সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ওরফে বাবুল চিশতীর ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে নতুন প্রজন্মের ব্যাংকটি ধ্বংস হয়েছে যায়। সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের সেই প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখতে তৎপর হতে দেখা যায়, তবে ম খা আলমগীরের ক্ষেত্রে ছিল ব্যতিক্রম। তিনি ও তার ঘনিষ্ঠ মাহবুবুল হক ওরফে বাবুল চিশতী মিলে উদীয়মান ব্যাংকটিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। নামে-বেনামে ঋণ, ব্যবস্থাপনা কমিটিকে তোয়াক্কা না করে ঋণ অনুমোদন, নামমাত্র প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সেসব হিসাবে কোটি কোটি টাকা হস্তান্তর, ঋণ অনুমোদন হওয়ার আগেই টাকা সরবরাহ, ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের কমিশন, শেয়ার বাণিজ্য- এমন শত শত অভিযোগ উঠে এসেছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে।
যদিও ব্যাংকটির শুরুর গল্পটা ছিল আশায় ভরা। ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার চতুর্থ প্রজন্মের কয়েকটি ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান করে। যাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন ধারায় আধুনিক ব্যাংকিং করে উদাহরণ তৈরি করা। ফারমার্স ব্যাংকের মূলত উদ্দেশ্য ছিল দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণ প্রধান ও কৃষিকে আধুনিকায়ন করতে ভূমিকা রাখা। ক্ষমতাসীন সরকারের অল্প সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে দেওয়া হয় ব্যাংকটির লাইসেন্স। কার্যক্রম শুরু হলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। পাশাপাশি ইসি কমিটির চেয়ারম্যান বানানো হয় তার ঘনিষ্ঠ মাহবুবুল হক ওরফে বাবুল চিশতীকে। যারা দুজন মূলত অনিয়মের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত তৈরি করে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসেন। নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্য পরিচালকরা থাকলেও তাদের তেমন কোনো ভূমিকা ছিল না ব্যাংক কার্যক্রমে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অনিয়মে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
শুধু তা-ই নয়, ব্যাংকটিতে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সালে ৮৫ জন কর্মকর্তা নিয়োগে প্রায় প্রতিটির ক্ষেত্রে তখনকার চেয়ারম্যানের সুপারিশ ছিল। অনেক প্রার্থীর বায়োডাটায় ‘চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর চিশতী’ বড় করে লেখা ছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষকদের নজরে আসে। এইচ আর কর্তৃক লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তবে তা শুধুই নামমাত্র। কয়েকটি পরীক্ষায় কোনো নম্বর দেয়নি এইচ আর। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক দল বলছে, এইচ আর পলিসি ছিল শুধু খাতা-কলমে, যার কোনো প্রয়োগ ছিল না।
প্রধান অফিসের পাশাপাশি শাখা অফিসগুলোতেও নিজেদের লোক বসিয়ে সুপারিশের ঋণ অনুমোদন করাতেন এই চক্র। গুলশান শাখায় কয়েকটি ঋণের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো ‘সেংশন লেটার’ ছাড়াই শুধু চেয়ারম্যানের সুপারিশে বড় বড় ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ২০১৭ সালে গুলশান শাখা-সহ বেশ কয়েকটি শাখা থেকে আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্টে ৪০ কোটি, ১২ কোটি ৪৫ লাখ, ৯ কোটি ১৫ লাখ, ১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা প্রদান করা হলেও কোনোটির ক্ষেত্রেই ব্যবস্থাপনা কমিটি ‘লোন সেংশন’ করেনি। একই বছরের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে ৪০ কোটি টাকার ঋণ বর্ধিতকরণের জন্য চেয়ারম্যান ও এমডি ফরমাল সুপারিশ করলেও তার আগেই ঋণটি প্রদান করা হয়। যেখানে কোনো প্রকার ব্যাংকিং নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি।
যেসব কোম্পানিকে ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হতো, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, বেশির ভাগের ব্যাংক হিসাব তার কিছুদিন আগে করা। অর্থাৎ ঋণ নেওয়ার জন্যই হিসাব খোলা হয়েছে। কাগজে-কলমে নানা রকমের ব্যবসার কথা বলা হলেও ঋণ নেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে সিংহভাগ টাকা তোলা হতো নগদে। অর্থাৎ সেই টাকা কার অ্যাকাউন্টে বা কোথায় যাচ্ছে তা কেউ বলতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা মনে করেন এভাবে করে প্রচুর টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর দুটি অ্যাকাউন্টে ফারমার্স ব্যাংক থেকে ট্রান্সফার করা হয়েছিল মোটা অঙ্কের অর্থ। প্রথমটির নামে দেখা যায়, ফারিব অটো রাইস মিলস্, দ্বিতীয়টির নাম এসএনডি। তাদের দুটি হিসাবে স্থানান্তর করা হয় যথাক্রমে ৬ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার ও ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। অবাক করা বিষয় হলো এই দুটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় ২৭ নভেম্বর। অর্থাৎ যেদিন অ্যাকাউন্ট খোলা হয় সেদিনই ঋণের টাকা স্থানান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টে আরও উঠে এসেছে বড় ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে বাবুল চিশতীর ভাই ও তার ছেলের কয়েকটি কোম্পানি ছিল- যেসব কোম্পানির নামে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়া হয় ফারমার্স ব্যাংক থেকে। শুধু তা-ই নয় ভুয়া ও সাইনবোর্ড সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে মোটা কমিশনের বিনিময়ে বড় অঙ্কের লোন দিতেও কার্পণ্য করত না এই চক্র। ব্যাংকের শেয়ার দেওয়ার কথা বলেও কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই দুজনের বিরুদ্ধে। আমানতকারীদের অর্থ লুট করার উদাহরণও তৈরি করেছিলেন তারা।
ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে বাবুল চিশতী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে ম খা আলমগীর তখন প্রভাবশালী থাকায় শুধু চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দিয়েই চুপ হয়ে যান নিয়ন্ত্রকরা। জানা গেছে, ম খা আলমগীর বর্তমানে সপরিবারে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করার দাবি করছেন ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা। ব্যাংক খাতে যেন আর কখনোই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিও তুলছেন ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা।
প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার বাজার থেকে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
আক্তার হোসেন বলেন, তিনটি কোম্পানির শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেছেন। বিনিয়োগ কার্যক্রমে মার্কেট ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। মার্কেট ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে তিনি (সাকিব) জড়িত।
এর আগে গত সোমবার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সাকিব ছাড়া ১৪ আসামি হলেন— সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) ও তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ১৭ ধারা) পরিকল্পিতভাবে লঙ্ঘনপূর্বক নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো একাধিক লেনদেন, জুয়া ও গুজবের মাধ্যমে বাজারের কারচুপি করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার সংঘবদ্ধভাবে ক্রমাগত ক্রয়-বিক্রয়পূর্বক কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই শেয়ারসমূহে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তাদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অস্বাভাবিক রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ বা প্রসিড অব ক্রাইম শেয়ার বাজার থেকে সংঘবদ্ধভাবে উত্তোলন করেছেন। আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থের ২১ কোটি ১৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপনের অভিপ্রায়ে লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন। তিনি ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সর্বমোট ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক এবং সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
ওই মামলায় সাকিব আল হাসানের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বলা হয়, আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক শেয়ার বাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইস্যুরেন্স লি., ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লি. এবং সোনালী পেপারস লি.-এর শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে বাজার কারসাজিতে যোগসাজশ করেন। সরাসরি সহায়তাপূর্বক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার হতে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০বি/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, কেউ বোমা মারলেও তিনি ভয় পাবেন না।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে গত ৮ মে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-২ এর কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে পথ চলি। তার ওপর নির্ভর করে কাজ করি। কেউ বোমা মারলেও ভয় পাব না। কেউ গুলি করে মেরে ফেললে আমার সব গুনাহ নিয়ে যাবে। ফলে আমার ভয়ের কারণ নেই। আমি কবরের পাশে দাঁড়ানো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ভয়ের কিছু নেই। বিচারের এই তরি বয়ে নিয়ে যাব।’ বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, কিছু লোক গত ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। তারা নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। মানুষ নিজেদের কথা বলতে পারেনি। সেই ফ্যাসিস্টরা এখনো ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো যথাযথ চিকিৎসা পাননি। বিচারকেরা চেষ্টা করছেন ছাত্র-জনতার দুর্ভোগ কমাতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের নাম উল্লেখ করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে তারা কাজ করবেন। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোও মেনে চলবেন বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিক মানের।’
