এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ফিক্স (ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন এক্সচেঞ্জ) সনদ অর্জন করেছে।
এতে নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও সহজে লেনদেন করার সুযোগ তৈরি করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে ১১ ও ১৪ জুন বিভিন্ন টেস্ট পরিচালনা করা হয়। এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডকে এ সনদ দেয়ার আগে ইউজার এক্সেপটেন্স টেস্টিং এবং আরও কিছু সামঞ্জস্যপূর্ণ যাচাই-বাছাই করা হয়।
এ সব টেস্টিং কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটি। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৪ জুলাই এনবিএল সিকিউরিটিজ ডিএসইর ফিক্স সার্টিফিকেট অর্জন করেছে।
ভিন্ন ভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে সম্ভাব্য সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে এ সনদ অর্জন করল এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
ডিএসই আইটি ও সিস্টেম টিম, এসকে অ্যাডভাইজরি এলএলসি ও টেকেট্রন ভেঞ্চার্স লিমিটেড (টিভিএল) পুরো প্রক্রিয়া চলাকালে সার্বিক সহযোগিতা করে এবং ডিএসই টিম সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সব ধরনের সহায়তা করে।
নিজস্ব ওএমএস (অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) চালু করার ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর জন্য ডিএসই ফিক্স সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। এর মাধ্যমে ফার্মগুলো রিয়েল-টাইমে সরাসরি ডিএসই ট্রেডিং ইঞ্জিনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীরাও বাসায় বসে সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়কভাবে লেনদেন করতে পারবে।
এ সিস্টেম যথাযথভাবে ডিএসইর মার্কেট ডেটা ব্রডকাস্ট পরিচালনা করতে এবং যে কোনো ধরনের ব্যত্যয় এড়াতে সহায়ক হবে। এ সনদের মধ্য দিয়ে এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের গ্রাহকরা এখন থেকে যে কোনো স্থান থেকে লেনদেন করার সুযোগ পাবেন।
সনদপ্রাপ্তির বিষয়ে এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) জোবায়েদ আল মামুন হাসান বলেন, ‘এ সার্টিফিকেশন অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করায় ডিএসই আইটি, সিস্টেম ও ম্যানেজমেন্ট টিমের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে হলে পুঁজিবাজারের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি খুব জরুরি। এই সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। এতে করে তারা দেশের যে কোনো স্থান থেকে লেনদেন করার সুযোগ পাবেন।’
সারা দেশের নতুন বিনিয়োগকারীদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করাই এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন:অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপের সুফল মিলতে শুরু করেছে। করোনা মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ ধরে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয় ডলার সংকট। বিশ্ব বাণিজ্যের বড় অংশই যেহেতু নিয়ন্ত্রণ হয় ডলারে, সেহেতু যুদ্ধ ও করোনা মহামারিকে পুঁজি করে বাড়তে থাকে মুদ্রাটির চাহিদা।
করোনা মহামারি-পরবর্তী বাংলাদেশেও বেড়ে যায় আমদানি চাহিদা। তাতে করে প্রয়োজন বাড়ে ডলারের। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে দফায় দফায় বিক্রি করতে হয়েছে ডলার। ফলে দুই বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ নেমে আসে প্রায় অর্ধেকে।
তবে ডলার সংকট কিংবা রিজার্ভ কমে যাওয়ার দুশ্চিন্তা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বিশেষ করে গভর্নর হিসেবে আবদুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পরই অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে নেয়া হয় বেশ কিছু পদক্ষেপ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিলাসি পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করে নির্দেশনা দেয় ব্যাংকগুলোকে। সেসব পদক্ষেপের সুফল মিলতে শুরু করেছে। আমদানি ও রপ্তানির ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে তাদের নেয়া পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, গেল চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমে হয়েছে ৩৮০ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ৯৬২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছরের চার মাসের হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬০ দশমিক ৫০ শতাংশ।
তবে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি, ১৮২ কোটি ডলার। অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও সার আমদানির প্রভাবে এটা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্য ঘাটতি কমার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে আমদানি নিয়ন্ত্রণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে দেশে মোট আমদানি হয়েছে ২ হাজার ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে তা ছিলো ২ হাজার ৫৫১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে চার মাসে আমদানি কমেছে ২০ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অন্যদিকে একই সময়ে রপ্তানি থেকে মোট আয় এসেছে ১ হাজার ৬৪৬ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ছিলো ১ হাজার ৫৮৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ রপ্তানিতে বড় কোনো প্রবৃদ্ধি না হলেও বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি বাড়ানো গেলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কোনো আমদানিকারক যেন পণ্যের বাড়তি দাম দেখিয়ে আমদানি করতে না পারে সেদিকেও রয়েছে কঠোর নজরদারি।
