ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে আগস্ট মাসের চালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টাউন হলে রোববার এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘বাজারে ডিমের দাম কত হবে, তা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করে দিলে আমাদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ডিমের বাজার হঠাৎ অস্থিতিশীল হওয়ায় ভোক্তা অধিকার রাতে-দিনে রাজধানীর বিভিন্ন আড়তে অভিযান চালাচ্ছে এবং জরিমানা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চাইলেই ডিম আমদানি করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ইমপোর্ট পারমিশন লাগবে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া ডিম আমদানি করার সুযোগ নেই।
‘আমি আশা করি খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গ্রিন সিগন্যাল দিলেই ডিম আমদানির উদ্যোগ নেয়া হবে।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি জানান, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চিনি আমদানি করা ছাড়াও স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হয়। কারণ অনেক সময় চিনি দেশে এসে পৌঁছাতে দেরি হয়। আবার জাহাজ বন্দরে এলে নানা জটিলতায় খালাসে সময় লাগে। এতে করে চাহিদার জোগান দিতে বেগ পেতে হয়। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার থেকে চিনি কেনা হয়ে থাকে।
ভারত থেকে কোটায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, চলতি মাসেই তিনি ভারত সফরে গিয়ে সেই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। তখন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি জানান, টিসিবির মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ডাল, চিনি ও তেল বিক্রি করছে। গত মাস থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে।
ভারত সরকারের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় বাংলাদেশে পণ্যটির বাজার আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে শনিবার সকালে ঘুরে দেখা যায়, দুই দিন আগে যে পেঁয়াজের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, মাত্র এক দিনের ব্যবধানে আজ সে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে।
বেনাপোল বাজারের পাইকারি বিক্রেতা সুরুজ মিয়া বলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ যেভাবে কিনে থাকি, সেভাবেই বিক্রি করে থাকি। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার নিচে ছিল। ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় সে পেঁয়াজ আজ বিক্রি করছি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরে।’
দেশে যথেষ্ট পেঁয়াজ থাকলেও কিছু আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে রেখেছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল কাস্টমস জানায়, গত সপ্তাহে প্রতি টন পেঁয়াজের এলসি মূল্য ছিল ৮০০ ডলার। সর্বশেষ ৫৯ টনসহ গত মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৃহস্পতিবার ভারত সরকার সে দেশে সংকট দেখিয়ে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়, যা শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন:পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ সারা দেশে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘আজ ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখ ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
‘উল্লেখ্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে অধিদপ্তরের চারজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে চারটি পৃথক টিম বাজার অভিযান পরিচালনা করবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শ্যামবাজার এলাকায় অভিযান চালাবেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকায় অভিযানে থাকবেন ভোক্তা-অধিকারের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান। এর বাইরে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট এলাকায় অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুস সালাম এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযানে থাকবেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম।
ভারত বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা কার্যকর হয় শুক্রবার। এরই মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বাড়তে শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গরুর মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকি করতে শুক্রবার সারা দেশে অভিযান চালাবে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখ ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক গরুর মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকির লক্ষ্যে বাজার অভিযান পরিচালনা করা হবে।
‘উল্লেখ্য ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে অধিদপ্তরের দুইজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে দুটি পৃথক টিম বাজার অভিযান পরিচালনা করবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় অভিযান চালাবেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকার সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা ও অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবদুস সালাম।
