লেখক-পাঠকদের মিলনমেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মাতৃভাষা বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মরণে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে হরেক রকমের নতুন বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে চলে সবার প্রিয় এই মেলা। ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এই মেলায় নিজেদের পছন্দের বই ও প্রিয় লেখকের বই সংগ্রহ করতে বিভিন্ন বয়সের পাঠকরা আসেন।
তবে মেলায় আসা অধিকাংশ পাঠক-দর্শনার্থী তরুণ বয়সের। এদের মধ্যে মেলায় অনেকে শুধু ঘুরতে আসেন, অনেকে আসেন নিজেদের ছবি ও সেলফি তুলতে, অনেকে আবার প্রিয় লেখকদের সঙ্গে সেলফি কিংবা ছবি নিতেও মেলায় আসেন। বইমেলায় বই কেনার চেয়ে তরুণ প্রজন্মের দর্শনার্থীদের ছবি সেলফি তোলার হিড়িক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবার।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতেই বইয়ের স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো বাহারি সাজে সাজানো হয়েছে। এ ছাড়াও স্টলগুলোতে থরে থরে সাজানো রয়েছে বিভিন্ন ধর্মী হাজারো বই। এমন পরিবেশে স্মৃতি ধরে রাখতে যেন সবারই ছবি তোলার ইচ্ছে জাগে। পাশাপাশি বই বিক্রি ও প্রচারে প্রকাশনীগুলোতে প্রায় প্রতিদিন থাকছেন লেখকরা। সেখানে বই কেনার পাশাপাশি তাদের সাথে সেলফি ছবি আড্ডায় মেতে ওঠেন বইপ্রেমীরা। তবে এই ছবি বা সেলফি তোলাকে নিজেদের ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং মনে করছেন অনেক লেখক।
প্রকাশক ও বিক্রেতাদের মতে, কিছু কিছু তরুণ মেলায় আসে বই কিনতে নয় বরং ফেসবুক, ইউটিউব সেলিব্রিটিদের সঙ্গে সেলফি তুলতে। যারা কোনো নিয়মিত লেখকও না। তবে তরুণ লেখকদের গতানুগতিক থ্রিলার, উপন্যাস, গল্প-কবিতার বই মূলধারার সাহিত্যকে তেমন একটা প্রভাবিত করতে পারেনি। মূলধারার সাহিত্য ঠিকই মধ্যবয়সী ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদান-প্রদান চলছে। তবে নির্দিষ্ট একটা তরুণ সমাজ নিম্নমানের সাহিত্যকর্মের দিকে ঝুঁকি যাচ্ছে, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রকাশকরা বলছেন, বইমেলায় দর্শনার্থীদের দেখে মনে হচ্ছে, এদের বেশির ভাগই এসেছেন মেলায় একটা ‘কোয়ালিটি টাইম’ কাটাতে এবং তা কেবলমাত্র বইকেন্দ্রিক নয়। বইয়ের তুলনায় সেখানে হাত বেশি খোঁজে মোবাইল ফোন। আর সুযোগ পেলেই উঠে যায় ক্লিক ক্লিক ছবি। সেটা আয়োজকেরাও কিছুটা বুঝেছেন। সেটা অনুভব করা যায় স্টলের সামনে মানুষের শুধু ছবি তোলার ভিড় দেখেই।
লেখকরা বলছেন, মোবাইল ফোন বা তাতে থাকা ক্যামেরা এখন বইমেলার অন্যতম অনুষঙ্গ। এতে বিপণন থেকে প্রচার সবই যুক্ত। বইয়ের মেলায় মোবাইল ফোনের ক্যামেরা এখন গুরুত্বের শীর্ষেই আছে। মেলায় আসছেন আর ছবি তুলছেন না এমন মানুষ হাতে গোনা কয়েকজন।
বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলে থাকা কয়েকজন বিক্রেতা জানান, বইয়ের পাতা উল্টিয়ে ভেতরের লেখা পড়ে খুব কম মানুষ। আর দাম তো জিজ্ঞেসও করে না। বই হাতে ছবি তুলাই মূল উদ্দ্যেশ্য মনে হয়। সবার হাতে এখন স্মার্টফোন। স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে বই হাতে সেলফি তোলা আর ফেসবুকে দেয়াই তো কাজ। সেলফি তুলতে বই লাগে, কেনা বা পড়া লাগে না। সেলফি তুলতে তুলতে বই ছিঁড়ে ফেলার মতো ঘটনাও দেখছি।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, কোথাও বাবা তার মেয়ের ছবি তুলে দিচ্ছেন, আবার কোথাও বন্ধু তার বন্ধুর ছবি তুলতে ব্যস্ত, কোথাও কোথাও প্রেমিক তার প্রেমিকার ছবি তুলে দিচ্ছেন। আবার কেউ প্রিয় লেখকের বই হাতেও ছবি তুলছেন। কেউ কেউ সদ্য তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-ইন্সট্রাগ্রামে পোস্ট করছেন। বন্ধুদের জানান দিচ্ছেন বাইমেলায় উপস্থিতির কথা।
মেলার নির্মল পরিবেশে বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের যেন ছবি তোলার উৎসব চলছে। এ অবস্থায় বই কেনার চেয়ে ছবি তোলাই যেন মুখ্য। আবার কেউ বা করছেন ব্লগ। আর কেউ ঘুরছেন কন্টেন্টের নামে গেমস আর ধাঁধার খেলায়। তবে স্টল ঘুরে ঘুরে বইও কিনছেন অনেকে।
