জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢিলেঢালাভাবে চলছে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম।
গত মার্চে টিকা দেয়ার লক্ষ্যে দুইদফায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
আবার অনেক শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত উদ্যোগে টিকা গ্রহণ করলেও কোনো তথ্য নেই প্রশাসনের কাছে। ফলে টিকা কার্যক্রমে তৈরি হয়েছে এলোমেলো অবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জানিয়েছে, ‘টিকা দেয়ার লক্ষ্যে তালিকা সংগ্রহ করা হলেও শিক্ষার্থীদের ব্যক্ত উদ্যোগে টিকা গ্রহণের ব্যাপারে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে শিগগিরই এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।’
গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অফিস শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা নিয়ে হলে উঠতে হবে। পরে নিবন্ধনের সময়সীমা দুইবার বাড়ানো হয়।এতে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২ হাজার ৯২১ জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আবু হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচির নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল শিক্ষা শাখার অধীনে। কিন্তু প্রশাসন পরবর্তীতে তা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিকে দায়িত্ব দেয়। এখন সেই দায়িত্ব আবার শিক্ষা শাখাকে দেয়া হয়েছে। যদিও শিক্ষা শাখা এখন ভর্তি পরীক্ষার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আবার এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী ব্যক্তি উদ্যোগে টিকা গ্রহণ করেছে। আইসিটি সেল তাদের টিকা গ্রহণের সার্টিফকেট সংগ্রহ করছে। সব মিলিয়ে টিকাদান কর্মসূচি একটু এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এগুলির সমন্বয় করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত তথ্য গত ১১ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তালিকা আকারে পাঠানো হয়।’
সে তালিকা পাঠানোর পর ‘সুরক্ষা.গভ.বিডি’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যেগে টিকা গ্রহণের আবেদন করতে সক্ষম হয় এবং টিকা গ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের কামাল বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করি।পরে ব্যক্তি উদ্যোগে ‘সুরক্ষা ডট কম’-এ টিকার আবেদন করলে সেটা অনুমোদিত হয় এবং দুই ডোজ টিকা নেই। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত আছে কি না জানি না।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ব্যক্তি উদ্যোগে টিকা গ্রহণ করেছে। অফিসিয়ালি প্রশাসন তা জানে না এবং টিকা গ্রহণকারী শিক্ষার্থী সংখ্যা এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।’
এদিকে গত ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টিকা সংক্রান্ত আরও একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী টিকা গ্রহণ করেছেন তাদের টিকা কার্ড বা সার্টিফিকেটের ফটোকপি জমা দিতে হবে। এবং এ ব্যাপারে যে কোনো সাহায্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলে যোগাযোগ করতে হবে।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইসিটি সেলের নির্বাহী প্রকৌশলী (ইন্টারনেট) নাইমুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের সংখ্যা আমরা বলতে পারব না। আমরা টিকা কার্ড অনলাইনে প্রদানের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সাহায্য করে থাকি। এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার অফিস বলতে পারবে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক শোভন রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণকে অনৈতিক বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু প্রশাসন তথ্য সংগ্রহ করেই ক্ষান্ত। এ বছরেও শিক্ষার্থীরা টিকা পাবে কী না তা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। অথচ প্রশাসন বলেছিল চায়নার টিকা এলেই টিকা কর্মসূচি শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ, ভর্তি পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। টিকা প্রদান করে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুতে কোনো অগ্রাধিকার নেই। এভাবে চলতে থাকলে ক্যাম্পাস খোলার কোন সম্ভাবনা নেই।’
এর আগে ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার একটি গণমাধ্যমে প্রশাসনকে না জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তি উদ্যোগে টিকা গ্রহণের বিষয়টিকে অনৈতিক বলে আখ্যা দেন।
সার্বিক বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে, আমরা সেগুলো করছি। সেই সঙ্গে টিকা কর্মসূচির প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ দিকে রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কিছু তথ্য পাঠানো হয়েছে। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। টিকা পেলেই শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে।’
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজের একটি অংশে আগুন লেগেছে। তবে ফ্লাইট ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।