‘প্রতিটি ব্যাংককে আমরা সতর্কতার সঙ্গে আমদানির ঋণপত্র খুলতে বলেছি। আমদানিতে যেন কোনোভাবেই কোনো মিথ্যা তথ্য না আসে সেদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নজরদারি করছে। শুধু তাই নয়, আমদানির আড়ালে যেন কোনোভাবেই অর্থ পাচার না হয় সেদিকেও আমাদের নজরদারি রয়েছে।’
তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্ববাজারে আমদানি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। এছাড়া দাম বাড়তি মনে হলে তা সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এজন্য আমদানি কিছুটা কমে এসেছে।
আমদানি কমানোর প্রবণতা অব্যাহত থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা কোনো ভুল দামে পণ্য আমদানি করতে দেবে না। আমার মনে হয় এতে আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ঘাটতি কমে আসবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সার্বিক বাণিজ্য ঘাটতি কমে ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এটা ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে ছিলো ১ হাজার ৭১৫ কোটি ডলার বা ১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায় ২০২০-২১ অর্থবছরে। করোনা মহামারি শুরুর প্রথম বছরে বাণিজ্য ঘাটতি সব রেকর্ড ভেঙে ছাড়িয়ে যায় ৩ হাজার ৩২৫ কোটি ডলারের ঘর। সে হিসাবে গত অর্থবছরে তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় অর্ধেক হয় বাণিজ্য ঘাটতি। চলতি অর্থবছর শেষে তা আরও কমে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তবে এর প্রভাবে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি কমে না আসে সেদিকে নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও দ্য ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অফ বাংলাদেশের (আইসিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন এফসিএ বলেন, ‘রিজার্ভের কথা চিন্তা করে আমদানি কমিয়ে আনতে হবে; সেটা ধীরে ধীরে হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকরা কাঁচামাল আমদানি করতে না পারলে রপ্তানিও কমে আসবে।’
তার পরামর্শ, আমদানির আড়ালে যেন অর্থ পাচার না হয় সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ল্যান্ড ডেভেলপার, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা হাউজিং জিতল মর্যাদাপূর্ণ ‘ওয়ার্ল্ড বিজনেস আউটলুক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’। এই পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে বসুন্ধরা হাউজিং বাংলাদেশের সবচেয়ে উদ্ভাবনী ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি পেল যা রিয়েল এস্টেট সেক্টরের জন্য নতুন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
গত ২৫ নভেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংককের কুইন্স পার্কের ম্যারিয়ট মারকুইস-এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এই পুরস্কারটি ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রমোশন (ডিআইটিপি) থেকে তুলে দেন নাটিয়া সুচিন্দা এবং পুরস্কারটি গ্রহণ করেন জনাব বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান (বিক্রয় ও বিপণন), বসুন্ধরা গ্রুপ।
এই পুরস্কারটি একটি আধুনিক এবং গতিশীল জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরির জন্য বসুন্ধরা হাউজিং-এর অবদানকে তুলে ধরে, যা ঢাকায় প্রথম পরিকল্পিত এবং একমাত্র রাজউক-অনুমোদিত আধুনিক স্মার্ট সিটি।
শুধু বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এমন কোনো শর্ত বা ধারা অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করে না বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা অতীতে এমন উদাহরণ দেখেছি, যেখানে ক্রেতার কাছ থেকে এলসির শর্ত উদ্ধৃত করে এটিকে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে সাধারণীকরণ করা হয়েছে।’
বিজিএমইএ’র এক সদস্যকে বিদেশি ক্রেতার কাছ থেকে লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) অনুলিপি অ্যাসোসিয়েশনের নজরে এসেছে।
বিদেশি ক্রেতার কাছ থেকে এলসি অনুলিপিতে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোনো দেশ, অঞ্চল বা দলের সঙ্গে লেনদেন করব না। নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো বিলম্ব, অকার্যকারিতা বা তথ্য প্রকাশের জন্য আমরা দায়বদ্ধ নই।’
বিজিএমইএ বলেছে, ‘এই ধারার ব্যাখ্যায় উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে, যা সঠিক নয়। উল্লিখিত ধারার এলসি গ্রহণকারী সদস্যদের সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাখ্যা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘যদি এই ধারা শুধু বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের পক্ষে জারি করা এলসিগুলোতে প্রদর্শিত হয়, তবে এটি নৈতিকতার লঙ্ঘন করে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সদস্য কারখানাগুলোকে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রয়োজনে এ ধরনের ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা/পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিজিএমইএ বলছে, ‘বৈশ্বিক বাণিজ্য দৃশ্যপট দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানবাধিকার ও পরিবেশগত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে, অন্যদিকে ভূ-রাজনৈতিক বিষয়গুলোও বাণিজ্যকে প্রভাবিত করছে।
