করোনাভাইরাসের কারণে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা পেছানো হয়। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসছেন তখন দেশে করোনা শনাক্তের পরিমাণ সর্বোচ্চ। স্বাস্থবিধি মানতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার কথা বলা হলেও কেন্দ্রে তার দেখা পাওয়া যায়নি।
কেন্দ্রের বাইরে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে পরীক্ষার দিতে প্রবেশ করেছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছিলেন অভিভাবকরাও। ফলে দূরত্ব মানার কোনো বালাই ছিল না এ সময়।
ঢাকাসহ সারা দেশে ৫৫টি কেন্দ্রে শুক্রবার সকাল ১০টা শুরু হচ্ছে পরীক্ষা এক ঘণ্টার এই ভর্তিযুদ্ধ। মোট ১ লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন তাতে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সকাল ৮টার মধ্যে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ৯টা ৩০ মিনিটে পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান ফটক বন্ধ হয়ে যাবে। সাড়ে ৯টার পর কোনো শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, বিশেষভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ফুট নিরাপদ দূরত্ব থেকে অবস্থানের নির্দেশনা থাকলেও কেন্দ্রগুলোর সামনে দেখা গেছে ভিড়।
পরীক্ষার্থী অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। কেন্দ্রগুলোর প্রবেশমুখে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা কলেজ, টিচার ট্রেনিং কলেজ ঘুরে এমনটায় দেখা গেছে।
দেখা গেছে, পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে অথবা স্যানিটাইজ করতে হবে বলে নির্দেশনা দেয়া হলেও এমন কোনো ব্যবস্থা রাখেনি কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া কেন্দ্রের আশপাশে গাড়ি রাখা যাবে না নির্দশনা মানা হয়নি। কলাভবনে সামনে রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গাড়ি। অভিভাবকরা কেন্দ্রের কাছে অবস্থান করতে পারবেন না, ছিল এমন নির্দেশনা। বাস্তবে তার মিল পাওয়া যায়নি। প্রায় সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে এসেছেন অভিভাবক।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ছিটেফোঁটাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের পরীক্ষাকেন্দ্রে না দেখে হতাশ আর ক্ষুব্ধ হয়েছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও কেউই মানছেন না।’
একদিকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়, অন্যদিকে নিজের স্বপ্নপূরণ আরা বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করা। সবমিলিয়ে, এই ঝুঁকির মধ্যেও পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে তাকে।
রাজধানীর রামপুরা বাসিন্দা হাসেম আলী মেয়েকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে দেশের সব পরীক্ষা স্থগিত, কিন্তু কেন মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে জানি না। কাউকেই তেমন স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না।’
শিক্ষার্থী অনেকের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকদেরও স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে তেমন কোনো সতর্ককর্তা দেখা যায়নি। অনেকেই জটলা পাকিয়ে গল্পে মজেছেন। কেউ বা আড্ডা দিচ্ছেন মাস্ক না পরেই।
পরীক্ষার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকা আটটা থেকে এই যানজট ছিল। অনেকে উপায় না দেখে রিকশা, বাস, নিজের গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছান। তবে হলে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরতে হয়েছে দীর্ঘ লাইন। সেখানেও গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ানোয় মানেননি দূরত্ব।
এ বছর ৩৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ৪ হাজার ৩৫০টি আসনের জন্য পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকাসহ ১৫টি শহরের মোট ১৯টি মেডিকেল কলেজের অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই ভর্তি পরীক্ষা। এর মধ্যে ঢাকাতেই সবচেয়ে বেশি পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর সংক্রমণের হার বর্তমানের অর্ধেক থাকাকালেই ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরীক্ষা। তবে
সংক্রমণ আর মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পরও এবার লকডাউন বা সাধারণ ছুটির মতো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। বরং জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা এসেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন কেন্দ্রটিও দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো সার্বিক চেষ্টা করেছি। দেখেন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়া তো খুব কঠিন।’
কেন্দ্রে অভিভাবক প্রবেশ নিষেধ থাকলেও কেন প্রবেশ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘আমরা অভিভাবকদের নিরুৎসাহিত করেছি, কিন্তু তারা নিজেদের ইচ্ছাতেই ঢুকছেন।’
প্রতিটা কেন্দ্রে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার কথা ছিল নির্দেশনায় তবে সেটা কেন রাখা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে আসছে, আর এত শিক্ষার্থীর সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা অনেক কষ্টসাধ্য।’
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন ভর্তিপরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
সংক্রমিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আশঙ্কা করে থাকেন যে তার মাঝে করোনা উপসর্গ আছে অথবা কারও মাঝে সংক্রমণ থাকে, তবে আমরা তাদের আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেব।’