আজ শনিবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ২টা ৩৪ মিনিটের দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের দিকে রওনা হয় পাঁচটি ইউনিট। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল চলছে। শীত আসার আগে এ সময়টায় ত্বকের সাথে সাথে অনেকের ঠোঁটেও দেখা দেয় রুক্ষতা। এ কারণে শীত আসার আগেই ঠোঁটের নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। যাদের এখন থেকেই ঠোঁট ফাটছে বা শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে তারা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন- অলিভ অয়েল ও চিনির স্ক্রাব: এক চা চামচ অলিভ অয়েল, এক চা চামচ চিনি এবং আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ঠোঁটে মেখে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ভেজা হাতে ম্যাসাজ করে তুলে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু-এক দিন করতে পারেন।
নারকেল বা ভিটামিন ই তেল: রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে নারকেল তেল বা ভিটামিন ই অয়েল লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁটে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
বিটরুট ও গোলাপের ভ্যাসলিন: বিটরুটের রস এবং গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। ঠান্ডা হলে ভ্যাসলিনের সাথে মিশিয়ে রাখুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম থাকবে।
দৈনন্দিন যত্ন
নিয়মিত ভ্যাসলিন/লিপজেল ব্যবহার: শীতকালে ঠোঁটকে নরম ও কোমল রাখতে নিয়মিত ভ্যাসলিন বা ভালো মানের লিপজেল ব্যবহার করতে পারেন।
পর্যাপ্ত পানি পান: শরীরকে সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ঠোঁটের ক্ষতি করতে পারে।
সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা: বাইরে বেরোনোর সময় এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন। তা না হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ঠোঁটের ক্ষতি করতে পারে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে রাতে 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান সহ ৬৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে লাঠি, ইটপাটকেল, রড, দা, কিরিচ নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। তারা বাজার এবং আশেপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করছিলেন।
পুলিশ খবর পেয়ে রাত ৯টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ আব্দুল কাদের, আব্দুল খালেক ও মো. আরিফ নামে তিনজনকে আটক করে। পাশাপাশি ২০টি কাঠের লাঠি, ১০টি আফলা ইটের খোয়া, ২টি দেশীয় তৈরি লোহার দা এবং ৮টি লোহার টুকরা জব্দ করা হয়।
এঘটনায় সন্ত্রাসীবিরোধী আইনে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ছোট ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম সহ ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৬০/৭০ জনের নামে মামলা করেছে থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, জুঁইদন্ডীতে 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ৬৮ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেফতার ৩ জনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে গড়ে উঠেছে ‘পাখি কলোনি’। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাখিদের জন্য গাছে গাছে বাঁধা হচ্ছে মাটির হাঁড়ি, আর শান বাঁধানো পুকুরে বসানো হয়েছে আড়ানী। উদ্দেশ্যে প্রকৃতির পরম সহচর এসব পাখির জন্য নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্যের নিশ্চয়তা তৈরি করা।
উপজেলা চত্বরে পাখির কলরবে দীর্ঘদিন পর যেন ফিরে পেয়েছে প্রকৃতির নিজস্ব ছন্দ, প্রাণ ফিরে পেয়েছে পরিবেশের হৃদস্পন্দন। এখন মাটির হাঁড়িতে বাসা বাঁধবে শালিক, দোয়েল, বাবুই, টুনটুনিসহ নানা প্রজাতির দেশীয় পাখি। পুকুরের নিস্তরঙ্গ জলে ভাসছে আড়ানী, ঝিকমিক করছে রোদে মাছের খেলা।
উপজেলা পরিষদে পাখি কলোনি দেখতে এসেছেন শাহিনুর ইসলাম। তিনি বলেন, পাখির কূজনে এখানের পরিবেশটাই যেন পাল্টে গেছে। পাখি কলোনি দেখে খুব ভালো লাগছে।
স্থানীয় পরিবেশ কর্মী এম রাসেল আহমেদ বলেন, যেখানে মানুষ পাখি তাড়ায়, সেখানে তাদের জন্য ঘর বানানো হচ্ছে। এটি শুধু পরিবেশ প্রকল্প নয়, এটি সহানুভূতির প্রতীক। পাখি বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে, আর প্রকৃতি বাঁচলেই মানুষ টিকে থাকবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, পাখি কৃষির নীরব সহযোগী। তারা মাঠের ক্ষতিকর পোকার শত্রু। এই উদ্যোগ কেবল পরিবেশ নয়, কৃষি ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষাতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আল জিনাত বলেন, পাখি প্রকৃতির প্রাণ। আমরা এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে গাছ, মানুষ ও পাখি একসঙ্গে টিকে থাকবে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই উদ্যোগ শুধু পাখিদের আশ্রয় নয়, এটি প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি আমাদের নৈতিক দায়বদ্ধতা। মূলত পাখি কলোনির উদ্দেশ্য একটি মানবিক, প্রাণবন্ত ও সবুজ পৃথিবীর প্রত্যাশায় পাখির কূজনের মধ্যেই আমরা প্রকৃতির হাসি শুনতে চাই।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে অভিযোগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, শহীদ পরিবার অনুষ্ঠানে প্রাপ্য সম্মান পাননি বরং প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আখতার হোসেন বলেন, শহীদ পরিবাররাই জুলাই সনদ আয়োজনের মূল আকর্ষণ হলেও, তাদের মঞ্চ থেকে দূরে সরিয়ে বসিয়ে অমর্যাদা করা হয়েছে। আহতদের ওপর হামলা চালিয়ে এবং অসম্মান করে জুলাই সনদকে ‘পাওয়ার এলিট’-এর সেটেলমেন্ট বানানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহতরা কিছু দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যবদ্ধ কমিশন জুলাই সনদের অঙ্গীকারের পঞ্চম দফা সংশোধনের ঘোষণা দিলেও, শুরুতে যদি বিষয়টি আমলে নেওয়া হতো তাহলে তাদের রাজপথে নামতে হতো না।
