করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা সরকারের। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেয়া হতে পারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পাবলিক পরীক্ষা দুটি নেয়া হবে শুধু গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে। এরই মধ্যে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তৈরি করা হয়েছে।
পরীক্ষা কীভাবে নেয়া হবে এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিসহ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নানা বিষয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন আন্তশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
নিউজবাংলা: নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে, আবশ্যিক বিষয়গুলোতে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) কেন পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না?
নেহাল আহমেদ: আমরা এখন কিন্তু স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেই। আমরা করোনাকালীন পরিস্থিতিতে আছি। এই বিষয়টি মাথায় রাখলেই আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি-এই বিষয়গুলো আছে। যদি আমরা পরীক্ষা নিই, তাহলে এক দিনে এই বিষয়গুলোতে সব শিক্ষার্থীই অংশ নেবে।
উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, ঢাকা কলেজে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থীর সিট পড়ে, সেখানে যখন সব শিক্ষার্থী আসবে তাদের সঙ্গে ৫ থেকে ৬ হাজার অভিভাবক আসবেন, তখন ১০-১২ হাজার জনের একটা মব তৈরি হবে। এই পরিস্থিতিতে তখন আমাদের পক্ষে কি স্বাস্থ্যবিধি মানা আদৌ সম্ভব? আমাদের তো বারবার স্বাস্থ্যবিধি এবং করোনাকালের বিষয়টি মাথায় রাখতে হচ্ছে।
আবশ্যিক বিষয়সমূহ যেহেতু প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আছে, তাই আমরা এগুলো বাদ দিয়েছি যেন স্বাস্থ্যবিধিটা যথাযথভাবে মানা যায়। আমাদের এখনকার পরিকল্পনা অনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার দিন শুধু বিজ্ঞানের পরীক্ষার্থীরা আসবে, মানবিকের দিন মানবিকের শিক্ষার্থীরা, ব্যবসায় শিক্ষার দিন ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা। এতে একটি ব্যাচের সঙ্গে আরেকটি ব্যাচের দেখা হবে না।
এর ফলে যেখানে একটি সেন্টারে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী আসত, সেখানে এই ব্যবস্থাপনায় তা নেবে আসবে ১ হাজারে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধিটা মানা সম্ভব হবে। এ কারণেই কিন্তু আমরা আবশ্যিক বিষয়সমূহ বাদ দিয়েছি।
নিউজবাংলা: পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি কেমন হবে?
নেহাল আহমেদ: পরীক্ষার মূল্যায়ন নিয়েও শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। গত বছর আমরা কোনো পরীক্ষা না নিয়েই এইচএসসির সম্পূর্ণ রেজাল্ট দিয়েছি। আমরা যেসব বিষয়ে পরীক্ষা নেব না, সে ক্ষেত্রে আমরা গত বছরের মতো সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করব।
একজন শিক্ষার্থী যখন ফল হাতে পাবে, তখন সে দেখবে তার সব বিষয়ে ফল আছে। এর মধ্যে আমরা শুধু তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নেব। তিন বিষয়ের ফল আসবে পরীক্ষা থেকে আর বাকিগুলো আসবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে।
নিউজবাংলা: পরীক্ষার নম্বর বণ্টন কেমন হবে?
নেহাল আহমেদ: ইতোমধ্যে আমাদের প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর প্রশ্ন করা হয়েছে। ধরুন, যে প্রশ্নপত্রটি দেয়া হবে সেখানে ১০টা প্রশ্ন আছে। সাধারণত শিক্ষার্থীকে আগে ৭-৮টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। পরীক্ষার সময়ও যেহেতু কমানো হবে, অর্থাৎ ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা দেড় ঘণ্টায় নেব, তাই আমরা শিক্ষার্থীদের ২-৩টা প্রশ্নের উত্তর দিতে বলব। এটি বিষয় অনুযায়ী ভেরি করবে। এ বিষয়ে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বসবেন। অর্থাৎ উত্তর দেয়ার শিক্ষার্থীদের অপশন অনেক বেশি থাকবে।
নিউজবাংলা: চতুর্থ বিষয় নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই?
