নতুন বিনিয়োগকারী আসছেন না পুঁজিবাজারে। পুরনোরাও বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কায়। অনেকে আছেন বিনিয়োগ খোয়ানোর যন্ত্রণায়। দিন দিন শেয়ারবাজারবিমুখ হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
দেশের পুঁজিবাজারে ২০১৫ সালের জুন মাসের শেষে বিনিয়োগকারী ৩১ লাখ ৯৫ হাজার ছাড়িয়েছিল। বর্তমানে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৫৬ হাজার। সে হিসাবে গত ৮ বছরে বিনিয়োগকারী কমেছে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার বা ৪৫ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীদের এমন বাজার-বিমুখতার পেছনে পুঁজিবাজারের প্রতি তাদের অনাস্থাই প্রধানত দায়ী বলে মনে করছেন বাজার-বিশ্লেষকরা। এছাড়া শেয়ার নিয়ে কারসাজি, রেগুলেটরদের হুটহাট সিদ্ধান্তসহ বেশ কিছু সমস্যার কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এসব সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পুঁজিবাজারে কখনোই বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়বে না বলে মনে করছেন তারা।
তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্তৃপক্ষ বলছেন অন্য কথা। তারা বলছেন, আইপিওতে (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) প্রত্যাশিত মুনাফা না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে। এ ছাড়া দীর্ঘ মন্দায় থাকায় অনেকে পুঁজিবাজার থেকে বেরিয়ে গেছে।
ডিএসই বলছে, ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে প্রায় বত্রিশ লাখ বিনিয়োগকারী ছিল। মূলত আইপিওকে কেন্দ্র করে এত বেড়েছিল। কিন্তু আইপিওতে প্রত্যাশিত লাভ না পাওয়ায় বিও সংখ্যা কমতে থাকে। অবশ্য অনেকে লোকসানে পড়ে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন। তবে তাদের সংখ্যাও কম না।
লোকসানে পড়ে পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন সেগুনবাগিচায় বসবাসকারী বিনিয়োগকারী সুমাইয়া মেরি। বর্তমানে ব্যাংক কর্মকর্তা। রয়েল ক্যাপিটালের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হোল্ডার তিনি, বিনিয়োগ করেন পুঁজিবাজারে ৩ লাখ টাকা। তিনি বলেন, ২০১০ সালের মাঝামাঝিতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে লাভেই ছিলাম। কিন্তু ওই বছর ধসে আমার পুঁজির ৩০ শতাংশ হারিয়েছি। এরপর বাজার থেকে বের হয়নি। ভেবেছি উত্থান-পতন থাকবে। অপেক্ষা করেছি উত্থানের। লোকসান কমাতে ব্যাংক শেয়ারের প্রতি নজর দিয়েছি। পরে হাতে ধারণ করা ৭৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রয় করে ব্যাংকের শেয়ার কিনেছি। কিন্তু ব্যাংকের শেয়ার কিনেও লোকসান বৃত্ত কমাতে পারিনি। পরে দিশেহারা হয়ে ২০২৯ সালে বাজার থেকে বেরিয়ে এসেছি। বের হওয়ার সময় ২ লাখ নিয়ে বের হয়েছি।
মতিঝিলে কথা হয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক হুমায়ুন রশিদের সঙ্গে। তিনি প্রাইম সিকিউরিটিজের বিওহোল্ডার ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েক ধাপে মোট ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার একটা স্মার্ট বিনিয়োগ জায়গা। সহজে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা করা যায়। এটা ভেবেই ২০১৪ সালে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ করি। প্রথম ভালো করি। এক বছরের মধ্যেই ২০ শতাংশ লাভের মুখ দেখেছি। মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে পরে আরো বিনিয়োগ করি। সেই টাকা দিয়ে বেশকিছু ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনি। এতে আমার সর্বনাশ শুরু হলো। এরপর থেকে লোকসান গুনতে হলো। ২০১৯ সালের আমার পুঁজির ২৮ শতাংশ লোকসান গুনতে হয়। পরে এই তালিকা আরও বড় হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে হারানোর চাপ না নিতে পেরে ৩১ শতাংশ পুঁজি হারিয়ে বের হয়ে আসি ২০২২ সালের শেষ দিকে। পুঁজিবাজার বিনিয়োগ করে পুঁজি হারিয়ে রেব হয়ে এসেছে আবিদা, মনজুরুলসহ অনেক বিনিয়োগকারী।
কথা হয় চাকরিজীবী জোবায়দা আন্জুমানের সঙ্গে। তিনি লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের বিওহোল্ডার। কয়েক ধাপে ছয় লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। সম্প্রতি কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার কিনে বর্তমানে পুঁজির ২২ শতাংশ হারিয়ে বসে আছেন তিনি। ভাবছেন লোকসানেই বিক্রি করে বের হবেন। কিন্তু হতে পারছেন না। ফ্লোর প্রাইস আরোপের কারণে তার হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। তার ধারণ করা কোম্পানির ৭০ শতাংশ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।
