× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
Cucumbers started selling in dreams at lower prices than the open market
google_news print-icon

স্বপ্নতে ১২ টাকা কেজিতে শসা

স্বপ্নতে-১২-টাকা-কেজিতে-শসা
শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শসা কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। কোলাজ: স্বপ্ন
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।’

রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।

এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।

সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।

এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।

খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।

বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।

স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।

‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’

এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।

“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”

দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’

তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”

আরও পড়ুন:
লাউয়াছড়ায় গাড়িচাপায় প্রাণ গেল ১২ ফুট অজগরের
এক ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে ফিরিঙ্গি বাজার বস্তির আগুন
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কমলগঞ্জে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা
দুর্বৃত্তের হামলায় পা বিচ্ছিন্ন হওয়া যুবকের মৃত্যু
মাছ-মাংসের দাম বেড়েছে, সামান্য স্বস্তি সবজিতে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
More than two hundred farmers of Comilla are worried about the increase in the price of beef

গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দুঃচিন্তায় কুমিল্লার দুই শতাধিক খামারি

দুধের চাহিদা ৫.৩৪ লাখ টন আর উৎপাদন ৫.০৩ লাখ টন
গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দুঃচিন্তায় কুমিল্লার দুই শতাধিক খামারি

গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় কুমিল্লায় লোকসানে খামারিরা। গেল ৬ বছরে বন্ধ হয়ে গেয়ে আড়াইশ খামার। যেসব বাড়িতে সকালের ব্যস্ত শুরু হতো গরুর জন্য ঘাস কাটা, গরুর গোছল করানো ও দুধ দোহন। সেসব বাড়ি ও খামারে এখন সুনশান নীরবতা। দুধ উৎপাদনে লোকসান গুণতে হয় বলে গৃহস্থ ও খামারিরা এখন অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।

সরেজমিনে কুমিল্লা লালমাই উপজেলার দুধের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিলোনিয়া গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, অল্প কিছু বাড়িতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও গৃহস্থরা। অথচ বছর দশেক আগেও এটিসহ আশপাশের ১২টি গ্রামে ঘরে ঘরে এক সময় দুধ উৎপাদন হতো। গরু পালন, দুধ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। ছিলোনিয়া গ্রামে আড়াই শতাধিক পরিবার দুধ উৎপাদন করতেন। তবে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে লোকসানে পড়েন খামারিরা। এরপর অনেকে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু এ গ্রামেই ৬ বছরে আড়াইশ খামারের মধ্যে ২০০টি বন্ধ হয়ে গেছে। দুধের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিলোনিয়া এখন অনেকটা নীরব-নিস্তব্ধ। এর পাশের গজারিয়া, হাপানিয়া, উৎসব পদুয়া, মাতাইনকোট, দোসারি চৌ, জামমুড়া, শাসনমুড়া, আটিটি, বাটোরা গ্রামেও এখন আর তেমন দুধ সংগ্রহ ও বিক্রির উৎসব হয় না।

স্থানীয়রা জানান, ছিলোনিয়া গ্রামে আগের মতো উৎসবের আমেজ নেই, অনেক খামার খালি পড়ে আছে।

ছিলোনিয়া গ্রামের মো. হোসেন, আবুল মিয়াসহ অন্তত ১০ জন খামারি জানান, করোনার আগে পর্যন্ত ভালোই চলছিল তাদের খামার। তারপরেই গো-খাদ্যর দাম বাড়তে থাকে। তবে সে তুলনায় বাড়েনি দুধের দাম। গড়ে ১ কেজি দানাদার খাবারের দাম ৭০-৮০ টাকা হলে ১ কেজি দুধের দাম হয় ৬০-৭০ টাকা। লোকসান গুণতে গুণতে বন্ধ হয়ে যায় ওই এলাকার অন্তত দুইশ দুগ্ধ উৎপাদন খামার।

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আজিজ জানান, ২০০৬ সালে ডেইরি ফার্ম শুরু হয় ছিলোনিয়া গ্রামে। ২০১৯ পর্যন্ত ভালো অবস্থা ছিল। ২০২০ সালে করোনার ধাক্কায় পিছিয়ে যায় দুগ্ধ উৎপাদন। গো-খাদ্যের চেয়ে দুধের দাম কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েন খামারি ও গৃহস্থরা। ২৫০টি খামার থেকে এখন তা ৬০টিতে চলে এসেছে। সরকার দৃষ্টি না দিলে বাকি খামারিরাও হারিয়ে যাবেন।

কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জেলা জানান, খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধের উৎপাদন কমেছে কুমিল্লায়। কুমিল্লা জেলায় দুধের বার্ষিক চাহিদা ৫.৩৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন ৫.০৩ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদনে বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। খামারের বিদ্যুৎ বিল কৃষির আওতায় আনা এবং খাদ্যে ভর্তুকির বিষয়ে উপদেষ্টারা অবগত বলে জানান জেলা এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Distribution of seeds under the initiative of agriculture department at youth festival in Nabinagar

নবীনগরে তারুণ্যের উৎসবে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বীজ বিতরণ

নবীনগরে তারুণ্যের উৎসবে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বীজ বিতরণ

নবীন প্রজন্মকে কৃষির প্রতি আগ্রহী করে তুলতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’। গত বুধবার সকালে উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোস্তফা এমরান হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন, এবং সঞ্চালনা করেন সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জনাব শাহআলম মজুমদার।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা, কৃষক ও জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

শহীদ কামরুল মিয়ার পিতা জনাব নান্নু মিয়া বলেন, ‘সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তরুণদের কৃষিতে সম্পৃক্ততা খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

অন্যদিকে সাইফুল্লাহ বলেন, ‘তরুণদের কৃষিতে আগ্রহী করতে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অত্যন্ত ইতিবাচক। এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতেই এই বীজ বিতরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও নবীন চিন্তাধারার সংযোজন ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’

এ সময় প্রধান অতিথি ড. মোস্তফা এমরান হোসেন বলেন, ‘সরকার আধুনিক কৃষিতে তরুণ ও শিক্ষিত শ্রেণিকে আকৃষ্ট করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাণিজ্যিক কৃষিতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।’

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণ উদ্যোক্তা, কৃষক ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ মোট ২০ জনের মাঝে উন্নত মানের বীজ বিতরণ করা হয়।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Farmers benefit from Hazari gourd cultivation in Narsingdi

নরসিংদীতে ‘হাজারি লাউ’ চাষে লাভবান কৃষকেরা

নরসিংদীতে ‘হাজারি লাউ’ চাষে লাভবান কৃষকেরা

চলতি শীত মৌসুমে প্রথমবারের মতো হাজারি জাতের উচ্চ ফলনশীল লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন নরসিংদীর প্রান্তিক কৃষকেরা। বাজারে এ লাউয়ের চাহিদা থাকায় ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা। কম খরচে এবং কম সময়ে ফলন আসায় হাজারি লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ১০ হাজার ৪১৭ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে লাউ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার রায়পুরা উপজেলার অলীপুরা ইউনিয়নের কাঙ্গালীমারা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন তার বাড়ির আঙিনায় ২০ শতাংশ জমিতে এ লাউ চাষ করেছেন। মাচায় ঝুলছে লম্বা সবুজ রঙের অসংখ্য লাউ। যেদিকে তাকানো যায়, শুধু লাউ আর লাউ। বাগানের এসব সবুজ কচি লাউ দেখলে যেকোনো মানুষের চোখ জুড়িয়ে যায়। আলী হোসেন জানান, তিনি জৈব সারের সঙ্গে সামান্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। এতে কীটনাশক ও রোগবালাইনাশক ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। এ জন্য বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি বাগানের লাউ খেতে যেমন সুস্বাদু, বাজারেও এর চাহিদা অনেক বেশ। তিনি আরও জানান, বাড়ির আঙিনায় ২০ শতাংশ জায়গা সারা বছরই পড়ে থাকত। তার এক নিকটতম আত্মীয়ের পরামর্শে এ বছর স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে প্রথমবার হাজারি জাতের লাউ চাষ শুরু করেন। বাজার থেকে লাউয়ের বীজ সংগ্রহ করে গত শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে জমিতে রোপণ করেন।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, হাজারি লাউ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। এ জাতের লাউ রোপনের ৫-৭ দিনের মধ্যে চারা হয় এবং ৪২-৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ধরতে শুরু করে। এছাড়া ৬০-৭০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। এ লাউ দেখতে খুব সুন্দর ও তরতাজা। খেতেও খুব সুস্বাসু। এছাড়া বাজারে এর চাহিদা এবং ফলন বেশি হওয়ায় এ লাউ চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
18000 bighas of land is uncultivable due to waterlogging in Bhavadah

ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণে ১৮ হাজার বিঘা জমি অনাবাদি

জলাবদ্ধতার কারণে ১২ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি
ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণে ১৮ হাজার বিঘা জমি অনাবাদি

কেশবপুর উপজেলায় যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ১৮ হাজার বিঘা জমিতে এবার আমন আবাদ করতে পারেননি কৃষকেরা। এসব জমিতে ১২ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কৃষি বিভাগের। আমন আবাদ করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি এসব বিলে ঢুকে পড়ায় কৃষিকাজ বন্ধ রয়েছে। জলাবদ্ধতার পেছনে অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও নদ-নদী পলিতে ভরাট হয়ে পানি সরতে না পারা কারণ হিসেবে দেখছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই উপজেলায় ৭১ হাজার ৬২৫ বিঘা জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৬ হাজার ৫৫০ টন; যার বাজারমূল্য ১৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে এবারের আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ৫৩ হাজার ৭০০ বিঘা জমিতে ধান আবাদ হয়। অনাবাদি থেকে যায় ১৭ হাজার ৯২৫ বিঘা জমি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুম শুরুর আগেই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া অপরিকল্পিত মাছের ঘের, নদীর নাব্যতা না থাকাসহ মানবসৃষ্ট জলাবদ্ধতায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্ষার পানি শুষ্ক মৌসুমেও নামতে পারেনি। এতে বিস্তীর্ণ জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের বিলগুলোতে আমন আবাদ করতে ব্যর্থ হন কৃষকেরা।

উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক মোতাহার হোসেন জানান, বুড়িভদ্রা নদীর পাশে তার প্রায় দেড় বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। এ কারণে তিনি এবার আমন আবাদ করতে পারেননি। অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও নদ-নদী পলিতে ভরাট হয়ে পানি সরতে না পারায় তার মতো অনেক কৃষক আমন আবাদ থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

পৌরসভা এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বাসপাড়ার কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিলে এখনো হাঁটুসমান পানি। জলাবদ্ধতার কারণে আমার সাত বিঘা জমিতে আমন আবাদ করতে পারিনি।

একই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, নোনামাঠেল বিলে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকেরা এবার আমন আবাদ করতে পারেননি।

মজিদপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, মজিদপুর, বাগদহ, দেউলী, হিজলতলাসহ অধিকাংশ এলাকার নিম্নাঞ্চলের বিলগুলো জলাবদ্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন দৈনিক বাংলা পত্রিকাকে বলেন, ভবদহের প্রভাবে জলাবদ্ধতায় নিম্নাঞ্চলের বিলগুলোতে আমন আবাদ হয়নি। এ জন্য এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কৃষকেরা ১১ হাজার ৯৫০ টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তবে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে আমনের আবাদ ভালো হয়েছে।

যশোর জেলার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে ভবদহের অবস্থান। চার দশক ধরে এখানকার ৩৩০ কিলোমিটার এলাকার ৩ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতায় ভুগছেন।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Rubber collection started again after 13 years in Boalkhali

বোয়ালখালীতে ১৩ বছর পর আবারো রাবার সংগ্রহ শুরু

বোয়ালখালীতে ১৩ বছর পর আবারো রাবার সংগ্রহ শুরু

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া এলাকার রাবার বাগানে আবারো শুরু হয়েছে রাবারের রস সংগ্রহ। অক্টোবরের শুরু থেকে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তা বাগানটির গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

উদ্যোক্তা অলক বড়ুয়া জানান, আমুচিয়ার বাগানটিতে প্রায় ১০ হাজার রাবার গাছ রয়েছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে শ্রমিকরা গাছের নির্দিষ্ট অংশের বাকল কেটে দেন। সেখান থেকে গড়িয়ে পড়া দুধের মতো সাদা নির্যাস পাত্রে জমা হয়। সকাল ৯টার মধ্যেই এসব পাত্র থেকে রস সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ড্রামে সংরক্ষণ করা হয়।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ২৫০ কেজি রাবার সংগ্রহ হচ্ছে। প্রতি কেজি রাবারের দাম ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকা। এসব রাবার দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করা হয়, পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়। অলক বড়ুয়া আরো জানান, স্থানীয় বাসিন্দা কালু বড়ুয়া ও গিয়াস উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে প্যারাগন কোম্পানির কাছ থেকে ৬ লাখ টাকায় দুই বছরের জন্য বাগানটি ইজারা নিয়েছেন। বর্তমানে সেখানে ১৫ জন শ্রমিক মাসিক ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছেন।

