দেড় বছর ধরে বন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল। সচল হয়নি পরিবহন ব্যবস্থা। তবুও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে পরিবহন ফি। এমনকি বন্ধ হলের ‘সিট ভাড়া’ হিসেবে দুই বছরের ফি জমা দিতেও বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে গত বছরের মার্চে বন্ধ ঘোষণা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ হয়ে যায় আবাসিক হলগুলোও। এ অবস্থায় প্রায় দেড় বছর আবাসিক হলে না থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে না চড়লেও হল এবং পরিবহন ফি নেয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমাদের সাথে অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব দেখার কেউ নেই। শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জিম্মি।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের স্পষ্ট জবাব না দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সেবা কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হলেও ক্রিয়াশীল রাখতে হয়। তবে এগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না, এটা সত্য। অল্প কিছু পয়সা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সেটিও আমরা বুঝি।’
এসব ফি মওকুফ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আর্থিক বিষয় হওয়ার কারণে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কিছু বলা কঠিন। হুটহাট সিদ্ধান্ত নিলে প্রতিষ্ঠিত সেক্টরে বড় আকারের ধাক্কা পড়ে কি না সেটিও আমাদের দেখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কিছু সুবিধা পেলে সেটিই তো আমাদের পাওয়া হয়।’
করোনাকালের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়েছিল শিক্ষার্থীদের এসব ফি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিলে উপাচার্য বলেন, ‘সেটি দেখা যাক। এখনো সেগুলো দেখার সুযোগই হয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই মাস থেকে শিক্ষার্থীদের স্বশরীরের বা অনলাইনে পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে হয়। আর ভর্তি হতে গিয়েই সামনে এসেছে ‘অযাচিত ফি’ আদায়ের এসব বিষয়।
ভর্তির রসিদে দেখা যায়, আবাসিক হল ফি ছাড়া মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বমোট নেয়া হচ্ছে ৩ হাজার ৭১৫ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ হাজার ২৮৫ টাকা এবং বাণিজ্য বিভাগ থেকে নেয়া হচ্ছে ৪ হাজার ৮৫ টাকা। এর মধ্যে ‘পরিবহন ফি’ হিসেবে নেয়া হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা। এ ছাড়া আবাসিক হলভেদে শিক্ষার্থীদের দিতে হবে গত বছরসহ এই বছরের ‘সিট ভাড়া’।
এ বিষয়ে ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের আবাসিক শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘করোনা মহামারিতে আমাদের পরিবারগুলো আর্থিক সংকটে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় টিউশনি নেই বললেই চলে। হল বন্ধ থাকায় অনেককে মেস ভাড়া নিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। ঠিক সে সময়ে শিক্ষার্থীদের থেকে অযাচিত ফি আদায়ের চেষ্টা দুঃখজনক।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাকালীন ছাত্রদের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। অনেক শিক্ষার্থীর উপার্জন ছিল টিউশননির্ভর। দেড় বছর ধরে তা বন্ধ। এ সময়ে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে আমরা কোনো সেবা নিইনি, হলে না থেকে কেন আমাদের চার্জগুলো দিতে হবে? শিক্ষার্থীদের ডাবল খরচ করার সামর্থ্য নেই।’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই পরিবহন ফিসহ যাবতীয় অন্যায্য ফি বাতিল করা হোক। অন্যসব ঘটনায় বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষকরা সরব থাকলেও শিক্ষার্থীদের সমস্যায় তারা নীরব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক সহসম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘হল বন্ধ থাকা অবস্থায় আবাসিক ফি, পরিবহন ফি গ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের সাথে তামাশারই নামান্তর। এই সিদ্ধান্তগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা উচিত।’
হলের সিট ভাড়া ও পরিবহন ফি প্রত্যাহারে হলগুলোর কিছু করার নেই বলে জানান প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল বাছির। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আবাসিক হলগুলো স্বতন্ত্র কোনো বিষয় না, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অঙ্গ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনার বাইরে হল কোনো কিছুই করতে পারে না। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের থেকে এক টাকা কম নিই তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জবাবদিহি করতে হবে ৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের ফি মওকুফ বা কম নেয়ার কোনো নির্দেশনা দেয় অবশ্যই আমরা সেভাবে চলব।’
রেগে গেলেন কোষাধ্যক্ষ
গাড়িতে না চড়েও ভাড়া গোনার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে রেগে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘বিআরটিসির ভাড়া কে দেবে, তুমি দিবা? শিক্ষার্থীরা পরিবহনে না চড়লেও বিআরটিসিকে ভাড়া দিতে হচ্ছে। তাই এসব টাকা নেয়া হচ্ছে।’
তিনি জানান, পরিবহন ফি হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে নেয়া হচ্ছে ১০৮০ টাকা করে। বছরে চালু থাকা সময় ২৫০ দিন ধরলে পরিবহন বাবদ দৈনিক ব্যয় ৪ টাকা ৩২ পয়সা। এ সামান্য টাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বিস্মিত।
তবে কোষাধ্যক্ষের বক্তব্যের সাথে মিল নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ম্যানেজার আতাউর রহমানের বক্তব্যে। আতাউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিআরটিসির সাথে আমাদের চুক্তি বাস হিসেবে না, ট্রিপ হিসেবে। যত ট্রিপ বাস চলবে সে অনুযায়ী টাকা। ট্রিপ না দিলে টাকা নেই। এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তাই ট্রিপ বন্ধ। সুতরাং তাদের টাকা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
‘গাড়ি না চললে ভাড়া নেই’ এমন বিষয় সম্পর্কে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পরিবহন ম্যানেজারের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। তবে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ফি প্রত্যাহারের ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করেননি উপাচার্য।
আরও পড়ুন:২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।
এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।
উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”
ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।
ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য