বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ ব্যাচের এক নারী শিক্ষার্থীকে অনলাইনে যৌন হয়রানির ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এ কে এম আশিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা অবগত আছি। শনিবার বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে আমরা প্রথম জানতে পারি। এটি নিয়ে সোমবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গোপনীয়তার কারণে কমিটির সদস্যদের নাম বলতে রাজি হননি এই অধ্যাপক।
কমিটি গঠনের বিষয়ে বুয়েটের ডিরেক্টর অফ স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ারের (ডিএসডব্লিউ) পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটি আজ থেকে তাদের কাজ শুরু করবে। কমিটি রিপোর্ট দিলে তার ভিত্তিতে বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনি কমিটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।’
সিএসই বিভাগের ১৯ ব্যাচের ছেলে সহপাঠীর দ্বারা আরেক নারী সহপাঠীর অনলাইনে হেনস্তার বিষয়টি ২৩ জুলাই রাতে একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী হাফিজুল হক চৌধুরীর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রথম প্রকাশ্যে আসে।
অনেক চেষ্টা করেও এ ঘটনার ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
হাফিজুলের পোস্টের সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে ভালো লাগত সিএসই ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী জারিফ হোসাইনের। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিষয়টি বন্ধু সালমান সায়ীদ, জারিফ ইকরাম ও জায়ীদ মানোয়ার চৌধুরীকে জানান জারিফ।
এ বছরের ২৯ মে তিন বন্ধুর প্ররোচনায় ওই নারী শিক্ষার্থীর ইনবক্সে নক দিয়ে নিজের ছবি পাঠানো শুরু করেন জারিফ হোসাইন। তিনি আগ্রহ না দেখালেও একপর্যায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি পাঠাতে শুরু করেন জারিফ হোসাইন। এতে ওই নারী শিক্ষার্থী রাগান্বিত হয়ে গেলে জারিফ হোসাইন তার কাছে ক্ষমা চেয়ে সেদিনের মতো কথা বলা বন্ধ করে দেন।
২২ জুলাই সন্ধ্যায় জারিফ হোসাইন তার তিন বন্ধুর সঙ্গে একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করে ওই নারীর শিক্ষার্থীর ইনবক্সে আবারও বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ছবি এবং অশ্লীল ভিডিও পাঠানো শুরু করেন। এতে বিরক্ত হয়ে ভুক্তভোগী মেয়েটি পুরো ঘটনা ব্যাচের একটি অভ্যন্তরীণ গ্রুপে জানান।
বিভাগের ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ ঘটনাটি জানার পর অভিযুক্তদের কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেন৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে রাত ১০টায় ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মিটিংয়ে বসেন। মিটিংয়ে জারিফ হোসাইন ঘটনার দায় এবং এতে বাকি তিন বন্ধুর সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেন। সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে জারিফ হোসাইন ওই নারী শিক্ষার্থীকে মেসেজ দেয়ার আগে এসব বন্ধু থেকে পরামর্শ নেয়ার স্ক্রিনশটও প্রকাশ করেন।
ওই স্ক্রিনশট থেকে দেখা যায়, ‘হেল্প মি’ নামের একটি মেসেঞ্জার গ্রুপে জারিফ হোসাইনকে বাকি তিন বন্ধু পরামর্শ দিচ্ছেন ওই নারী শিক্ষার্থীকে কখন কী কী মেসেজ দিতে হবে। আর সে অনুযায়ী জারিফ হোসাইন তাকে মেসেজ দিচ্ছেন।
হাফিজুল ইসলামের ওই পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, মিটিংয়ে জারিফ হোসাইনের তিন বন্ধু সালমান সায়ীদ, জারিফ ইকরাম ও জায়ীদ মানোয়ার চৌধুরীও নিজেদের দায় স্বীকার করেন। তারা এটিও স্বীকার করেন যে, তারাই ওই নারী শিক্ষার্থীকে এসব মেসেজ দেয়ার জন্য জারিফ হোসাইনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং ২২ জুলাই সম্মিলিত প্রয়াসে ছবি তুলে দিয়েছেন।
ওই নারী শিক্ষার্থীকে পাঠানো জারিফ হোসাইনের অশ্লীল ভিডিওটি জারিফ ইকরামের বাসায় বসে তিনজনের উপস্থিতিতে রেকর্ড করা হয়েছে।
২৩ জুলাই সিএসই ডিপার্টমেন্টের ব্যাচ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হেনস্তার সব প্রমাণ সবার সামনে প্রকাশ করা হয়। মিটিংয়েই শিক্ষার্থীরা জারিফ হোসাইন, জারিফ ইকরাম, সালমান সায়ীদ ও জায়ীদ মনোয়ার চৌধুরীকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। এর অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা এই চার শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেন এবং সব রকম এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের বর্জন করেন।
সভা থেকে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর কাছে লজ্জা প্রকাশ করেন। তারা জানায়, এ ঘটনায় পরবর্তী যেকোনো পদক্ষেপে তারা সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
বয়কটের বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছেন বুয়েটের ডিরেক্টর অব স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ারের পরিচালক মিজানুর রহমান।
এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষে কেউ কাউকে আসলে বয়কটের সুযোগ নেই। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ দোষী সাব্যস্ত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না।’
আরও পড়ুন:কয়েকদিন টানা মাঝারি শ্রেণিতে এবং একটু একটু করে উন্নতি হওয়ার পর পর গতকাল (শুক্রবার) হঠাৎ করেই ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়। তবে একদিন পরই আবারও সেই উন্নতির ধারায় ফিরেছে রাজধানীর বাতাস।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৫৯। অথচ, গতকাল প্রায় একই সময়ে শহরটির একিউআই স্কোর নামে ১০২-এ।
