ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে শতবর্ষের মিলনমেলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শনিবার শতবর্ষের এই মিলনমেলা শুরু হয়।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান হল প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাবি উপাচার্য শতবর্ষের মিলনমেলার আনন্দ ভাগাভাগি করতে হলের সব শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দর্শন। তিনি সবাইকে নিয়েই আনন্দ উদযাপন করতেন, শুধু কষ্ট ভোগ করতেন নিজে এককভাবে।
আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা মোকাবিলায় এবং তাদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসার জন্য বৃত্তি প্রদানসহ কিছু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করতে উপাচার্য হল অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানান।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হলের জন্য ওয়েলফেয়ার জাতীয় কিছু গঠনের পদক্ষেপ নিতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন ফান্ড৷ ফান্ডের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতাও প্রয়োজন। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আগামী দিনের দেশকে এগিয়ে নিতে কী কী কাজ করতে পারি এবং নতুন প্রজন্মকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করতে পারি, সে বিষয়ে আমাদের চিন্তা থাকতে হবে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ইতিহাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও স্বনির্ভর দেশে পরিণত করেছেন।’
দক্ষ, যোগ্য ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে আগামী দিনে হলের প্রতিটি শিক্ষার্থী দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদ উল্লাহ খন্দকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও হলের প্রাক্তন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন এবং হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর বেপারী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জঙ্গির সঙ্গে তুলনা করে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বক্তব্য দেয়ার অপরাধে এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
ওই সময় মঞ্চের নেতা-কর্মীরা তার কুশপুত্তলিকা পোড়ান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মঙ্গলবার বিকেলে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধন থেকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) পেশকৃত ১১৬ জন ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফেইস দ্য পিপল’ নামের একটি চ্যানেলের টকশোতে স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসর ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জঙ্গির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এমন ন্যক্কারজনক রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠাতে হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকাশ্য অবমাননার মাধ্যমে আব্বাসী রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির নীরবতা আমাদের ব্যথিত করেছে।
‘আব্বাসীর এত দিন কারাগারে থাকার কথা ছিল। সরকার এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ‘আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু ট্রেনিং জমা দেইনি। মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তায় নামলে একাত্তরের মতো আব্বাসী গংরা পাকিস্তানে পালিয়ে যাবে। আব্বাসী ক্ষমা না চাইলে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে যেখানে পাবে সেখানেই প্রতিহত করবে।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘জাতীয় সংগীত ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে আব্বাসী প্রকাশ্য কটূক্তি ও সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়িয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।
‘সম্প্রতি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জঙ্গির সঙ্গে তুলনা করে এনায়েত উল্লাহ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চরম আঘাত করেছেন, যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
‘সরকারের কাছে দাবি, অবিলম্বে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির দোসর ও ধর্ম ব্যবসায়ী এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। এর মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা না হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে দেশব্যাপী আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য ১৪৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট পাচ্ছে।
