করোনাকালে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার যে ক্ষতি, সেটি জীবন রক্ষার তাগিদে আরও কিছুদিন মেনে নিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনাকালে দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সরকারপ্রধান শিক্ষা নিয়ে তুলে ধরলেন তার ভাবনা।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বারবার বাড়ানো হচ্ছে ছুটি। এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর গত জুনে খোলার ঘোষণা দিয়েও চালু করা যায়নি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। বরং সরকার মানুষের চলাচলের বিধিনিষেধ আরও বাড়িয়ে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
শনিবার বাজেটের সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষাঙ্গন নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি বলব, একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দিয়েই আমরা কিন্তু সব স্কুল খুলে দেব। একটা ছেলেমেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে, এখন তো শিশুদেরও হচ্ছে। আমরা জেনেশুনে লেখাপড়া শিখব, কিন্তু এর জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কি না, এটা বুঝে দেখবেন।’
স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও পড়াশোনা চালু আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা পড়াশোনা করবে, এটা আমরা চাই। আমি বলব, হ্যাঁ, স্কুল বন্ধ আছে। কিন্তু পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য টেলিভিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস প্রচার হচ্ছে। তা ছাড়া রেডিও আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। রেডিওর মধ্যে যাচ্ছে সুযোগ, অনলাইনে যাচ্ছে, যে যেভাবে সুযোগ পাচ্ছে ক্লাস চালিয়ে রাখতে আমরা চেষ্টা করছি।’
‘তাদের তো স্কুল-কলেজে যাওয়ার মতো সন্তান নেই’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যারা সবচেয়ে বেশি সোচ্চার, তাদের স্কুল-কলেজে পড়ার মতো সন্তান নেই বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলেন, ‘স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে কথা উঠেছে। যাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বা সন্তানরা স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে যায়, সেই মা-বাবাই কিন্তু চান না তাদের বাচ্চাটাকে স্কুলে পাঠাতে। তবে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার যাদের বাচ্চারা স্কুলে যায় না, পড়ার মতো ছেলেমেয়ে যাদের নাই। যারা যায় তারা তো চাচ্ছেন না।’
সবাইকে টিকা দিয়েই শিক্ষাঙ্গন চালু করার পরিকল্পনার কথা আবার তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। আমরা ছাত্রদেরও টিকা দিতে চাই। কিন্তু আপনি জানেন মাননীয় স্পিকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিজস্ব কয়েকটি নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। এখানে কোন টিকা কোন বয়স পর্যন্ত দেয়া যাবে, তার একটা পরামর্শ তারা দেয়, এটা আমাদের মানতে হয়।’
‘অনেকেই নিষেধ শোনেননি’
করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের বিধিনিষেধ না মেনে চলায় সংক্রমণ বেড়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে যে, জনগণকে গত ঈদুল ফিতরে বারবার অনুরোধ করলাম যে, আপনারা আপনাদের জায়গা ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু অনেকেই তো সে কথা শোনেননি। সবাই তো ছুটে চলে গেলেন।
‘এর ফলাফলটা কী হলো? এবং যারা বাইরে ছিলেন তারাও, পুরো বর্ডার এলাকা, বিভিন্ন জেলায় করোনাটা ছড়িয়ে পড়ল। তখন যদি আমাদের কথাটা শুনতেন, তাহলে হয়তো এমনভাবে করোনা ছড়াত না, এটা হলো বাস্তবতা। তারপরেও মানুষ আসলে যেতে চায়, এটাই সমস্যা।’
পাশে থাকবে সরকার
করোনার বিধিনিষেধে বিপাকে পড়া মানুষের পাশে সরকার থাকবে বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। শুধু সরকার না, আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা মানুষকে করে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়েছি। আমরা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি।
‘এমন কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই যাদের আর্থিক সহায়তা না দেয়া হয়েছে। এখন যেহেতু আবার করোনা বাড়ছে, আমরা সাধ্যমতো আবার সহযোগিতা দেব। কারো খাদ্য প্রাপ্তিতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেটা আমরা দেখব।’
‘৮০ ভাগ মানুষ আসবে টিকার আওতায়’
দেশে টিকা নিয়ে আর কোনো সংকট হবে না বলে সংসদে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রমান্বয়ে ৮০ ভাগ মানুষেকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল, আমি আগেও বলেছি। আমাদের সংকট দেখা দিয়েছিল। আমরা যখনই টিকা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, তখন সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। ভারত থেকে যখন পেলাম, তখন নগদ টাকা দিয়ে কিনেই ফেললাম।
‘ভারতে যে আকারে করোনা মহামারি দেখা দিল, তখন তারা টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিল। এ কারণে কিছুদিন আমাদের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে টিকা চলে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘ফাইজারের যে টিকা এসেছে, আমি বলেছি বিদেশে আমাদের শ্রমিক যারা যাচ্ছেন তাদের অগ্রাধিকার থাকবে এ টিকা পাওয়ার। ইতিমধ্যে মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে। মর্ডানা থেকে ২ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন চলে এসেছে। আর সিনোফার্মের ২ মিলিয়ন এসে গেছে।
‘সিনোফার্মেরগুলো কিন্তু আমরা ক্রয় করেছি। এর আগে চীন থেকে আমাদের কিছু উপহারও পাঠানো হয়েছে। ভারতও আমাদের কিছু উপহার দিয়েছে। এ ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেখানে যেখানে টিকা পাওয়া যাচ্ছে, আমরা কিন্তু যোগাযোগ করছি। আরও টিকা আমরা নিয়ে আসব কিনে।’
টিকার জন্য আলাদা বাজেট রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যত লাগে আমরা কিনব। এ জন্য আলাদা বাজেটে টাকাই রাখা হয়েছে। এর জন্য কোনো চিন্তা হবে না। আমরা চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেখানেই পাওয়া যাচ্ছে আমরা নিয়ে নিচ্ছি।
‘আমাদের নিজেদের বিমান পাঠিয়ে চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা নিয়ে এসেছি। এভাবেই আমরা টিকা সংগ্রহ করছি। আর আমেরিকা থেকে যেটা পাঠিয়েছে মর্ডানার, সেটাও দেশে এসেছে। একটা রাত ১১টায়, একটা ১টার পরে, আরেকটা ভোর ৫টার পরে।’
টিকার জন্য বাজেটে ৩২ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা রাখা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আরও ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা আছে রিজার্ভ, যদি প্রয়োজন হয় সে জন্য ব্যবস্থা রেখেছি।’
‘অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট’
চলতি অর্থবছরের বাজেটকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট বলেও অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যে বাজেটটা দিয়েছি, এটাতে একদিকে যেমন করোনা মোকাবিলাকে আমরা সামনে রেখেছি। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় নিয়ে আসা এবং স্বাস্থ্যসেবার বিষয়গুলোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এ বাজেটে।’
অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই করোনার মধ্যেও তিনি ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন, যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৫০। করোনার মধ্যেও যে আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য