করোনাকালে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার যে ক্ষতি, সেটি জীবন রক্ষার তাগিদে আরও কিছুদিন মেনে নিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনাকালে দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সরকারপ্রধান শিক্ষা নিয়ে তুলে ধরলেন তার ভাবনা।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বারবার বাড়ানো হচ্ছে ছুটি। এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর গত জুনে খোলার ঘোষণা দিয়েও চালু করা যায়নি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। বরং সরকার মানুষের চলাচলের বিধিনিষেধ আরও বাড়িয়ে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
শনিবার বাজেটের সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষাঙ্গন নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি বলব, একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দিয়েই আমরা কিন্তু সব স্কুল খুলে দেব। একটা ছেলেমেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে, এখন তো শিশুদেরও হচ্ছে। আমরা জেনেশুনে লেখাপড়া শিখব, কিন্তু এর জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কি না, এটা বুঝে দেখবেন।’
স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও পড়াশোনা চালু আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা পড়াশোনা করবে, এটা আমরা চাই। আমি বলব, হ্যাঁ, স্কুল বন্ধ আছে। কিন্তু পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য টেলিভিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস প্রচার হচ্ছে। তা ছাড়া রেডিও আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। রেডিওর মধ্যে যাচ্ছে সুযোগ, অনলাইনে যাচ্ছে, যে যেভাবে সুযোগ পাচ্ছে ক্লাস চালিয়ে রাখতে আমরা চেষ্টা করছি।’
‘তাদের তো স্কুল-কলেজে যাওয়ার মতো সন্তান নেই’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যারা সবচেয়ে বেশি সোচ্চার, তাদের স্কুল-কলেজে পড়ার মতো সন্তান নেই বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলেন, ‘স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে কথা উঠেছে। যাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বা সন্তানরা স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে যায়, সেই মা-বাবাই কিন্তু চান না তাদের বাচ্চাটাকে স্কুলে পাঠাতে। তবে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার যাদের বাচ্চারা স্কুলে যায় না, পড়ার মতো ছেলেমেয়ে যাদের নাই। যারা যায় তারা তো চাচ্ছেন না।’
সবাইকে টিকা দিয়েই শিক্ষাঙ্গন চালু করার পরিকল্পনার কথা আবার তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। আমরা ছাত্রদেরও টিকা দিতে চাই। কিন্তু আপনি জানেন মাননীয় স্পিকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিজস্ব কয়েকটি নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। এখানে কোন টিকা কোন বয়স পর্যন্ত দেয়া যাবে, তার একটা পরামর্শ তারা দেয়, এটা আমাদের মানতে হয়।’
‘অনেকেই নিষেধ শোনেননি’
করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের বিধিনিষেধ না মেনে চলায় সংক্রমণ বেড়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে যে, জনগণকে গত ঈদুল ফিতরে বারবার অনুরোধ করলাম যে, আপনারা আপনাদের জায়গা ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু অনেকেই তো সে কথা শোনেননি। সবাই তো ছুটে চলে গেলেন।
‘এর ফলাফলটা কী হলো? এবং যারা বাইরে ছিলেন তারাও, পুরো বর্ডার এলাকা, বিভিন্ন জেলায় করোনাটা ছড়িয়ে পড়ল। তখন যদি আমাদের কথাটা শুনতেন, তাহলে হয়তো এমনভাবে করোনা ছড়াত না, এটা হলো বাস্তবতা। তারপরেও মানুষ আসলে যেতে চায়, এটাই সমস্যা।’
পাশে থাকবে সরকার
করোনার বিধিনিষেধে বিপাকে পড়া মানুষের পাশে সরকার থাকবে বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। শুধু সরকার না, আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা মানুষকে করে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়েছি। আমরা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি।
‘এমন কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই যাদের আর্থিক সহায়তা না দেয়া হয়েছে। এখন যেহেতু আবার করোনা বাড়ছে, আমরা সাধ্যমতো আবার সহযোগিতা দেব। কারো খাদ্য প্রাপ্তিতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেটা আমরা দেখব।’
‘৮০ ভাগ মানুষ আসবে টিকার আওতায়’
দেশে টিকা নিয়ে আর কোনো সংকট হবে না বলে সংসদে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রমান্বয়ে ৮০ ভাগ মানুষেকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল, আমি আগেও বলেছি। আমাদের সংকট দেখা দিয়েছিল। আমরা যখনই টিকা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, তখন সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। ভারত থেকে যখন পেলাম, তখন নগদ টাকা দিয়ে কিনেই ফেললাম।
‘ভারতে যে আকারে করোনা মহামারি দেখা দিল, তখন তারা টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিল। এ কারণে কিছুদিন আমাদের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে টিকা চলে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘ফাইজারের যে টিকা এসেছে, আমি বলেছি বিদেশে আমাদের শ্রমিক যারা যাচ্ছেন তাদের অগ্রাধিকার থাকবে এ টিকা পাওয়ার। ইতিমধ্যে মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে। মর্ডানা থেকে ২ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন চলে এসেছে। আর সিনোফার্মের ২ মিলিয়ন এসে গেছে।
‘সিনোফার্মেরগুলো কিন্তু আমরা ক্রয় করেছি। এর আগে চীন থেকে আমাদের কিছু উপহারও পাঠানো হয়েছে। ভারতও আমাদের কিছু উপহার দিয়েছে। এ ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেখানে যেখানে টিকা পাওয়া যাচ্ছে, আমরা কিন্তু যোগাযোগ করছি। আরও টিকা আমরা নিয়ে আসব কিনে।’