এ ছাড়া চলতি অর্থ বছরের ১২১ কোটি ২৪ লাখ টাকার মূল রাজস্ব বাজেটের পরিবর্তে সংশোধিত বাজেট পাওয়া গেছে ১৩৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে বুধবার বেলা ৩টায় অ্যাকাডেমিক প্রধানদের সঙ্গে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট এবং অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।
ওই সময় উপাচার্য প্রাপ্ত বরাদ্দ সময়মতো এবং যথাযথভাবে ব্যয়ের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আগামী বছর বাজেট প্রণয়নের আগেই বটম আপ অ্যাপ্রোচ করা হবে। অর্থাৎ বিভিন্ন ডিসিপ্লিন ও বিভাগ থেকে ব্যয়ের খাত ও চাহিদা নেয়ার পর বাজেট প্রণয়ন করা হবে।’
সভায় উপাচার্য আগামী অর্থবছরের জন্য শিক্ষা উপকরণ খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ বৃদ্ধির আভাস দিয়ে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং এর ফলে শিক্ষার গুণগত মান অর্জন সহায়ক হবে।’
উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও আগামী অর্থবছরে বাজেটে প্রত্যাশিত বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) ধন্যবাদ জানান।
সভায় আসন্ন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা, আইসিটি কার্যক্রম, অনলাইনে স্টুডেন্ট ফিডব্যাক, প্রত্যেক ডিসিপ্লিনে ভর্তিতে ছাত্র সংখ্যার যৌক্তিকীকরণ, ওবিই কারিকুলা প্রণয়নের অগ্রগতি, আসন্ন ঢাবি ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, শুদ্ধাচার পুরস্কার, ক্রয় পদ্ধতি, জার্নাল প্রকাশনায় বরাদ্দসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পায়।
উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গল্লামারী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ইউজিসি থেকে ৫০ লাখ এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ৬৪ লাখ টাকার বেশি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সফট অবকাঠামো’ শীর্ষক জমাদানকৃত ডিপিপি এবং ইতিপূর্বে পেশকৃত অরগানোগ্রাম অনুমোদনের বিষয়টি পাইপলাইনে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন:ভুল প্রতিপাদ্যের ব্যানারেই বিশ্ব জাদুঘর দিবস-২০২২ পালন করল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।
এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্য পাওয়ার অব মিউজিয়ামস’। কিন্তু বুধবারের অনুষ্ঠানের র্যালির ব্যানারে লেখা ছিল ‘দ্য ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড ইমাজিন’।
মূলত এ প্রতিপাদ্যটি গত বছরের। সেই প্রতিপাদ্যটিই এবারের অনুষ্ঠানে লেখা হয়েছে, তাও ভুলভাবে।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২১-এর প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্য ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড রিইমাজিন’। যেখানে চবির বুধবারের অনুষ্ঠানে ‘রিইমাজিনের’ জায়গায় লেখা হয়েছে ‘ইমাজিন’। একই ভুল ছিল জাদুঘর দিবসের র্যালির ক্যাপেও।
বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ব জাদুঘর দিবস-২২ উপলক্ষে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি প্রশাসনিক ভবন থেকে চবি জাদুঘর ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে আলোচনা সভা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের (আইসিওএম) আহবানে ১৯৭৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আইসিওএম। এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর যুক্ত রয়েছে। প্রতি বছরই একটি স্লোগান সামনে রেখে এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘দ্যা পাওয়ার অব মিউজিয়ামস’।
তবে জাদুঘর দিবসের প্রতিপাদ্যে এমন ভুল কেন? জানতে চাইলে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন ও জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। কথা বলা সম্ভব না।’
জাদুঘরের সেকশন অফিসার আবদুস শুকুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমরা অনেক যাচাই-বাছাই করে ইন্টারনেট থেকে নিয়েছিলাম। তবে আজকে সকালে দেখলাম সেটা পরিবর্তন করেছে। আমরা বিষয়টা জানতাম না। নতুনটা আমরা আজকেই দেখছি।’
জাদুঘর শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আমরা দুই দিন আগে ব্যানার ও দাওয়াত কার্ড করেছি। পরশু পর্যন্ত ২২ সালের থিমে আমরা দেখেছিলাম ‘দ্যা ফিউচার অব মিউজিয়ামস: রিকভার অ্যান্ড ইমাজিন’ লেখা ছিল। আজকে আমরা দেখেছি থিম চেঞ্জ হয়েছে।’
সকালে পরিবর্তন করা হয়নি কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে আমাদের নজরে আসেনি। আপনি বলার পর বিষয়টা আমরা দেখলাম।’
চবি আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক জাকির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় তার যে নির্ধারিত দায়িত্ব, দক্ষতা ও যোগ্যতা এ সমস্ত জায়গা থেকে আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। এটা যে প্রথমবারের মতো ভুল হয়েছে এমন নয়। এর আগেও হয়েছে।
