আগের বিজ্ঞপ্তি থেকে বাদ পড়া সেই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা দেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। এর আগে গত ৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের করা কমিটি মোট ১২টি রুটে বাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
এতে বাদ পড়েছিলেন চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের প্রায় সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থী। নতুন করে এই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন।
নিউজবাংলাকে রোববার বেলা আড়াইটার দিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক মকসিদুল হক।
তিনি বলেন, ‘প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন সেবা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাদ পড়েছিল। নতুন সিদ্ধান্তে এই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও পরিবহন সেবার আওতায় এসেছে।
‘চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি করে চারটি বাস দেয়া হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুটি বাসের একটি চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত যাবে। অপরটি যাবে কুমিল্লার পোদ্দার বাজার পর্যন্ত। বরিশাল অঞ্চলের দুটির একটি বরিশাল শহর ও অপরটি ফরিদপুর পর্যন্ত যাবে। সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থী কম হওয়ায় তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর পর্যন্ত পরিবহন সেবা দেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস যাবে- নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা (রাবি-বগুড়া-পলাশবাড়ী), বগুড়া, কুষ্টিয়া, রংপুর (রাবি-বগুড়া-রংপুর), দিনাজপুর (বদলগাছি-জয়পুরহাট-বিরামপুর-ফুলবাড়ী-দিনাজপুর), ময়মনসিংহ ও খুলনা, ঢাকা (গাবতলী), ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা (পোদ্দার বাজার), চট্টগ্রাম (শহর), বরিশাল (শহর), ফরিদপুরসহ মোট ১৭টি রুটে।
পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক মকসিদুল হক জানান, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) থেকে এই রুটগুলোতে শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে কাছের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়ার শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিবহন সেবা শুরু হবে। এরপর বাসের অবস্থা বুঝে ১৯ জুলাই এর মধ্যে বাকি শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দেয়া হবে।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় এবার এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে। হাদিরা-ভাদুড়িচর কলেজ ও নারুচি স্কুল এন্ড কলেজের কারিগরি শাখায় একজনও পাস করেনি। এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের পাশের হার ৬৪.৬২%, কিন্তু গোপালপুর উপজেলায় এ হার আরো কম। জিপিএ-৫ পেয়েছেন জেনারেল শাখায় মাত্র ৩ জন ও কারিগরি শাখায় ১জন। অকৃতকার্য হন ৬১২জন। গোপালপুর সরকারি কলেজে জেনারেল শাখায় পাস ২৪৮, ফেল ২৭৫ ও কারিগরি শাখায় পাস ১৩৭ ফেল জন। খন্দকার ফজলুল হক কলেজে জেনারেল শাখায় পাস ৩৯, ফেল ৩১ ও কারিগরি শাখায় পাস ২৫, ফেল ৪০ জন।
নারুচি স্কুল এন্ড কলেজের কারিগরি শাখায় ৬৯ পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল, জেনারেল শাখায় পাস ১২ ও ফেল ৫৭ জন। হেমনগর ডিগ্রি কলেজে জেনারেল শাখায় ২১৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস ৬৭ জন এবং কারিগরি শাখায় পাস ৩৪ ও ফেল ৫৫ জন।
মেহেরুন্নেসা মহিলা কলেজে জেনারেল শাখায় ১৯৩ জনের মধ্যে পাস ১০৪ জন এবং কারিগরি শাখায় পাস ২০, ফেল ১৯জন। খন্দকার আসাদুজ্জামান একাডেমির জেনারেল শাখায় ১ জনের মধ্যে ১ জন পাস এবং কারিগরি শাখায় পাস ৮, ফেল ৫৫ জন। শিমলা পাবলিক মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ জনে ১জন পাস। হাদিরা-ভাদুড়িচর কলেজে জেনারেল শাখায় ১২ শিক্ষার্থীর কেউ পাস করেনি এবং কারিগরি শাখায় ৭জন সবাই ফেল। গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য মোবাইল আসক্তিকে দায়ী করেন।
বিপর্যস্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক ব্যবস্থা নিবেন জানতে চাইলে বলেন, আমাদের কিছু করনীয় নেই।
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন জানান, গোপালপুর সরকারি, বেসরকারি সব কলেজে ঠিকমতো ক্লাস হয়না। শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসেন না। এজন্য ফলাফল বিপর্যয় ঘটে।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। এবার নওগাঁ জেলায় ফলাফল কিছুটা হতাশাজনক। গতবারের তুলনায় কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবং সামগ্রিক পাসের হার।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলার ৮৬টি কলেজ থেকে মোট ১৪ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪৩৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। সবচেয়ে হতাশাজনক দিক হলো- জেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, বদলগাছী উপজেলার বালুভরা আর.বি. হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের চারজন পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল করেছে। মান্দা উপজেলার দুটি প্রতিষ্ঠান- মান্দা এস.সি. পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নয়জন পরীক্ষার্থী এবং ভারশো হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের একমাত্র পরীক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
