দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে চারটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার পরই বিশ্বদ্যালয়গুলো খোলা হবে। খোলার আগে অবশ্য শর্ত সাপেক্ষে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাসরি ও অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ারও অনুমতি দেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সূহ খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সভায় মোট চারটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে আমরা মোট চারটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ চার সিদ্ধান্তের আলোকেই আমরা সব সিদ্ধান্ত নেব। সভায় সব পক্ষ উপস্থিত ছিল, বলা যায় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে এই চারটি আমাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।’
ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শর্ত সাপেক্ষে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাসরি ও অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কাউন্সিলের পরামর্শে পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনার টিকা দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চেীধুরী, কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়াসহ আরও অনেকে।
সভার সিদ্ধান্তসমূহ:
০১. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই টিকা প্রদানের কর্মসূচি আবাসিক হলসমূহের শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুরু হবে।
০২. শর্তসাপেক্ষে সরাসরি উপস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য যে দুইটি নির্দেশনা প্রদান করেছে, তা স্ব-স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদনের মাধ্যমে কার্যকর করে বিষয়বস্তুর ওপর চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করা হবে।
০৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান সম্পন্ন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সরাসরি উপস্থিতিতে শিক্ষাকার্যক্রম আগের মতো চালু হবে।
০৪. কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী একটি ‘রিকোভারি প্ল্যান’ প্রস্তুত করে তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এই ‘রিকোভারি প্ল্যান’ এর একটি সাধারণ গাইডলাইন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে।
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ দফায় দফায় বাড়িয়ে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
গত বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে দেয়া সম্পন্ন হলেই আবাসিক হলযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছেন, সে তথ্য ইউজিসির কাছে চেয়েছি। যাদের বয়স ৪০ এর বেশি, বেশির ভাগই টিকা নিয়েছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।’
‘শিক্ষার্থীদের যাদের বয়স ৪০-এর কম তাদের বিশেষ বিবেচনায় টিকা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। নতুন টিকা এলেই তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ক্ষেত্রে আবাসিক শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এ সংখ্যা যেহেতু বিশাল নয়, তাই দ্রুত তাদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।’
আরও পড়ুন:পাবনার বেড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় মোঃ মোজাম্মেল (৫৫) নামে অটোভ্যান চালক নিহত হয়েছেন। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের মোয়াজ্জিন ও আমিনপুর সিন্দুরী গ্রামের মৃত আমজাদ শেখের ছেলে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল সাতটার দিকে উপজেলার আমিনপুর থানার অন্তর্গত কাজিরহাট সড়কে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কাশিনাথপুর বাজার থেকে কাজিরহাট সড়কে মোজাম্মেল তার নিজের অটোভ্যান নিয়ে নিজ গ্রাম সিন্দুরী এলাকায় যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে পেছন থেকে কাজিরহাটগামী একটি ট্রাক ধাক্কা দিয়ে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার দেহ ছিন্নবিছিন্ন হয় এবং দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যু মোজাম্মেল সিন্দুরী গ্রামের মাজার মসজিদের মোয়াজ্জেম ছিলেন। সকালে তিনি যাত্রী নিয়ে কাশিনাথপুর আসেন। বাড়ি ফেরার পথে এ দূর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিস একটি দল এসে রাস্তায় পড়ে থাকা মৃত্যু দেহ উদ্ধার ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
এ বিষয়ে আমিনপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ গোলাম মোস্তফা জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়, তবে চালক পালিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য মরা দেহটিকে থানায় রাখা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ এক আসামি পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পলাতক আসামি কবির আহম্মদ চৌধুরী প্রকাশ একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুলগাজীর আমজাদহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা ছাগলনাইয়া থানায় কর্মরত। এ ঘটনায় হামলাকারী ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন— ফুলগাজী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রাফিদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দিদার ও কনস্টেবল সুমন।
পুলিশ জানায়, পলাতক আসামি কবির আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ছাগলনাইয়া থানায় করা একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি।
মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের একটি দল। এ সময় তারা কবিরকে গ্রেপ্তার করলেও তিনি পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে তার সহযোগী ও স্বজনদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আসামির স্বজনদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হাতকড়াসহ পালিয়ে যাওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফখরুল আলম জানান, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে গত বছরের ৬ অক্টোবর কবিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছিল। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তখন তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের স্মরণে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এটি রূপান্তরে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১১ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম সমাপ্ত করতে এই জাদুঘরের ‘সিভিল’ ও ‘ই/এম’ অংশ নির্মাণ বা সংস্কার কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার অনুমোদন দিয়েছে অর্থনীতি বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারকের পাশাপাশি বিগত সরকারের ১৬ বছরের নিপীড়নের বিভিন্ন ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে এ জাদুঘরে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জাদুঘরের ই/এম অংশ বলতে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল অংশকে বোঝায়। যার মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল অংশ থাকে। যেমন—ইলেকট্রিক তার, সুইচসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও মেকানিক্যাল সামগ্রী।
