জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার পর বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন তিনি।
বাজেট উপস্থাপনের জন্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি নেন অর্থমন্ত্রী। স্পিকারের অনুমতিক্রমে মন্ত্রী বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করা হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এ হার গত বাজেটে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে নির্বাহ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বৈদেশিক অনুদান দশমিক ৫ শতাংশ, বৈদেশিক ঋণ ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ ঋণ ২০ দশমিক ৪ শতাংশ, কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, এনবিআর বহির্ভূত কর ২ দশমিক ৬ শতাংশ ও এনবিআর নিয়ন্ত্রিত কর ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে।
খাতভিত্তিক সম্পদ বিভাজনের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ, পরিবহন ও যোগাযোগে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুতে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, স্বাস্থ্যে ৫ শতাংশ, কৃষিতে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, প্রতিরক্ষায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, জনপ্রশাসনে ২২ শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ, গৃহায়ণে ১ শতাংশ, বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্মে দশমিক ৭ শতাংশ, শিল্প ও অর্থনৈতিক সার্ভিসে দশমিক ৭ শতাংশ, সুদে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং বিবিধ ব্যয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জাতীয় সংসদে টানা পঞ্চমবারের মতো বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী। এটি দেশের ইতিহাসে ৫২তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ মেয়াদের ২৪তম বাজেট।
আরও পড়ুন:দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের তথ্য জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায় যে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে শনিবার ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়। তবে ব্যাংকের মতো আনুষ্ঠানিক মাধ্যম ব্যবহার করে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের কথা জানা যায়।’
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের মাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসা- এই ত্রিমুখী আঁতাত মূল ভূমিকা পালন করেছে।
‘সব প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘ সময় ধরে দলীয়করণের চর্চা হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরে আমরা এর চূড়ান্ত রূপ দেখেছি। এতে আমলাতন্ত্রকে কর্তৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি আর তা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সিকে। ফলে এসব জায়গায় কতটুকু পরিবর্তন আনা যাবে, তা গুরুত্বপূর্ণ।’
‘যে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করছি তা যেন টেকসই হয়’, যোগ করেন তিনি।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একটি দৃষ্টান্ত আছে। সেটি হলো, সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটি থেকে ২০০৭ সালে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৯৩০ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছিল।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। তবে তা অনেক কঠিন ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে, ওইসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশগুলোর এ বিষয়ে সহযোগিতার মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার বন্ধে সাপ্লাই (যে দেশ থেকে পাচার হয়) ও ডিমান্ড (যে দেশে পাচার হয়) উভয়ের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ থাকতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সিন্ডিকেট আছে। সে কারণে আমরা একজন সাবেক মন্ত্রীর কয়েকটি দেশে কয়েক শ’ অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে জানতে পারছি। কিন্তু এই ঘটনা বরফখণ্ডের চূড়ামাত্র, এমন পাচারকারী আরও অনেকে আছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস, বিএফআইইউ- অর্থ পাচার বিষয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার পথনকশা আছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। অর্থ পাচার রোধে বেশ কিছু আইনেরও প্রয়োজন আছে।’
আরও পড়ুন:সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজস্ব কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) জারি করেছে।
এর আগে খাদ্য অধিদপ্তর দেশের সামগ্রিক চালের মজুদ নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) চালের দাম পরিস্থিতি নিয়ে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরকে আরেকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।
দু’টি প্রতিবেদনেই চালের ওপর সব ধরনের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য গত ২০ অক্টোবর এনবিআর আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব দীপাবলি (কালীপূজা) উপলক্ষে ভারতে সরকারি ছুটির কারণে বৃহস্পতিবার বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারও নিয়মিত রয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনিবার সকাল থেকে ফের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম যথারীতি চলবে এ বন্দরে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দীপাবলি উপলক্ষে ভারতের পেট্রাপোলের ব্যবসায়ীরা সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। মূলত বুধবার বিকেল থেকেই ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
‘এ বিষয়ে তারা আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তবে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসে স্বাভাবিক নিয়মে কার্যক্রম চলছে। শনিবার সকাল থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি চালু হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘ভারতে দীপাবলি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি হবে না, তবে বন্দর ও কাস্টমসের সকল কার্যক্রম চালু রয়েছে।
‘ভারত থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা খালি ট্রাক ফেরত যাওয়ার জন্য চেকপোস্ট কার্গো শাখা খোলা। সেই সাথে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক।’
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা চেইন ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশে নিজেদের ব্যবসা দ্রুত সম্প্রসারণ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ডোমিনোজ পিৎজা উদ্বোধন করেছে তাদের ৩৬তম রেস্তোরাঁ।
গ্রাহকদের চিজি হ্যাপিনেসের সুযোগ দিতে ২০ অক্টোবর শাখাটি উদ্বোধন হয়।
বাংলাদেশে ডোমিনোজ পিৎজা চালু হওয়ার পর থেকেই সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি দ্রুততম ডেলিভারির মাধ্যমে মাত্র ৩০ মিনিটেই খাবার পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকদের দ্বারপ্রান্তে। পাইপিং হট পিৎজা, নতুন শুরু হওয়া অরেগানো রাইস এবং সসি পিৎজা, গার্লিক ব্রেড, চকো লাভা কেক ছাড়াও অন্যান্য সুস্বাদু খাবার ও ডেজার্ট সরবরাহ করতে ডোমিনোজ পিৎজা সর্বদা সচেষ্ট।