এ জন্য প্রথমবারের মতো প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে আইসোলেশন কক্ষের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা পরিমাপ করে সবাইকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। আশা করছি সফলভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। সবাই যার যার প্রস্তুতি নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:বুধবার, ২০শে আগষ্ট, ২০২৫, সকাল ১১ টায় বিশেষ অতিথিদের নিয়ে আরবী ভাষা ও সংস্কৃতির উপর এক প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান উদযাপন করলো এমারেল্ড ইন্টারন্যশনাল স্কুল ঢাকা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিনজন সম্মানিত অতিথিকে স্কুলের ম্যানেজমেন্ট টিম এবং প্রধান উপদেষ্টা জনাব এম এম রনক (Mr. M M Ronok) ফুলের তোড়া ও তাদের নামের ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফি দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের লিবীয় দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান জনাব আব্দালফাত্তাহ এ. এ. খিতরেশ (Mr. Abdalfattah A. A. Khitresh)। তার সঙ্গে ছিলেন চৌধুরী লেদার অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ইমরান চৌধুরী (Mr. Imran Chowdhury) এবং বিজনেস ইন বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জনাব রাজিব (Mr. Rajib)।
শিক্ষার্থীরা আজ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের মেধার ও আরবী ভাষায় লব্ধ জ্ঞানের এক মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী দিয়ে অতিথিদের মুগ্ধ করে। এমারেল্ড এর শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী ও সাবলীল আরবি কথোপকথনের মাধ্যমে তাদের ভাষার দক্ষতা প্রদরশীত হয়, যা দর্শকদের মন ভুলিয়ে দেয় এবং তাদের ভাষা কার্যক্রমের সাফল্য EISD তুলে ধরে। নতুন প্রজন্ম থেকে আলোকিত ও সপ্রতিভ শিক্ষার্থী তৈরি করে বিশ্বকে আত্মবিশ্বাসী ও মুসলিম নেতৃত্ব দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি EISD স্কুল দিয়েছে, আজকের তাদের পরিবেশনা তারই একটি প্রমাণ।
শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা শেষে, অতিথিদেরকে মধ্যাহ্নভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তারা স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে আরও গভীরভাবে মতবিনিময় করার সুযোগ পান। এই অনুষ্ঠানটি কেবল সংস্কৃতি এবং ভাষার উদযাপনই ছিল না, বরং শিক্ষাবিদ ও পেশাদার জগতের মধ্যে এক অর্থপূর্ণ চিন্তাধারার আদান-প্রদানও ছিল।
ইআইএসডি-তে আরবি সপ্তাহের সাফল্য একটি সামগ্রিক শিক্ষা পদ্ধতিকে তুলে ধরে, যা শিক্ষা, নৈতিকতা এবং ইসলামী সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এই প্যানেল ঘোষণা করেন।
প্যানেল থেকে ভিপি পদে (সহ-সভাপতি) নির্বাচন করবেন আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে (সাধারণ সম্পাদক) শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস পদে (সহকারী সাধারণ সম্পাদক) তানভীর আল হাদী মায়েদ।
প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন আরিফুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে এহসানুল ইসলাম, কমনরুম, পাঠকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মেহেদী হাসান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে আবু হায়াত মো. জুলফিকার জিসান, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে চিম চিম্যা চাকমা, ছাত্র পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. সাইফ উল্লাহ (সাইফ) নির্বাচন করবেন।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৫ জুলাইয়ে আহত সানজিদা আহমেদ তন্বীর সম্মানে খালি থাকবে বলে জানিয়েছেন রাকিব।
সমাজসেবা সম্পাদক পদে সৈয়দ ইমাম হাসান অনিক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. আরকানুল ইসলাম রূপক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসাইন এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মেহেদী হাসান মুন্না নির্বাচিত হবেন।
এছাড়া সদস্যপদের জন্য প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন মো. জারিফ রহমান, মাহমুদুল হাসান, নাহিদ হাসান, মো. হাসিবুর রহমান সাকিব, মো. শামীম রানা, ইয়াসিন আরাফাত আলিফ, মুনইম হাসান অরূপ, রঞ্জন রায়, সোয়াইব ইসলাম ওমি, মেহেরুন্নেসা কেয়া, ইবনু আহমেদ, সামসুল হক আনান এবং নিত্যানন্দ পাল।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ জন শিক্ষার্থী। গত ৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আবেদনের সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল ১১ আগস্ট। তবে পরে বাড়িয়ে দেওয়া হয় ১৫ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যেই আবেদন জমা পড়ে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ।
গতকাল সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. রিজাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের আবেদনে বোর্ডভিত্তিক ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে—২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৩ জন। মাদরাসা বোর্ডে আবেদন করেছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৮২ জন শিক্ষার্থী। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকেও আবেদন পড়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক, ১ লাখ ২৯ হাজার ১৪ জন।
রাজশাহী ও যশোর বোর্ড থেকে যথাক্রমে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৩টি আবেদন জমা পড়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডে আবেদন ৯২ হাজার ১৬১, কুমিল্লা বোর্ডে ৯২ হাজার ৪৮৪, সিলেট বোর্ডে ৬২ হাজার ৩৭৯, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫১ হাজার ৮৭১ এবং বরিশাল বোর্ডে পড়েছে ৪০ হাজার ৬৩৪টি আবেদন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে আবেদন জমা পড়েছে ৩৮ হাজার ৬৮৭টি, আর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রামে আবেদন করেছেন মাত্র ৭০১ জন।
দেশের ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২২ লাখের বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে রয়েছে প্রায় ৯ লাখ আসন এবং সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে রয়েছে আরও ২ লাখ ৪১ হাজার আসন। সব মিলিয়ে একাদশ শ্রেণি ও সমমানের প্রতিষ্ঠানে মোট আসন রয়েছে প্রায় ৩৩ দশমিক ২৫ লাখ। অথচ এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। ফলে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো চাপ নেই।
