করোনামহামারির কারণে নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ শিক্ষাঙ্গন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শিক্ষা কার্যক্রম।
সব মিলিয়ে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে। শিক্ষা কার্যক্রমের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু হয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম। তবে গ্রামাঞ্চলে এবং নিম্ন আয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী ছিল এই কার্যক্রমের বাইরে।
অনিশ্চয়তায় পড়ে এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী। পরীক্ষা হবে কি হবে না– এমন অনিশ্চয়তায় অস্থির সময় পার করেছেন অভিভাবকেরাও।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুরুতে নীরব থাকলেও পরে ধাপে ধাপে জানানো হয়, এবার হচ্ছে না প্রাথমিক থেকে শুরু করে জেএসসি-এইচএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা। এরপর দেখা দেয় ভর্তি জটিলতা। বছর শেষ হবার আগেই শুরু হয় নতুন শ্রেণিতে ভর্তির অনিশ্চয়তা। এসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েই অটোপাস ও নতুন শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরাও। সারা বছর ছিল না নতুন কোনো চাকরির বিজ্ঞাপন, ছিল না নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।
হতাশা শুরু হয় ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিলের মধ্য দিয়ে। এপ্রিলে হওয়ার কথা ছিল এ পরীক্ষা। করোনার কারণে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলও স্থগিত রয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বরে চীনে এই ভাইরাস দেখা দিলেও গত ৮ মার্চ প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর পরেই শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাঙ্গন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীর বাড়িতেই পড়াশোনা করতে হয়। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন পাঠদানের বাইরে ছিল। এমন পরিস্থিতে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
সরকারি ঘোষণার আগেই বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি তোলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। সরকার বা কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিলে একে একে অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।
অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই ছুটি পাঁচ দফা বাড়িয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। অবশ্য ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে না।
অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম
করোনাকালে শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষার বাইরে চলে না যায়, সে জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি সরকারি টেলিভিশন বিটিভি ও সংসদ টিভিতে অডিও-ভিজ্যুয়াল ক্লাস নেয়া হচ্ছে। তবে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সেবা বঞ্চিত হওয়ার কারণে শিক্ষায় বৈষম্য বেড়েছে বলে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৩ শতাংশ শিশু করোনাকালে শিক্ষার বাইরে রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের আরেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনলাইনে ক্লাস করার সামর্থ্যই নেই।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, শিক্ষার্থীদের ৮৬ শতাংশ ও অভিভাবকদের ৭৪ শতাংশ সংসদ টিভির বিষয়ে জানেন না। জরিপে অংশ নেয়া ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী সংসদ টেলিভিশনের পাঠদান দেখেছে। বাকি ৫৭ শতাংশ এই টিভি বা অনলাইন ক্লাসের বাইরে থেকে গেছে।
শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম’ (বিইআরএফ)-এর একটি জরিপে দেখা যায়, শহরাঞ্চলে ৯৪ শতাংশ পরিবার সংসদ টিভিতে ক্লাসের কথা জানে। তবে ক্লাসে অংশ নেয় মাত্র ১১ শতাংশ।
এমন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম অনলাইন করা হচ্ছে।
পরীক্ষা বাতিল শিক্ষার্থীদের অটোপাস
করোনার কারণে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জেএসসি আর এসএসসির ফলের ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে এইচএসসির ফল। আর বাতিল করা হয়েছে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা। করোনা পরিস্থিতির এখনও কোনো উন্নতি নেই, দ্বিতীয় ঢেউ নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে আরেকটি এসএসসি পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে আসছে পরের বছরের এইচএসসি পরীক্ষার সময়ও। সেসব পরীক্ষা কি অনুষ্ঠিত হবে, নাকি এবারও স্থগিত হবে এ বিষয়েও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা শঙ্কায়।
করোনায় কর্মহীন ২০ লাখ শিক্ষক
করোনার কারণে ৫০ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ শিক্ষকের অনেকের ভাগ্যে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। দেশ জুড়ে ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেনের ১০ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর আয় নেই নয় মাস ধরে। তাদের অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছেন। কেউ হয়েছেন দোকানি, কেউ ফেরিওয়ালা, কৃষক।
একই অবস্থায় দিন কাটছে ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের। সরকারি হিসাবে সারাদেশে চার হাজার ৩১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২১ হাজার শিক্ষক থাকলেও বাস্তবে মাদ্রাসার সংখ্যা অনেক বেশি। সরকারি কোনো অনুদান না পাওয়া এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পরিস্থিতিও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের মতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা
করোনা মহামারিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা নিতে সম্মতি জানিয়েছে ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হবে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্র। মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান– তিনটি শাখায় পরীক্ষা নেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ পরীক্ষা নেয়া হতে পারে তা করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
২০১৯ এবং ২০২০ সালে যারা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাদের সবাই ভর্তি পরীক্ষার অংশ নিতে পারবেন। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার দুই ফলাফল মিলে মানবিক বিভাগে মোট জিপিএ-৬, বিজ্ঞানে জিপিএ-৭, বাণিজ্যে বিভাগের ন্যূনতম জিপিএ-৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট লাগবে। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩ পয়েন্ট এর থাকতে হবে।
দেশে বর্তমানে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয় ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এগুলোতে মোট আসন সংখ্যা ৬০ হাজার।
হল না খুলে পরীক্ষা নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়। ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি সদস্যরা মিলে এই সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন সেমিস্টারের পরীক্ষাও নেয়া যাবে। তবে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সুপারিশ করে ইউজিসি।
