এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পরিচালনা পর্ষদ সর্বসম্মতিক্রমে মাসাতো কান্ডাকে এডিবির ১১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে।
ম্যানিলাভিক্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।
মাসাতসুগু আসাকাওয়ার স্থলাভিষিক্ত হওয়া ৫৯ বছর বয়সী কান্ডা বর্তমানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এডিবির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কান্ডা ২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং ২০২৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদ শেষ হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রেসিডেন্ট আসাকাওয়ার ২০২৬ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত অসমাপ্ত মেয়াদেও দায়িত্ব পালন করবেন কান্ডা।
এডিবির বোর্ড অফ গভর্নরসের চেয়ারম্যান ও ব্যাংক অফ ইতালির গভর্নর ফ্যাবিও প্যানেট্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে কান্ডার ব্যাপক অভিজ্ঞতা এবং বহুপাক্ষিক পরিবেশে দক্ষ নেতৃত্ব এডিবিকে জটিল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারে সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, ‘এডিবির বোর্ড অফ গভর্নরস কান্ডার সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছে।’
প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কান্ডা জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আর্থিক খাতের নীতি এবং ম্যাক্রো-রাজস্ব নীতিতে তার ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি আর্থিক পরিষেবা সংস্থার ডেপুটি কমিশনার, বাজেট ব্যুরোর উপমহাপরিচালক এবং নীতি পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের উপসহকারী মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি শিক্ষা ও বিজ্ঞান নীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের ক্ষেত্রেও শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ।
বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকের (এমডিবি) বিবর্তন, মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া এবং ঋণের স্থায়িত্ব এবং স্বচ্ছতার মতো মূল নীতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কান্ডা জি-৭, জি-২০ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপমন্ত্রী থাকাকালীন জাপান এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের ১৩তম পুনঃপূরণে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি রেকর্ড অবদান রেখেছিল।
কান্ডা ২০১৬ সাল থেকে ওইসিডি করপোরেট গভর্ন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩ সালে করপোরেট গভর্ন্যান্সের জি২০/ওইসিডি নীতিমালা পর্যালোচনার তত্ত্বাবধান করেন তিনি।
এমডিবিতে কৌশলগত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বিশ্বব্যাংকে জাপানের অল্টারনেট এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কান্ডা ১৯৮৭ সালে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক এবং ১৯৯১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলেছেন, সামরিক আইন জারি ও সেনাবাহিনী দিয়ে পার্লামেন্ট ভবন অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত।
এ কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
জাতির উদ্দেশে শনিবার দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউন আরও বলেন, দ্বিতীয়বার তিনি আর কখনও সামরিক আইন জারি করবেন না।
তিনি বলেন, ‘চারদিকে গুজব চলছে, সামরিক আইন আবার জারি করা হবে। আমি অপনাদের পরিষ্কার ভাষায় বলছি, সামরিক শাসন জারির মতো আর কখনও কিছু ঘটবে না।’
স্কাই নিউজ ও এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আকস্মিক এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সামরিক আইন জারি করেন।
সামরিক শাসন জারির পর ইউন প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েন। তার বিরুদ্ধে দলগুলো অভিশংসনের দাবি তোলে।
পরে প্রধান বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরাসহ সাধারণ মানুষ পার্লামেন্ট ভবনের মূল প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে স্পিকারের নেতৃত্বে দ্রুত পার্লামেন্টে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করে সামরিক আইন রহিত করা হয়। এরপর মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে তা অনুমোদন দিলে সামরিক আইন বাতিল হয়ে যায়।
পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন সংসদ সদস্য সামরিক আইনের বিরুদ্ধে ভোট দেন।
ইউন তার সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত এবং সামরিক আইন জারির ঘটনায় আন্তরিকভাবে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের কিছু অংশে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর ফলে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস)।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার হামবোল্ট কাউন্টির ফার্নডেল শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
প্রাথমিকভাবে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে জানালেও পরে এটিকে ৭.০ মাত্রায় উন্নীত করে ইউএসজিএস। সমূদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ মিটার গভীরে কম্পনের উৎসস্থল চিহ্নিত করা হয়।
ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক মিনিট পর এনডব্লিউএসের সুনামি সতর্কতার আওতায় পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ। এরপর ওই এলাকা ও সানফ্রান্সিসকো উপকূল থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেল নর্টে, হামবোল্ট ও মেন্ডোসিনো কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্বল্প মাত্রার আফটারশক হয়েছে।
