প্রাইম ব্যাংক পিএলসি. সম্প্রতি এশিয়ানেট লিমিটেডের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে ব্যাংকের গ্রাহকরা হোটেল ও বিমান টিকিট বুকিংয়ে এক্সক্লুসিভ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। এ উপলক্ষে সম্প্রতি রাজধানীর প্রাইম ব্যাংকের কর্পোরেট অফিসে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এই অংশীদারিত্বের আওতায়, প্রাইম ব্যাংকের প্রায়োরিটি গ্রাহকরা আগামী তিন মাসের মধ্যে তাজ হোটেলে এক রাত বিনামূল্যে অবস্থানের বিশেষ সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি প্রাইম ব্যাংকের সকল কার্ডহোল্ডার এখন থেকে তাজ হোটেলে রুম বুকিংয়ে ১০% ডিসকাউন্ট এবং এশিয়ানেট লিমিটেডের মাধ্যমে যেকোনো রুটের বিমান টিকিটে কিনলে ৫% ডিসকাউন্ট উপভোগ করতে পারবেন।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রাইম ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেটস জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল এবং ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও এশিয়ানেট লিমিটেডের হেড অব অ্যাকাউন্টস সৈয়দ মাজহারুল হক। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, অ্যাফ্লুয়েন্ট ব্যাংকিং তাকিয়ান চৌধুরী, ফার ইস্ট স্পিনিং মিলস লিমিটেড ও এশিয়ানেট লিমিটেডের কোম্পানি অ্যাডভাইজর ফাইয়াজ আহমেদ খান এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাবৃন্দ।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক গ্রাহক ও কর্মীদের প্রিমিয়াম লাইফস্টাইল সুবিধা প্রদানের অঙ্গীকারকে আরও সুসংহত করল, যা গ্রাহকদের সামগ্রীক ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে।
২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য পুরোপুরি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) কর্মসূচির আওতায় এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক, এলডিসি গ্রাজুয়েশন ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু করার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে চলেছে বাংলাদেশ। এটি আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে এবং এ পরিবর্তন বিপুল পরিমাণ সুযোগ তৈরির পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দ্রুততম সময়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্জক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত বলেন, বাণিজ্য সুবিধা কর্মসূচির আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা তার সফরের লক্ষ্য। নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির সুযোগ বাড়াতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রপ্তানি মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ কোটি ডলার (প্রায় এক হাজার কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত গ্রামীণ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ঋণ দেবে সংস্থাটি, যা একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ইআরডি কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এডিবির বাংলাদেশ অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেকেন্ড স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম-সাইজড এন্টারপ্রাইজেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফেজ-২)’ নামের এ প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এডিবির এই প্রকল্প ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা করবে এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ দেবে, যার মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত উদ্যোক্তারা ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত—এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ও আকার বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের কারিগরি সহায়তাও দেওয়া হবে, যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অংশগ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক সেবায় প্রবেশাধিকার বাড়াতে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, ওয়ার্কশপ আয়োজন, সবুজ অর্থায়ন এবং ভ্যালুচেইন-ভিত্তিক অর্থায়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই রূপান্তরে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতের বিকাশই হবে দারিদ্র্য হ্রাস, আঞ্চলিক বৈষম্য কমানো এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের মালিকানাধীন গ্রামীণ উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের সহজলভ্যতা পাবেন। পাশাপাশি তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সক্ষমতাও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বর্তমানে ৬৯টি দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খাতে সহায়তা দিচ্ছে।
রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫। ‘আমার দেশ, আমার আশা দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে বসছে দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেলা চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফএসএমএস)। এসময় ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিএফএসএমএস’র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা।
এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে জানিয়ে শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে।
অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি।