আরও পড়ুন:জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সত্তুর শতাংশ উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে। এই প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে না।
জামালপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত জামালপুর শেরপুর জেলার কলেজ সমূহের অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষকগণের সাথে শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন দপ্তরের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন অর রশিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এ এস এম আমানুল্লাহ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মো: নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম। এ সময় তিনি আরো বলেন, উন্নত দেশগুলোতে যেখানে মোট জিডিপির তিন থেকে পাঁচ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশে মাত্র এক দশমিক পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয় যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য খুবই অপ্রতুল। এখান থেকে বিশ্বমানের নাগরিক গড়ে তোলা সম্ভব নয়। শিক্ষাব্যবস্থায় মোট জিডিপির পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। এ ছাড়াও তিনি প্রাইমারি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর কিছু পরিবর্তন আনার কথা বলেন না। মত বিনিময় সভায় জামালপুর শেরপুর জেলার কলেজসমূহের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।
উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে রায়ে বলা হয়েছে।
এদিন আদালতে ঢাবির পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী শুনানি করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন— এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
এরপর গেল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চান চাওয়া হয়।
তবে তার এক ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এক নারী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আলী হুসেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের বাসিন্দা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের আলোকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এটি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডারে প্রদত্ত প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তি বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে আলী হুসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা প্রদানের নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৩ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করেছেন।
রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ের সময় হাইকোর্ট বলেন, এটা চিরন্তন সত্য যে শিক্ষকরা রিটায়ারমেন্ট (অবসরকালীন) বেনিফিট (সুবিধা) পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কত টাকা বেতন পান, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এ জন্য তাদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এই অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।
সেদিন রায়ের পর আইনজীবী ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, সারাদেশে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় ৫ লাখের বেশি শিক্ষক কর্মচারী অবসরকালীন সুবিধা পেতে ২০১৯ সালে একটি রিট দায়ের করেছিলাম। রিটে আমরা ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে ৬ শতাংশ কেটে নেওয়া হতো। সেই কর্তনকৃত টাকাসহ সুবিধান অবসরের পর দেওয়া হতো। এই অবস্থায় ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে ১০ শতাংশ কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্তে নেয়। ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হলেও ৬ শতাংশের যে সুবিধা দেওয়া হতো সেটাই বহাল রাখা হয়। যে কারণে আমরা রিট দায়ের করে বলেছি, যাতে ১০ শতাংশের সুবিধা দেওয়া হয়। এরপর এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে আদালত বলেছেন, ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হলেও তাদের যেন বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে যেন অবসরকালীন সুবিধা প্রদান করা হয়।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা, ১৯৯৯ এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা, ২০০৫ এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধান ছিল। যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল উল্লিখিত প্রবিধানমালাগুলোর শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধানগুলো সংশোধনপূর্বক ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার পরিবর্তে ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ কাটার বিধান করা হলেও ওই অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীদের এপ্রিল ২০১৯ মাসের বেতন হতে ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে জমা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
ফলে অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে কোনো আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি না করেই শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা কাটার আদেশের কারণে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত অর্থ কাটার আদেশ বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তারা বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষক ও কর্মচারীরা ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের শুনানি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এক নম্বরে রাখা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সোমবার হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন। তবে বিকেলে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ওই আদেশ স্থগিত করেন।
তাৎক্ষণিক হাতে লেখা আপিল আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব চেম্বার কোর্টে শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।
চেম্বার আদালত একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল আবেদন করে। পরে চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।
সোমবার হাইকোর্ট বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ডাকসু জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানিতে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
হাইকোর্ট আদেশে রিটকারী ও ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলমকে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে বলা হয়।
এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, শিগগিরই সে সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, তা দুঃখজনক। এজন্য মন্ত্রণালয়ও উদ্বিগ্ন। তবে আলোচনা করেই এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। শিগগিরই এসব ঘটনার সমাধান হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কারও কাম্য নয়। তবে সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
চলমান সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ে সমাধান করা হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বস্ত করেন উপদেষ্টা।
মন্তব্য