‘যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাই বাণিজ্য নীতির যেকোনো উন্নয়ন আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে।’
বিজিএমইএ বলেছে, এটি লক্ষ্য করা উচিত, এলসি একটি নির্দিষ্ট ক্রেতার কাছ থেকে এসেছিল এবং এটি কোনো দেশের দ্বারা সংবিধিবদ্ধ আদেশ বা নোটিশ নয়। সুতরাং এটিকে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।
‘আমরা বুঝতে পারি মানবাধিকার ও পরিবেশগত যথাযথ অধ্যয়ন আমাদের অনেক রপ্তানি বাজারের জন্য ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার ও উচ্চ শ্রমমানকে এগিয়ে নেয়ার জন্য চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর সই হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের স্মারকটি চলমান বিশ্বব্যাপী শ্রম প্রচারাভিযানে উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব বহন করেছে। কারণ এটির সম্পৃক্ততা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশ অনন্য বলে মনে হয়।’
বিজিএমইএ’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা এর চেতনাকে সম্মান করি এবং মূল নীতিগুলোর সঙ্গে একটি সামঞ্জস্য খুঁজে পাই। যদিও স্মারকলিপিতে কূটনৈতিক ও সহায়তা সরঞ্জামের পূর্ণ পরিসর অন্তর্ভুক্ত এবং যথাযথভাবে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা, ভিসা বিধিনিষেধ ও অন্যান্য পদক্ষেপসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। তবে এটি বাংলাদেশের জন্য গৃহীত হয়নি, বরং এটি শ্রমিকদের অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা অবস্থান।’
আরও পড়ুন:সরকার পোশাক শিল্পের ধ্বংস ডেকে আনছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে।
সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “ভোটারবিহীন গণবিরোধী সরকার বাংলাদেশকে উপসংহারহীন পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করছে। সমস্ত অর্থনৈতিক সেক্টর ধ্বংসের পর এবার তাদের কুনজর পড়েছে বৈদেশিক রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত পোশাক শিল্পের দিকে। সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। এমনিতেই শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজন ও দলের লোকরাও এত টাকা বিদেশে পাচার করেছে যে, তাদের ১৪ জেনারেশন বসে বসে খেতে পারবে।
“ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকার সমর্থক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী শোষণ নীতির পক্ষে সরকারের অবস্থান, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে হত্যা, নিষ্পেষণ, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত এবং প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে এই সর্ববৃহৎ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেয়া হয়েছে। শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবধারিত বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা। গতকাল পোশাক খাতে আতঙ্কের বিষয়টি মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আসলে বিদেশিরা পণ্য নেবে না। ইতিমধ্যে পণ্যের আদেশদাতারা এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন ঋণপত্র খোলার সময়। এমনকি পণ্য জাহাজীকরণের পর নিষেধাজ্ঞা আসলেও পণ্য নেবে না তারা।”
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে এ খাত ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে। পোশাক শিল্পের মালিকদের ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে উদ্ভট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বালখিল্য প্রদর্শন করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বললেই পোশাক রপ্তানি বন্ধ হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিলে কিছুই হবে না। যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে আমরাও দেব।’ এমন পরিস্থিতির মধ্যে লক্ষ লক্ষ গরিবের রুটি রুজির একমাত্র কর্মক্ষেত্র গার্মেন্টস শিল্পের ধ্বংস ডেকে আনছে গণবিচ্ছিন্ন নিশিরাতের সরকার।
“কারণ দেশের মোট পোশাক রপ্তানির ৮২ শতাংশ যায় ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোয়। এসব দেশে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। মানুষের হাতে ভিক্ষার ঝুলি তুলে দিতে পারবেন শেখ হাসিনা। জনগণ বিশ্বাস করে, রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা এখন অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চায় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
আরও পড়ুন:তৈরি পোশাকশিল্প ও এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ আরও গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূত পিটার হাস।
বাংলাদেশ তুলা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতের জন্য সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা একটি বস্তুনিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রমাণভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতির সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রদর্শন করেছে, যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের সামনে থাকা গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করবে।’ খবর ইউএনবির।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য একটি স্থিতিশীল ও প্রত্যাশিত পরিচালনার পরিবেশের জন্য শক্তিশালী শ্রম আইন ও তাদের বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা যখন তৈরি পোশাক খাতের দিকে তাকাই, বাংলাদেশে আমাদের মিশনের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো উন্নত শ্রমমানের মাধ্যমে উপলব্ধ টেকসই এবং বিস্তৃতভাবে ভাগ করা সমৃদ্ধি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি আমাকে শ্রম অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করায়।’