আর সিভিল অংশ বলতে ইলেকট্রো মেকানিক্যাল অংশ বাদে বাকি অংশকে বোঝায়। অর্থাৎ ই/এম এবং সিভিল এই দুটি অংশের মধ্যে জাদুঘরের সম্পূর্ণ অংশই থাকবে।
জানা গেছে, গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ রূপান্তরের সিদ্ধান্ত গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের এই সময়ের মধ্যে জাদুঘরের ই/এম অংশ নির্মাণ/সংস্কার করা সম্ভব হবে না। এ জন্য এই নির্মাণ বা সংস্কারকাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করা হবে।
মেসার্স শুভ্রা ট্রেডার্স-কে দিয়ে এই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত বিভাগ। এ জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪০ কোটি ৮২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
জাদুঘরের ই/এম অংশ নির্মাণ বা সংস্কারকাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার জন্য বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল অংশের কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘দ্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে দিয়ে এই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত বিভাগ। এ জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭০ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ৫ আগস্ট এই জাদুঘরের উদ্বোধন করা হতে পারে।
আগস্ট থেকে শুরু হবে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি। কর্মসূচির আওতায় ৫৫ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
তিনি বলেন, এ বছর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চলবে ছয় মাস। গত বছর এটা ছিল পাঁচ মাস। প্রথম পর্যায়ে আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাস চলবে এ কর্মসূচি। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি এই দুই মাস খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এরপর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ দুই মাস পুনরায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চলবে।
খাদ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান খাদ্য মজুদ অত্যন্ত সন্তোষজনক। তারপরও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং বন্যার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকার আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশ থেকে চার লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হবে। এছাড়াও বেসরকারি খাতে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ (এফপিএমসি) কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভাপতি, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নিবন্ধনের প্রাথমিক বাছাইয়ে ১৪৪টি নতুন রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে কমিশনের (ইসি) মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এসব দলকে তাদের আবেদনপত্রে ঘাটতি থাকা কাগজপত্র আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
গতকাল মঙ্গলবার ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে অন্যান্য দলগুলোকেও চিঠি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ১৫ দিন সময়ের মধ্যে যেসব ত্রুটিবিচ্যুতি আছে তা পূরণ করতে হবে।
গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে আবেদন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশকিছু দল আবেদন করলে ২২ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ায় সংস্থাটি। ওই সময় পর্যন্ত ১৪৪টি দল ১৪৭টি আবেদন করে।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, দলগুলোর মধ্যে কোনোটিই উত্তীর্ণ হতে পারেনি প্রাথমিক বাছাইয়ে। তাই প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আর এনসিপিসহ ৮২টি দলকে দ্বিতীয় ধাপে চিঠি দেওয়া হবে। সংশোধনের সুযোগ থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘাটতি পূরণ না হলে আবেদন বাতিল হতে পারে।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয় জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়ম কানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে নিয়ম কানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।
নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রথমে এগুলো প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর সেই দলগুলোর তথ্যাবলি সরেজমিন তদন্ত শেষে বাছাই সম্পন্ন করে দাবি আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কমিশন। সেখানে কোনো আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। আর কোনো আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করে ইসি। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দিতে পারে না।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।
ইসিতে আবেদন করা দলগুলো হলো: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সর্ব-স্বেচ্ছা উন্নয়ন দল, কোয়ালিশন-ন্যাশনাল পার্টি (সিএনপি), জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ-তিসারী-ইনসাফ দল, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপ), বাংলাদেশ জনতা পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ আজাদী পার্টি-বিএপি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ ইসলামিক জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট পার্টি (বিডিএম), বাংলাদেশ বেষ্ট পলিটিক্যাল পার্টি (বিবিপিপি), মানবিক বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএসডিপি), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), গণদল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (বিএনডিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি), বাংলাদেশ গণবিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), জনতার দল, জাতীয় ন্যায় বিচার পার্টি, বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএনডিপি, বাংলাদেশ ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিআইডিপি), ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি (আইজিপি), জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দল-এনএফএফ, বাংলাদেশ নাগরিক কমান্ড, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ফেডারেশন, নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ জাতীয় দল (বিজেডি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাতীয় কৃষক শ্রমিক পার্টি, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল, বাংলাদেশ গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাকশন পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণঅধিকার পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, নতুন ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ একাত্তর পার্টি, স্বাধীন বাংলা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট, জাগ্রত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক প্রজন্ম, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রজনতা