টিকার জন্য আলাদা বাজেট রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যত লাগে আমরা কিনব। এ জন্য আলাদা বাজেটে টাকাই রাখা হয়েছে। এর জন্য কোনো চিন্তা হবে না। আমরা চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেখানেই পাওয়া যাচ্ছে আমরা নিয়ে নিচ্ছি।
‘আমাদের নিজেদের বিমান পাঠিয়ে চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা নিয়ে এসেছি। এভাবেই আমরা টিকা সংগ্রহ করছি। আর আমেরিকা থেকে যেটা পাঠিয়েছে মর্ডানার, সেটাও দেশে এসেছে। একটা রাত ১১টায়, একটা ১টার পরে, আরেকটা ভোর ৫টার পরে।’
টিকার জন্য বাজেটে ৩২ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা রাখা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আরও ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা আছে রিজার্ভ, যদি প্রয়োজন হয় সে জন্য ব্যবস্থা রেখেছি।’
‘অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট’
চলতি অর্থবছরের বাজেটকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট বলেও অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যে বাজেটটা দিয়েছি, এটাতে একদিকে যেমন করোনা মোকাবিলাকে আমরা সামনে রেখেছি। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় নিয়ে আসা এবং স্বাস্থ্যসেবার বিষয়গুলোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এ বাজেটে।’
অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই করোনার মধ্যেও তিনি ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন, যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৫০। করোনার মধ্যেও যে আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’
আরও পড়ুন:বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে বুয়েট সংলগ্ন পলাশী গোলচত্বরে আগ্রাসন বিরোধী আট স্তম্ভ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (আইসেস্কো)-এর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রাহিল কামার আজ ৫ অক্টোবর ২০২৫ রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এসময় একই সংস্থার ফাহমিদা ফাইজা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসেস্কোর মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা প্রকল্প গ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আইসেস্কো চেয়ার’ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাঁরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খ্যাতিমান সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও নেটওয়ার্কিং গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করায় তিনি আইসেস্কো প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে প্রত্যাখ্যান করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। একই সঙ্গে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়ার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জানা যায়, গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর পরিপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি শাখার উপসচিব মোসা. শরীফুন্নেসা স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা শর্ত পালন সাপেক্ষে ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট সভাপতি এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ার একটি প্রজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এই প্রজ্ঞাপণের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে প্রজ্ঞাপনটি সঠিক। আমরা ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরো লিখেছেন, ১৩ আগস্ট এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতাদের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিক্যাল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপণের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাতাগার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ২০ শতাংশ অনুযায়ী বাড়িভাড়ার ফাইল অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইেয়দ এ জেড মোরশেদ আলী।
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য নিরসন, সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা ও জাতীয়করণের দাবিতে গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় এক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী মহাসমাবেশ করেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষায় এই উপমহাদেশে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অবদান উল্লেখযোগ্য। আমি একজন মাদ্রাসার ছাত্র হিসেবে গর্ববোধ করি।
বুধবার রাজধানীর বকশিবাজারে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ এই উপমহাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার ঐতিহ্য শত বছরের পুরনো। যুগে যুগে এই শিক্ষাব্যবস্থা অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে। সুশিক্ষার মাধ্যমে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।
আ ফ ম খালিদ হোসেন আরো বলেন, বাংলাদেশে আলিয়া মাদ্রাসার মতো আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য সম্ভবত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহমান বিশ্বাসসহ বহু আলেম-ওলামা বেরিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, এই উপমহাদেশে, মাদ্রাসা শিক্ষা না থাকলে ইসলামের ঐতিহ্য আদর্শ তমুদ্দিন কোন কিছুই বজায় রাখা সম্ভব হতো না। তাই সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় মাদ্রাসা শিক্ষার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে হবে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে। এই শিক্ষাকে ছোট করে দেখলে চলবে না। এর ঐতিহ্য শত বছরের।