জানা গেছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘কানুনগোভ্যালি’ প্রায় ৭০ একর পাহাড়ি জায়গাজুড়ে এই রাবার বাগান গড়ে তোলে। দীর্ঘদিন উৎপাদন চললেও লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে প্যারাগন কোম্পানি বাগানটি ক্রয় করে সেখানে ফলের বাগান তৈরি করে।

অলক বড়ুয়ার হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়টাতে রাবারের রস সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। প্রতিদিন ২৫০ কেজি হারে মাসে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কেজি রস সংগ্রহ সম্ভব, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে মাসে প্রায় ১৮ লাখ টাকা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Farmers businessmen are disappointed not getting the price of potato in Naogaon

নওগাঁয় আলুর দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক-ব্যবসায়ীরা

এ বছর ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন
নওগাঁয় আলুর দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক-ব্যবসায়ীরা নওগাঁয় জমি থেকে আলু তোলার কাজে ব্যস্ত চাষিরা

নওগাঁয় আলুর দাম কম থাকায় হিমাগার থেকে কৃষক ও ব্যবসায়িরা কম পরিমাণ আলু বের করছে। লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। মৌসুমের শুরুতে খোলা বাজারে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মন বিক্রি হলেও হিমাগারে ৭ মাস সংরক্ষণের পর একই দাম বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি বস্তায় (৬০কেজি) অন্তত ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। সরকার ২২ টাকা দাম নির্ধারণ করলেও হিমাগারে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৬ টাকা কেজি। সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন। জেলায় ৭টি হিমাগারে ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত আলু পাশের জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

ভালো দাম পাওয়ার আশায় এ বছর জেলার আলু চাষিরা আশায় বুক বেঁধে চাষাবাদ করেছিল। যেখানে উন্নত জাতের আলু ডায়মন্ড, স্টিক ও কাটিনাল চাষ করা হয়েছিল। ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষক ও ব্যবসায়িরা মার্চ মাসে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেছিল। যেখানে খরচ পড়েছিল আলুর জন্য বস্তা কেনা, হিমাগার পর্যন্ত বস্তা পরিবহন ও হিমাগার ভাড়াসহ অন্তত ৫৫০ টাকা। কিন্তু সংরক্ষণের ৭ মাস পরও ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে।

বদলগাছী উপজেলার বেগুন জোয়ার গ্রামের কৃষক আইনুল হক। দুই বিঘা জমিতে দেশি জাতের আলু রোপণে খরচ পড়েছিল ৩৫ হাজার টাকা। যেখানে আলু পেয়েছিলেন ১২০ মন। মৌসুমের শুরুতে ৬০০ টাকা হিসেবে ১০০ মন বিক্রি করে অবশিষ্ট আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন। যেখানে প্রতিবস্তা আলু হিমাগারে রাখতে খরচ পড়েছে অন্তত ৫৫০ টাকা। ৭মাস সংরক্ষণের পর আলুর দাম বলছে ৬০০ টাকা। এতে তার লোকসান বস্তাপ্রতি ৬০০ টাকা।

কৃষক আইনুল হক বলেন, প্রতি বিঘাতে আলু রোপণে বীজ আলুর প্রয়োজন হয় প্রায় ১৮০ কেজি। বীজ আলু বাড়ির হওয়ার আলু চাষবাদে খরচ তুলনামূলক কম পড়েছে। তবে যারা বীজ আলু কিনে রোপণ করেছেন তাদের ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বস্তা (৬০ কেজি) কিনতে হয়েছে এবং খরচ বেশি পড়েছে। এ বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। দাম কম হওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এতে আগামীতে অনেকে আলু চাষ কমিয়ে দিবে এবং বেশি দামে কিনে খেতে হবে। বাজার সামঞ্জস্য থাকলে সবার জন্য সুবিধা হবে।

