দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, তার কোনো স্পষ্ট জবাব নেই সরকারের কাছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে জানালেও কবে থেকে খোলা হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সচিবালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভা বৈঠক। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সচিবালয় থেকে যুক্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং বৈঠকের অন্য অংশীজনরা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাওয়া হয় সচিবের কাছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এর আগে সচিব সভায় নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আজকেও কথা হয়েছে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কর্মসূচি ঠিক করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা প্রোগ্রাম ঠিক করছে- কীভাবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব… তারা আপনাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বসবে। পাবলিকলি বলে দেবে (কবে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে)।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
আসামী পক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু আজ বাসসকে জানান, তিনি ১৩১ পৃষ্ঠার রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি তিনি হাতে পেয়েছেন।
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। সে রায়ে বিচারিক আদালতের দেয়া ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হাইকোর্ট বহাল রাখেন।
হাইকোর্ট যাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন তারা হলেন, মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
হাইকোর্ট যে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন তারা হলেন, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না।
হাইকোর্টে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী, রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ। আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর বর্বরোচিত ও নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার ফাহাদ। বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবরার। এ হত্যাকাণ্ডে সারাদেশের ছাত্র সমাজ ফুঁসে ওঠে এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ব্যাপক প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এ নির্মমতার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানায়।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার আদালত। এরপর ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে, আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এক পর্যায়ে গত বছর ৭ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই মামলায় দ্রুত পেপারবুক তৈরি করে হাইকোর্টে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেন। সে ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।
আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা বরকত উল্লাহ ব্যাংকার। আর মা রোকেয়া খাতুন একজন গৃহিণী। কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবরার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন এবং পরে কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে এইচএসসি কৃতিত্বের সাথে পাস করেন।
আবরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। তার মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ুক, তবুও আবরার ইঞ্জিনিয়ারিং বেছে নেন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে ভর্তি হন। তিনি বুয়েট এনার্জি ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি ক্লাবের সাথে জড়িত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতার আলোকে ইতিহাসের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালনা এবং দেশকে ঢেলে সাজানোর একটি দুর্লভ ও সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশে গণমানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে না পারলে জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের দুই দিনব্যাপী ১৪তম দ্বিবার্ষিক আন্তর্জাতিক ইতিহাস সম্মেলন ও সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে বলেন, ‘সব রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বজনীন ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিষদের যুগ্মসম্পাদক অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার। যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম খাদেমুল হক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন।
ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। বিচারপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা ইতোমধ্যে এর সুফল পেতে শুরু করেছেন।’
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে ইতোমধ্যে অধ্যাদেশ প্রণীত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সুপ্রীম জুডিশিয়াল এপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের মাধ্যমে আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, উচ্চ আদালতে বিচারক অপসারণে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও বিচার প্রক্রিয়া সহজীকরণের বার্তা নিয়ে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাস যে কোন জাতির আত্মপরিচয়ের ধারক। একটি জাতির অতীতের চেতনা, সফলতা ও আত্মত্যাগ সবকিছু ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকে। একারণে ইতিহাস আমাদের পথচলার দিকনির্দেশক ও ভবিষ্যত নির্মাণের প্রেরণা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ইতিহাস শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়, ইতিহাস ছড়িয়ে আছে সংগ্রহশালায়, দলিলে, পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনে, স্থাপত্যে, বিভিন্ন গ্রন্থে ও স্মারকে। ইতিহাসের মূল্যবান উপকরণ সংরক্ষণ শুধুমাত্র ইতিহাসবিদদের একার কাজ নয়। এক্ষেত্রে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব রয়েছে। সমষ্টিগতভাবে এই দায়িত্ব পালনে আমরা ব্যর্থ হলে অনেক ঐতিহাসিক দলিল, নিদর্শন ও স্মারক সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যাবে। তাই ইতিহাস সংরক্ষণে প্রত্যেক সচেতন নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ইতিহাসের মূল্যবান উপকরণসমূহ সাধারণ মানুষের বোধগম্য করতে মাতৃভাষায় ইতিহাস চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, তত্ত্ব ও বাস্তবতার মেলবন্ধন ঘটানোর লক্ষ্যে আমরা একাডেমিয়া ও পেশাজীবীদের মধ্যে সম্পর্ক জিইয়ে রাখতে চাই। আমরা সমাজের সকল অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনির্ভরতা অর্জন ও সামগ্রিক উন্নয়নে এই সর্বজনীন প্ল্যাটফর্মে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
১৪৩০ ও ১৪৩১ বাংলা বর্ষে ইতিহাস বিষয়ে প্রকাশিত সেরা গ্রন্থের জন্য ৩ জনকে ‘বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ পুস্তক সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বশির আহম্মেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম এবং বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা মামুন সিদ্দিকী।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের ১৮টি পর্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকগণ ইতিহাস বিষয়ক প্রায় ১’শটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সূচকে এবারও বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিস্থিতি বেশ ‘গুরুতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২৫ সালের সূচকে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
৩৩.৭১ স্কোর নিয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম। ২০২৪ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, এর আগের বছর ছিল ১৬৩তম। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম সূচকে ১৫০-এর ভেতর অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
