২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রিতে প্রস্তাবিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস। এছাড়া ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে স্বর্ণালঙ্কার আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ৫০ গ্রাম করাসহ ১১টি প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বাজুস কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাজুসের সহ-সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, সহ-সম্পাদক ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সমিত ঘোষ অপু, সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়ালসহ অন্যরা।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুলস-এ সংশোধনী এনেছে সরকার। সংশোধিত ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন যাত্রী ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের বার বাংলাদেশে আনতে পারবেন। আগে ২৩৪ গ্রাম ওজনের দুটি বার আনার সুযোগ ছিল।
সংশোধিত ব্যাগেজ রুলকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ জানিয়ে বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এর মাধ্যমে দেশে স্বর্ণ চোরাচালান ও মুদ্রা পাচার অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। কারণ ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিয়ে এর আগে অবাধে সোনার বার বা পিণ্ড দেশে প্রবেশ করছে। আবার চোরাচালানের মাধ্যমে তা বিদেশে পাচার হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে এই পদক্ষেপ বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানিকে উৎসাহিত করবে।
স্বর্ণের বারের মতো ব্যাগেজ রুলের আওতায় অলংকার-গহনা আনার সীমা ১০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করেছে বাজুস। স্থানীয় স্বর্ণ শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় জুয়েলারি শিল্পের দিকে ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করতে এমন পদক্ষেপ দরকার বলে মনে করছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈধভাবে স্বর্ণের চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চ মূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। বর্তমানে জুয়েলারি শিল্পের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। এটা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জুয়েলারি খাতের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা।
বলা হয়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ক কর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা দেয়া দরকার। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১টি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি করছে বাজুস।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বর্ণালঙ্কার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা; ইডিএফ মেশিন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বসিয়ে কাউকে হয়রানি না করা; অপরিশোধিত আকরিক স্বর্ণে আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা; আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী ও ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার ৫ শতাংশ করা।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- হীরা কাটিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানি করা রাফ ডায়মন্ডের নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ; স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ।
স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানি করা কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি দেয়াসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
এছাড়া অস্বাভাবিক শুল্ক হার কমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শুল্ক হার সমন্বয়সহ এসআরও সুবিধা দেয়া ও চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধার করা মোট স্বর্ণের ২৫ শতাংশ সংস্থা সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৬৭ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও একই হারে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫৭ টাকা লিটার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড ভেজিটেবল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অক্টোবর-নভেম্বরে তুলনামূলক কম রেমিট্যান্স এলেও ডিসেম্বরের শুরুতেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম এই খাতে সুবাতাস বইছে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার প্রবাসী আয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাতদিনে দেশে এসেছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। আর গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলার।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২০ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে উঠা-নামার প্রবণতা দেখা গেছে। গত জুনে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসার পর জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১৯১ কোটি ডলারে, যা গত দশ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ ও দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেমিট্যান্সের পালে ফের হাওয়া লাগতে শুরু করে।
আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ডলার, যা চলতি অর্থবছরে এক মাসে সর্বোচ্চ।
এরপর অক্টোবরে (২৩৯ কোটি ডলার) ফের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে, যা নভেম্বরেও (২১৯ কোটি ডলার) অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে ফের ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা ব্র্যান্ড ডোমিনো’জ পিৎজার ব্যবসায়িক যাত্রার ৬৪ বছর উদযাপন করা হবে সোমবার।