শনিবার বিকেল থেকেই অমর একুশে বইমেলায় দর্শনার্থীদের ঢল দেখা গিয়েছে। মানুষ সিরিয়াল দিয়ে ঢুকছেন মেলা প্রাঙ্গণে। মেলায় আসা স্মৃতি ধরে রাখতে নিচ্ছেন সেলফি, তুলছেন ছবি। বই দেখছেন অনেকেই, কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম।
বিকেল তিনটা থেকে দেখা যায়, মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় বাড়তে থাকলেও বই ক্রেতা খুবই কম। অনেকেই এসেছেন দলবেঁধে, কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ আবার পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয় মানুষকে সাথে নিয়ে। ছোট বাচ্চাদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা দুই বন্ধু রাজিব মাহমুদ ও শহিদুল আলম জানান, বইমেলার মনোরম পরিবেশ আর কোথাও পাওয়া যায় না। চারপাশে হাজারো বই। তবে মেলায় বই কেনার পাশাপাশি স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলে রেখেছেন।
বই কেনার পর লেখকের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন জাহিদ হাসান। তিনি জানান, মেলায় বইয়ের স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো এমন করে সাজানো যে, পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে সবারই সাধ জাগে। যেহেতু বইমেলা, এখানে এখানে বই কেনাটাও মুখ্য।
বইমেলায় ঘুরতে আসা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রওশন জাহান বলেন, বই মেলায় আসছি আর ফেসবুকে একটা স্টোরি দেব না তা কি আর হয়! অনেকগুলো ছবি তুলেছি বাসায় যেয়ে কিছু স্টোরিতে দেবো আর কিছু ছবি আপলোড দেব।
শেখ শাহরিয়ার নামের এক দর্শনার্থী বলেন, তার দুই অনেক দিন থেকেই সখ করেছে বই মেলায় আসার। শুক্রবারের ভিড় এড়াতে শনিবার তাদের নিয়ে মেলায় এসেছি। বইমেলার স্মৃতি রাখতে মেয়েকে ছবি তুলে দিয়েছি।
প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রেতা মামুনুর রশিদ, এবার প্রথম দিকের চেয়ে শেষের দিকে শেষের দিকে ভিড় বেড়েছে। তবে গতবছরের তুলনায় এ বছর প্রথম দিকেও ভিড় ছিল। আমাদের স্টলে সবাই বই কিনতেই আসে। অটোগ্রাফ সহ লেখকের সঙ্গে ছবিও তুলছেন অনেকে।
বই কম বিক্রি প্রসঙ্গে অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী আলিয়া জাহান বলেন, দর্শনার্থীরা দশজন বই দেখলে কিনছেন একজন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মেলার শেষের দিকে বই বিক্রি বাড়বে।
পাঠক সমাবেশের একজন বিক্রেতা জানান, বইমেলায় দেখা যায় কিছু কিছু ব্যক্তি আসেন বই কেনেন না তবে সেলিব্রিটিদের সঙ্গে সেলফি তোলেন। আবার অনেকে বই কেনেন তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে নিজেকে ধন্য মনে করতে। কিন্তু নিম্নমানের এই লেখকদের সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের মতো সাহিত্যকর্মকে তেমন প্রভাবিত করতে পারেনি। নির্দিষ্টসংখ্যক সচেতন পাঠকরা ঠিকই পুরনো সাহিত্য খুঁজে নেন।
আগামী প্রকাশনীর বিক্রেতা সোহাগ মাহমুদ বলেন, মেলায় পাঠকের চেয়ে দর্শনার্থী বেশি। তবে যারা কেনার জন্য আসে তারা কেনে। ছবি তুললে আসলে বিরক্তি প্রকাশ করা যায় না। আমাদের অনেক সমস্যা হয়। অনেকেই আসে বই দেখে ছবি তুলে চলে যায়। কিছুই বলা যায় না।
সেলফি আর ছবির প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে জ্ঞানকোষ প্রকাশনীর বিক্রেতা সুমাইয়া জাহান বলেন, খুবই সমস্যা হয়। তবে সমস্যা হচ্ছে আমরা কিছুই বলতে পারি না। আর এবারের মেলায় প্রতিবারের মতো সাজের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এজন্য পাঠক দর্শনার্থীরা ছবি তুলতে ব্যস্ত বেশি। তবে ছবি তুলতে গিয়ে তারা অনেকে আবার বই কিনতে ভুলছেন না। এবারের বইমেলায় অন্যবারের চেয়ে পাঠকের ভিড়ের পাশাপাশি বিক্রিও বেশ ভালো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লেখিকা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত মুখ যারা বইমেলাকে কেন্দ্র করে কিছু লেখা লেখেন কিন্তু সারা বছর তাদের কোনো লেখা দেখা যায় না। তবে তাদেরকে ঠিকই ফেজবুক ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে নিম্নমানের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে দেখা যায়। দেখা যাচ্ছে তারা বইমেলায় এলে তাদেরকে ঘিরে তরুণ সমাজ সেলফি-ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে যায়। এতে আমাদের মূলধারার সাহিত্যকর্মের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। তা ছাড়া তরুণ সমাজ যারা আমাদের ভবিষ্যৎ তাদেরকে নিম্নমানের এসব কর্মের প্রতি ঝুঁকে যাওয়া ঠিক নয়। তাদের উচিত উন্নততর চিন্তাভাবনা করা। আর সমাজকে ইতিবাচক উন্নতির দ্বার দেখানো।
অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন কান্তি নাথ বলেন, পাঠক ক্রেতারা মেলার প্রথম সপ্তাহে দেখে, দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘুরে, তৃতীয় সপ্তাহে সিদ্ধান্ত আর শেষ সপ্তাহে কেনাকাটা করে। আর বইমেলার পুরো মাঠেই চলে সেলফি উৎসব। প্রকাশনীর সামনে তো কোনো কথাই নেই। তবে আমার কথা হচ্ছে বইটা আগে পাঠকের হোক পরে সেলফি।
তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্ম সঠিক পাঠক হোক, দায়িত্বশীল পাঠক হোক। সেলফি কিংবা ছবির তুলায় সময় নষ্ট না করে তাদের লেখার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো উচিৎ। বর্তমানে ভালো লেখার সংকট রয়েছে। তরুণ প্রজন্মই পারবে এ সংকট কাটাতে।
তরুণ লেখকদের বই প্রকাশ করা শব্দশৈলী প্রকাশনীর প্রকাশক ইফতেখার আমীন বলেন, এ বছর প্রথম দিকে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। তবে বিক্রি সেরকম হয়নি। এবার এখন পর্যন্ত ব্যাগভর্তি বই কাউকে কিনতে দেখিনি। তবে ফোন ভর্তি ছবি আর সেলফি তুলতে দেখেছি। মেলায় লোক সমাগম হচ্ছে, আড্ডা সেলফি হচ্ছে, চার-পাঁচ জনের গ্রুপ বই নিয়ে ছবি তুলছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় বই বিক্রি কম।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের নামে যে হচ্ছে তা আসলে ঠিক নয়। মেলা হওয়া উচিৎ পাঠকদের। সেখানে বই আর বউয়ের পার্থক্য নিয়ে ধাঁধা কিংবা গেম খেলার জন্য নয়। বই মেলার সাথে বাণিজ্য মেলার তুলনা করলে চলবে না। আমরা লেখক নয় লেখা ছাপি। আর এখন পাঠক হওয়ার চেয়ে ভাইরাল হওয়ার চিন্তা বেশি। তরুণ প্রজন্মের ভাইরাল হওয়ার মনমানসিকতা থেকে বেরিয়ে বই পড়ায় আগ্রহ বাড়াতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা জামান এবারের গ্রন্থমেলায় ‘স্মার্টফোন আসক্তি: প্রযুক্তি ও জীবনের ভারসাম্যহীনতা’ বইটি প্রকাশ করেছেন। বর্তমান প্রজন্মকে স্মার্টফোন আসক্তি থেকে সচেতন করে তুলতে বইটিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন ড. ফারহানা।
তিনি বলেন, স্মার্টফোন শিক্ষার্থীদের জীবনে এনে দেয় গতি, উন্মোচন করে নতুন দিগন্ত। কিন্তু নতুন এই দিগন্তে বিচরণ করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী হয়ে পড়েন স্মার্টফোনে আসক্ত। পড়ালেখায় গতি এনে দিলেও স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি অনেক শিক্ষার্থীকে ঠেলে দিয়েছে অন্ধকারের অতল গহ্বরে।
এবারের বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমির মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ বছর মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর ৬০১টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মোট ৯০১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
যেমন ছিল শনিবারের বইমেলা
অমর একুশে বইমেলার ২৪তম দিন শনিবার মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর।
এদিন নতুন বই এসেছে ১৩৮টি। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: মোহাম্মদ রফিক এবং স্মরণ : খালেক বিন জয়েনউদদীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে আলতাফ শাহনেওয়াজ এবং সুজন বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শামীম রেজা, শোয়াইব জিবরান এবং আসলাম সানী। সভাপতিত্ব করেন আবুল মোমেন।
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও গবেষক শাহনাজ পারভীন, কবি ও অনুবাদক সাইফুল ভূঁইয়া, কথাসাহিত্যিক শাহনাজ পারভীন স্মৃতি এবং গবেষক মনিরুজ্জামান শাহীন। এই মঞ্চে এদিন বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত, মুহম্মদ মোজাম্মেল হক রচিত মুক্তিযুদ্ধ ও আলোকচিত্র বই বিষয়ে লেখকের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
রোববারের বইমেলা
অমর একুশে বইমেলার ২৫তম দিন রোববার মেলা শুরু হবে বিকেল তিনটায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