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকের সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করব। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবে। গত ৮ মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে সরকার। এই ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে শত শত অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
রাজধানীর কুখ্যাত চাঁদাবাজ লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় ছিনতাই ও অপহরণের মামলা ছিল।
বুধবার (২৮ মে) রাত ১০টার দিকে পুরানো পল্টনের নিউ বন্ধু হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মতিঝিল এলাকায় ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়, অপহরণ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল লিটন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এসব কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়।
পুরানা পল্টন এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগে ভুক্তভোগীরা একাধিকবার সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। এরপর সেনাবাহিনী ও সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো লিটনের গতিবিধি নজরদারিতে রাখে।
বুধবার রাতে নিউ বন্ধু হোটেলের পাশের একটি ভবনে থাকা লিটনের ব্যক্তিগত অফিসে অভিযান চালানো হয়। হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হোটেল কক্ষ, অফিস ও তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচটি মোবাইল ফোন, নগদ ২ লাখ টাকা ও ১ হাজার ১০০ ডলার উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।
সেনাবাহিনীর মেজর শাকিব সাংবাদিকদের জানান, লিটনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গণহত্যার বিচার আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
উপদেষ্টা আজ তার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, ‘বিচার শুরু হচ্ছে শিগগির। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করার দাবি আছে সমাজে। এটি দৃশ্যমান করা হয়েছিল আট মাস আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়েই।
এরপর তদন্তকারী অফিস ও প্রসিকিউশন অফিস পুনর্গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী দল কয়েকটি মামলার তদন্ত শেষ করেছে। প্রসিকিউশন টিম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি মামলার ফরমাল চার্জ গঠন করেছে। গতকাল রোববার এটি ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার পর তা আমলে নেয়া হয়েছে।’
উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জ আমলে নেওয়ার মাধ্যমে একটি বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। সেটি গতকাল থেকে শুরু হয়ে গেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান আসামি হিসেবে শেখ হাসিনার মামলার বিচারের শুনানি পর্ব শুরু হচ্ছে অচিরেই। ইনশাল্লাহ্, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলেই এই বিচারের রায় পেয়ে যাবো আমরা। গণহত্যার বিচার, আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার।’
স্ত্রী-কন্যাসহ আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নামে থাকা মোট নয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। এসব হিসাবে মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৯৬ টাকা রয়েছে।
বুধবার (২১ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এদিন দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক আদালতে হিসাব অবরোধের আবেদন করেন।
অবরুদ্ধ হওয়া হিসাবে মো. আব্দুর রাজ্জাকের নিজ নামে থাকা চারটি ব্যাংকে হিসাবে, ৪২ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা, তার স্ত্রী শিরিন আকতার বানুর চারটি ব্যাংক হিসাবে ৬৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯৫ টাকা ও তার মেয়ে ফারজানা আক্তার তন্দ্রার হিসাবে ২৮ লাখ টাকা রয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডার ও মনোনয়ন বাণিজ্য, নিয়োগে দুর্নীতি, সরকারি জমি দখল, এসিআই ও আদম ব্যবসায়ী নূর আলীর মাধ্যমে শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
এতে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানকালে রাজ্জাক ও তার স্ত্রী-মেয়ের নামে অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এই সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে তা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তদন্তের স্বার্থে এসব হিসাব অবরুদ্ধ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।