নেহাল আহমেদ: বিষয়টি নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। বিশেষ করে এটা নিয়ে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা রয়েছে। অনেকেই চতুর্থ বিষয় পরিবর্তন করার জন্য বোর্ডে যোগাযোগ করছেন। এ সুযোগ এখন আর নেই। অনেক অভিভাবক এসে বলছেন, আমার ছেলে বা মেয়ে তো মেডিক্যালে পড়বে, জীববিজ্ঞানে যদি নম্বর না থাকে, তাহলে তো সে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না। ওনাদের উদ্দেশে বলছি, কারও চতুর্থ বিষয় হয়তো জীববিজ্ঞান, কারও গণিত। দুই বিষয়েই কিন্তু তারা নম্বর পাবে। একটা আসবে পরীক্ষা থেকে আর একটা আসবে সাবজেক্ট ম্যাপিং থেকে।
শিক্ষার্থীর হাতে যখন নম্বরপত্রটা পৌঁছাবে, তখন সে দেখবে প্রতিটা বিষয়ে নম্বর পেয়েছে। কারণ আমরা একটা কমপ্লিট নম্বরপত্র তৈরি করে শিক্ষার্থীদের হাতে দেব। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভয়েরও কোনো কারণ নেই। কারণ তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের নম্বর আসবে পরীক্ষা থেকে আর বাকিগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিং থেকে। তাই আমি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আশ্বস্ত করতে চাই, চতুর্থ বিষয় নিয়ে বুয়েট কিংবা মেডিক্যালে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হবে না।
নিউজবাংলা: সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই।
নেহাল আহমেদ: গত বছর আমরা এইচএসসিতে যে ফলটা দিয়েছিলাম, সেখানে আমরা জেএসসি থেকে ২৫ শতাংশ নম্বর নিয়েছিলাম আর এসএসসি থেকে ৭৫ নম্বর নিয়েছিলাম। তারপর সেটাকে সমন্বয় করে ১০০ নম্বরের মূল্যায়ন করা হয়েছিল। এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য কোন পরীক্ষা থেকে কত শতাংশ নম্বর নেয়া হবে, তা নির্ধারণ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
এসএসসির জন্য শুধু জেএসসি পরীক্ষাকেই ব্যবহার করব সাবজেক্ট ম্যাপিং করার ক্ষেত্রে।
নিউজবাংলা: অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে জানতে চাই।
নেহাল আহমেদ: আমরা এখন শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দিচ্ছি। যেগুলো তৈরি করেছে জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। যেহেতু আমরা ক্লাসগুলো নিতে পারিনি, তাই এই অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতির সুযোগ পাবে।
অ্যাসাইনমেন্টে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডে জমা থাকবে। আমাদের যদি পরীক্ষা না নেয়ার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে আমরা অ্যাসাইনমেন্ট থেকে কিছু নম্বর নেয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারি। অ্যাসাইনমেন্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সব বিষয়ের সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করব। আর অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যদি অভিযোগ ওঠে তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমরা নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা নেব। অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীরা যেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে এবং পড়াশোনার মধ্যে থাকে।
নিউজবাংলা: এসএসসির ক্ষেত্রে কি অবজেকটিভ থাকবে?
নেহাল আহমেদ: আগের মতো সবকিছুই থাকবে। তবে প্র্যাকটিকালের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যে নোটবুক তৈরি করত, সেখানে আগে ৫ নম্বর ছিল। সেটাকে আমরা ২৫-এ ট্রান্সফার করব। আর এমসিকিউতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ছিল ২৫ নম্বর। সেখানে সবগুলোই দিতে হতো। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের অপশন বাড়িয়ে দেব। যেমন, তারা এখন ২৫টার মধ্যে যেকোনো ১২টার উত্তর দেবে। এটা মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষার ক্ষেত্রেও করব।
নিউজবাংলা: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নেহাল আহমেদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন:
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।
শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ ও থাই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থেকে বেরিয়ে ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি শুক্রবার এ কথা জানান। খবর বাসসের
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
দুপুরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গভর্নমেন্ট হাউজে উভয় নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। সন্ধ্যায় ঢাকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
ড. হাছান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে তারা একান্তে কথা বলেন, এরপর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বহু বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
থাইল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের যে ভ্রাতৃপ্রতিম ও বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক, সেটা আরও জোরদার, বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত করার ব্যাপারে দুই প্রধানমন্ত্রী গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ সময় অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।
দেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. প্রাণপ্রী বাহিদ্ধা নুকারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বর্ণনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি ইকোনমিক জোন ও আইটি ভিলেজে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা চাইলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন করার কথাও বলেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হচ্ছে বৈঠকে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ড. হাছান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, এখনো অনেকে আসছেন। থাইল্যান্ডও এই পালিয়ে আসা মানুষদের ভারে জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের একসাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এদিন গভর্নমেন্ট হাউজে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অফ অনার প্রদানকালে থাই প্রধানমন্ত্রী সাথে ছিলেন। শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান। তিনি বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে দেওয়া ভাষণে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান।
সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর আগামী ২৯ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের উন্নয়নে আপনাদেরকে কাজ করতে হবে।
থাইল্যান্ড আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অবস্থানকালীন আবাসস্থলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বঙ্গবন্ধু তার অনুপ্রেরণার উৎস উল্লেখ করে শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জাতির পিতাকে অসময়ে হত্যা করা হলেও ‘তার আদর্শ আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে এবং সে কারণেই আমি তার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শ বাস্তবায়ন করতে কাজ করছি। বঙ্গবন্ধু দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন।
গত ১৫ বছরে দেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকায় এ অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, অনেক বাংলাদেশি থাইল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে তারা দ্বৈত নাগরিকত্ব বজায় রাখতে চান। এই দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে থাই সরকারের সাথে কথা বলবেন।
মন্তব্য