‘শুধু একটা ঘটনা নয়, একের পর এক ধারবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তার মানে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একবার ঘটলে সেটা মানবিক ভুল। কিন্তু একই ঘটনা বারবার ঘটা দায়িত্বহীনতার পরিচয়। তারা দায়িত্ব এড়ানোর জন্য বারবার বলে আজকে দেখেছি। এটা দায়িত্বহীনতা।’
আরও পড়ুন:নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে কেনা বিলাসবহুল ১০টি গাড়ি বিক্রি করে সেই টাকা প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ তহবিলে জমা করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেনের সই করা এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
আদেশে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৪৪ (১) অনুযায়ী প্রত্যক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাধারণ তহবিল থাকবে এবং ৪৪ (৭) ধারা অনুযায়ী সাধারণ তহবিলের অর্থ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাবে না।
নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়ন খাতে প্রয়োজনীয় ব্যয় না করে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১২টি গাড়ি কেনে। এর মধ্যে ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, উল্লিখিত ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি খোলা দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নে ব্যয়ের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তহবিলে জমা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে জরুরি ভিত্তিতে জানানোর অনুরোধ করা হলো।
যে ১০টি গাড়ি বিক্রি করতে হবে
যানবাহনের ধরন ও মডেল হলো- হার্ড জিপ (টয়োটা প্রাডো টি এক্স), মডেল-২০১৫; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার ভোগ পি ৪০০ ), মডেল-২০১৯; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার ভোগ পি ৪০০ ই), মডেল-২০১৯; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার অটোবায়োগ্রাফি), মডেল-২০১৯; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার ভোগ পি ৪০০), মডেল-২০১৯; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার অটোবায়োগ্রাফি), মডেল-২০১৯, হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার অটোবায়োগ্রাফি), মডেল-২০১৯; হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার ভোগ পি ৪০০ ই), মডেল-২০১৯; কার (স্যালুন) মার্সিডিজ বেঞ্জ, মডেল-২০১৯ এবং হার্ড জিপ (রেঞ্জ রোভার ভোগ পি ৪০০ ই), মডেল-২০১৯।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নতুন তিনটি অনুষদ চালুর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
বৃহস্পতিবার নতুন অনুষদ চালুর অনুমতি দিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়।
চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া নতুন তিনটি অনুষদ হলো— ফ্যাকল্টি অফ পোস্ট গ্রাজুয়েশন স্টাডিস, ফ্যাকাল্টি অফ কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স।
এ ছাড়া রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নামে আরেকটি ইনস্টিটিউটের অনুমোদনও দেয়া হয়েছে।
বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসি গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন তিনটি ফ্যাকাল্টির অনুমোদন দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
‘বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আরও কিছু অনুষদ ও বিষয় চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।’
আরও পড়ুন:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রীদের আবাসিক হলে রাতে প্রবেশের নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। রাত ৯টা থেকে কমিয়ে সেটি করা হয়েছে রাত সাড়ে ৮টা।
হল প্রাধ্যক্ষরা মিটিং করে গত ৯ মে এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে ছাত্রীদের হলে প্রবেশ করতে হবে। এর আগে এই সময়সীমা ছিল সন্ধ্যা ৭টা, যা নিয়ে ছাত্রীদের আন্দোলনের পর তা রাত ৯টা করা হয়েছিল।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রদের হলে প্রবেশের কোনো সময়সীমা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন শিক্ষার্থীদের অনেকেই। তারা বলছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সময় নিয়ে এমন বৈষম্য থাকা উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য জানিয়েছেন, পারিবারিক শৃঙ্খলার চর্চা ক্যাম্পাসে বজায় রাখতে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে। সে সময়ে ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সময়সীমা ছিল সন্ধ্যা ৭টা। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সান্ধ্য আইন ‘শিথিল’ করে হলে প্রবেশের শেষ সময় করা হয় রাত ৯টা।
কোনো ছাত্রীর কাজ থাকলে নির্ধারিত সময়ের পরেও হলে প্রবেশ করতে পারবে- এমনটাও জানিয়েছিল রাবি কর্তৃপক্ষ।