শীতের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের বাজারে। সরবরাহ বাড়ায় প্রতি বছরের মতো এবারও কমতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজির দাম। যদিও এখনও তা ক্রেতাদের হাতের নাগালে আসেনি বলেই অভিযোগ সচেতন ক্রেতাদের।
সেই সঙ্গে বাজারে এখন আলোচিত হয়ে দাঁড়িয়েছে গরুর মাংসের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ার বিষয়টি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় এ মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংসের প্রভাবে কমেছে মাছ, মুরগী এমনকি ডিমের দামও।
বাজারে এমন স্বস্তির মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসার খবর জানালো বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
সরকারি এ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ সদ্য শেষ হওয়া মাসে কোনো পণ্য কিনতে গত বছরের নভেম্বর থেকে প্রায় সাড়ে নয় শতাংশ বাড়তি দাম গুনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এর আগে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে নেয়া হয় নীতি সুদহার বাড়ানোর মতো সিদ্ধান্ত। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয় ডিসেম্বরের শেষে মূল্যস্ফীতি আট শতাংশের ঘরে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নভেম্বরের হিসেবে দেখা যায়, শুধু খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর আগের মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। হিসেবে খানিকটা কমলেও এখনও সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি। এ ছাড়া নভেম্বরে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসের হিসেবে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ বেশি দেখা গেছে। অক্টোবরেও শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি বেশি লক্ষ্য করা যায়। নভেম্বরে শুধু শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ, বিপরীতে গ্রামাঞ্চলে যা ছিল ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ।
অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষকে বাড়তি দামে অনেক পণ্য কিনতে হচ্ছে।
বিবিএসের হিসেবে আরও বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে শুধু খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা শহরে ছিল ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি শহর ও গ্রাম দুই জায়গাতেই ছিল অনেকটা সহনীয়।
আরও পড়ুন:সরাসরি কৃষকের খেত থেকে সবজি কিনে শহর এবং গ্রামের প্রতিটি মোড়ে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই তাদের এই কর্মসূচি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার থেকে দেশের প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি নগরে, প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি ইউনিয়নে, প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি শহর-বন্দর-গঞ্জে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা ন্যায্যমূল্যে সবজি বিতরণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-মাদ্রাসা-স্কুলে পড়া ছাত্রলীগের কর্মীরা ক্লাস-পরীক্ষা শেষে পাড়া-মহল্লায়, মেডিক্যাল কলেজ- ইঞ্জিনিয়ারিং-কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগ কর্মীরা শহর-গ্রামের প্রতিটি মোড়ে সবজি বিতরণ করবে।
এতে বলা হয়, রাজনীতির নামে সন্ত্রাস করে, মানবতার নামে মানুষ হত্যা করে, ভোটের নামে ভাতের থালায় টান দিয়ে, বর্জনের নামে বিসর্জন দিয়ে, সমতার নামে সম্পদ ধ্বংস করে, গণতন্ত্রের নামে হরতাল-অবরোধ দিয়ে, দেশ বিক্রি করে হলেও ক্ষমতায় যাবার লোভে-ক্রোধে বিএনপি-জামায়াত চক্র দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাশাপাশি বিশ্ব মোড়লেরা যুদ্ধ বাধিয়ে, হামলা করে, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে, তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে, মুদ্রামান কমিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে পৃথিবীব্যাপী যে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে তা থেকে এ দেশের জনগণ বিচ্ছিন্ন নয়। এমতাবস্থায়, বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার একমাত্র ঠিকানা, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা সরাসরি কৃষকের ক্ষেত থেকে সবজি কিনে তা ন্যায্যমূল্যে বিতরণ করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা যেমন যুদ্ধে গেছে, হাসিমুখে সতের হাজার জীবন উৎসর্গ করেছে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে যেমন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে, করোনা মহামারিতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে, বই-খাতা-কলম হাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাস দূর করেছে, গণতন্ত্র ও মুক্তির সংগ্রামে ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিয়েছে তেমনি এবারও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি করে মানুষের জীবনকে সহজ শান্তি এবং সুখের করতে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন:খোলা ট্রাকের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকায় ভর্তুকি মূল্যে আলু, পেঁয়াজ, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রি করবে সরকার। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের বাইরে রাজধানীর স্বল্প আয়ের মানুষরা এসব পণ্য কিনতে পারবেন।
