নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নানা রকম ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
যারা শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছিলেন, জীবন থমকে যাওয়ায় উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে।
শিশু-কিশোররা স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে না পারায় মনের কথা খুলে বলতে না পারায় হয়ে যাচ্ছে বিষন্ন; মেজাজ হচ্ছে খিটখিটে।
করোনা পরিস্থিতি অন্য সব সমস্যার পাশাপাশি শিক্ষা জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। ক্লাস বন্ধ থাকায় অনলাইনে চলছে লেখাপড়া। কিন্তু এটা ভালো লাগছে না শিক্ষার্থীদের কাছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে কলেজ বন্ধ। রাজধানী একটি সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফা (ছদ্মনাম) ঢাকা ছেড়ে গ্রামে। শুরুতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোই লাগত। কিন্তু কিছুদিন পর লাগে একঘেয়েমি।
আরিফার আচরণ পাল্টাতে থাকে। শুরুতে দিনের বেশিরভাগ সময় একা থাকতেন। কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। পরে শুরু হয় মধ্যরাতে ঘুমের মধ্যেই উচ্চস্বরে চিৎকার। এক পর্যায়ে পরিবারের কাউকেই সহ্য করতে পারতেন না।
এমন অস্বাভাবিক আচরণ কেন, চিন্তিত হয়ে পড়েন স্বজনরা। গ্রামে ভালো ডাক্তার নেই। যার কাছে তাকে নেয়া হয়, তিনি কোনো ব্যাখ্যাই দিতে পারলেন না।
পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকে। পরে পরামর্শ করে আরিফাকে গত আগস্টে রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এখানে এসে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি আরিফা।
প্রাপ্তবয়স্ক এই তরুণী যখন নিজেকে সামলাতে পারেননি, তখন ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাও যে বিপাকে, সেটা সহজেই বোঝা যায়।
রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের অষ্ঠম শ্রেণি ছাত্রী শ্রেয়সী বোসকে অনলাইনে চার ঘণ্টা ক্লাস করতে হয়। তার ভালো লাগে না এভাবে পড়তে। মাঝে মাঝে মাকে বলে গ্রামের বাড়ি যাবে, যেখানে অনলাইনে ক্লাস করা লাগবে না। সবার সঙ্গে কথা বলতে পারবে, মিশতে পারবে, খেলতে পারবে।
রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোমিনের মা বৃষ্টি আক্তার বলেন, ‘ছেলে অনেক সময় পড়ানো বিষয়ও ভুলে যায়। বার বার পড়ানোর পরেও মনে রাখতে পারেন না। এটা নিয়ে অনেক সমস্যায় রয়েছি।’
করোনা সংক্রমণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে গত ১৮ মার্চ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। পাঁচ দফা বাড়িয়ে ছুটি করা হয়েছে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে প্রায় চার কোটি সাড়ে ৪৪ লাখ শিক্ষার্থীর বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, স্কুলে পড়াশোনা সব বন্ধ।
প্রথম কিছুদিন অ্যাকাডেমিক চাপের বাইরে বাড়িতে আত্মীয় পরিজনের কাছাকাছি থাকায় ভালো লাগলেও এখন ভালো সময় কাটছে না।
ক্যাম্পাস কবে খুলবে, লেখাপড়া শেষ কবে, পড়াশোনা শেষ হলে চাকরির কী হবে, বিকল্প আয়ের কী সংস্থান হবে, এসব চিন্তায় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বহু জন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব নিউজবাংলাকে জানান, মহামারিকালে তারা মানসিক রোগী পাচ্ছেন আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। অন্যান্য রোগও বেড়েছে। করোনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে এ সময়ে টিভি, স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পয়েছে। যে কারণে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এই পরিস্থিতিতে মেদস্থুলতা বেড়ে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। বেড়েছে হতাশা, উদ্বেগ, আত্মহত্যা ও বখে যাওয়ার প্রবণতা। বাল্যবিয়ে, শিশুশ্রমে, শিশু নির্যাতন ও শিশু-কিশোরদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিক যত সমস্যাই থাকুক না কেন, আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়া যাবে না। আতঙ্কিত হলেই মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে।
করোনাকালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রোগীর চাপ বেড়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এখানকার বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসেন চার হাজার ৭৪৭ জন রোগী। অক্টোবরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৭০ এ। একই অবস্থা পাবনা মানসিক হাসপাতালে।
মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক হিসাব বলছে, ২০১৮ সালে দেশে ১৮.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। তবে এদের মধ্যে ৯২ শতাংশ মানুষই চিকিৎসার বাইরে থাকে।
ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রায় ৯ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠা বন্ধ যে কারণে শিক্ষার্থীদের বিসন্নতা ও মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। এসব রোগীকে আগে শুধু পরামর্শ দিলেই হতো এখন ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’
এই চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন তিনশর মতো রোগী আসেন। এদের বেশিরভাগ বিষন্নতা ও মানসিক চাপ, উদ্বেগ্ন, খিটখিটে মেজাজ, অস্বাভাবিক আচরণের সমস্যা নিয়ে আসেন।
যারা শিক্ষার্থী তাদের মধ্যে শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানান এই মনরোগ বিশেষজ্ঞ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুরা আটকা পড়ে গেছে। প্রতিটা শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা পরিকল্পনা ছিল। অনেক ইচ্ছা ছিল ভালো চাকরি, বা বিদেশে পড়তে যাওয়া, অনেকেই পরিকল্পনা ছিল বিয়ে করবে। এসব পকিল্পনা বাধাগ্রস্ত হল করোনা কারণে তারা বিষন্নতাবোধ করবে এটা খুবই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, ‘যারা টিউশন করে চলত, তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে আসছে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে। শুধু শিক্ষার্থী নয় পরিবার প্রতিটা সদস্য কিছু না কিছু মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। এটা কাটিয়ে উঠা কিন্তু সহজ নয়।’
সমাধান কী?- জানতে চাইলে এই মনরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব সমস্যা থেকে বের হয় আসতে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীদের বলতে হবে এই মহামারি সারাজীবন থাকবে না। কোনো না কোনো দিন এটি বিদায় নিবে। পৃথিবীতে এমন মহামারি অনেক বার এসেছে। একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
এই সময়ে নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। বলেন, পাখি বা বিড়াল পালা যেতে পারে।
‘প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান, তাহলে আমাদের হতাশ ও মানসিক সমস্যা অনেক অংশ কমে যায়। এছাড় নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যায়, খেলাধূলা করা যায়। এসব কর্মকাণ্ড আমাদের সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করবে।’
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য