কণা দূষণের এই সূচক শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ ‘মাঝারি’ হলেও তা ‘ভালো’র কাছাকাছি রয়েছে।
গতকাল ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়লেও তার আগের পাঁচ দিন রাজধানীর বায়ুমানে ক্রমেই উন্নতি দেখা যাচ্ছিল। এর মধ্যে ২২ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ১৭তম, ২৩ জুন সকাল ৯টায় ২১তম, ২৪ জুন ২৯তম, ২৫ জুন ৩১তম এবং ২৬ জুন ঢাকার অবস্থান ছিল ৩৮তম।
আজ দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৪১তম। একই একিউআই স্কোর নিয়ে তারপরই রয়েছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ।
এই সময়ে সূচক ১৬৭ নিয়ে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর ছিল উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা। এ ছাড়া ১৫৬ স্কোর নিয়ে দুইয়ে ছিল ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ১৫৫ নিয়ে তিনে পাকিস্তানের লাহোর এবং ১৫১ স্কোর নিয়ে চারে ছিল ইন্দোনেশিয়ার আরও এক শহর মেদান।
১৪২ স্কোর নিয়ে ভারতের দিল্লি এই সময়ে অবস্থান করছিল সপ্তম স্থানে। তবে ৭৯ স্কোর নিয়ে গতকাল সকালে শহরটি বেশ ভালো অবস্থানে ছিল।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
ধান ও চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে এবং অবৈধ মজুত বন্ধে নওগাঁয় যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে অনুমোদনহীনভাবে ধান ও চাল মজুত ও খাদ্য নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন এবং গুদাম ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়মের কারণে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন রাইস মিল ও গুদামে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, ‘বাজারে চালের দাম বাড়ার পেছনে মজুতদারির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। এজন্য আমরা সরেজমিনে অভিযানে নেমেছি। যেসব রাইস মিলে অতিরিক্ত মজুত, নিয়ম না মেনে সংরক্ষণ কিংবা লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার আরো বলেন, সদর উপজেলার বরেন্দ্র রাইস মিল ও কে.এস অটোমেটিক রাইস মিলে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায়, অনুমোদনহীনভাবে ধান ও চাল মজুত রয়েছে। সেইসঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন এবং গুদাম ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়মও ধরা পড়ে। এ কারণে প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে মোট ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
দীর্ঘ এক যুগেও শেষ করা যায়নি ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্প। খাল খনন কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ করতে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ওই সময়ের মধ্যেও এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা যাবে কি না তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষায় ২০১৪ সালে এ খাল খননের প্রকল্প হাতে নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। গত ১২ বছরে এ খাল খনন কার্যক্রম শেষ হয়নি। অথচ এ খালের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে এ খাল খনন কার্যক্রম শেষ করতে দীর্ঘসময় লাগছে। আশা করছি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এ খাল খনন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। তখন বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, বাকলিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে।’ মেয়র আরও বলেন, বর্তমানে এ খননের আওতায় ৮টি ব্রিজ, ৭ হাজার ৮০০ ফুট খাল খনন, ৮ হাজার ফুট প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণ, ৫ হাজার ৫০০ ফুট ড্রেন, ৫ হাজার ফুট রাস্তা নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
চসিক সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ১৯৯৫ সালে করা ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত দুই দশমিক ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর খালটি খননের সুপারিশ করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবনাটি (ডিপিপি) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় চসিক। এর প্রায় আড়াই বছর পর ২০১৪ সালের ২৪ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে ২৮৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। তবে ওই সময়ের মধ্যে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এবং জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় এ প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। এরপর ২০১৭ সালের নভেম্বরে একনেকে প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করে আবারও অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশোধনে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। এ সময় এক লাফে এ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল সংশোধনে প্রকল্প ব্যয় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের চার বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এখন ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়দ বাড়াতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দের মধ্যে ১ হাজার ১০৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৫ দশমিক ২৩৫ একর জমি অধিগ্রহণে। সিটি করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, ‘২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি হবে ৬৫ ফুট চওড়া। খালের দুই পাশে ২০ ফুট করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি রাস্তা হবে এবং ছয় ফুট প্রস্থের দুটি করে ওয়াকওয়ে হবে। প্রকল্পটির ১৫ দশমিক ১৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার প্রতিরোধ দেওয়ালের মধ্যে ৫ কিলোমিটার, সাড়ে ৫ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে চার কিলোমিটার, ৯টি ব্রিজের মধ্যে ছয়টি, ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ও ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার খালের মধ্যে ২ কিলোমিটার খাল খনন কাজ শেষ হয়েছে। খালটি বারইপাড়া হাইজ্জারপুল থেকে শুরু হয়ে খালটি নূর নগর হাউসিং, ওয়াইজের পাড়া, বলিরহাটের বলি মসজিদের উত্তর পাশ দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশবে। নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা মো. ইউনুস বলেন, ‘মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিট বৃষ্টি হলেই বহদ্দারহাটসহ নগরের বেশিরভাগ এলাকায় পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। পানি ঢুকে ঘরবাড়িসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। এ সমস্যা বছরের পর বছর ধরে। জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। এসব প্রকল্পে মেয়াদ আর টাকা বাড়ে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলেনা। বরং জলাবদ্ধতার সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।’
ক্ষোভ হতাশা ও এক নারীর কারণে আলোচিত সোশ্যাল মিডিয়া তারকা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বগুড়ায় এক বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হিরো আলমের বন্ধু জাহিদ হাসান সাগর জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে হিরো আলম ধনুট ভান্ডারবারি এলাকায় তার বাড়িতে আসে। এরপর তার কথাবার্তা ও চলাফেরা দেখে সন্দেহজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে একাধিক ঘুমের ট্যাবলেট সেবনের কথা স্বীকার করে। পরে তাকে ধনুট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘হিরো আলমকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বিস্তারিত তথ্য মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানানো হবে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আলোচিত গাজী টায়ারস কারখানার অগ্নিকান্ডে ১৭৪ জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অগ্নিকান্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার তারাব পৌরসভার মাসাবো এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গাজী টায়ারস কারখানার সহব্যবস্থাপক পল রডিক্স বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার বরপা কবরস্থান এলাকার রমজান আলীর ভুইয়ার ছেলে রাজু মিয়া, একই এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে সিহাব, আক্তার হোসেনের ছেলে বেলায়েত হোসেন, সোলেইমান মিয়ার ছেলে বাবু মিয়া ও মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে শফিকুল ইসলাম।
মামলায় বলা হয়, তারাব পৌরসভার রূপসী এলাকার গাজী টায়ারস কারখানায় ২০২৪ সালের ২৫ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা উশৃঙ্খলাকারীরা গেট ভেঙে প্রবেশ করে কারখানার ভেতরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় তারা কারখানার ভেতরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটায়।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই ফিরে এলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিঙ্গাপুরগামী একটি ফ্লাইট। ইঞ্জিনে ক্রটি দেখা দেয়ায় ২৫০০ ফিট ওপরে ওঠানোর পর ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে।
গতকাল সকালে বিমানের বিজি ৫৮৪ ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে। ফ্লাইটটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের এয়ারক্রাফট দিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করেছে। বিমানে মোট ১৫৪ জন যাত্রী এবং ৭ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। সব যাত্রী-ক্রু নিরাপদ ও সুস্থ রয়েছেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানের ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় ৮টা ৩৮ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের পরপরই, প্রায় ২৫০০ ফিট উচ্চতায় পৌঁছালে বিমানের ক্যাপ্টেন ইঞ্জিনসংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়ে ঢাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে বিমানটি বাংলাদেশ সময় ৮টা ৫৯ মিনিটে সম্পূর্ণ নিরাপদে অবতরণ করে এবং বিমানবন্দরের বে-১৪ নম্বরে পার্ক করা হয়।
সম্ভাব্য বার্ড স্ট্রাইক ভেবে অবতরণের পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রানওয়ের পরিদর্শন করে। তবে সেখানে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তু বা পাখির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দর জানায়, কারিগরি পর্যালোচনা শেষে পরবর্তী ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে ঢাকাসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ৬১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মামলার এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১ হাজার ৬০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ৫৫৬ জন রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর আজ এ তথ্য জানান।
এ সময় একটি বিদেশী পিস্তল ও চার রাউন্ড কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে।
মন্তব্য