ডোমিনোজ পিৎজার ৩০ মিনিটে ডেলিভারীর বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেবাটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক রেস্তোরাঁ থেকেও পাওয়া যাবে।
রেস্তোরাঁটি উদ্বোধনের সময় ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্ট টিম ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজের শিক্ষার্থীরা, যারা এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনা মূল্যে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে থাকে।
ডোমিনোজ পিৎজা বাংলাদেশের চিফ অপারেটিং অফিসার আহমেদ শোয়েব ইকবাল বলেন, ‘ডোমিনোজ পিৎজা গত সাড়ে ৫ বছরে এই দেশে সবচেয়ে দ্রুততার সাথে বড় হওয়া ফুড ব্র্যান্ড এবং বনানীর কামাল আতাতুর্কে আমাদের নতুন এই রেস্টুরেন্ট খুলতে পেরে আমরা বেশ গর্বিত।
‘এ দেশে আমাদের ক্রমবর্ধমান গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে আমরা ক্রমাগত আমাদের রেস্টুরেন্ট নেটওয়ার্ক প্রসারিত করছি। ডোমিনোজ পিৎজার প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ রেস্টুরেন্টে সবাইকে স্বাগত জানাতে আমরা উন্মুখ। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা বনানী ব্লক এ, বি, সি, ডি, জির সাথে বারিধারা ডিওএইচএস, নেভি হেড কোয়ার্টার এবং গুলশান-২-এ হোম ডেলিভারি করতে পারব।’
আরও পড়ুন:২৮ জন সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের বিবরণ তলব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিএফআইইউ দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মঙ্গলবার জানিয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিএফআইইউ ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে সেসব সাংবাদিকের সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে।
তাদের নামে কোনোও ব্যাংক লকার, সেভিংস কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদন-সংক্রান্ত দলিলপত্র রয়েছে কি না বা অর্থের লেনদেন হয়েছে কি না, সেই তথ্য চাওয়া হচ্ছে।
যাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে তারা হলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু, এবিনিউজ২৪ডটকমের এডিটর ইন চিফ সুভাষ সিংহ রায়, কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হায়দার আলী, এটিএনের জ. ই. মামুন, বাংলা ইনসাইডারের সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীর, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমাল ও চিফ রিপোর্টার জুলকারনাইন রনো, সমকালের সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বাসসের মধুসূদন মন্ডল, ডিবিসির মাসুদ আইয়ুব কার্জন, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, সাংবাদিক ফরাজী আজমল হোসেন, বৈশাখী টেলিভিশনের অশোক চৌধুরী, নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, ডেইলি সানের সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, নিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি চিফ নিউজ এডিটর আশিকুর রহমান শ্রাবণ, যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন, স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, দৈনিক মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ জামাল হোসেন, ডিবিসি নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি আদিত্য আরাফাত, এটিএন নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি তৌহিদুল ইসলাম সৌরভ, যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক শ্যামল সরকার, ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের এবং দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে চালের উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় চালের বর্তমান আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে চালের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখতে এমন প্রস্তাব দিয়েছে বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ মওকুফ করা হলে চালের দাম বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে থাইল্যান্ড ও ভারতের মতো আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি উৎসাহিত হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আসন্ন উৎপাদন মৌসুমে বন্যার সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দু’দফা বন্যায় ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত আট লাখ ৩৯ হাজার টন চাল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
সরকার সম্প্রতি আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করলেও ব্যবসায়ীরা উচ্চ শুল্কের উল্লেখ করে চাল আমদানিতে নিরুৎসাহ দেখাচ্ছেন। এতে বাজারে চালের সরবরাহ সংকুচিত এবং ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা প্রভাবিত হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে এক হাজার ৩০৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার ৬১৫ টন। আর রপ্তানি হয়েছে নয় হাজার ৬৪৯ টন পণ্য।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব শামসুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দামে ঊর্ধ্বগতি আর দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এলসির সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিল। বর্তমানে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়েছেন। তারা দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন। আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক গতি পাবে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, গেল আগস্ট মাসে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের পরিস্থিতি কেমন হয় তা পর্যবেক্ষণ করছেন ব্যবসায়ীরা। অনুকূল পরিবেশ থাকলে সামনের দিনগুলোতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি ফিরে আসবে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টন পণ্য। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ লাখ ১৪ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৬ লাখ ৪৪ হাজার টন, ২০১৯-২১ অর্থবছরে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ টন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ লাখ ১১ হাজার ছয় টন পণ্য আমদানি করা হয়।
যশোর চেম্বার অফ কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা দেখছেন। আবার ডলারের উচ্চমূল্যও একটি বড় ব্যাপার। তবে আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে বাণিজ্য গতি পাবে।’
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘দেশে জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে সামনে আমদানি-রপ্তানি বাড়বে। আর সে সুবাদে রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।’
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, গেল জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি থেকে বিরত ছিলেন। এখন ডলারের পরিস্থিতিও স্থিতিশীল।
‘আশা করা যাচ্ছে অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতে ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বাণিজ্য কার্যক্রম চালাবেন। তখন আমাদের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য