হামবোল্ট কাউন্টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:রাশিয়া যে কোনো উপায়ে নিজ দেশকে রক্ষা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সের্গেই ল্যাভরভ। একইসঙ্গে তিনি ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদেরকে ‘ওরেসনিক’ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভাবতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের উদ্ধৃতি দিয়ে ল্যাভরভ বলেন, সম্প্রতি ইউক্রেনে আঘাত হানা হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে দশগুণ বেশি গতিতে ধাবিত হয়।
ফক্স নিউজের সাবেক সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বুঝতে হবে যে ইউক্রেন যুদ্ধে তাদেরকে জিততে না দিতে রাশিয়া সব উপায় অবলম্বন করবে।
তিন বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া দু’সপ্তাহ আগে দিনিপ্রতে ওরেসনিক হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে। ইউক্রেনের জন্য আমেরিকার এটিএসিএমএস অস্ত্র পদ্ধতি কার্যকর হওয়ার পর মস্কো এমন পদক্ষেপ নেয়।
সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে রাশিয়া ও তার মিত্রদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে আমেরিকা।
ইউক্রেনে সংঘাত বৃদ্ধিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে দায়ী করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ল্যাভরভ বলেন, ‘ট্রাম্প দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে বদ্ধপরিকর। যদিও কোন প্রক্রিয়ায় তা শেষ হবে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প হচ্ছেন এমন মানুষ যিনি ফলাফল দেখতে চান।’
আরও পড়ুন:আলেপ্পোর পর এবার সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামা দখল করে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানী দামাস্কাস যাওয়ার পথে এই শহর কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০১১ সালে আরব বসন্তের মধ্যদিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম হামা দখল করলো প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধীরা।
এদিকে সরকারি সেনাদের পিছু হটাকে রণকৌশল হিসেবে উল্লেখ করেছে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় সেনারা আপাতত শহরের বাইরে অবস্থান নিয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমান ঘাঁটিতে যুদ্ধবিমান ও সাজোয়া যান ফেলে সেনা সরিয়ে নেয়ায় প্রমাণ হয় যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে সুবিধা করতে পারছে না বাশারপন্থীরা।
রোববার সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখলের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রাসাদ দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এর ভিডিও প্রচার করা হয়। এরপর পাল্টা আঘাত হানে সরকারি সেনারা। শুরু হয় উভয় পক্ষে তুমুল লড়াই।
রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের সহায়তায় আসাদপন্থী সেনারা আগ্রাসী হয়ে ওঠার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে যে খুব একটা সফলতা পাওয়া যায়নি তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিদ্রোহীদের হামা শহর দখলের মধ্যদিয়ে।
হামা সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর এবং কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে বিমান ও সেনা ঘাঁটি রয়েছে। ইতোমধ্যে সারি সারি যুদ্ধবিমান এবং সাঁজোয়া যান বিদ্রোহীদের দখলে এসে গেছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম হামা দখল করলো বিদ্রোহীরা। ১৩ বছর ধরে রাখা একটি শহরের পতনে বড় ধরনের ধাক্কা খেল সরকারি বাহিনী। তাছাড়া আসাদের মূল ঘাঁটি রাজধানী দামাস্কাস যেতে হলে এই পথ দিয়েই অগ্রসর হতে হবে।
ইসলামী সংগঠন হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এই অর্জনকে বেশ বড় করেই দেখছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা-বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, একদিকে রাজধানীর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বিরোধীরা। আর এমন এক সংযোগস্থলে তারা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, এতে বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি সেনাদের রসদ সরবরাহ কঠিন হয়ে যাবে।
ওদিকে বেসামরিক লোকজন দামাস্কাসের পরিবর্তে ভূমধ্যসাগর উপকূলের দিকে ছুটছে। সেখানে গেলে লেবাননে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। রাজধানী এড়িয়ে যাওয়ার অর্থ, সেখানে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আগামীতে তীব্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। আর তাতে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়-ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নার্গিস মোহাম্মদীকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছে ইরান।
ক্যানসারের উদ্বেগের মধ্যে একটি জটিল অস্ত্রোপচারের পর তাকে তিন সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছে।
ইরানের একটি কারাগার থেকে বুধবার নোবেলজয়ী নার্গিসকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার সমর্থকরা।
তেহরানের ফুটেজে দেখা যায়, উন্মুক্ত কালো চুল এবং কাপড় দিয়ে ডান পা ঢাকা অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স থেকে বের হচ্ছেন মোহাম্মদী। রাস্তায় নেমে চিৎকার করে বলেন, ‘হ্যালো স্বাধীনতা! নারী, জীবন, স্বাধীনতা! স্বাধীনতা আমাদের অধিকার! স্বাধীনতা দীর্ঘজীবী হোক!’