এছাড়া আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের চারজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দুইজন অনুপস্থিত ছিলেন, আর উপস্থিত দুইজনই ফেল করেছেন। নিয়ামতপুর উপজেলার শাংসইল আদিবাসী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন অনুপস্থিত, আর বাকি ২০ জনই ফেল করেছেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের ফলাফল গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হবে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। তারা বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে খারাপ ফল হচ্ছে, সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতি, পাঠদানের মান ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে তদন্ত করা হবে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষায় গড় পাশের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড মিলনায়তনে সাংবাদিকদের নিকট ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মহাঃ তৌহিদুল ইসলাম।
শিক্ষা বোর্ডের প্রফেসর মহা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ৮ হাজার ৬৫৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশগ্রহন করে ১ লাখ ৫ হাজার ৮৯১ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬০ হাজার ৮৮২ জন পরীক্ষার্থী। গড় পাশের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২৬০ জন। পাশের হার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের মধ্যে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২৬০ জন। জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৭৭৪ জন ও ছাত্রী ৩ হাজার ৪৮৬ জন। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মহা. তৌহিদুল ইসলাম আরো জানান, ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় শতভাগ অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা ৪৩টি ও
শতভাগ পাসকৃত কলেজের সংখ্যা ১১টি।
তিনি জানান, এবারে ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশী পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষক ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া কলেজগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের প্রফেসর তৌহিদুল ইসলাম।
ফলাফল ঘোষণার সময় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের সচিব নূর মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর সাজ্জাদ আলী, সহকারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষাবোর্ডের কর্মচারীদের মধ্যে মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
এইচএসসি পরীক্ষায় একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়াতে আত্মহত্যা করেছে নুসরাত জাহান নাজনীন (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বরিশাল নগরীর বাংলা বাজার এলাকার ভাড়া বাসায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নুসরাত বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর রাওঘা গ্রামের মৃত বশির মৃধার মেঝ মেয়ে। তিনি বরিশালের বাংলা বাজার এলাকায় বড় বোন রাহাত আনোয়ারের (একজন নার্স) সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আশিষ কুমার সাহা। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে নুসরাতকে হাসপাতালে আনা হলে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে আত্মহত্যা করেছে।
বরিশাল সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নুসরাত। সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরে বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম ) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নুসরাত বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর তিনি গণিতের এমসিকিউ অংশে অকৃতকার্য হন। এ ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানান।
সহপাঠীরা জানান, নুসরাত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন, তার এমন মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছেন না।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। নুসরাত আসলে ভালো ফল করেছে, শুধু একটি বিষয়ে (হাফ-ইয়ারলি মেথ) এমসিকিউ অংশে অকৃতকার্য হয়েছিল। রেজাল্ট পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ ছিল। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই বেদনাদায়ক।
এবারের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় যশোর বোর্ডের অধীন ৫টি কলেজ থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অন্যদিকে ২০টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় যশোর শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসমা বেগম।
যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিএন কলেজ, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মডেল কলেজ, খুলনা সদরের হোম ইকোনোমিক্স কলেজ, পাইকগাছার কপিলমুনি সহচারী বিদ্যা মন্দির, তেরখানা উপজেলার আদর্শ শিক্ষা নিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাগুরা সদর উপজেলার বুজরুক শ্রীকুণ্ডি কলেজ, রাওতারা এইচএন সেকেন্ডারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর উপজেলার কানাইনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস কলেজ, বিরেন সিকদার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সিংজোর গোপালপুর কলেজ, সাতক্ষীরা সদরের ইসলামীয়া মহিলা কলেজ, আখড়াখোলা আদর্শ কলেজ, সাতক্ষীরা কমার্স কলেজ, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া হাজিরবাগ আইডিয়াল গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চৌগাছা উপজেলার মারুয়া ইউসুফ খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়ন কলেজ, কেশবপুর উপজেলার বুরুলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কুষ্টিয়া সদরের আলহাজ আব্দুল গণি কলেজ, ঝিনাইদহ সদরের মুনুরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মাকরাইল করিম খালেক সোলায়মান ইনস্টিটিউট।
এর মধ্যে বিএন কলেজ থেকে ১১ জন, মডেল কলেজ খুলনা থেকে একজন, খুলনা হোম ইকোনোমিক্স কলেজ থেকে একজন, কপিলমুনি সহচারী বিদ্যা মন্দির থেকে ৫ জন, তেরখাদা আদর্শ শিক্ষা নিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৮ জন, মাগুরার বুজরুক শ্রীকুণ্ডি কলেজ থেকে ৮ জন, রাওতারা এইচএন সেকেন্ডারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪ জন, মোহাম্মদপুর কানাইনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস কলেজ থেকে ৯ জন, মোহাম্মদপুর বিরেন সিকদার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১১ জন, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ সিংজোর গোপালপুর কলেজ থেকে ১৮ জন, সাতক্ষীরা ইসলামীয়া মহিলা কলেজ থেকে ৯ জন, আখড়াখোলা আদর্শ কলেজ থেকে ৯ জন, সাতক্ষীরা কমার্স কলেজ থেকে ২ জন, যশোরের বাঁকড়া হাজিরবাগ আইডিয়াল গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৭ জন, চৌগাছা মারুয়া ইউসুফ খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২৬ জন, অভয়নগর শ্রীধরপুর ইউনিয়ন কলেজ থেকে ৭ জন, কেশবপুর বুরুলি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১০ জন, কুষ্টিয়ার আলহাজ আব্দুল গণি কলেজ থেকে ৪ জন, ঝিনাইদহের মুনুরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৫ জন, নড়াইলের লোহাগড়া মাকরাইল করিম খালেক সুলাইমান ইনস্টিটিউট থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এসব পরীক্ষার্থীর সবাই অকৃতকার্য হয়েছেন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আব্দুল মতিন বলেন, জুলাই আন্দোলনে রাজপথে থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে কিছু ঘাটতি ছিল। তাছাড়া এবার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীদের খাতার যথার্থ মূল্যায়ণ হয়েছে। সে কারণে পাসের হার কমেছে বলে তিনি মনে করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, যেসব কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেননি, সেসব কলেজের বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের তথ্য মতে, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে পাস করেছেন ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছেন ১৫ হাজার ৯৩১ পরীক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে ৩৪ হাজার তিনজন ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৬ হাজার ৬৭৫ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ছেলে এক হাজার ৭৭২ ও মেয়ে এক হাজার ৬০৯, মানবিক বিভাগে ছেলে ৫৪৪ জন ও মেয়ে এক হাজার ৬৩৫ এবং বাণিজ্য বিভাগে ছেলে ১৬৪ জন ও মেয়ে ২৭১ জন।
গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৬৪.২৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯ হাজার ৭৪৯ জন। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৯৯৫ জন।
আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের মিলনায়তনে প্রকাশ করা হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। গেলো ১৫ বছরের তুলনায় এ বছর ফলাফলের গড় নিম্নমুখী। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানান চলতি বছর পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। পাস এবং জিপিএ-৫ এর হারে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৭০৭ জন। এরমধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থী জিপিএ- ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৭৪৯, ছেলেরা জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৯৫৮ জন।