National Single Window (NSW) প্রকল্প কর্তৃক “Celebrating Half a Million CLPs & Seminar on Paperless Customs & Conferring e-Return Champion Certificate to the Tax Payers” শীর্ষক অনুষ্ঠান ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, লা মেরিডিয়ান, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, মাননীয় উপদেষ্টা, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শেখ বশির উদ্দিন, মাননীয় উপদেষ্টা, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব মো: আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ, সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দপ্তর/সংস্থার প্রধানগণ/উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা BSW প্ল্যাটফর্মের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
BSW সিস্টেমটি বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করার মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানিকারকগণের খরচ হ্রাস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গত ০২ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি: তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে BSW পোর্টাল উদ্বোধন ও আংশিকভাবে সিস্টেমটি চালু করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে, সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯ টি সংস্থার মধ্যে ৭ টি সংস্থার (DoE, DGDA, EPB, DoEX, BNACWC, BEPZA and BEZA) ক্ষেত্রে Go-Live এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে অন্য ১২ টি সংস্থাও (BAEC, BGMEA, BKMEA, BSTI, BTRC, CAAB, , DLS, , DoF, PQW, , BAERA, BIDA, CCIE) BSW সিস্টেমে যুক্ত হয়েছে এবং অনলাইনে সাটির্ফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট প্রদানের কার্যক্রম সম্পাদন করছে।
বিগত ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে পরিপত্র জারীর মাধ্যমে সকল সংস্থার (১৯ টি) ক্ষেত্রেই BSW সিস্টেম এর মাধ্যমে CLP প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। BSW এর মাধ্যমে এ পযর্ন্ত মোট ৫,৭৮,৪৯১টি সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট অনলাইনে ইস্যু করা হয়েছে।
অনলাইনে ইস্যুকৃত এসব সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটসমূহের মধ্যে ৮৪ শতাংশের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিলের ১ ঘণ্টার মধ্যে এবং ৯৫ শতাংশের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিলের ১ দিনের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো:
• Celebrating Half a Million CLPs: BSW প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ০৫ (পাঁচ) লক্ষ সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (CLP) ইস্যুর মাইলফলক অতিক্রম করায়, এ কৃতিত্বপূর্ণ অর্জন উদযাপন করা হয়। এছাড়াও BSW এর কার্যকারিতা এবং ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এর প্রত্যাশিত সুবিধাগুলো তুলে ধরা হয়। অধিকন্তু সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (CLP) ইস্যুর ফলে বিভিন্ন অংশীজনদের অভিজ্ঞতা ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
• Seminar on Paperless Customs: বাংলাদেশের বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পেপারলেস Customs. WTO –TFA Agreement এর আর্টিকেল ১০.৪ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ কাস্টমস এর রূপরেখা হিসেবে Paperless Customs বিষয়ে একটি উপস্থাপনা প্রদান করা হয়। Paperless Customs বাস্তবায়ন হলে পন্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও কার্যকারিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে ।
• Conferring e-Return Champion Certificate to the Tax Payers: বিগত কর বছরে সর্বাধিক অনলাইন রিটার্ন দাখিলকারী ০৫ টি প্রতিষ্ঠানকে “e-Return Champion” সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ১) সোনালী ব্যাংক পিএলসি, ২) ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ৩) ব্র্যাক, ৪) বুরো বাংলাদেশ, ৫) রেনেটা পিএলসি