আরএসএফের এ বছরের সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৫১তম, পাকিস্তানের ১৫৮তম ও ভুটানের ১৫২তম। সূচকে এই তিনটি দেশ বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তবে নেপাল (৯০তম), শ্রীলঙ্কা (১৩৯তম) ও মালদ্বীপ (১০৪তম) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।
২৩ বছর ধরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বার্ষিক সূচক প্রকাশ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, এবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সূচকের ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বের অর্ধেক দেশের জন্য সাংবাদিকতার অনুকূল পরিবেশ ‘খারাপ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এক-চতুর্থাংশেরও কম দেশে পরিস্থিতি সন্তোষজনক।
সূচকে ২০২৪ সালে ১১ ধাপ পেছানোর পর এ বছর আরও দুই ধাপ পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৫৭তম স্থানে অবস্থান করছে। এই সূচকে দেশটির অবস্থান এখন পশ্চিম আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিয়েরা লিওনেরও নিচে।
আরএসএফের মতে, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটিয়েছেন, যা দেশটিতে স্বৈরাচারী মোড়ের ইঙ্গিত দেয়। টানা নবমবারের মতো সূচকের শীর্ষে আছে নরওয়ে। এবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে দখল করেছে এস্তোনিয়া ও নেদারল্যান্ডস।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক ও সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকির উপর হামলা করেছেন সাবেক এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন খুবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (০২ মে) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলাকারী ওই শিক্ষার্থীর নাম আবদুল্লাহ নোমান। তিনি বাংলা বিভাগের ২০১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন শিক্ষক সাকি। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে হামলার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে গভীর রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হামলাকারী নোমানকে ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন তারা। তাকে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রাত ১টার দিকে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম। শিক্ষকের ওপর শিক্ষার্থীর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি ইউএনবি কে বলেন, ‘আমি নির্বাক। শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা একটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ। যা কখনও চিন্তা করা যায় না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ বছর ইতিহাসে এ ধরনের জঘন্যতম ঘটনা একটিও ঘটেনি।’
উপাচার্য আরও বলেন, একজন শিক্ষক লাঞ্ছিত করা মানে পুরো শিক্ষক সমাজকেই লাঞ্ছিত করা। হামলাকারীকে শাস্তির আওতায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে।
সিলেট থেকে সরাসরি হজ ফ্লাইট আগামী ১৪ মে থেকে শুরু হচ্ছে। এ দিন ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের মদিনার উদ্দেশে উড়াল দিবে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট।
বাংলাদেশ বিমানের সিলেটের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটের হজযাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এ বছর পাঁচটি ফ্লাইট সরাসরি সিলেট থেকে পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ফ্লাইট যাবে সরাসরি মদিনায়। বাকি চারটি ফ্লাইট ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৯ মে সিলেট-জেদ্দা রুটে পরিচালিত হবে।
রোড টু মক্কা কর্মসূচির অধীনে হজ্জ যাত্রীদের জন্য দুই দেশের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্নের সুযোগ থাকলেও সিলেট থেকে পরিচালিত ফ্লাইটের যাত্রীদের সৌদি ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে করা হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সিলেট জোনের সভাপতি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান জানান, সিলেট থেকে এ বছর ২৭ শ মুসল্লী হজে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৫ জন সিলেট থেকে বিমানের ফ্লাইটে এবং অন্যরা যাবেন ঢাকা থেকে।
এ অঞ্চলের হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সিলেটের তিনটি শীর্ষ এজেন্সির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় আমাদের লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তৃতায় তিনি আজ এ কথা বলেন।
আলী রিয়াজ আশা প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাড় দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন রকম আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। আমরা আশা করি জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্নে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবেন। কারণ আমরা সকলে মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন, বিনির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
আলী রিয়াজ বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে অগ্রসর হওয়ার জন্য তা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এক জায়গায় আসতে হবে। এর অর্থ এ নয় যে সব বিষয়ে আমরা একমত হতে পারব। কিন্তু যেগুলো রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠনে এবং গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন সেখানে আশা করি একমত হতে পারব। সেটাই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট (এনপিপি) ১১২টায় একমত, ২৬টায় একমত নয় এবং ২৮ টায় আংশিক একমত হয়েছে বলে জানান জোটের চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
বৈঠকে ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জোটের ১১ জন নেতা আজ সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, একটা অনির্বাচিত সরকার যদি দীর্ঘসময় থাকে এটা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ
বলেন, ‘আপনি এমন একটা ভোটের ব্যবস্থা করে দেন যাতে মানুষ বলতে পারে দীর্ঘ পনেরো বছর পর আমরা এমন একটা ভোট দেখতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যেন বলতে পারে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সরকার গঠন করতে পেরেছি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠক উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সংস্কার কমিশন সমূহের সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করা হয় গত ১২ ফেব্রুয়ারি। সাত সদস্য বিশিষ্ট এই কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক শনিবার (০৩ মে) খিঁলগাও উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এর উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থানা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় সোসাইটির জনগন এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্নতা কর্মী, স্বাস্থ্য বিভাগের মশক কর্মীদের দ্বারা উত্তর শাহজাহানপুর আবাসিক এলাকা, ঝিল ও সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়।
পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, বর্ষার মৌসুমকে মাথায় রেখে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা দুটি স্তরে কার্যক্রম শুরু করেছি, প্রথমটি হলো নিয়মিত মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। দ্বিতীয়টি হল বিশেষ মশক নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম এবং জনগনকে সম্পৃক্তকরণ জনসচেতনতামূলক র্যালি যা পর্যায়ক্রমে ডিএসসিসির দশটি অঞ্চলে পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে যাত্রাবাড়ী ও ধানমন্ডিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
প্রশাসক আরো বলেন, নগরবাসীকে সচেতনত হতে হবে এবং বাসার ভেতরে, ফুলের টব, চৌবাচ্চা ও বারান্দায় জমে থাকা পানি তিনদিনের ভেতরে নিজ উদ্যোগে ফেলে দিতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন এবং নগরবাসীকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এ ছাড়াও অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র্যালি হয়।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো: জিল্লুর রহমান, সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞা সহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য