একই অবস্থা অন্য কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় লোকসানের শঙ্কায় অনেকে হিমাগার থেকে আলু বের করছেন না। দাম না পাওয়ায় কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ কমে যাবে এবং আগামীতে সরবরাহ কমে আসায় বাজারও উর্ধ্বগতি হবে। তবে বীজ আলু নিয়ে অনেকে আগাম জাতের আলু চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বদলগাছী উপজেলার পারসোমবাড়ী গ্রামের আলু ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, পাটনাই জাতের ৪০০ বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছি। প্রতি বস্তায় আলুর দাম ১ হাজার ২০০ টাকার এবং পরিবহন, বস্তা ও হিমাগার খরচ ৪৫০-৫০০ টাকা পড়েছে। প্রতি কেজি আলুর বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। প্রতি বস্তায় লোকসান হবে ৭০০-৭৫০ টাকা পর্যন্ত। আমার যে পুঁজি ছিল তা শেষ হওয়ার উপক্রম। এতে সাংসারিকভাবে অর্থনেতিক দিক দিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হলো।

ব্যবসায়ী হামিদুর রহমান বলেন, দেশি আলু ৩২ টাকা কেজি এবং স্টিক আলু ২৭ টাকা কেজি কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলাম। এখন দেশি আলু ১৫ টাকা কেজি এবং স্টিক আলু ১০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার সরাইল গ্রামের কৃষক রহিদুল দেওয়ান বলেন- ১ বিঘা জমিতে আলু চাল করেছিলাম। মৌসুমের শুরুতে ব্যবসায়ীরা ৮৫০ টাকা মন দাম বলেছিল। আলু বিক্রি না করে হিমাগারে ৮ বস্তা রেখেছিলাম। আগাম জাতের আলু রোপণ করার জন্য সবগুলো বের করেছি। ২ বস্তা বিক্রি করতে চাইলাম এখন ৬০০ টাকা বস্তা দাম বলছে। তাহলে হিমাগারে এতদিন সংরক্ষণ করে কি লাভ হলো। আমরা কৃষক লাভ বা লোকসান যায় হোক না কেন আবাদ করা ছাড়া তো জমি ফেলে রাখতে পারি না। ২২ টাকা আলুর দাম কার্যকরে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নওগাঁ ইষ্টার্ণ প্রডিউস কোল্ড স্টোর লিমিটেড এর ম্যানেজার সেতু মৈত্র বলেন- হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৭০ হাজার বস্তা। এর বিপরীতে ৭৫ হাজার ৬০০ বস্তা (৩ হাজার ৮১৩ টন) সংরক্ষণ করা হয়েছে। যেখানে বীজ আলু ২ হাজার ১৪১ টন এবং খাবারের আলু ৭৩ হাজার ৪৫৯ টন। এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার বস্তা এখনো মজুত আছে। চলতি (অক্টোবর) মাসে আলু বের হওয়ার সময়। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আলু বের করছেন না। নভেম্বর মাস পর্যন্ত হিমাগার চালু রাখতে হবে। এতে একমাসেই প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল আসবে। তারপর বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আলু নষ্ট হয়ে যাবে। নষ্ট ও পঁচা আলু নিজ খরচে হিমাগার থেকে অপসারণ করতে হবে। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ওপর লোকসান হবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. হোমায়রা মন্ডল বলেন- চলতি বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভাল দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাজারে দাম কম থাকায় হিমাগার থেকে আলু কম পরিমাণ বের হচ্ছে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল আউয়াল বলেন, মৌসুমের শুরুতে আলু হিমাগারে রাখার সময় একবার সমস্যা হয়েছিল। সেসময় ভোক্তা অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হয়েছিল। একটি বিষয় অবগতি হয়েছি- হিমাগারে কৃষকদের স্বল্প মূল্যে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যৌথ অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে তার আগে ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেট ভাঙতে কৃষক ও হিমাগার কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনা করা হবে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The loss of billions of rupees in agriculture in Chuadanga