প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন অংশীজনগণ তাঁদের বক্তব্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
NSW প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে BSW এবং e-Return সিস্টেমের অধিকতর উন্নয়নের জন্য ভূমিকা রাখতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রকল্প দুটি সফল করার ক্ষেত্রে সকল সহযোগী সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, বেসরকারি খাতের সকল অংশীজন এবং সম্মানিত সকল করদাতাগণের দৃঢ় ভূমিকার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
রাজশাহী উপশহরে নতুন একটি উপশাখা চালু করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাজশাহী উপশহরে দড়িখরবোনা রোডের মনোয়ারা ম্যাক্স টাওয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে উপশাখাটি উদ্বোধন করেন।
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিওও মো: সাব্বির হোসেন, সিনিয়র জোনাল হেড ফর নর্থ এ. কে. এম. তারেক এবং ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অর্থকরী ফসল - আম ও রেশমের মতো জন্য বিখ্যাত। এই উপশাখা চালুর ফলে এখানকার ব্যবসায়িক ও ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহকরা অত্যাধুনিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
ব্র্যাক ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোত্তম ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের মাল্টি-চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউশন স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবে উপশাখা নেটওয়ার্ক চালু করেছে।
নতুন উপশাখাটি একটি বিস্তৃত পরিসরে আধুনিক ব্যাংকিং সেবার ব্যবস্থা করবে, যা একক ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে। এখানে গ্রাহকরা অ্যাকাউন্ট খোলা, নগদ জমা ও উত্তোলন, ডিপোজিট পেনশন স্কিম, ইএফটিএন (EFTN) ও আরটিজিএস (RTGS) ব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর, রেমিটেন্স, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, ক্রেডিট কার্ড, স্টুডেন্ট ফাইল, কনজিউমার লোন, ডেবিট কার্ড ও চেকবুক প্রসেসিং, আস্থা অ্যাপ নিবন্ধন, স্কুল ব্যাংকিং, সঞ্চয়পত্র এবং আরও অনেক সেবা গ্রহণ করতে পারবেন, তবে বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত সেবা এখানে প্রদান করা হবে না।
২৯৪টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস ও ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৪টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। আঠারো লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৩ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসিতে সর্বস্তরের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানের জন্য শরীয়াহ্ নীতিমালার আলোকে আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্প চালু রয়েছে। এ সকল আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্পে সকলের বেশ আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিজ নিজ প্রয়োজনানুসারে ব্যাংকের ১৭৪ টি শাখা ও উপ-শাখায় আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্প সমূহের সেবা গ্রহণের জন্য ইউনিয়ন ব্যাংক সর্বস্তরের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানকে জানাচ্ছে সু-স্বাগতম।
জনাব আখতারুদ্দিন মাহমুদ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ব্যাংক এশিয়া পিএলসি-তে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা পদে যোগদান করেছেন।
জনাব মাহমুদ ব্যাংকিং ও ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস (এফএমসিজি) সেক্টরে মানবসম্পদ নেতৃত্বে দুই দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক। ব্যাংক এশিয়ায় যোগদানের পূর্বে তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে হেড অফ হিউম্যান রিসোর্সেস হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যেখানে তিনি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার কৌশলগত নীতি, সাংগঠনিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ এবং ট্রান্সফরমেটিভ এইচআর প্র্যাকটিস চালু করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সাংগঠনিক উন্নয়ন, প্রতিভা বিকাশ ও নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং কর্মীর উদ্যোগকে ব্যবসায়িক কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ক্ষেত্রে জনাব মাহমুদ ইন্ডাস্ট্রিতে বিশেষভাবে পরিচিত। তার মানবসম্পদ কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী টিম গঠন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মপরিবেশ গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তার যোগদান ব্যাংক এশিয়ার কর্মকৌশলকে ব্যবসায়িক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় করার অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করা এবং নেতৃত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য হবে। জনাব মাহমুদ একজন এক্সিকিউটিভ এমবিএ এবং এভিয়েশনে স্নাতক ডিগ্রীধারী।
রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের স্কুল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করতে বিকাশ ও বিজ্ঞান চিন্তার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো বিজ্ঞান উৎসবের আঞ্চলিক পর্ব। ঢাকা’র পর বিভাগীয় এই শহর দু’টির উৎসবে প্রায় ১০০টি স্কুলের ১৫০০-এর বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ও গবেষণাধর্মী বিভিন্ন প্রকল্প প্রদর্শন, কুইজ, বিজ্ঞানবিষয়ক আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বসহ নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর হয়ে উঠে বিজ্ঞান চর্চার এই আয়োজন।
সম্প্রতি রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাজশাহীর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ -এ আয়োজিত এই উৎসবে দুই বিভাগ থেকে ১২০টির বেশি প্রকল্প প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা। খুদে বিজ্ঞানীদের প্রদর্শিত নানান উদ্ভাবনী প্রকল্পের মধ্য থেকে প্রতিটি বিভাগে সেরা দশ প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়। পাশাপাশি, রংপুর উৎসবে কুইজে অংশগ্রহণকারী ৮০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই ক্যাটাগরিতে ২৫ জন ও রাজশাহীতে ৫৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন কুইজ বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
রংপুরে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডীন ড. মিজানুর রহমান, পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. কে এম জালাল উদ্দীন আকবর ও বিকাশ এর ইভিপি ও রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান হুমায়ুন কবির। রাজশাহীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি ও বিকাশ এর রেগুলেটরি এন্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট সায়মা আহসান এবং বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার ।
বাড়তি চমক হিসেবে ছিলো বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন স্টল, বিজ্ঞান ভিত্তিক জাদুর প্রদর্শনী, লেখক, গণিতবিদ, বিজ্ঞান বক্তাদের বক্তব্য ও শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, সংগীতানুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
বিভাগীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান প্রকল্পে ও কুইজ বিজয়ী শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরবর্তীতে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত বিজ্ঞান উৎসব আয়োজন করা হবে। সারাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা এখন থেকে বীমা আবেদনের ঝুঁকি পর্যালোচনা বা আন্ডাররাইটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইমেইলের মাধ্যমে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট পেয়ে যাবেন। এই উদ্যোগ দেশের বীমা খাতে গ্রাহককেন্দ্রিক উদ্ভাবনের এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।
সাধারণত, বীমা আবেদনের ঝুঁকি পর্যালোচনার পর কাগজে প্রিন্ট করা পলিসি ডক্যুমেন্ট গ্রাহককে সরবরাহ করতে কয়েকদিন সময় লাগে। এই নতুন উদ্ভাবনের ফলে এখন গ্রাহকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইমেইলে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট পাবেন, যা তাদের জন্য আরও অনেক সুবিধাজনক হবে। উল্লেখ্য, গ্রাহক কাগজে ছাপানো পলিসি ডকুমেন্টও পাবেন। গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সব তথ্য পাওয়া সাপেক্ষে এই ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হবে।
ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্টে থাকবে গ্রাহকের পূরণকৃত আবেদনপত্র, বীমা পলিসির বিস্তারিত তথ্য, একটি স্বাগত বার্তা এবং শর্তাবলি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ডক্যুমেন্টের মতো, বীমা সম্পর্কিত ডক্যুমেন্টও সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল চ্যানেল যুক্ত হওয়ায় এখন গ্রাহকরা আরও সহজে তাদের বীমা ডক্যুমেন্ট নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
“মেটলাইফে, আমাদের লক্ষ্য হলো গ্রাহকদের জন্য বীমা সহজ, দ্রুত এবং আরও সহজলভ্য করা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট ইস্যু চালু করে, আমরা কেবল প্রক্রিয়াটি দ্রুততর-ই করছি না, সেই সাথে গ্রাহকদের বীমা অভিজ্ঞতায় নতুনত্ব নিয়ে আসছি। এই উদ্ভাবনটি সুরক্ষা এবং সুবিধার সমন্বয় করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায় এবং নিশ্চিত করে যে আমাদের গ্রাহকরা যেন তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহে মনোনিবেশ করতে পারেন,” আলা আহমদ, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, মেটলাইফ বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে মেটলাইফ প্রায় ১০ লাখ গ্রাহককে আর্থিক সুরক্ষা দিয়ে আসছে। মেটলাইফের বিস্তৃত জীবনবীমা সেবা এবং ডিজিটাল উদ্যোগ দেশের আর্থিক নিরাপত্তা ও আস্থার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
দেশে প্রথমবারের মতো সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা নিজস্ব ব্যাকিং অ্যাপ ‘সিটি টাচ’ থেকে সরাসরি গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পলিসি কিনতে পারবেন। নতুন এই ফিচারটির মাধ্যমে গ্রাহকেরা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে বিভিন্ন ধরনের পলিসি সম্পর্কে জানা, তাৎক্ষণিক পলিসি কেনা, এমনকি ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম জমা দিতে পারবেন। ইন্স্যুরেন্স খাতে এই নতুনত্ব প্রমাণ করে যে, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স একত্রিত হলে তা গ্রাহকদের জন্য আরও উন্নত সুবিধা এবং আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে।
গার্ডিয়ান এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী শেখ রকিবুল করিম এফসিএ বলেন, “ইন্স্যুরেন্সকে সবার জন্য সহজ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তবে জীবন ও স্বপ্নকে সুরক্ষা দিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে আমরা দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করছি। এ অংশীদারিত্বের ফলে গ্রাহকেরা খুব সহজেই অনলাইনে এখন তাদের ইন্স্যুরেন্স সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন।”
সিটি ব্যাংকের ডিএমডি এবং হেড অফ রিটেল ব্যাংকিং মোঃ অরূপ হায়দার বলেন, “সিটি ব্যাংকই প্রথম ব্যাংক যারা বাজারে ব্যাংকান্সুরেন্স চালু করে। স্থানীয় ব্যাংকিং ইন্ডাষ্ট্রিতে ডিজিটাল সমাধান আনার ক্ষেত্রেও আমরা এগিয়ে আছি। তাই ব্যাংকিং অ্যাপে সরাসরি বীমা পণ্য চালু করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংক হওয়া একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি ছিল, যার ফলে আমাদের গ্রাহকদের বিস্তৃত পরিসরের আর্থিক সমাধান প্রদান করা হচ্ছে।”
গার্ডিয়ান সব সময় ইন্স্যুরেন্সকে আরও সহজলভ্য ও স্বচ্ছ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর সে লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের সেবার অনুশীলন অনুসরণ করে আসছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সূচনা দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা এখন এ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত হয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ইন্স্যুরেন্স খাতে গার্ডিয়ানের নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
মন্তব্য