পার্টি, খেলাফত ইসলাম, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পার্টি, বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি। এছাড়াও বাংলাদেশ রক্ষণশীল সমাজ (বিসিপি), জনতা কংগ্রেস পার্টি, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণময় পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি (বাজাপা), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল, বাংলাদেশ জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক আন্দোলন পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, জাস্টিজ পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি (বি. জি. পি), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ কৃষক পার্টি (কেএসপি), জনতার কথা বলে, ভাসানী শক্তি পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল (বাজদ), ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, স্বাধীন জনতা পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ শান্তির দল, সংবিধান বিষয়ক জনস্বার্থ পার্টি সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ গণঅভিযাত্রা দল, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি (এনএলপি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), জনতা মহাজোট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতার ঐক্য, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, নিউক্লিয়াস পার্টি, ইউনাইটেড বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন পার্টি (বিএনএলপি), বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম), বাংলাদেশ পাক পাঞ্জাতন পার্টি (বিপিপি), সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), ন্যাপ ভাসানী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), জাতীয় পেশাজীবী দল (এসপিপি), বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট (বি. জে. এফ.), বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি-ডিসিপি, ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশি জনগণের পার্টি, অহিংস গণ আন্দোলন, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি এবং মুসলিম সেভ ইউনিয়ন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে ঢাকায় টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেও আজ সকালে উঁকি দিয়েছে রোদ। রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় বাড়তে শুরু করেছে বায়ুদূষণ। গত কয়েকদিন ধরেই দূষণের এই মাত্রা একটু একটু করেই বেড়েই চলেছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৯০। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী এই স্কোরের কারণে ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়ে অবস্থান করলেও সেটি ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে উঠতে বেশি দূরে নেই।
কারণ একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে, এই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। এরপর এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টি হোক কিংবা ছুটির দিন, কোনোকিছুতেই ঢাকার বাতাসের মানে তেমন উন্নতি ঘটাতে পারছে না। মাঝেমধ্যে হয়তো একিউআই স্কোর কিছুটা কমে আসে, পরক্ষণেই আবার পুরনো চেহারায় ফিরে যায়।
যেমন: সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৫৪। যেটি বাতাসের মান ‘ভালো’ হয়ে ওঠার কাছাকাছি। তবে ভালো আর হয়ে ওঠেনি, বরং পরদিনই শহরটির স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৮৯ তে।
গতকালের মতো আজ সকালেও ঢাকার বাতাসের অবনতির ধারা অব্যাহত আছে। ৯০ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ২৪তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
এদিকে, আজও তালিকার শীর্ষে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা। শহরটির একিউআই স্কোর ১৮৬। টানা কয়েকদিন ধরেই শীর্ষে অবস্থান করছে শহরটি। তবে গতকাল দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা চিলির সান্তিয়াগো ও ভিয়েতনামের হ্যানয়ের বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে।
এদিন ১৮১ ও ১৭৮ স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাহরাইনের মানামা ও ইন্দোনেশিয়ার জার্কাতা। আর সান্তিয়াগো ও হ্যানয়ের স্কোর আজ ১৫৯ ও ৯৪।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
জুলাই শহিদদের স্বপ্ন বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত এক ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৬ জুলাই) জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
জুলাই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জুলাই শহিদরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সবাই এগিয়ে যাবো—আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে যারা নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন তাদের স্মরণে প্রথমবারের মতো আজ (বুধবার) পালিত হচ্ছে জুলাই শহিদ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সরকার আজ এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
এদিন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশের মাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও দেশব্যাপী মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও শহিদদের শান্তির জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রথমবারের মতো আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদকে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলিতে ও সন্ত্রাসীদের হামলায় এই দিনে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় অন্তত ছয় জন শহিদ হন।
তিনি বলেন, ক্ষণজন্মা অকুতোভয় এই বীরদের আত্মদান আন্দোলনে তীব্র গতির সঞ্চার করে। প্রতিবাদে দেশজুড়ে রাজপথে নেমে আসে লাখো শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতা। আন্দোলনের তীব্রতার সঙ্গে বাড়তে থাকে শহিদদের সংখ্যা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্য ও কোটাবিরোধী আন্দোলন অচিরেই রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। সর্বস্তরের মানুষের দুর্বার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরাচার। হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে হয় মুক্তির নতুন সূর্যোদয়।
শহিদদের স্মরণ ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং শহিদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এবং ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়েছে। জুলাই শহিদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও গেজেটে প্রকাশের কার্যক্রম চলমান আছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি শহিদ পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা ও মাসিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণেও একই রকম নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বাণীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আত্মদানকারী সব শহিদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
মন্তব্য