দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কবল থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস্।
এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য এম এ কাশেমের নানা অনিয়মের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেন। এরপর এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৮ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব পুনঃনিরীক্ষা করে প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান প্রটেকশন ফর লিগ্যাল হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা।
তার দাবি, মূলত রাষ্ট্রীয় স্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়েই মানবাধিকারকর্মী কর্মী হিসেবে গণমাধ্যমের কাছে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেছেন।
ড. সুফী সাগর সামস্ জানান, সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করা অভিযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন এরই মধ্যে মধ্যে দুদকে জমা দেয়া হয়েছে। শিগগিরই এই চিঠিটির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হবে।
লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি সাগর সামস্ এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় ছাপা হওয়া সংবাদের কপিও সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পৃক্ততা সংক্রান্ত বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সুফী সাগর দাবি করেন, ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদে কয়েকজন ব্যক্তির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তার ভাষ্য, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু এই মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য এম এ কাশেম বেআইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা উভয়ে যোগসাজশ করে আত্মসাৎ করেছেন, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
ড. সাগর সামস্ বলেন, দুই ট্রাস্ট্রি আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম শুধু লাগামহীন দুর্নীতি করেই থেমে থাকেননি; নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকেও জঙ্গি তৈরির কারখানায় পরিণত করেছেন। রাষ্ট্রের স্বার্থেই তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
ওই সময় সাগর এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশালয় হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে জমি কিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ট্রাস্টি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের বাইরে ১০টি সেকশন চালু ও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে বিশাল অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করেন এবং এই টাকা বিভিন্নভাবে আত্মসাৎ করেন তারা।
এ ছাড়াও ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহানসহ আজিম-কাশেম পরস্পর যোগসাজশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে ১১৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়।
আজিম উদ্দিন ও এমএ কাশেমের বিরুদ্ধে আরও বলা হয়, তারা পরিবারের সদস্যসহ বিদেশ ভ্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় কোটি টাকা অপব্যয়, সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গাড়িচালক ও জ্বালানি বাবদ ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পাশাপাশি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিক্ষার্থীদের দেয়া টিউশন ফির অর্থ থেকে ভাতা বাবদ প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নর্থ সাউথেরর জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার তথ্য উপস্থাপন করে এমএ কাশেম ও আজিম উদ্দিনকে দায়ী করা হয়। দেশে ঘটে যাওয়া নানা জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরা হয়।
এ সময় দুই ট্রাস্টির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে দেখার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ সাজানোর দাবি জানানো হয়।
দুই ট্রাস্টির বক্তব্য
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত এসব অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এম এ কাশেমের সঙ্গে।
তারা প্রায় অভিন্নভাবে বলেছেন, এসব সব কেচ্ছা-কাহিনি অনেক পুরোনো। এসব পুরোনো কাসুন্দি আর কত ঘাটবে। দুষ্ট লোকেরা তাদের বিরুদ্ধে এসব করছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।
তাদের দাবি, রাষ্ট্র, সরকার ও সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের কোটি কোটি আর্থিক সহযোগিতা, দান ও অনুদান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার উদ্বোধনের পর রোববার ভোরে যানবাহন চলাচল শুরু হয় পদ্মা সেতুতে।
উদ্বোধনী দিনে সেতুর দুই প্রান্ত দিয়ে পারাপার হয়েছে ৫১ হাজার ৩১৬টি গাড়ি। এসব গাড়ি থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকার।
রোববার মাওয়া টোল প্লাজা দিয়ে মোটরসাইকেলসহ ২৬ হাজার ৫৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় এক কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা।
জাজিরা প্রান্তে ২৪ হাজার ৭২৭ যানবাহন পার হয়েছে। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় ১ কোটি ৪৪ হাজার ৪ টাকা।
পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।
বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টোল প্লাজায়
দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন।
সকালে আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলকে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘আমাদের ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত। দ্বৈত বেঞ্চের একজন করোনায় আক্রান্ত হলে ওই বেঞ্চের বিচারকাজ বন্ধ থাকে।
‘করোনার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চে বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আপনারা যদি সহযোগিতা না করেন তাহলে আমাদের জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে। আপনারা সহযোগিতা না করলে আমাদের ভার্চুয়ালি কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারপরও ধৈর্য ধরেন আমরা দেখতেছি।’
আপাতত গুরুত্বপূর্ণ মামলাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
এ সময় তিনি সব আইনজীবীর সহযোগিতা চান।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মাই লর্ড আমাদের অনেক আইনজীবীও করোনায় আক্রান্ত। আমরা আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রাজিক আল জলিল, বিচারপতি ইকবাল কবির লিটনসহ ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।
সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।
টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।
এমন পরিস্থিতিতে সকালে উন্মুক্ত করে দেয়ার পর রাতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে রোববারের তুলনায় সোমবার সকালে যানবাহন কম দেখা গেছে। বাসের সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হাসিবুল হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।
‘মোটরসাইকেল যেহেতু বন্ধ রয়েছে, তার জন্য চাপ অনেকটা কমে গেছে। আসলে আমাদের একটা আবেগের ব্যাপার, যার জন্য গতকাল এই চাপ দিচ্ছিল। আর দুর্ঘটনা ব্যাপারটা আমরা আপনাদের থেকে শুনেছি।’
আরও পড়ুন:মাগুরা সদরের আঠারখাদা ইউনিয়নের আলীধানী গ্রামের নবগঙ্গা মধ্যপাড়ার পান্নু মোল্লা মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তা কাঁচা। কিন্তু তাতে তার যতটা না ভোগান্তি ছিল, সেটা আরও বেড়ে গেছে রাস্তার উন্নয়নকাজের পর।
পান্নু মোল্লা বললেন, ‘বাড়ির সামনে রাস্তাডা ভালোই ছিল। বৃষ্টিতে পানি হোক, তাও একটা কায়দা করে চলতাম। মাটির রাস্তা হলিও শক্ত আছে। কাদা হতো না।
‘আর মাটি ফেলিছে দেহেন কিরাম। উঁচু ঢিবি হয়ে গেছে। কাদা যাতে না হয় সে জন্য মাটি ফেলিছে। কিন্তু মাটি সমান করে যায় নাই। ইউনিয়ন পরিষদে বললাম যে এই মাটির ঢিবিতে বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিছে। সমান করেন। তারা বলে, আর কাজ হবে না। টাকা নেই বলে কাজ হবি না। এহন কাদা তো হইছেই, সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হতি লাগে কষ্ট। এরাম কাজ করার মানে কী বুঝলাম না।’
এক মাস ধরে এমন ভোগান্তি পান্নু মোল্লার। মাঠে কাজে যেতে কষ্ট হয়। কেউ দেখার নেই।
ইউনিয়ন পরিষদে কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের কাজের টাকা অর্ধেক সময়ে এসে ফেরত চলে যাওয়ায় মাগুরা জেলা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নে গ্রামীণ উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।
ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২২ অর্থবছরের প্রকল্পের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেরিতে ছাড় হওয়ায় সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। দেশের অধিকাংশ ইউনিয়নে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এই অর্ধেক কাজকে ভোগান্তি হিসেবে দেখছেন। মাগুরা সদরের আঠারখাদার মধ্যপাড়ায় একই এলাকার কৃষক নসিম জানান, ‘সামনে পাটের সময়। তাহলে এ রকম উল্টাপাল্টা কাজ করার দরকার কী? অর্ধেক মাটি ফেলে আমার বাড়ির সামনে উঁচু ঢিবি বানাই রাখছে। বৃষ্টির পানি গড়ায় বাড়ির ভেতরে যায়। আগে তো এটা হতো না। মাটি কোনো রকম ফেলে তারা চলে গেছে।’
একই ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি ক্লাবসংলগ্ন মাটির রাস্তাটিও এক পাশে উঁচু তো অন্য পাশে নিচু। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি ছিল বেলে মাটির। সেটাই ভালো ছিল। কিন্তু এখন মাটি ফেলেছে এক পাশে, সমান করেনি। তাই অর্ধশতাধিক পরিবার এই পথ দিয়ে যেতে পারে না। হাঁটু কাদা পেরিয়ে শিশুরা স্কুলে যায়। তাদের ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায়। এমন কাজ তাদের দরকার নেই বলে জানান গ্রামবাসী।
সদরের ১৩টি ইউনিয়নেই এমন কমবেশি খারাপ পরিস্থিতি। আগের বছরগুলোতে নারী কর্মী দিয়ে কাজ করা গেলেও এবার অর্ধেক কাজ হয়েছে দায়সারাভাবে। এই কর্মসূচির নিয়মিত এক নারী শ্রমিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তাড়াহুড়ো করে কাজ করানো হয়েছে এ বছর। কোথাও দুই দিন, কোথাওবা এক দিন মাটি ভরাট করার কাজ তারা করতে পেরেছেন। তবে ঠিকমতো টাকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। আর বছর শেষে কাজ শুরু হলে আবার কিছু উপার্জন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সদরের হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘এলাকার রাস্তার পাশে মাটি ভরাট কাজ পুরো সম্পন্ন হয়নি। কোথাও কোথাও থেমে আছে। বলা যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হলেও পুরো কাজ শেষ হওয়া দরকার। গত অর্থবছরের ২০ দিনের কাজ শেষে হয়েছে। এরপর আর বরাদ্দ আমরা পাইনি। বর্ষা মৌসুমে এই কাজগুলো শেষ হলে ভালো হয়। না হলে রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে।’
জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৪০ দিনের কাজ আসে বছরে দুইবার। এবার শুনেছি অর্থ বরাদ্দ ২০ দিনের হয়ে আর আসেনি। এ জন্য ২০ দিনের কাজ করা হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় কাজ হয়েছে, সেসব স্থানে কাজ সমাপ্ত হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। আশা করছি জটিলতা অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান জানান, তার এলাকায় ২০ দিনের কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা টাকা পেয়ে গেছেন। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যতটুকু বরাদ্দ, ততটুকু উন্নয়ন হয়েছে। ৪০ দিনের কাজ ২০ দিনে হলে তো কিছু অপ্রাপ্তি থাকে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে বর্ষায় কাঁচা রাস্তা মেরামতের কাজ খুব প্রয়োজনীয়।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা আম্বিয়া বেগম শিল্পী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় পাওয়া গেছে অর্ধেক কাজের। ফলে বাকি ২০ দিনের কাজের অর্থ না আসায় পরিষদের এই কাজগুলো আর এগোয়নি। তবে এই অর্থবছরে আর টাকা বরাদ্দ হবে না। ২০২৩ অর্থবছরে কাজ শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার মোবারক আলী টিলার নারিশ্চা ছোট্ট খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ শাহ্ আলম শিলক ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মাইজপাড়ার ওমর ফারুক নঈমী জানান, এক ব্যক্তিকে হাতি আক্রমণ করেছে এমন খবর শুনে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন সেখানে শাহ্ আলমের মরদেহ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে হাতিটিকে পাওয়া যায়নি। পরে তারা দক্ষিণ থানার পুলিশকে খবর দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ‘হাতির আক্রমণে শাহ্ আলমের মৃত্যুর বিষয়টি আমি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পুলিশ মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে গেছে।’
রাঙ্গুনিয়া নারিশ্চা বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মিন্টু কুমার দে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত শাহ আলমকে আক্রমণের পর হাতিটি বনে চলে গেছে। পরিবারের আবেদন সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।’
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থল যাই। গিয়ে দেখি, নিহত ব্যক্তির মরদেহ নারিশ্চা এলাকার একটি খালের পাড়ে পড়ে আছে। সুরতহাল শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজার এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে কটূক্তির দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
গ্রেপ্তার ২১ বছর বয়সী রুমন সরকার রনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের আঞ্জু মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম। তিনি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করেন রুমন।
এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রোববার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় রোববার সন্ধ্যায় পৌর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সকালে গাইবান্ধার আদালতে রুমনকে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে বিক্রি নিষিদ্ধ ও সরকারি ওষুধসহ বাবুর আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার বিকেলে মেহেরপুর-কাথুলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইমন-ঈশান ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ওষুধসহ দোকান মালিককে আটক করা হয়।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসব তথ্য জানান।
৪৫ বছর বয়সী বাবুর আলী মেহেরপুর সদরের কাথুলি বাজার এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ কর্মকর্তা অপু সরোয়ার জানান, ইমন-ঈশান ফার্মেসিতে বিক্রি নিষিদ্ধ ও সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বিক্রির গোপন তথ্যে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সেখান থেকে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট টাপেন্টাডল ৩৬ পিস, গর্ভনিরোধকারী সরকারি ইনজেকশন স্বস্তি-১৫০ মিলি ১৯৪ পিস, ইন্ডিয়ান ভায়াগ্রা-১০০ মিলি ৭৫০ পিস ও সরকারি হাসপাতালের বিক্রি নিষিদ্ধ ওষুধের মধ্যে সেফিক্সিম-২০০ মিলি ২০০ পিস, সেফ্রাডিন-৫০০ মিলি ৫০০ পিস, এজিথ্রোমাইসিন-৫০০ মিলি ১০০ পিস, সিপ্রোফ্লক্সিন-৫০০ মিলি ৩০০ পিস জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাপেন্টাডল বিক্রির নগদ ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও নিষিদ্ধ এসব ওষুধসহ ইমন-ঈশান ফার্মেসির মালিক বাবুর আলীকে আটক করে মেহেরপুর সদর থানায় নেয়া হয়।
তার বিরুদ্ধে মেহেরপুর সদর থানায় তিনটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। সোমবার তাকে আদালতে নেয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা অপু সরোয়ার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য