প্রফেসর শামছুল আলম আরো জানান, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড থেকে ৯৯ হাজার ৫৭৬ জন পরীক্ষা দেয়। এদের মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থী ৫৭ হাজার ৫২৪ জন এবং ছেলে পরীক্ষার্থী ৪২ হাজার ৫২। পাশ করে মোট ৪৮ হাজার ৬৫৭ জন। মেয়ে পরীক্ষার্থী পাশ করে ৩০ হাজার ৭০১, ছেলে পরীক্ষার্থী পাস করে ১৭ হাজার ৯৫৬ জন। মেয়েদের পাশের হার ৫৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ছেলেদের পাশ ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ।
কুমিল্লা বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলার মধ্যে সবেচেয়ে বেশি ফল খারাপ করেছে নোয়াখালী জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৪০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পাসের হার সর্বোচ্চ কুমিলল্লা জেলায়, হার ৫২ দশমিক ১৫ শতাংশ। এবার শূন্য শতাংশ পাস করেছে নয়টি প্রতিষ্ঠানে, শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠান পাঁচটি। শূন্যভাগ পাস করা নয়টি প্রতিষ্ঠানের ছয়টিতেই শিক্ষার্থী সংখ্যা দশের নিচে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে ইংরেজি ও আইসিটিতে। এছাড়াও উচ্চতর গণিতেও পাসের হার কম। এছাড়া ইংরেজিতে পাসের হার ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
কেন এই তিন বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর বেশি সে প্রশ্নই ছিলো দিনজুড়ে। কুমিল্লা জেলার কয়েকটি কলেজের আইসিটি বিষয়ের শিক্ষকরা জানান, বেশির ভাগ কলেজে আইসিটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেই। যে কারনে হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, আইসটি বিষয়টি যুক্ত করার আগে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেযা হয়নি। ফলে জোড়াতালি দিয়েই চলে ক্লাশ। আর তাতেই আইসিটি বিষয়ে অকৃতকার্য বেশি।
গেলো কয়েক বছরের তুলনায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা এত বেশি এ বিষয়ে কথা বলেন, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর রুনা নাছরীন। তিনি জানান, এছাড়াও এবার ১৬২টি ভেন্যুকেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। যার ফলে এবার আর ভ্যানুর সুবিধা নিতে পারেনি কলেজগুলো। এছাড়াও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ, সঠিকভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন, উত্তরপত্র মূর্যায়নে কোন প্রকার চাপ ছিলো না। এসব কারণে ফলাফল নিম্নগামী হয়েছে।
এদিকে টানা ১৪ বার বোর্ড সেরা ফলাফল করার গৌরব অর্জণ করা সোনার বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু ছালেক মো. সেলিম রেজা সৌরভ জানান, বছরজুড়ে নিয়মিত পাড়াশোনা, নমুনা পরীক্ষা নেয়া হলে যে কোন পরিবেশে ফলাফল ভালো হয়। আমাদের কেন্দ্র ভ্যানু পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ফলাফল ভালো ছিলো। এছাড়াও সোনার বাংলা কলেজে রয়েছে আইসিটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক। সব মিলিয়ে ভালো ফলাফলে বছরজুড়ে লেখাপড়া, শিক্ষার্থীদের মনিটরিং করা, পরীক্ষা নিলে ফলাফল ভালো হবেই। এবং আমরা তাই করি।
ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠি এনএস কামিল (নেছারাবাদ) মাদরাসায় বিগত বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারও বজায় রয়েছে। আলিম পরীক্ষার ফলাফলে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে তৃতীয় স্থান দখল করে শীর্ষস্থানে রয়েছে ঝালকাঠির সনামধন্য এই বিদ্যাপিঠ।
এবারের ফলাফলে এই মাদরাসায় পাসের হার শতকরা ৯৮.৫০ শতাংশ। এবছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে আলিম আলিম পরীক্ষায় বিজ্ঞান ও সাধারণ বিভাগে মোট ২৬৬ জন ছাত্র অংশগ্রহণ করে ২৬২ জন কৃতকার্য হয়েছে। উত্তীর্ণদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৭ জন। এছাড়া ১০৩ জন এ গ্রেড সহ বাকীরা সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।
মাদরাসার ভাইস প্রিসিপ্যাল আব্দুল কাদের বলেন, 'যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর ১৯৫৬ সালে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করে সময়ের ব্যবধানে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ছাত্রের পদচারণায় মুখরিত এ মাদরাসাটি অনার্স-মাস্টার্সসহ দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল পরীক্ষার ফলাফলে শীর্ষ স্থান অর্জনকারী দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিগণিত হয়েছে।
পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা এ সাফল্যের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, মুসলিম ঐক্যের প্রতীক আমীরুল মুছলিহীন হযরত মাওলানা মুহাম্মদ খলিলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুরের পৃষ্ঠপোষকতা ও দলীয় রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় পড়ালেখায় কোনো সমস্যা হয় না। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া, ক্লাস টেস্ট, দুর্বল ছাত্রদের জন্য আলাদা ক্লাস, শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন, আবাসিক ছাত্রদের ঘণ্টাওয়ারি তদারকি, টিউটর শিক্ষকের ব্যবস্থা থাকা, সময়োপযোগী ও নিয়মিত অভিভাবক সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়।
মন্তব্য