ব্যাংক ঋণে নতুন সুদহার নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার দাঁড়াবে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। নীতি সুদহার বাড়ানোর পর ব্যাংক ঋণে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পাঠানো এক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘স্মার্ট’ (সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সুদহারের সঙ্গে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে ঋণ দেওয়া যাবে। এতদিন এ হার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। গত অক্টোবর শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্মার্ট’ হার ঘোষণা করেছিলো ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। সেই হিসেবে সোমবার থেকে বিতরণ করা ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ।
নতুন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ধার নেওয়ার খরচ যেমন বাড়বে, তেমনি গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদ হারও বাড়বে। অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশা, এর ফলে ঋণ বিতরণ কমবে, বাড়বে আমানত সংগ্রহ।
অবশ্য নতুন সুদহার অনুযায়ী, প্রি-শিপমন্টে রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লী ঋণে সুদহার নির্ধারণ করতে স্মার্ট সুদহারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করা যাবে, যা এতদিন ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ। সেই হিসেবে কৃষি ও পল্লী ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার দাঁড়াবে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় গত জুলাই থেকে সুদহার বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে এরই মধ্যে আশাবাদ জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান। গত রোববার নীতি সুদহার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সুদহার বাড়িয়ে মুদ্রানীতির সংকোচনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেদিন নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত ওভারনাইট রেপো সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে এ হার ছিল সাত দশমিক ২৫ শতাংশ।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রেপো সুদহার শূন্য দশমিক ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাত দশমিক ২৫ শতাংশ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রেপো রেট বাড়ানোর এ হার ছিল গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রায় দশ শতাংশের ঘরে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গত জুলাই থেকে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে গত প্রায় পাঁচ মাসে তিন দফায় সুদহার বাড়ানো হলো।
অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ সচল করার লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেসব প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সরকার নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল মাত্র ৮ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একনেক সভা সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাস্তবায়নের হার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সরকারের অনুমোদিত এডিপি প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে আমরা চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাস্তবায়নের হার বাড়াতে পারব বলে আশা করছি।’
সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে দুর্নীতিমুক্ত ও উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী যেকোনো দিক থেকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঠিকাদার নিয়োগসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে নানা অনিয়ম হয়। এর ফলে বেশ কিছু প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল।
উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই সরকারি অর্থের অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি প্রকল্পের সংখ্যা কমিয়েছে। এতে বাস্তবায়নের হার অনেকাংশে কমে যায় এবং অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করব। নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব ভালো প্রকল্পের কথা ভাবছি এবং যেগুলো নতুন প্রকল্প পরিচালক পেয়েছে, সেগুলো দ্রুত এগিয়ে নেয়া হবে।’
গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক উন্নয়ন প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাসে উন্নয়ন বাজেটের মাত্র আট শতাংশ বাস্তবায়ন করে সর্বনিম্ন বাস্তবায়নের রেকর্ড গড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এটি বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তাদের ক্ষেত্রে এ হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ।
বিশেষ করে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম একনেক সভায় উন্নয়ন বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেয়।
এডিপিতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বাজেট বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ) বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত।
