কর্মীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে বলে এক অফিস আদেশে নিশ্চিত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তাতে উল্লেখ রয়েছে, ১৯ আগস্ট জিয়াউল হাসান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউল হাসানের সঙ্গে পদত্যাগী আওয়ামী লীগ সরকারের অতি-ঘনিষ্ঠতা থাকায় সাধারণ কর্মীদের মধ্যে তাকে নিয়ে অসন্তোষ ছিলো। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। একটি বিশেষ শিল্প গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতেই তাকে ডেপুটি গভর্নর বানানো হয়েছিল বলে অভিযোগ সাধারণ কর্মীদের।
এর আগে জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীসহ সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা বৈষম্যের অভিযোগে আন্দোলন হয় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে।
জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে জানা গেছে। সেদিন দিনভর তাকে তার রুমে আটকে রাখেন আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলনকারীদের কাছে তিনি মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় চান। বলেন, মঙ্গলবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা আছে। সেখানে তার পদত্যাগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার মৌখিক আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারেননি। তাকে তাৎক্ষণিক পদত্যাগ করতে বলেন তারা। পরে সন্ধ্যা নাগাদ পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য হন তিনি।
এরপর সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে জিয়াউল হাসানকে তার রুম থেকে বের করে আনেন। এ সময় অনেক কর্মী তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন বলেও জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন তারা।
এ সময় আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, তাদের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের বৈষম্য হয়েছে। যোগ্যতার বিচার না করে দলীয় পরিচয় দেখে অযোগ্যদের বড় বড় পদে বসানো হয়েছে। এ ধরনের যাবতীয় বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, তার ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সূত্র: ইউএনবি
এর আগে আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিএফআইইউ এক চিঠিতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিধান অনুযায়ী আজিজ খান, তার ভাই ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যাংক হিসাবে ৩০ দিনের জন্য লেনদেন বন্ধ রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর একজন।
মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে তাদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তলব করার এই নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে কারসাজির দায়ে গত ২৪ সেপ্টেস্বর তারকা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আরও পড়ুন:সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে গত চার বছরের মধ্যে একক মাসে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তার আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এটা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগের মাস আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। আগস্টে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে আট কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অংকটা ছেল চার কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮০.২ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স আসেনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন, এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেন, নতুন সরকারের শুরু থেকে প্রবাসীরা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে হলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে সুবাদে দেশের প্রবাসী আয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন:চলতি সেপ্টেম্বরের চার সপ্তাহেই রেমিট্যান্স প্রবাহ দুই বিলিয়ন ডলার (২১১ কোটি ডলার) ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ ২৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকার বেশি।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি মাস সেপ্টেম্বরের প্রথম ২৮ দিনে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর প্রতিদিন আসছে গড়ে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বা ৯০৬ কোটি টাকা। যদিও আলোচিত সময়ে সাতটি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
আলোচিত সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ডলারের বেশি রেমিট্যান্স।
আলোচিত সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা সাতটি। এর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল ও বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব এবং বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২২ কোটি (২ দশমিক ২২ বিলিয়ন) ডলার। এটা তার আগের বছরের (আগস্ট-২০২৩) একই সময়ের চেয়ে ৬২ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে এসেছিল প্রায় ১৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩৫০ কোটি ডলার সহজ শর্তে ঋণ দেবে।
নিউ ইয়র্ক সময় বুধবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশেনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু অজয় বাঙ্গা বলেন, ‘কমপক্ষে ২ বিলিয়ন ডলার হবে নতুন ঋণ এবং আরও ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে পুনঃব্যবহার করা হবে।’
তিনি জানান, বিশ্বব্যাংক ডিজিটালাইজেশন, তারল্য সংকট থেকে উত্তরণ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং পরিবহন খাতের সংস্কারে সহায়তা দিতে এ ঋণ দেবে।
সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বিশ্বব্যাংকের ঋণ কর্মসূচিতে উদ্ভাবন আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতের সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত ও বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগ করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎকালে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মূল নীতি হার (রেপো রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক একই সময়ে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) যথাক্রমে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ ও ৮ শতাংশ করেছে।
পলিসি রেট বাড়লে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া ব্যয়বহুল হবে। আর তা জনগণকে ব্যয় সংকোচন ও চাহিদা কমাতে বাধ্য করবে। এর ফলে পরবর্তীতে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে।
গত ২৫ আগস্ট পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিগত সরকার সবশেষ ৮ মে পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ করেছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় সুদের হার বাড়ানো হয়, যা গত বছরের মার্চ থেকে ৯ শতাংশের বেশি ছিল।
১২ মাস পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে। গত জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ। ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও খারাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ২০২৫ সালের মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
আরও পড়ুন:ব্যাংকিং খাত সংস্কার, অর্থ পাচার রোধ ও ট্যাক্স রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের বিষয়ে আইএমএফের কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে-সহ নয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা সংস্কারের জন্য অর্থ প্রয়োজন। বৈঠকে এ বিষয়ে আইএমএফ মিশনকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কী কী সংস্কার করেছে, তা-ও তাদের জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে আইএমএফের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দরকার।’
সরকার নিজস্ব রিসোর্স ব্যবহার করেই অর্থনৈতিক খাতে এগিয়ে যেতে চায় বলেন উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তবে আইএমএফ বড় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশের। তাই তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায় সরকার।
ড. সালেহউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে শুধু আইএমএফ নয়; বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার বিষয়ে কাজ করছে দাতা সংস্থাগুলো। আগামী অক্টোবরে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
মন্তব্য