চুয়াডাঙ্গায় কৃষিতে বছরে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা

চুয়াডাঙ্গায় কৃষিতে বছরে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা সেচের জন্য গভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সরাসরি পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। বিশেষ করে গত পাঁচ বছর ধরে গ্রীষ্ম মৌসুমে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে পৌঁছেছে বা তা অতিক্রম করেছে। অতিরিক্ত এই গরমে জেলার কৃষি, পরিবেশ, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য ও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এমনকি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গত ৫ বছর সবখাতেই প্রভাব ফেলছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত ৫ বছরের মধ্যে জেলার কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা।

তবে সম্প্রতি বেসরকারি এনজিও ওয়েব ফাউন্ডেশন ও রিসোর সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ জেলায় প্রতি বছরই ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে তিনশো কোটি টাকার বেশি।

সমীক্ষা বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি অনুভূত হচ্ছে এই জেলাটিতে। এতে জেলায় খরা, ঝড় ও অতিবৃষ্টির কারণে কৃষিখাত ক্রমাগত ক্ষতির মুখে পড়ছে। এছাড়া জলবায়ু এই প্রভাবে নির্মাণশ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ খোলা আকাশের নিচে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গত পাঁচ বছরে জেলায় বোরো ধান, গম, ভুট্টা, শীতকালীন সবজি, তামাক, পেঁয়াজ, কলা, পেঁপে, পানবরজ ও ফলবাগানে আঘাত হানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে খরা, অতিবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো কৃষক। এসব দুর্যোগে বারবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জেলার প্রধান ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ২০২২ সাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতির বছর ছিল। শুধু ওই বছরেই কৃষিতে ক্ষতি হয় ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

বছরভিত্তিক কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ

২০২০ সালে ক্ষতি ১ কোটি ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা, ২০২১ সালে ক্ষতি ২ কোটি ৩৬ লাখ ১৬ হাজার ৫ শত টাকা, ২০২২ সালে ক্ষতি ৪ কোটি ২২ লাখ ২৬ হাজার ৮ শত টাকা, ২০২৩ সালে ক্ষতি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ক্ষতি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ৭ শত টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ২০২২ সাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতির বছর ছিল। শুধু ওই বছরেই কৃষিতে ক্ষতি হয় ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের সহায়তা

২০২০ সালে ২ কোটি ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৬০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২১ সালে ৭ কোটি ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫ শত ৫০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২২ সালে ৫ কোটি ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯ শত ৯০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২৩ সালে ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৪ শত ৮৮ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩২ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের বোরো, আউশ, আমন ধানের বীজ, গম, ভুট্টা, মুগ, মসুর, মাসকলাই, সরিষা, সবজি ও পেঁয়াজসহ নানা মৌসুমী ফসলের বীজ ও সার দেওয়া হয়।

মাসুদুর রহমান সরকার আরো বলেন, আমরা চলতি মৌসুমেও অর্থাৎ এই ২০২৫ সালেও আউশ প্রণোদনা, আমন প্রণোদনা, মুগ, তুলা, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজসহ ১০টির বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। বিশেষ করে খরার সময় কৃষকদের সহনশীল জাত চাষে উৎসাহ দিচ্ছি।

তবে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের অভিযোগ, অনেক সময় ক্ষতিপূরণ দীর্ঘসূত্রতায় পেতে হয়। এছাড়া তালিকা তৈরিতে অনেকেই বাদ পড়ে যান। সময়মতো পর্যাপ্ত প্রণোদনা পান না তারা।

সদর উপজেলার সরিষাডাংগা গ্রামের এক কৃষক বলেন, ঝড়ে আমার কলাবাগান শেষ হয়ে যায়। সেসময় ইউপি চেয়ারম্যান তালিকা করলেও এখনো কোনো প্রণোদনা পাইনি। অনেক সময় এই তালিকা রাজনৈতিক হয়।

উপজেলার মাছচাষি হাসান বলেন, পুকুর শুকিয়ে গেলে মাছের খাবার খরচও ওঠে না। কৃষিতে তো কিছু প্রণোদনা আসে, কিন্তু মৎস্য খাতে সে রকম কিছু পাই না।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গত পাঁচ বছরে (২০২০ থেকে ২০২৪) তাপমাত্রা বেড়েছে বিপজ্জনক হারে। একইসঙ্গে কমেছে গড় বৃষ্টিপাত। এ প্রবণতা জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদরা। দীর্ঘমেয়াদে এই ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষি, মাছ, প্রাণিসম্পদ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য

p
উপরে