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপিসহ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিপির মোট আকার দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকায়।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৬৭ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও একই হারে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫৭ টাকা লিটার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড ভেজিটেবল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অক্টোবর-নভেম্বরে তুলনামূলক কম রেমিট্যান্স এলেও ডিসেম্বরের শুরুতেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম এই খাতে সুবাতাস বইছে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাতদিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। আর গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলার।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২০ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে উঠা-নামার প্রবণতা দেখা গেছে। গত জুনে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসার পর জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১৯১ কোটি ডলারে, যা গত দশ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ ও দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেমিট্যান্সের পালে ফের হাওয়া লাগতে শুরু করে।
আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ডলার, যা চলতি অর্থবছরে এক মাসে সর্বোচ্চ।
এরপর অক্টোবরে (২৩৯ কোটি ডলার) ফের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে, যা নভেম্বরেও (২১৯ কোটি ডলার) অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে ফের ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা ব্র্যান্ড ডোমিনো’জ পিৎজার ব্যবসায়িক যাত্রার ৬৪ বছর উদযাপন করা হবে সোমবার।
প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ডোমিনো’জ পিৎজা তাদের ব্যবসার ৬৪ বছরের অসাধারণ যাত্রা উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল পিৎজাপ্রেমীদের জন্য ডোমিনো’জ পিৎজার ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ৩৬টির বেশি পিৎজার ওপর ৩৬% আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
‘ক্রেতাগণ এই অফার উপভোগ করতে পারবেন ডোমিনো’জ পিৎজার অ্যাপ (অ্যাপ স্টোর ও প্লে স্টোরে উপলব্ধ) অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করে। অফারটি ডাইন-ইন, টেকঅ্যাওয়ে এবং ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ উদযাপন শুধু একটি অফারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এক অসাধারণ যাত্রার ৬৪ বছরে পদার্পণ উদযাপন, যা শুরু হয়েছিল একজন ব্যক্তির স্বপ্ন দিয়ে।
শুরুর গল্প
এই গল্প শুরু হয় ১৯৬০ সালে, যখন টম মোনাহ্যান ও তার ভাই জেমস ৯০০ ডলারে মিশিগানের সিল্যান্টিতে একটি ছোট পিৎজা রেস্টুরেন্ট ডোমিনিক’স পিৎজা কিনে নেন। খাবারের ব্যবসায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এবং সামান্য কিছু মূলধন নিয়ে টম শুরুতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। কিছুদিন পর তার ভাই ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং টম একাই রেস্টুরেন্ট চালাতে থাকেন।
টম প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং নিজে ডেলিভারিও দিতেন।
এক বছরের মধ্যে টম ব্যবহৃত একটি ভক্সওয়াগন বিটল গাড়ির বিনিময়ে তার ভাইয়ের শেয়ার কিনে কোম্পানির সম্পূর্ণ মালিকানা লাভ করেন। এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই ডোমিনো’জ পিৎজার সাধারণ স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বৈশ্বিক পিৎজা সাম্রাজ্যে পরিণত হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে।
টমের লক্ষ্য ছিল একটি পিৎজা ব্রান্ড তৈরি করা, যা শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, বরং সেবার জন্যও পরিচিত হবে। তিনি গরম ও ফ্রেশ পিৎজা ডেলিভারি নিশ্চিত করার দিকে জোর দেন, যা সেই সময়ে এক বিপ্লবী ধারণা ছিল।
১৯৬৫ সালে তিনি ব্যবসার নাম বদলে ‘ডোমিনো’জ পিৎজা’ রাখেন। ডোমিনো'জ-এর লোগোর তিনটি ডট তখনকার তিনটি রেস্টুরেন্টকে নির্দেশ করত এবং তার পরিকল্পনা ছিল ভবিষ্যতে নতুন রেস্টুরেন্ট যোগ হলে লোগোতে একটি ডট বাড়ানো হবে। তবে দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণের ফলে এটি আর সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে ডোমিনো’জ পিৎজা বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজারের বেশি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে এবং প্রতিদিন গ্রাহকদের নিকট লক্ষাধিক পিৎজা পরিবেশন করে।
বাংলাদেশে ডোমিনো’জ পিৎজা
ডোমিনো’জ পিৎজা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে।
সম্প্রতি মিরপুরের সনি স্কয়ারে নিজেদের ৩৬তম রেস্টুরেন্ট খুলে শাখার সংখ্যার দিক দিয়ে রাজধানীর সর্ববৃহৎ রেস্টুরেন্ট চেইনে পরিণত হয়েছে ডোমিনো’জ পিৎজা।
আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জ্বালানি খাতে প্রতি বছর প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। সে হিসাবে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দেশের মানুষের মাথাপিছু ভর্তুকির হার প্রায় ৩ হাজার টাকা।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘জ্বালানির সহনীয় মূল্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রাহকরা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮ দশমিক ৫৫ টাকা দিলেও সরকার তা ১২ থেকে ২৫ টাকা দরে কিনে থাকে। এলএনজি আমদানিতে প্রতি ইউনিট ৭০ টাকা খরচ পড়লেও শিল্প খাতে ৩০ টাকা হারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল্যের এ পার্থক্যটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রতিযোগিতা না থাকা এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে আমাদের অধিক মূল্যে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। আমাদের চার হাজার এমএমসিএফটি গ্যাস প্রয়োজন। অথচ রয়েছে তিন হাজারেরও কম।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, তেল আমদানিতে উন্মুক্ত দরপত্রের কারণে আগের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া গেছে। এর ফলে সাশ্রয় হবে ৩৭০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে আইপিপির পরিবর্তে মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবস্থা চালু হবে।
‘পর্যায়ক্রমে ৪০টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে এবং এ ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান সরকার থেকে করা হবে। সরকারি কিছু সংস্থা যেমন- বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেল, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অনেক জমি আছে। এই জমিগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। সেখানে এ ধরনের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করা হবে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ ব্যবহারিক হবে না। বরং এক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা অধিক কার্যকর। বাংলাদেশকে জ্বালানি আমদানি করতে হয়। তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশকে জ্বালানি স্বনির্ভর করা ও জ্বালানির মূল্য হ্রাসে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল আক্তার, আইএফডিএল বাংলাদেশ পার্টনার ব্যারিস্টার শাহওয়ার জামাল নিজাম এবং বিএসআরএমের হেড অফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি।
আরও পড়ুন:‘বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে আমরা একা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না, ভারতও হবে। ভারত আমাদের বিনা পয়সায় কিছু দেয় না, টাকার বিনিময়ে দেয়। কাজেই তারা যদি রপ্তানি বন্ধ করে তাহলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এর সঙ্গে দু’দেশের লাখ-লাখ লোক জড়িত।’
নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত।
তিনি বলেন, ‘আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। তবে যা হচ্ছে তা সবই রাজনৈতিক।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘কখনও কি শুনেছেন যে সব পলিটিক্যাল পার্টি এক জায়গায় বসে কথা বলেছে। আজ হোক কাল হোক রাজনীতিবিদরা দেশ চালাবেন। সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐকমত্য না হয় তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার কথা সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। একদল একরকম বলবে, আরেক দল সেটা অপোজ করবে। এখন সবাই একত্রে বসেছেন- এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হয়েছে।’
পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ভোমরার কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক হাজার ১০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ভোমরা স্থলবন্দর তার কার্যক্রম পুরোদমে চালাতে পারবে।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি আবু হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন এর আগে ভোমরা স্থল বন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় মাইলফলক সৃষ্টিতে ডায়াবেটিসজনিত চ্যালেঞ্জগুলোকে অতিক্রম করার বড় উদ্যোগ নিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর অভিজাত ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে হওয়া এমলিনো এক্সিমপ্লিফাই ট্রায়ালের সাফল্যের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদেরও জানানো হয় শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
এ আয়োজনে দেশের খ্যাতনামা ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
তারা জানান, এমলিনো বাংলাদেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে কিডনি রক্ষার কাজও করে থাকে।
ওই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ.কে আজাদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন বারডেম একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সফল এ ট্রায়ালের প্রধান গবেষক ডা. মির্জা শরিফুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রফেসর ডা. মো. হাফিজুর রহমান, প্রফেসর ডা. মো. আবদুল জলিল আনসারী ও প্রফেসর ডা. অজিত কুমার পাল।
সম্মানিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলে ছিলেন প্রফেসর ডা. মো. ফিরোজ আমিন, ডা. শাহজাদা সেলিম, ডা. ফারিয়া আফসানা এবং ডা. এম. সাইফুদ্দিনসহ অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
ডায়াবেটিস চিকিৎসায় কার্যকর ও সময়োপযোগী ওষুধ মানুষের হাতে তুলে দিতে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে আসছে। এমলিনো এক্সিমপ্লিফাই ট্রায়াল সেই ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য