তবে গত ৯ মে এই সময়সীমা আধাঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছে সব হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী কঙ্গনা সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মুক্তচর্চার জায়গায় এমন কোনো ধরনের আইন থাকা উচিত নয়। কারণ এখানে ছেলে-মেয়েদের সমান অধিকার থাকা উচিত। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের কাজ করা উচিত। সেটি না করে তারা বরং ছাত্রীদের ওপর অন্যায় নিয়ম আরোপ করছে। এসব আইন জেলখানার কয়েদিদের আইনের মতো।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাত রীতা বলেন, ‘একই ক্যাম্পাসে ছেলে-মেয়ে সবার সমান অধিকার থাকা উচিত। এমন একমুখী আইন আমি সমর্থন করি না।
‘এর আগে আন্দোলনের ফলে সময় রাত ৯টা পর্যন্ত ছিল। এখন হুট করে আবার সেটি কমিয়ে সাড়ে ৮টা কেন করা হলো? এর মানে হলো যে প্রশাসন চাইলে যেকোনো ধরনের নিয়ম তারা পরিবর্তন করতে পারে। এসব হয়রানিমূলক কোনো নিয়ম থাকা উচিত নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান রাজু বলেন, ‘আবাসিক হলের সময়সীমার বিষয়ে আসলে ছাত্রীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তবে হলে প্রবেশের সময়সীমা আরও বাড়ানো দরকার।’
তবে নতুন বিজ্ঞপ্তিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়, ভুলে তা নোটিশ আকারে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রীদের আবাসিক হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ফেরদৌসী মহল।
তিনি বলেন, ‘মূলত ওটা কোনো বিজ্ঞপ্তি নয়। এর আগে আমরা মেয়েদের ৬টি হলের প্রাধ্যক্ষরা বসেছিলাম যে ছুটির পর এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যায় কি না। এ নিয়ে আমরা ছুটির পর হলের মেয়েদের সঙ্গেও কথা বলব এমনটাই বলা হয়েছিল প্রভোস্টদের। কিন্তু ভুলক্রমে এক হলের প্রভোস্ট নোটিশ আকারে দিয়ে দিয়েছেন।
‘আগামীতে সব হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে একটি কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সান্ধ্য আইন হিসেবে ওইভাবে মানুষের ওপর চাপায়ে দিতে চাই না আমরা। প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়ের নিরাপত্তার বিষয়টা সবার আগে। এখন হাজার ব্যবস্থাও যদি আমরা করি তার মধ্যেও অনেক কিছুই ঘটতে পারে।
‘ছেলে-মেয়ের বাবা-মাও যেমন করে চায় যে একটা সময় পর্যন্ত বাইরে থেকে তারা লেখাপড়ায় ব্যস্ত হোক। আমরাও স্বাভাবিক অর্থে সেইটাই চাচ্ছি। সাধারণত সাড়ে আটটার ভেতরে আমরা আমাদের বাইরের কাজগুলো শেষ করি। লাইব্রেরি বন্ধ হয়ে যায়, সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমরা যদি পড়ার টেবিলে ফিরতে পারি এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
‘তাই বলে আমরা তাদের শৃঙ্খলিত করব এমনটা না। স্বাধীনতার যুগে কাউকে শৃঙ্খলিত করা কেউই পছন্দ করবে না। আমরা চাই নিয়মের ভেতরেই জীবনটা গড়ে নিতে।’
ছেলেদের হলে প্রবেশের নির্ধারিত সময় নাই, অথচ মেয়েদের সময়সীমা কেন নির্ধারণ করা হলো?
এ প্রশ্নে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘এটি এখন স্বাভাবিক প্রশ্ন, সবাই করতে পারে। কিন্তু এর পরিপ্রেক্ষিতটাও আমি একটু ভাবতে অনুরোধ করব। বাবা-মায়ের চাইতে তো দুনিয়াতে প্রিয় মানুষ কেউ নেই। একটা বাবা-মাকেও যদি ভাবতে বলি তারা কী বলবেন সেটাও ভাবতে হবে। তারা আমাদের কাছে ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে যে উদ্বিগ্ন থাকেন, আল্লাহ না করুক ছেলে-মেয়েদের যদি একটু কিছু হয় ওই বিষয়টা তো আমরা কোনোভাবেই এক শ ভাগ নিশ্চিত করতে পারি না।
‘ছেলে-মেয়েরা কে কোথায় যাচ্ছে সেটা তো বলতে পারি না। আমরা বাবা-মায়েদের কথা ভেবে, অনেক বাবা-মায়ের সঙ্গে আমাদের কথাও হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’
জরুরি পরিস্থিতি বা প্রয়োজনে সময়সীমার বিষয়টা বিবেচনা করা হবে জানিয়ে উপ-উপাচার্য সুলতান বলেন, ‘কারও জরুরি প্রয়োজন হলে কেউ এতটা অমানবিক হবে না যে জরুরি বিষয়টা বুঝবে না। সেদিকটাও অবশ্যই বিবেচনায় থাকবে। এটি শৃঙ্খলিত করা নয়। পারিবারিকভাবেও আমরা যেমন নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে থাকি এখানেও সেটা।’
এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন নয়, পারিবারিক নিয়ম বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এমন নিয়ম চলে আসছে। এটি তো আইন নয়, এটি পারিবারিক নিয়ম। নানা দিক বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চলছে। এটা পারিবারিক নিয়ম-কানুনের মতো করেই চালু ছিল, যখন আমরা ৭৮ সালে ছাত্র ছিলাম, তখনও।’
তবে এই পারিবারিক নিয়ম কেবল ছাত্রীদের জন্যই কেন? জানতে চাইলে তিনি জানান, মেয়েদের নিয়েই অভিভাবকরা বেশি চিন্তিত থাকেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ও ছাত্রীদের হলে ফেরার সময় নিয়ে ‘পারিবারিক নিয়মটি’ জারি করেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য