নারী নির্যাতনের একটি মামলায় সঙ্গীতশিল্পী মামলায় মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি কমিশনার তালিবুর রহমান এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ডেমরার স্টাফ রোড এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় নারী নির্যাতনে একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডেমরা পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুর রহমান ইউএনবিকে জানান, ‘ইসরাত জাহান প্রিয়া নামে ইডেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর সাথে রুবেলের টেলিফোনে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে প্রায় সাত মাস আগে রুবেল প্রিয়াকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে কীর্তন করে টেমরা থানার অধীন আমতলা নামক স্থানে একটি ফ্লাট বাসায় রাখে। বিগত সাত মাসে প্রিয়ার সাথে সম্পর্ক করে এবং পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি।’
সম্প্রতি প্রিয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেটা দেখে প্রিয়ার বাবা-মা ডেমরা থানা যোগাযোগ করেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার রাত দশটায় আমতলার বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রিয়াকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু রুবেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রিয়া ডেমরা থানা এসে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডেমরার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। রুবেল তখন একটি গাড়ি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
বাংলাদেশের গায়ক হলেও নোবেল খ্যাতি অর্জন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জি বাংলা চ্যানেলের গানবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ থেকে। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় জিততে না পারলেও তৃতীয় হন নোবেল, আর নিজের সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে খুব সহজেই দুই দেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
এরপর থেকে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলেও এই আলোচিত গায়কের সুখ্যাতি নিমেষেই নষ্ট হয়ে যায় তার ব্যক্তিগত জীবন সবার সামনে আসার পর। স্ত্রীকে মারধর, মাদক সেবন, মদের ঘোরে ভাঙচুর, টাকা নিয়ে শো করতে না যাওয়া—এমন নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ হন নোবেল।
২০১৯ সালে মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। পরবর্তীতে খ্যাতির মধ্যে থাকা অবস্থায় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তিক্ততা শুরু হয় স্ত্রীর সঙ্গে, যার শেষ পরিণতি হয় বিচ্ছেদ।
২০২৩ এর নভেম্বরে অন্যের স্ত্রী ফারজানা আরশির সাথে অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করে নোবেল সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। পরবর্তীতে ফারজানা আরশি পুলিশের কাছে গায়কের নামে অভিযোগ দায়ের করে জানান যে নোবেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়নি, জোর করে গোপালগঞ্জের বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এরপরে মাদক খাইয়ে ওই অন্তরঙ্গ ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো।
ব্যক্তিগত জীবনের বাইরেও একই বছর শরীয়তপুরের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে অর্থ নিয়েও না যাওয়ায় ঢাকার মতিঝিল থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালে বেশ কিছু মাস রিহ্যাবে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর নোবেল সম্প্রতি আবারও গানের জগতে ফিরে এসেছিলেন এবং বেশ কিছু নতুন গানের কাজ করছিলেন।
নাশকতার পরিকল্পনা ও সামাজিকমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক নাঈমুল ইসলাম ও তার দুই সহযোগীকে রাজধানীর খিলক্ষেতের বটতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং বিভিন্ন সামরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নাঈমুল ইসলামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনুষঙ্গিক আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কতিপয় বরখাস্ত বা অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সেনাসদস্যকে সঙ্গে নিয়ে নাঈমুল বিভিন্ন গণমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনা করে আসছিলেন।
এতে আরও বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আগামীকাল রোববার (১৮ মে) ঢাকা সেনানিবাসের প্রবেশপথে বিক্ষোভ সমাবেশের নামে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এ ধরনের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল আজ বেলা দুইটার দিকে খিলক্ষেতের বটতলা বাজার এলাকায় নাঈমুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এ সময় নাঈমুল তার কিছু সহযোগীকে নিয়ে উপস্থিত এক সেনাসদস্যের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্প থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাঈমুল ও তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করে।
মন্তব্য