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন, গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এম্পাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শীর্ষক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নতুন স্মারকলিপি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন এ বৈশ্বিক শ্রম কৌশলটি সব আমেরিকান সরকারি সংস্থাগুলোকে সরকার, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংগঠন এবং সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার প্রচার ও সুরক্ষার জন্য সম্পৃক্ততা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে।’
আরও পড়ুন:মহান বিজয়ের মাসে পদ্মা ব্যাংকের জয়োৎসব শুরু হলো নতুন পণ্য বিজয় ৭১-এর মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে।
বিজয় আয়োজনে সবার চেতনায় ধ্বনিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথার স্মৃতিচারণ আর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তেমনি পদ্মা ব্যাংকও বিজয় উদযাপন করতে, মাত্র ৭১ দিনে ৯% হারে ফিক্সড ডিপোজিট করার সুযোগ নিয়ে এলো গ্রাহকদের জন্য।
সম্প্রতি এই স্কিমটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় গুলশানের হেড অফিসে।
মাত্র ৭১ দিনে এক বছরের মুনাফা উপভোগ করবেন গ্রাহকরা। যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনন্য।
এটিকে আরেকটি বিজয় উল্লেখ করে ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং হেড মীর শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিজয় মানেই উৎসব। এত স্বল্প সময়ে ফিক্সড ডিপোজিটের কথা কিছুদিন আগেও চিন্তা করতে পারতেন না কোনো গ্রাহক। আর পদ্মা ব্যাংকের হাত ধরে সেটা এখন বাস্তব।’
আগামীতে গ্রাহকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় নানান স্কিম নিয়ে আসবে বলে ঘোষণা দেন শফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়াও সম্প্রতি মাসিক সেভিংস স্কিম নামে প্রতি মাসে সঞ্চয় স্কিম এনেছে পদ্মা ব্যাংক। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা কিস্তিতে তিন, পাঁচ, আট এবং দশ বছরের জন্য খোলা যাবে এই অ্যাকাউন্ট। ১১% থেকে ১৪% হারে লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে এই হিসাবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা সফররত সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বদর আই আলবদরের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে বুধবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দূরদর্শী নেতার মধ্যে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে হোটেল লে মেরিডিয়েন ঢাকা’র চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) হাসান আহমেদ ও জেনারেল ম্যানেজার মি. কস্তাস উপস্থিত ছিলেন।
বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণে ক্রমবর্ধমান আগ্রহ প্রকাশ করে সৌদি আরব থেকে ৩১ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সৌদি আরবের বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত দেশে চেইন হোটেল, উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক অঞ্চল, জ্বালানি এবং রিয়েল এস্টেটসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক সেক্টরে সাফল্যের সঙ্গে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জেনারেল ইলেক্ট্রিক, ম্যারিয়ট, কোহলবার্গ ক্রাভিস রবার্টস-কেকেআর, নেব্রাস পাওয়ার (কাতার), এলআইসি ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য বিশ্বখ্যাত সংস্থার সঙ্গে তার অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বাণিজ্য রয়েছে।
সৌদি আরবের কোম্পানিগুলো চেইন হোটেল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং রিয়েল এস্টেট খাতে সহযোগিতার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বাংলাদেশে বিশেষ করে অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্ভাব্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- ম্যারিয়ট হোটেল প্রকল্প, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, হেইলিবেরি স্কুল এবং অন্যান্য বড় মাপের অবকাঠামো প্রকল্প।
বৈঠকে বদর আই আলবদর ড. সরাফাতকে সম্ভাব্য অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান। সৌদি আরবের আরও বাণিজ্য সহযোগিতা এবং সম্প্রসারণকে সহজতর করার লক্ষ্যে বিশ্বকাপ মৌসুমে আসন্ন এক্সপো ২০৩০ ওয়ার্ল্ড ফেয়ারে কৌশল নির্ধারণ এবং প্রকল্পগুলো প্রদর্শন করতে উভয় পক্ষ পারস্পরিকভাবে সম্মত হয়েছে।
ড. সরাফাত এ অঞ্চলে হোটেল এবং অবকাঠামোগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করে সৌদি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বমূলক ব্যবসা পরিচালনাকে একটি সুযোগ হিসেবে অভিহিত করেন।
বৈঠকটি বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদারত্বের ক্ষেত্র তৈরি করে, যা উভয় দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য