১৪ তারিখ সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আইসিসিবির গুলনকশা (হল–১), পুষ্পগুচ্ছ (হল–২) এবং রাজদর্শন (হল–৩) হলে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য অনুযায়ী, মোট আরএমজি রপ্তানির ৪৭.৬০ শতাংশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার হিসেবে শীর্ষে রয়েছে। যার পরিমাণ ৪.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২.০১ বিলিয়ন ডলার (২০.১৮ শতাংশ), কানাডায় ৩৩৬.৭০ মিলিয়ন ডলার (৩.৩৮ শতাংশ) এবং যুক্তরাজ্যে ১.২২ বিলিয়ন ডলার (১২.২৩ শতাংশ)।
বছরভিত্তিক তুলনায় ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৬০ শতাংশ, কানাডায় ১৩.৬৩ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৬.৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানি অপ্রচলিত বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৭ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে রপ্তানি বেড়েছে ৪.৩১ শতাংশ এবং ওভেন খাতে বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ।
অপরদিকে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের রপ্তানি আয় ৫.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১২.৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় ছিল ১১.৬৬ বিলিয়ন ডলার।
তবে সামগ্রিক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ৪.৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি আয়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত যথারীতি শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ১ দশমিক ৯৬, ৪ দশমিক ৪৮ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮৭, ৪ দশমিক ৪৭ ও ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। চার প্রান্তিকের গড় হিসেবে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে।
চলতি মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪০১ বিলিয়ন টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ১৭৭ বিলিয়ন টাকা।
খাতভিত্তিক প্রবৃদ্ধি
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে কৃষি খাতের পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ০ দশমিক ৭৬, ১ দশমিক ২৫ ও ২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে শিল্প খাত তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪৪, ৭ দশমিক ১০ ও ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪১, ৩ দশমিক ৭৮ ও ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সামগ্রিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পুরো ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বেশ কম।
তিনি বলেন, ‘বার্ষিক প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক অনুমান ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, কিন্তু সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সেটিতে পৌঁছানো এখন আর সম্ভব নয় বলে মনে হচ্ছে।’
ড. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এটি হবে কোভিড-পরবর্তী সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, যদিও ২০২০ সালের মহামারির সময়কার প্রবৃদ্ধির তুলনায় কিছুটা ভালো।’ তিনি অর্থবছর ২০২৪–২৫-কে অর্থনীতির জন্য ‘বিপর্যয়কর বছর’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ বাংলাদেশ গ্রাহকদের জন্য নিয়ে আসছে কেনাকাটার অন্যতম সেরা সুযোগ— '১০.১০ ব্র্যান্ড রাশ ক্যাম্পেইন'। দেশের সেরা ব্র্যান্ডগুলোর পণ্য অবিশ্বাস্য ছাড়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে এই ক্যাম্পেইনটি ৯ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত। ক্রেতারা এই ক্যাম্পেইনে ফ্ল্যাশ সেল ও মেগা ডিলে ৮০% পর্যন্ত ছাড়, হট ডিলে ৭৫% পর্যন্ত ছাড় এবং বহুল জনপ্রিয় ১০/১০০/১০০০/১০০০০ টাকার বিশেষ ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
বিশেষ করে, ১০ টাকার ডিল ১০ ও ১১ অক্টোবর দুপুর ৩টা ও রাত ৯টা এবং ১২ থেকে ১৬ অক্টোবর প্রতিদিন দুপুর ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও থাকছে ডাবল টাকা ভাউচার, ব্র্যান্ডের ওপর ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট এবং নির্বাচিত পণ্যে ফ্ল্যাট ৫০% ছাড়। কেনাকাটাকে আরও সুবিধাজনক করতে সাইট-ওয়াইড ডেলিভারি ডিসকাউন্ট এবং ৭৯৯ টাকা বা তার বেশি অর্ডারে ফ্রি ডেলিভারির সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
এই ১০.১০ ক্যাম্পেইনে দারাজ মল- যা দারাজের একটি ডেডিকেটেড চ্যানেল, গ্রাহকদের দিচ্ছে ১০০% আসল পণ্য কেনার নিশ্চয়তা। কোনো পণ্য নকল প্রমাণিত হলে, শর্তাবলী সাপেক্ষে, দারাজ মল ক্রেতাকে তিনগুণ অর্থ ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছে। ক্রেতারা দারাজ অ্যাপের হোমপেজ থেকেই সরাসরি দারাজ মলে প্রবেশ করতে পারবেন, যেখানে ডানো, লোটো এবং হায়ার সহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের পণ্যে পাওয়া যাবে এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট।
এই ক্যাম্পেইনের প্রধান আকর্ষণ হলো দুটি মেগা কনটেস্ট। ক্যাম্পেইন চলাকালীন চলবে 'দারাজ জ্যাকপট – বাই মোর অ্যান্ড উইন' প্রতিযোগিতা, যেখানে সর্বোচ্চ সংখ্যক সফল অর্ডার দিয়ে একজন ভাগ্যবান ক্রেতা জিততে পারেন ডেটল ব্র্যান্ডের সৌজন্যে একটি রিভো সি৩২ওয়াই ইলেকট্রিক স্কুটার। অন্যদিকে, ক্যাম্পেইনের আগে আয়োজিত 'অ্যাড টু কার্ট অ্যান্ড উইন' (৫–৯ অক্টোবর) প্রতিযোগিতার বিজয়ী পাবেন শামান ইন্টারন্যাশনালের সৌজন্যে একটি হায়ার ৭ কেজি টপ লোড অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন। ক্যাম্পেইনের শুরুতে, ৯ অক্টোবর থাকছে 'মিডনাইট রাশ আওয়ার', যেখানে রাত ৯টা থেকে ১০টা এবং রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ৮% হাই-ভ্যালু ভাউচার দেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিদিন 'ফ্ল্যাশ ভাউচার' পাওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।