গত ২৪ জুলাই প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করেছেন পছন্দক্রম অনুযায়ী। এতে অটো মাইগ্রেশন সুবিধা প্রযোজ্য থাকবে। যারা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন, যোগ্য হলে তারাও আবেদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, চলতি খ্রিষ্টাব্দসহ ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী দুই খ্রিষ্টাব্দে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ভর্তি হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত ষষ্ঠ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক সুপারিশের ফল চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি শেষ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
গতকাল রোববার এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র বলছে, ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলেই দ্রুততম সময়ে সুপারিশের ফল প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ষষ্ঠ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সুপারিশ প্রকাশের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া মাত্রই ফল প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ১৬ জুন ষষ্ঠ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে শূন্য পদ ছিল ১ লাখ ৮২২টি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ ও ফি পরিশোধ করে সফলভাবে আবেদন করেন ৫৭ হাজার ৮৪০ জন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, একজন প্রার্থী শূন্য পদের তালিকা থেকে তার আবেদনে সর্বোচ্চ ৪০টি প্রতিষ্ঠানে পছন্দ দিতে পেরেছেন।
২০০৫ সাল থেকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে এনটিআরসিএ। তবে শুরুর ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির হাতে।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকার এনটিআরসিএকে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেয়।
এরপর পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৯৮ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করে এনটিআরসিএ।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদান করেছেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালযয়ের ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়। গত ০৭ আগস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজজের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের কাছে তিনি যোগদানপত্র হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল ২০০২ সালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী ডিন এবং ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার কৃতী সন্তান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্সে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং-এ এমবিএ ও বিবিএস সম্পন্ন করেছেন।
ড. ইকবাল মালয়েশিয়ার ইউসিসিআই ইউনিভার্সিটির অতিথি অধ্যাপক এবং তুরস্কের আনাদোলু ইউনিভার্সিটিতে এরাসমাস+ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রখ্যাত গবেষক। তার ৫০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ স্কোপাস ও ওয়েব অব সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটির সাথে যৌথভাবে সার্ভিস মার্কেটিং বিষয়ে একটি পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছেন।
তিনি ডিআইইউ-এর ইউনুস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড রিসার্চ সেন্টার-এর পরিচালক হিসেবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও পাঠ্যক্রম উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এবং সোশ্যাল বিজনেস শিক্ষার অঙ্গনে একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তার দূরদর্শী নেতৃত্ব, একাডেমিক সততা এবং উদ্ভাবনের প্রতি অঙ্গীকার তাকে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যবসায় শিক্ষার ভবিষ্যত গঠনে একটি সম্মানিত শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হবে আজ মঙ্গলবার থেকে। প্রতিটি মনোনয়ন ফরমের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রার্থীরা ১২ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৯ আগস্ট, বিকেল ৩টা।
এতে আরও বরা হয়, প্রার্থীরা সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করতে পারবেন। একই সময়ে হল সংসদের মনোনয়নপত্র প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট হল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সশরীরে সংগ্রহ ও দাখিল করতে হবে।
ডাকসু ও হল সংসদ আচরণ বিধিমালা-২০২৫ অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সময় কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না এবং পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দেওয়া যাবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরও তালিকায় বহিষ্কৃত ও মামলায় অভিযুক্ত কোনো শিক্ষার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, হলগুলোকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার গত বছর নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
শনিবার (৯ আগস্ট) ভোরে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এ কথা বলেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ঢাবিতে হল রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার(৮ আগস্ট) সকালে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে কমিটি ঘোষণা করার পর এই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীদের অপসারণ ও হলগুলোকে রাজনীতিমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বাধ্য করে।
রাত সাড়ে ১২টার বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে, ১-২-৩-৪, হল রাজনীতি আর নয়, স্বাধীনতা না দাসত্ব, স্বাধীনতা-স্বাধীনতা ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত হলো হল স্তরে কোনো ছাত্ররাজনীতির অনুমতি দেওয়া হবে না। তারা কেন্দ্রীয় স্তরে, মধুর ক্যান্টিনে এটি করতে পারে। এটাই ছিল বোঝাপড়া। তবে, আমরা কোনো ছাত্র সংগঠনকে 'আপনি এটি বাতিল করুন' বলতে বাধ্য করতে পারি না। আমরা জানিয়েছি, ১৭ জুলাই যা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তা বলবৎ থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়ে আজ প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি সভা হবে। এরপর, যেসব ছাত্র সংগঠনের নাম উঠে এসেছে, তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা বলব।’
মন্তব্য