তিনি বলেন, সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান না করে আহত যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি করছি।
এনসিপি সদস্য সচিব আরও বলেন, জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ও বৈধতা নিশ্চিত না করেই এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতিকে পরিষ্কার ধারণা না দিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে। জুলাই সনদের কোনো আইনভিত্তি না দেওয়া, বাস্তবায়ন আদেশ প্রকাশ না করা এবং পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা জাতির সামনে না আনার কারণে আমরা আনুষ্ঠানিকতার জন্য স্বাক্ষর থেকে বিরত থেকেছি।
তিনি বলেন, এনসিপি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ৭২ সালের বন্দোবস্ত বিলোপ করে নতুন সাংবিধানিক অগ্রযাত্রায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। বিচার সংস্কারের অংশ হিসেবে জুলাই সনদ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে সারাদেশে ‘জুলাই পথযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করেছে এনসিপি। রাজধানী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত জনগণ এই দাবিতে এনসিপিকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে। একই সঙ্গে আমরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কারে জোরালো ভূমিকা রেখেছি।
আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখা হয়েছে। সনদের আইনিভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’-এর উল্লেখ নেই। আমরা বলেছি, অভ্যুত্থান-পরবর্তী যেকোনো বন্দোবস্তের নৈতিক ও আইনিভিত্তি থাকতে হবে। কিন্তু সনদে জনগণের সার্বভৌম ও গাঠনিক ক্ষমতার প্রকৃত মৌলিক সত্যের কোনো উল্লেখ নেই।
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের আওতাভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের এমন কিছু অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যা বিদ্যমান সংবিধানের তথাকথিত বেসিক স্ট্রাকচারের আওতাভুক্ত। ফলে ৭২ সালের সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে থেকে এই পরিবর্তনগুলো ভবিষ্যতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এতে জুলাই সনদ জনগণের সঙ্গে একটি সাংবিধানিক প্রতারণায় পরিণত হবে।
এ কারণে এনসিপি সরকারপ্রধান ড. ইউনূসকে গণভোটের পূর্বে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ জারির আহ্বান জানিয়েছে—যাতে এর আইনভিত্তি, বৈধতা ও জুলাই অবস্থান স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।
শেষে আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নিয়ে আগামী কয়েকদিনের আলোচনায় আমরা জনগণের পাশে থাকব। কোনো অবস্থাতেই জুলাই সনদকে জুলাই ঘোষণাপত্রের মতো আইনিভিত্তিহীন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল বা ‘জেন্টলম্যানস অ্যাগ্রিমেন্টে’ পরিণত করা যাবে না। আমরা আশা করছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ইচ্ছাকে ধারণ করে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি ও বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সর্বস্তরের শিক্ষকদের জন্য আমাদের অগ্রাধিকার হলো যুক্তিসংগত আর্থিক সুবিধার নিশ্চয়তাসহ চাকরির নিরাপত্তা, শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা এবং তাদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার কিংবা নাগরিক উন্নয়নে যত উদ্যোগই নেওয়া হোক না কেন, শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং শিক্ষকদের আর্থসামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব নয়।
বিএনপি মহাসচিব জানান, জনগণের ভোটে বিএনপি আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বৃদ্ধি, চাকরি স্থায়ীকরণ এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হবে।
মির্জা ফখরুল সতর্ক করে বলেন, শিক্ষকদের যুক্তিসংগত আন্দোলনকে পুঁজি করে পতিত স্বৈরাচারের সহযোগীরা যদি পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায় কিংবা আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়, তবে বিএনপি কোনো ধরনের নমনীয়তা প্রদর্শন করবে না।
পবিত্র নগরী মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব এক নতুন মেগা উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্পের অধীনে গ্র্যান্ড মসজিদের কাছাকাছি আকাশচুম্বী অট্টালিকা নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো মক্কা নগরীতে আগত বিশ্বের মুসলিমদের জন্য থাকার ব্যবস্থা, আতিথেয়তা এবং নামাজ আদায়ের সুবিধা নিশ্চিত করা।
নতুন এই উন্নয়ন প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে ‘কিং সালমান গেট’। এটি আগামী বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ১২ মিলিয়ন স্কয়ার মিটার এলাকাজুড়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবেন।
প্রকল্পে থাকবে আবাসিক, বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক ও হোটেল সুবিধা। এছাড়াও, ইনডোর ও আউটডোর মিলিয়ে একসঙ্গে প্রায় ৯ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি ভিডিওতে দেখা গেছে, মক্কা নগরীর পাশ দিয়ে বিশাল উঁচু ভবনগুলো দাঁড়ানো এবং তার ওপরে শান্তির পায়রা উড়ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে রুয়া আলহারাম আলমাক্কি প্রতিষ্ঠান। নতুন এই উদ্যোগে আনুমানিক ৩ লাখ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সৌদি আরবের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে মক্কায় ৩ কোটি হজ যাত্রীকে স্বাগত জানানো হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মক্কা-মদিনা অঞ্চলে মুসলিম সম্প্রদায়ের আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্য