গ্রাহকদের নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি ও ব্র্যান্ডের সেরা ডিল পেতে বিশেষ দিনগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে- ১০ অক্টোবর থাকছে লাইফস্টাইল ডে, ১১ অক্টোবর আইসিই ব্র্যান্ড ডে, ১২ অক্টোবর ফ্যাশন ডে এবং রিয়েলমি ব্র্যান্ড ডে, ১৪ অক্টোবর ইলেকট্রনিক্স ডে এবং বাটা ব্র্যান্ড ডে এবং ১৫ থেকে ১৬ অক্টোবর এফএমসিজি ডে। এর মধ্যে ১৫ অক্টোবর ইউনিলিভার পার্সোনাল কেয়ারের ব্র্যান্ড ডে-ও অন্তর্ভুক্ত। গ্রাহকরা যাতে সর্বোচ্চ সঞ্চয় করতে পারেন, সেজন্য দারাজ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একত্রিত হয়েছে। এর ফলে ক্রেতারা প্রিপেমেন্টের ওপর ১২% পর্যন্ত ছাড়, বিকাশ ব্যবহারকারীদের জন্য এক্সক্লুসিভ ভাউচার এবং ইবিএল ও প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে ইএমআই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। দারাজ চয়েস-এ থাকছে '৪টি কিনলে ফ্রি ডেলিভারি' এবং '৫টি কিনলে ১টি ফ্রি সহ ফ্রি ডেলিভারি'-এর মতো বিশেষ অফার।
এই ‘ব্র্যান্ড রাশ ১০.১০ ক্যাম্পেইন’ শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষকদের সমর্থনে আয়োজিত হচ্ছে। রেকিট এবং ম্যারিকো থাকছে এক্সক্লুসিভ প্ল্যাটিনাম পার্টনার হিসেবে, গোদরেজ এবং ইউনিলিভার গোল্ড স্পন্সর হিসেবে এবং রিয়েলমি ও হিমালয়া সিলভার স্পন্সর হিসেবে। ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশন, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস এবং লাইফস্টাইলসহ সকল প্রধান ক্যাটাগরিতে থাকছে বিশেষ অফার।
দারাজ বাংলাদেশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার কামরুল হাসান বলেন, "'ব্র্যান্ড রাশ' ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা আবারও প্রমাণ করছি যে দারাজ হচ্ছে বাংলাদেশে মানসম্মত ব্র্যান্ডেড পণ্যের কেনাকাটার চূড়ান্ত গন্তব্য। দেশের লক্ষ লক্ষ ক্রেতা এবং স্থানীয়-আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সাথে আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদারিত্ব ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই সেরা সুবিধা দিচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনটি শুধুমাত্র ছাড়ের সুযোগ নয়—এটি গ্রাহকদের সেরা মূল্য ও চমৎকার অভিজ্ঞতার সাথে আসল ব্র্যান্ডের পণ্য কেনার নিশ্চয়তা দেয়।"
রিয়েল-টাইম আপডেট, ফ্ল্যাশ ড্রপ ও ভাউচার পেতে গ্রাহকদের দারাজ অ্যাপ এবং দারাজ বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে যুক্ত থাকতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে নিজেদের একাধিক কারখানায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘#শিক্যান’ নামের নতুন উদ্যোগ চালু করেছে বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় অ্যাপারেল প্রতিষ্ঠান হপ লুন। নতুন এ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও পারিবারিক সহায়তা কার্যক্রমগুলোকে একটি সুস্পষ্ট ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের প্রায় ৩০ হাজার হপ লুন কর্মীকে সুবিধা প্রদান করা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে হপ লুনের কর্মীদের প্রায় ৮০ শতাংশ নারী। তবে, ‘#শিক্যান’ শুধুমাত্র নারী কর্মীদের নয়, বরং পুরুষ কর্মীদেরও কল্যাণেও ভূমিকা রাখবে, যার মূল লক্ষ্য কর্মীদের সার্বজনীন স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
উদ্যোগটির মূল অংশে রয়েছে নানাবিধ সেবা, যেমন: বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প, ফ্যাক্টরি ট্রেনিং। এ উদ্যোগের আওতায়, ইতোমধ্যেই শিশুদের জন্য উন্নত লার্নিং কর্নার ও কেয়ারগিভার সুবিধাসহ ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, কারখানার ক্লিনিক ও চিকিৎসা সুবিধার উন্নয়ন, নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য উপকরণ ও সরবরাহ এবং সবার জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগসহ নানাবিধ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
‘#শিক্যান’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, হপ লুন ‘ওয়ার্কার স্কলারশিপ পাথওয়ে’ নামে আরেকটি কার্যক্রম শুরু করেছে, যার মাধ্যমে এর কর্মীরা উচ্চশিক্ষা ও নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি, হপ লুন তাদের অন্যান্য অংশীদারদের সহযোগিতায় সকল কর্মীর জন্য লাইফ স্কিল ট্রেনিং কর্মসূচিও চালু করতে যাচ্ছে।
উদ্যোগটি সম্পর্কে হপ লুন বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড, নিশান্তা মোহত্তিজ বলেন, “এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এমন এক কাজের পরিবেশ তৈরী করতে চাই, যেখানে আমাদের কর্মীরা নিজেদের নিরাপদ মনে করবেন এবং সম্মানের সাথে কাজ করতে পারবেন । আমরা এমন একটি কর্মক্ষেত্র গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ, যেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই নিজেদের স্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি বজায় রেখে আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারবেন ।”
মন্তব্য