অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিভিন্ন শেয়ারের দাম নিয়ে কারসাজি ও গুজব রটিয়ে মার্কেটকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
রাজধানীতে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) ও আবদুল কাইয়ুম (৩৯)।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা; দেশের অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছে। ‘সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে আসছে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় উক্ত মামলায় তদন্ত করে মামলা সংশ্লিষ্ট তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।’
হারুন বলেন, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রমনা মডেল থানায় মামলা করার পর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ এই চক্রটির সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করতে থাকে। গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রুপগুলোতে আসামিরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার নামে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য প্রদান করে বিভিন্ন প্রকার প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন (মূল্য সংবেদনশীল তথ্য) আগেভাগে প্রকাশ করে দেয়, যা বেশির ভাগ সময় বানোয়াট ও মিথ্যা, যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে।
‘তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওইসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করে।’
ডিবির আইসিটি বিভাগের উপকমিশনার শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ডিএমপি ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মনিটরিং এবং সাইবার পেট্রলিং পরিচালনা হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে স্বার্থ হাসিল করতে না পারে, সে বিষয়ে অভিযান চলছে।
ডিএমপি ডিবিপ্রধান বলেন, ‘পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের জন্য দেশের চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তি জড়িত, যারা এই চক্রের বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয়।
‘চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি করে আসছে। এদের সঙ্গে যুক্ত আট থেকে ১০টি গ্রুপ শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য