মঙ্গলবার থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ৩০টি খোলা ট্রাকের মাধ্যমে এসব নিত্যপণ্য বিক্রি করা হবে। এতে ৯ হাজার পরিবার উপকৃত হবেন। সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। খবর বাসসের
তিনি বলেন, মঙ্গলবার থেকে রাজধানীতে ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, আলু ও পেঁয়াজ টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। একেকজন ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি আলু ও ২ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। প্রতিটি ট্রাক থেকে প্রায় ৩০০ জনকে এ পণ্য দেয়া হবে। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের বাইরে এ পণ্য বিক্রি হবে। এর ফলে নতুন করে ৯ হাজার পরিবার এ সুবিধায় যুক্ত হবে।
তিনি জানান, খোলা ট্রাক থেকে ৬০ টাকা কেজিতে ডাল, ৭০ টাকায় চিনি, ৩০ টাকায় আলু, ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ এবং ১০০ টাকা লিটার দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে। আপাতত কয়েকদিন চিনি বিক্রি করা হবে না। চিনি আমদানি করা গেলে এই কর্মসূচিতে চিনিও যুক্ত হবে।
ঢাকায় দৈনিক ৯ হাজার পরিবারের কাছে খোলা ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে উল্লেখ করে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘টিসিবির ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর বাইরে যে কেউ এই পণ্য কিনতে পারবেন। আমরা এসব পণ্যের সংগ্রহ বাড়াতে পারলে বিক্রির আওতা আরও বাড়ানো হবে।’
তিনি বলেন, আপাতত সব কর্মদিবসে এই বিক্রয় কার্যক্রম চলমান থাকবে। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকবে। তবে পরবর্তীতে সপ্তাহের সব দিন কর্মসূচি চলবে।
তিনি জানান, একেক এলাকায় একেক দিন পণ্য বিক্রি করা হবে, যাতে রাজধানীর সব এলাকার মানুষ ন্যাষ্যামূল্যের এসব পণ্য পায়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলারের বিনিময় হারের দাম বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য সচিব।
বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ হাজার ৯৫ টন আলু আমদানি হয়েছে। ২ লাখ টন আলুর আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ২৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৬২ হাজার ডিম আমদানি হয়েছে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন,‘আমাদের উদ্দেশ্য ডিম আমদানি না, ডিমের দাম কমানো। দাম কমে গেলে আমদানি কম হলেও অসুবিধা নেই। তবে বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আলু ও ডিম আমদানি হবে।’
বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘ডিম ও আলু আমদানি হওয়ায় উল্লেখযোগ্য ফল আমরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা গেছে, কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৭ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হবে। জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু বের হবে।’
টিসিবি কার্ডধারীদের এখন আলু দেয়া হবে না জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, জেলা প্রশাসকরা সোমবার থেকে সরকারি দাম অর্থাৎ ৩৬ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি নিশ্চিত করবেন। তেল, চিনি, ডাল, আলু এসব নিত্যপণ্য আমদানি করতে যেন ডলারের সমস্যা না হয়,সরকারের পক্ষ থেকে ব্যংকসহ সংশ্লিষ্টদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাজারে আগুন। দিন দিন বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো কমেনি কোনো পণ্যের দাম। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
ক্রেতাদের বলছেন, দিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে মাছ-মাংসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় স্বস্তিতে নেই তারা।
শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না। অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে। এ ছাড়া মাছের দামও কেজিতে বেড়েছে অন্তত ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
শুধু তাই নয়, আমদানির পরেও ডিমের বাজারের অস্থিরতা কাটেনি। বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে ডিম। শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের একটি ডিম খেতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এদিকে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে বাজারে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, ক্ষেতে সবজি পচে নষ্ট হচ্ছে। সরবরাহ বিঘ্ন হওয়ায় দাম বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোল বেগুন কেজিতে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং লম্বা বেগুন কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা, কচুরমুখি, বরবটি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে বাজারগুলোতে। কম দামের মধ্যে মুলার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা আর পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করছে বিক্রেতারা।
মাছ মাংসও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে। ১০ টাকার মতো বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছের কেজিও এখন ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা। রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য