পুঁজি হারিয়ে ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে এ রকম অগণিত বিনিয়োগকারী। এরকম হারানোর শত কষ্ট সহ্য করে নীরবে সুযোগ পেলেই বাজার ছাড়ছেন। কেন ছাড়ছেন, তাদের কথা শোনার সময় হয় না নিয়ন্ত্রকদের। তারা (নিয়ন্ত্রক) এখন দেশের বিনিয়োগকারীদের হারিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারী খুঁজছেন। কিন্তু পুঁজিবাজারের এমন পরিস্থিতি ঠিক করার কথা ভবছেন না। নিয়ন্ত্রকরা বিদেশে গিয়ে রোড শো করছেন বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে। কিন্তু দেশি বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে আনতে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড নেই তাদের। পুঁজিবাজারে প্রতি নিয়ন্ত্রকদের এ ধরনের বৈরী আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাজার থেকে বেরিয়ে আসা বিনিয়োগকারীরা। বলছেন, গত আট বছরে ১৪ লাখের বেশি বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজার থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখনো বের হচ্ছে। সবাই কষ্ট পেয়ে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু এসবে টনক নড়ছে না শেয়ারবাজার রেগুলেটরদের।
পুঁজিবাজার প্রাণশক্তি হলো বিনিয়োগকারী জানিয়ে বাজার বিশ্লেষক ও অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ১৮ কোটি জনগণের মধ্যে পুঁজিবাজারে সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী, যা অতি নগণ্য।
পুঁজি হারিয়ে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন বা ছাড়ছেন, এটা শুনতে খারাপ লাগছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা কেন বাজার ছাড়ছেন এটা রেগুলেটরদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। তাদেরই বের হওয়ার কারণ চিহ্নিত করতে হবে। তার সমাধানে সকল প্রকার কাজ করতে হবে। কারণ পুঁজি হারিয়ে দেশি বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, এটা বাইরে গেলে বিদেশি বিনিয়োগ আসার পথ রুগ্ণ হয়ে পড়বে। তখন দেখা যাবে, এত অর্থ খরচ করে রোড শো কোনো কাজেই লাগবে না।
বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি জানিয়ে ডিএসইর চিফ অপারেটিং অফিসার সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, যেকোনো বিষয়ে আমরা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করছি। পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরও বলেন, আইপিওর কারণে অনেকেই বিও করতেন। এখন আইপিওতে আগের মতো লাভ পায় না। সে কারণে ওই বিওগুলো নিরুৎসাহী হয়ে ঝরে গেছে। বর্তমান বাজারের গভীরতা বেড়েছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়ছে।
বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা কথা জানিয়ে সাইফুর রহমান বলেন, দিন দিন পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারী কমছে। আবার অনেক বিনিয়োগকারী বাজারে বিনিয়োগ না করে পর্যবেক্ষণ করছে।
বিশ্বে অর্থনীতির মন্দা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই মন্দার প্রভাব আমাদের পুঁজিবাজারে পড়েছে। এ ছাড়া রেগুলেটরদের বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইস আরোপে অনেক বিনিয়োগকারীকে শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
শিগগিরই ফ্লোর প্রাইস বন্ধ জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এটি বন্ধের ব্যাপারে বিএসইসিকে পরামর্শসহ অনুরোধ করেছি। এ ব্যাপারে লিখিত চিঠি দিয়েছি। কিন্তু বিএসইসি তা কর্ণপাত করেনি। তারা (বিএসইসি) বলছে, সময় হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেবে। কিন্তু কবে তুলবে, সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
বিনিয়োগকারী বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পুঁজিবাজর স্পর্শকাতর। এটাতে নানা ঝুঁকি আছে। আমরা সেসব ঝুঁকি এড়িয়ে কীভাবে বিনিয়োগ করবেন সেই বিষয়ে কর্মশালা করছি। আমরা এক্সপার্ট দিয়ে পুঁজিবাজারের ঝুঁকি বিষয়ে যাবতীয় জ্ঞান দিয়ে আসছি বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে বাজার প্রসঙ্গে ভালো বোঝেন।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে বিএসইসি নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করেছে। সেই অনুসারে কাজও করেছে। বর্তমান বাজারে শক্তিশালী ভিত তৈরি হয়েছে। কেউ কিছু করে পার পাবে না এখন। বাজারে গভীরতা বেড়েছে। আশা করছি, বিনিয়োগকারীরা তার ফল পাবে। সামনে বিনিয়োগকারী আস্থা আরও বাড়বে।
আইপিও কারণে অতীতে অনেকেই বিও খুলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন তারা বেশি লাভ করতে পারছেন না আইপিও থেকে। এতে সেইসব বিনিয়োগকারী কমে গেছে। এ ছাড়া বড় ধস, বিশ্বমন্দা, করোনা নানা কিছুর কারণে পুঁজিবাজারে প্রভাব পড়েছে। এতে বিনিয়োগকারী কিছুটা বিনিয়োগ ক্ষেত্রে নিরুৎসাহী হয়ে ভাটা পড়তে পারে। একই প্রসঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে স্বার্থে ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়েছে। মন্দা কাটলে এটা তুলে নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও আস্থা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক কাজ শেষ করেছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। এখন পুঁজিবাজারের ভিত আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। পুঁজিবাজারের মূলধন সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সূচকও ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। লেনদেনও হাজার কোটি টাকার ঘরে।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
মন্তব্য