উপদেষ্টা আরো বলেন, মাদ্রাসা হল আলেম-ওলামা তৈরীর কারখানা। বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে বাস্তব জীবনে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ করাতে হবে। তবেই জীবনে সফলতা সম্ভব।
তিনি বলেন ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার বর্তমান শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।সূত্র : বাসস
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা হারানোর পর এবার প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদেও নিয়োগের ক্ষমতাও হারাচ্ছে পরিচালনা পর্ষদ বা ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’।
এসব পদে সরকারের তদারকিতে নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে। কোনো প্রক্রিয়ায় বা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে তা নির্ধারণে কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহকারী প্রধান পদে নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া নিয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত একটা হয়েছে, আগে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ পদগুলোতে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি নিয়োগ দিত, এখন এ পদগুলোতে সরকার নিয়োগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটা কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি এটা নির্ধারণ করবে, এ পদগুলোতে কোন আদলে নিয়োগ দেবে, কারা করবে, এনটিআরসিএ করবে না, অন্য কেউ করবে কোনটাই এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এ কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করছেন বলেও তুলে ধরেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ সব পদে নিয়োগে কোন নীতিমালা বা নিয়ম অনুসরণ করা হবে তা এ কমিটি নির্ধারণ করবে।’
আপাতত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষক ও প্রভাষক পদে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করার দায়িত্ব এনটিআরসিএ এর হাতে থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান ও কর্মচারী পদে নিয়োগের ক্ষমতা ছিল পরিচালনা পর্ষদের হাতে।
গত সোমবার প্রকাশিত এক পরিপত্রে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের কর্মচারী পদে নিয়োগ সুপারিশ কমিটির সভাপতি পদ থেকে ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’ সরিয়ে ডিসিদের এ দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ের নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া নিয়ে জানাতে এ কর্মশালা আয়োজন করে এনটিআরসিএ।
কর্মশালায় এনটিআরসিএ সদস্য এরাদুল হক, মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, পরিচালক তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, সংস্থাটির সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক ও সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাব আয়োজিত “জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর গ্র্যান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আজ সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাকুল হায়দার হলে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীর সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল কাসেম হায়দার।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. শামসুল হুদা, রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান, ডিবেট ক্লাবের কো-অর্ডিনেট ও আইন বিভাগের লেকচারার মেহেরবা সাবরিন, এবং ক্লাবের সভাপতি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিত ইবনে মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দসহ অসংখ্য শিক্ষার্থীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
৩২ টি কলেজের অংশগ্রহণে ইন্টার-কলেজ প্রতিযোগিতার ফাইনাল-এ সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ মুখোমুখি হয়। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ বিজয়ী হয় এবং সরকারি বাংলা কলেজ রানার আপের গৌরব অর্জন করে। এ পর্বে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ইমন আহমেদ।
অন্যদিকে, ২৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ইন্টার-ইউনিভার্সিটি প্রতিযোগিতার ফাইনাল-এ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) এর মধ্যে লড়াই হয়। এই প্রতিযোগিতায় বুটেক্স বিজয়ী হয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি রানার আপ হয়। এ পর্বের সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আলভি সালমান।
আয়োজকরা জানান, এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের তরুণ প্রজন্মকে যৌক্তিকতা, মুক্তচিন্তা ও নেতৃত্বের চর্চায় অনুপ্রাণিত করা।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং শিল্পখাতের অংশীজনদের যৌথ সহযোগিতায় কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা) নতুন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ চালু করবে।
বাংলাদেশের তরুণদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাই বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন উদ্যোগের লক্ষ্য।
এ লক্ষ্যে রোববার ঢাকায় এক হোটেলে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং শিল্পখাতের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
কোইকা'র পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ অংশীদারিত্ব বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। শিল্পখাতের অভিজ্ঞতা এবং বিএমইটি-এর নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে এ কর্মসূচি প্রাসঙ্গিক ও ফলপ্রসূ কারিগরি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করবে।
মন্তব্য