প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ডোমিনো’জ পিৎজা তাদের ব্যবসার ৬৪ বছরের অসাধারণ যাত্রা উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল পিৎজাপ্রেমীদের জন্য ডোমিনো’জ পিৎজার ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ৩৬টির বেশি পিৎজার ওপর ৩৬% আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
‘ক্রেতাগণ এই অফার উপভোগ করতে পারবেন ডোমিনো’জ পিৎজার অ্যাপ (অ্যাপ স্টোর ও প্লে স্টোরে উপলব্ধ) অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করে। অফারটি ডাইন-ইন, টেকঅ্যাওয়ে এবং ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ উদযাপন শুধু একটি অফারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এক অসাধারণ যাত্রার ৬৪ বছরে পদার্পণ উদযাপন, যা শুরু হয়েছিল একজন ব্যক্তির স্বপ্ন দিয়ে।
শুরুর গল্প
এই গল্প শুরু হয় ১৯৬০ সালে, যখন টম মোনাহ্যান ও তার ভাই জেমস ৯০০ ডলারে মিশিগানের সিল্যান্টিতে একটি ছোট পিৎজা রেস্টুরেন্ট ডোমিনিক’স পিৎজা কিনে নেন। খাবারের ব্যবসায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এবং সামান্য কিছু মূলধন নিয়ে টম শুরুতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। কিছুদিন পর তার ভাই ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং টম একাই রেস্টুরেন্ট চালাতে থাকেন।
টম প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং নিজে ডেলিভারিও দিতেন।
এক বছরের মধ্যে টম ব্যবহৃত একটি ভক্সওয়াগন বিটল গাড়ির বিনিময়ে তার ভাইয়ের শেয়ার কিনে কোম্পানির সম্পূর্ণ মালিকানা লাভ করেন। এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই ডোমিনো’জ পিৎজার সাধারণ স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বৈশ্বিক পিৎজা সাম্রাজ্যে পরিণত হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে।
টমের লক্ষ্য ছিল একটি পিৎজা ব্রান্ড তৈরি করা, যা শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, বরং সেবার জন্যও পরিচিত হবে। তিনি গরম ও ফ্রেশ পিৎজা ডেলিভারি নিশ্চিত করার দিকে জোর দেন, যা সেই সময়ে এক বিপ্লবী ধারণা ছিল।
১৯৬৫ সালে তিনি ব্যবসার নাম বদলে ‘ডোমিনো’জ পিৎজা’ রাখেন। ডোমিনো'জ-এর লোগোর তিনটি ডট তখনকার তিনটি রেস্টুরেন্টকে নির্দেশ করত এবং তার পরিকল্পনা ছিল ভবিষ্যতে নতুন রেস্টুরেন্ট যোগ হলে লোগোতে একটি ডট বাড়ানো হবে। তবে দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণের ফলে এটি আর সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে ডোমিনো’জ পিৎজা বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজারের বেশি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে এবং প্রতিদিন গ্রাহকদের নিকট লক্ষাধিক পিৎজা পরিবেশন করে।
বাংলাদেশে ডোমিনো’জ পিৎজা
ডোমিনো’জ পিৎজা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে।
সম্প্রতি মিরপুরের সনি স্কয়ারে নিজেদের ৩৬তম রেস্টুরেন্ট খুলে শাখার সংখ্যার দিক দিয়ে রাজধানীর সর্ববৃহৎ রেস্টুরেন্ট চেইনে পরিণত হয়েছে ডোমিনো’জ পিৎজা।
আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জ্বালানি খাতে প্রতি বছর প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। সে হিসাবে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দেশের মানুষের মাথাপিছু ভর্তুকির হার প্রায় ৩ হাজার টাকা।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘জ্বালানির সহনীয় মূল্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রাহকরা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮ দশমিক ৫৫ টাকা দিলেও সরকার তা ১২ থেকে ২৫ টাকা দরে কিনে থাকে। এলএনজি আমদানিতে প্রতি ইউনিট ৭০ টাকা খরচ পড়লেও শিল্প খাতে ৩০ টাকা হারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল্যের এ পার্থক্যটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রতিযোগিতা না থাকা এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে আমাদের অধিক মূল্যে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। আমাদের চার হাজার এমএমসিএফটি গ্যাস প্রয়োজন। অথচ রয়েছে তিন হাজারেরও কম।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, তেল আমদানিতে উন্মুক্ত দরপত্রের কারণে আগের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া গেছে। এর ফলে সাশ্রয় হবে ৩৭০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে আইপিপির পরিবর্তে মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট ব্যবস্থা চালু হবে।
‘পর্যায়ক্রমে ৪০টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে এবং এ ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান সরকার থেকে করা হবে। সরকারি কিছু সংস্থা যেমন- বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেল, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অনেক জমি আছে। এই জমিগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। সেখানে এ ধরনের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করা হবে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ ব্যবহারিক হবে না। বরং এক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা অধিক কার্যকর। বাংলাদেশকে জ্বালানি আমদানি করতে হয়। তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশকে জ্বালানি স্বনির্ভর করা ও জ্বালানির মূল্য হ্রাসে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল আক্তার, আইএফডিএল বাংলাদেশ পার্টনার ব্যারিস্টার শাহওয়ার জামাল নিজাম এবং বিএসআরএমের হেড অফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি।
আরও পড়ুন:‘বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে আমরা একা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না, ভারতও হবে। ভারত আমাদের বিনা পয়সায় কিছু দেয় না, টাকার বিনিময়ে দেয়। কাজেই তারা যদি রপ্তানি বন্ধ করে তাহলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এর সঙ্গে দু’দেশের লাখ-লাখ লোক জড়িত।’
নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত।
তিনি বলেন, ‘আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। তবে যা হচ্ছে তা সবই রাজনৈতিক।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘কখনও কি শুনেছেন যে সব পলিটিক্যাল পার্টি এক জায়গায় বসে কথা বলেছে। আজ হোক কাল হোক রাজনীতিবিদরা দেশ চালাবেন। সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐকমত্য না হয় তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার কথা সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। একদল একরকম বলবে, আরেক দল সেটা অপোজ করবে। এখন সবাই একত্রে বসেছেন- এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হয়েছে।’
পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ভোমরার কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক হাজার ১০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ভোমরা স্থলবন্দর তার কার্যক্রম পুরোদমে চালাতে পারবে।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি আবু হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন এর আগে ভোমরা স্থল বন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় মাইলফলক সৃষ্টিতে ডায়াবেটিসজনিত চ্যালেঞ্জগুলোকে অতিক্রম করার বড় উদ্যোগ নিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর অভিজাত ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে হওয়া এমলিনো এক্সিমপ্লিফাই ট্রায়ালের সাফল্যের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদেরও জানানো হয় শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
এ আয়োজনে দেশের খ্যাতনামা ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
তারা জানান, এমলিনো বাংলাদেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে কিডনি রক্ষার কাজও করে থাকে।
ওই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ.কে আজাদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন বারডেম একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সফল এ ট্রায়ালের প্রধান গবেষক ডা. মির্জা শরিফুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রফেসর ডা. মো. হাফিজুর রহমান, প্রফেসর ডা. মো. আবদুল জলিল আনসারী ও প্রফেসর ডা. অজিত কুমার পাল।
সম্মানিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলে ছিলেন প্রফেসর ডা. মো. ফিরোজ আমিন, ডা. শাহজাদা সেলিম, ডা. ফারিয়া আফসানা এবং ডা. এম. সাইফুদ্দিনসহ অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
ডায়াবেটিস চিকিৎসায় কার্যকর ও সময়োপযোগী ওষুধ মানুষের হাতে তুলে দিতে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে আসছে। এমলিনো এক্সিমপ্লিফাই ট্রায়াল সেই ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ।
আরও পড়ুন:বহুল আলোচিত বাংলাদেশি ২০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নতুন নোট আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করার পর আসন্ন নোটের নকশার উপাদান নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘নতুন নোট আসা নিশ্চিত। তবে নকশার সঠিক উপাদানগুলো নিশ্চিত করার সময় এখনও আসেনি।’
মুজিব থাকছে কিনা?
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নোটের নকশায় সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। নতুন নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের আইকনিক প্রতিকৃতি আর নাও থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের।
ধারণা করা হচ্ছে, নতুন মুদ্রায় বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক বা জুলাই বিপ্লবের দেয়ালচিত্র থাকতে পারে, যা একটি স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্যবোধকে তুলে ধরবে।
তারা বলেন, সরকার নতুন নোট মুদ্রণের অনুমোদন দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করার পর ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোর প্রচলন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নকশা সংস্কার
সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত অন্তর্দৃষ্টি থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের ব্যাংক নোটের দৃশ্যমান পরিচয়কে নতুন আকার দিতে প্রস্তুত।
এটি যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে নকশাগুলোতে শেখ মুজিবুর রহমানের স্থলে ধর্মীয় স্থান, ঐতিহ্যবাহী বাংলা মোটিফ এবং কৌতূহলের জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতির উদ্দীপক চিত্র স্থান পাবে।
এই পুনর্বিন্যাসটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গোটা সম্প্রদায় থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি পর্যায়ক্রমে বাদ দেয়ার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।
এই মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের জুনের মধ্যে এই নোটগুলো প্রচলনের পরিকল্পনা রয়েছে।
উত্তরাধিকারের রূপান্তর
বাংলাদেশে ২ টাকা থেকে ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রতিটি কাগজের নোটে বর্তমানে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং নোটের উভয় পাশে তার প্রতিকৃতি রয়েছে।
এমনকি ধাতব মুদ্রাতেও তার ছবি রয়েছে। এটি তার স্থায়ী উত্তরাধিকারকে তুলে ধরে। নতুন নোট চালু করা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণকে আশ্বস্ত করেছে যে, বাজারে বিদ্যমান সব মুদ্রার প্রচলন থাকবে।
আসন্ন নোটগুলো বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে একটি নতুন আখ্যানের সঙ্গে একত্রিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি দেশের এগিয়ে যাওয়ার যাত্রাকে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য