক্সবাজার আদালত পাড়ায় আইনজীবী মোহাম্মদ রেজাউল করিম কাজলের চেম্বারে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর মা-বাবাও সেখানে আসেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘২০-২৫ জন কলেজ শিক্ষার্থী রামু সরকারি কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইনকে নিয়ে আমার চেম্বারে এসে অভিযোগের কথা জানায়। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় এবং ভুক্তভোগীর বাবা-মা আইনি পদক্ষেপ নিতে অনীহা প্রকাশ করায় আমি এ বিষয়ে বাইরে গিয়ে সমাধানের পরামর্শ দেই।
‘পরে অভিভাবকদের অভিপ্রায় অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছ থেকে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিয়ে বিষয়টির সুরাহা করা হয়।’
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, ‘সবদিক বিবেচনা করে বিষয়টি নিয়ে বেশিদূর আগাইনি। তবে এ ধরনের শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। শিক্ষক হোছাইনের এই আচরণের কথা সে আমাদের এবং তার সহপাঠীদের জানিয়েছিল।’
সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, কবিতা চত্বরে স্যারের কথামতো ভুক্তভোগী ছাত্রী গেলে শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইন তাকে কলেজের পোশাক পরিবর্তন করতে বলেন। ভুক্তভোগী পোশাক পরিবর্তনের নাম করে স্যারকে মোটেল শৈবালের সুইমিংপুলের দিকে নিয়ে যান এবং তাকে বাইরে রেখে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি সহপাঠী ও মা-বাবাকে খবর দিলে তারা এসে শিক্ষক হোছাইনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এ সময় উত্তেজিত সহপাঠীরা তাকে মারধর এবং টানাহেঁচড়া করে। এতে ওই শিক্ষক মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পান।
রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর রেজাউল করিম বিষয়টি অবগত হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:অস্ত্র ছাড়া নিজেকে নিঃস্ব মনে হয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রের পায়ে গুলি করা সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি থাকার সময় থেকেই অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতেন তিনি। সেসময় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পরলেও হয়নি কোনো শাস্তি।
৩৯তম বিসিএস পাওয়ার পর নিজ জেলায় চাকরি আর বাবা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হওয়ার সুবাদে তার চলাফেরা ছিল বেপরোয়া। অস্ত্র নিয়ে ক্লাসে ঢুকলেও এতদিন ভয়ে মুখ খোলেননি কেউ।
তবে আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার পর বদলেছে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের চিত্র। ডা. রায়হানের চূড়ান্ত শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তরাও। সেই সঙ্গে একের পর এক রায়হান শরীফের কুকীর্তির খবর বের হচ্ছে।
ঘটনার অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, ছাত্রজীবন থেকেই সরকার দলীয় ছাত্রলীগের পদে থাকায় তার বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত এ শিক্ষক। অবৈধ অস্ত্র নিয়ে বেপরোয়া চলাফেরার কারণে আতঙ্কে থাকতেন তার মেডিক্যালের সহপাঠী ও শিক্ষকরা।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ৫২তম ব্যাচের ছাত্র রায়হান শরীফ ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর শুরুতে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে চাকরি করেন। পরে গত বছরের ২২ মার্চ সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
নির্দিষ্ট একটি বিভাগের শিক্ষক হলেও তিনি সব বিভাগের ক্লাস নিতেন। ক্লাসে ঢোকার সময় তিনি সবসময় সঙ্গে অস্ত্র বহন করতেন। অস্ত্র দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন, এমনকি অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করতেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সবশেষ তার রোষের বলি হয়েছেন শিক্ষার্থী তমাল। সোমবার ফরেন্সিক বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রকে গুলি করেন তিনি।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে বিয়ে করেন ডা. রায়হান। বিয়ের পর থেকে তার স্ত্রী ডা. চৈতী হানির সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না তার। এক পর্যায়ে ২০২২ সালে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে ডা. রায়হানের সাবেক শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারা জানান, বৈবাহিক জীবনে স্বামীকে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারে বারবার মানা করেও হতাশ হয়েছেন ডা. হানি। উল্টো এসব কারণে মাঝে মাঝে স্ত্রীকে বেদম মারপিট করতেন তিনি। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়েও অনেক সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগ আনেন তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ডা. রায়হান শরীফ। এসময় নিজের কাছে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও শিক্ষার্থীকে গুলি করার কথা স্বীকার করেন তিনি।
জবানবন্দি শেষে কারাগারে যাওয়ার পথে তাকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অস্ত্র ছাড়া নিজেকে নিঃস্ব মনে হয়।’
আহত আরাফাত আমিন তমাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্যার সোমবার ক্লাসে এসে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার এক পর্যায়ে আমাকে বলেন- পাখি পালন করস? আমি বলি- জি স্যার। তখন তিনি বলেন- আমারও পাখি আছে। এটা বলেই তিনি পিস্তল বের করে আমাকে গুলি করেন।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অস্ত্র বহনের বিষয়টি নিয়ে আমি শরীফকে (ডা. রায়হান) দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করেছি, কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আসলে তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয় না। কারণ তার হাত অনেক লম্বা। সে কোন ক্ষমতাবলে এমন করে, তা আমার জানা নেই।’
মঙ্গলবার পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খুরশিদ বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন জামা দেব। তবে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাচ্ছি, তা আগে জানলে অনেক আগেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম।
‘আমরা এই ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছি। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা মিললে কঠোর শাস্তি যেন পান, সে বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।’
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বাড়ি তল্লাশি করে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি, ৪টি ম্যাগজিন, ২টি বিদেশি কাতানা, ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু, ২টি ব্রাশ নাকেল ও ১টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি জানান, আদালতের মাধ্যোমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধ দুটি মামলা হয়েছে। মামলা দুটি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।
এদিকে ডা. রায়হান শরীফের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার কলেজ ক্যাম্পাসে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিএমডিসির রেজিস্ট্রশন বাতিল, সরকারি চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনাসহ বেশ কয়েক দফা দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য