মোহাম্মদীর সমর্থকদের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ২১ দিনের জন্য মুক্তি পেয়েছেন। পরে আবারও তাকে সাজা ভোগ করতে কারাগারে যেতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নার্গিসের সমর্থকরা তার স্থায়ী মুক্তির আহ্বান জানালেও ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তার চিকিৎসা ছুটির কথা স্বীকার করেনি।
সমর্থকরা যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, ৫২ বছর বয়সী মোহাম্মদীর সঠিকভাবে নিরাময়ের জন্য নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে কমপক্ষে তিন মাস থাকা প্রয়োজন।
একই সঙ্গে তারা বলেছে, শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তাকে সাজা দেয়া অন্যায় ছিল।
মোহাম্মদী বর্তমানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যা প্রচারণা ছড়ানোর অভিযোগে ১৩ বছর ৯ মাসের সম্মিলিত কারাদণ্ড ভোগ করছেন। বারবার গ্রেপ্তার ও দীর্ঘায়িত কারাবাস সত্ত্বেও তিনি মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ২০২২ সালের নারী নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকে সমর্থন করেন। মানব ও নারী অধিকারের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন তিনি। তার সময় অনেক নারী ইরানে হিজাবের বাধ্যবাধকতা অমান্য করেছিলেন।
কারাবাসের সময় নার্গিস মোহাম্মদীর স্বাস্থ্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে একাধিক হার্ট অ্যাটাক ও জরুরি অস্ত্রোপচারের বিষয়টি জানিয়েছেন তার সমর্থকরা।
চলতি মাসের শুরুতে তার আইনজীবী জানান, ক্যানসার সন্দেহে একটি হাড়ের ক্ষতের কারণে তার সাম্প্রতিক অস্ত্রোপচার করা হয়।
আরও পড়ুন:আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। পশ্চিমাবিরোধী এই জোট বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য ডলারের বিকল্প হিসেবে নতুন মুদ্রা চালু করলে সদস্য দেশগুলোর ওপর শতভাগ কর আরোপের কথা জানিয়েছেন তিনি।
এক্সে এক পোস্টে এসব কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, ‘ব্রিকস দেশগুলো ডলার থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা ব্রিকসের সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি চাই যে, তারা শক্তিশালী ইউএস ডলারের বিপরীতে নতুন মুদ্রা চালু করবে না। অন্যথায় তারা শতভাগ শুল্কের মুখোমুখি হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার হারাবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ইউএস ডলারের বিপরীতে নতুন মুদ্রা নীতি নিলে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোকে আমেরিকা থেকে বিদায় জানানো হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত হয় ব্রিকস জোট। চলতি বছর ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া ও মিসর নতুন সদস্য হিসেবে এই জোটে যুক্ত হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর জানিয়েছিলেন, ৩৪টি দেশ এই জোটে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগ্রহীদের তালিকায় বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বে প্রথমবারের মতো ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে আইন পাস করেছে অস্ট্রেলিয়া। সেনেটে পাস হওয়া এই আইন কার্যকর হলে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুরা টিকটক, ফেসবুকের মতো প্লাটফর্মগুলো ব্যাবহার করতে পারবে না।
অস্ট্রেলিয়ার হাউজে বুধবার ১০২-১৩ ভোটে পাস হওয়ার পর সেনেটে বিলটি ৩৪-১৯ ভোটে পাস হয়।
দেশটির হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভোটে পাস হওয়া এই বিলে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মানতে ব্যর্থ হলে টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট এবং এক্স-এর মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোকে ৩৩ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
বিলটি সমর্থনকারী দলের মধ্যে আছেন দেশটির লিবারেল পার্টির নেতারাও। দলটির সেনেটর মারিয়া কোভাচিচ বলেছেন, ‘বিলটি সরল ও স্পষ্ট। এটি বাস্তবায়নের জন্য সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের শনাক্ত ও তাদের অ্যাকাউন্টগুলো নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলোর আরও অনেক আগেই এমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল।’
তবে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হলে তা ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার ওপর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন আইনটির সমালোচকরা। কারণ এই আইন কার্যকর করতে ব্যবহারকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তাদের বয়স ১৬ বছরের উপরে।
বিলটির বিরোধিতা করা কয়েকজন সেনেটর বলেন, এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে বোকা বানাচ্ছে সরকার। নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই সরকারের এমন পদক্ষেপ।
শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আইনটি পাস করা হলেও অনেক শিশু কল্যাণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শক এর পরিণতি নিয়ে চিন্তিত। কারণ এই নিষেধাজ্ঞা অনেক শিশুকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
তবে প্ল্যাটফর্মগুলো কীভাবে নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর করবে তার নীতিমালা নিয়ে কাজ করার জন্য এক বছর সময় পাবে। এরপরই কার্যকর করা হবে জরিমানা।
তবে ভিপিএন বা অন্য কোনো মাধ্যমে শিশুরা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করা শিশুদের জন্য কোনো শাস্তির বিধানও রাখা হয়নি আইনে।
মন্তব্য