সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম (এসএমটি)-এর ১৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে হওয়া এ সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমটির চেয়ারম্যান এবং ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম।
সভায় অন্যদের মধ্যে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, সঞ্চিয়া বিনতে আলী, মীর মোফাজ্জল হোসেন, সুভাষ চন্দ্র দাস, কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পারসুমা আলম, প্রধান কার্যালয়, স্থানীয় কার্যালয়, ব্যাংকের মাঠ পর্যায়ের সকল জেনারেল ম্যানেজারসহ এসএমটি কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায়িক পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন।
প্রবাসীদের দেশে পাঠানো রেমিট্যান্স সর্বোচ্চ পরিমান সংগ্রহের জন্য ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে ‘রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক আইএনসি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শনিবার ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিংক ও মুক্তধারা নিউ ইয়র্কের উদ্যোগে এবং এফবিসিসিআই ও গ্রেটার নিউ ইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এর সহযোগিতায় আয়োজিত ২ দিনব্যাপী বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস ও বাণিজ্য মেলা ২০২৩ এর সমাপনী অধিবেশনে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর অ্যান্ড সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ আকিজ উদ্দীন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ ইমিগ্র্যান্ট ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ার ২০২৩ এর আহ্বায়ক ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ এবং মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক আইএনসি এর প্রতিষ্ঠাতা ও ইমিগ্র্যান্টস ডে ২০২৩ এর প্রধান সমন্বয়ক বিশ্বজিত সাহা।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে নতুন টাকা ছাপিয়ে রাষ্ট্রকে ঋণ না দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলারের দামের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজতে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বৃহস্পতিবার ড. ওয়াহিদউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি এই পরামর্শ দেন। সূত্র: ইউএনবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওয়াহিদউদ্দিন বর্তমান মুদ্রানীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং নতুন টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’
মুখপাত্র জানান, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অন্যান্য সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গেও কথা বলবেন গভর্নর।
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আমরা অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হবে।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় মূল্যস্ফীতি ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুখপাত্র বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণ, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।’
বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকিং বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই ধারাবিহকতায় সুদমুক্ত ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং সুবিধা নিয়ে এসেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
আধুনিক ও ডিজিটাল লেনদেনের অঙ্গীকার নিয়ে ২৫ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করেছে ‘পদ্মা ব্যাংক ইসলামিক’, যা পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ পৃথক ইসলামিক সফটওয়্যার নির্ভর হিসাব ব্যবস্থায়।
দেশজুড়ে ৬০টি শাখা ও ১৪টি উপশাখার মাধ্যমে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল গ্রাহকের জন্য সুদমুক্ত ব্যাংকিং সেবার দ্বার উন্মোচন করেছেন নতুন প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
এখন থেকে চাইলেই যেকোনো গ্রাহক ইসলামি ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যখন তখন। ঘরে বসেই পদ্মা ওয়ালেট ও পদ্মা আই ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘পদ্মা ব্যাংক ইসলামিকে’ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন নিমিষেই।
পদ্মা ব্যাংক ইসলামিকের ডেবিট কার্ড দিয়ে দেশের যেকোনো ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন সম্পূর্ণ ফ্রি। এ ছাড়া এটিএম অ্যান্ড পস (ATM & POS) লেনদেনের জন্য বিনা মূল্যে এসএমএস এলার্ট সার্ভিস পৌঁছে যাবে গ্রাহকের ফোনে। দেশের যেকোনো এটিএম বুথ থেকে ব্যালেন্স যাচাই ও মিনি স্টেটমেন্ট সুবিধা পাবেন।
‘পদ্মা ব্যাংক ইসলামিক’ ডেবিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা ও রকমারি রেস্তোরাঁয় তালিকাভুক্ত মার্চেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে আকর্ষণীয় নানা রকম ছাড়।
আল-ওয়াদিয়াহ চলতি হিসাব, মুদারাবাহ্ সেভিংস হিসাব, মুদারাবাহ্ হজ্ব সেভিংস স্কিমসহ ১৯টি ভিন্ন ধরনের আমানত সেবা নিয়ে এসেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড। মুদারাবাহ জমা হিসাবগুলোতে প্রভিশনাল মুনাফার হার অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এ ছাড়াও পে অর্ডার, প্রথম চেক বই ফ্রি, স্টুডেন্ট ও মেডিক্যাল ফাইল এবং লকার সার্ভিস সেবা পাওয়া যাবে।
ইসলামি শরিয়াহ অনুমোদিত বিভিন্ন বিনিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে (বাই মুরাবাহা, এইচপিএসএম ইত্যাদি) বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে “পদ্মা ব্যাংক ইসলামিক”। পাশাপাশি রিটেইল, কৃষি ও সিএমএসএমই বিনিয়োগের মাধ্যমে “পদ্মা ব্যাংক ইসলামিক” এ দেশের জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজে নিবেদিত।
পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে এ চালানের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি, বিদ্যুৎ বিল জমা দেয়াসহ সরকারি বিভিন্ন সেবার টাকা জমা দেয়া যাবে।
বিজনেস বুটিক হোটেল ইনোটেল ঢাকার সঙ্গে গ্রাহক সুবিধা সংক্রান্ত এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
সম্প্রতি এ দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রাজধানীতে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তির আওতায় পদ্মা ব্যাংকের কার্ডধারী এবং পদ্মা ব্যাংকের কর্মকর্তারা রুম ভাড়ার ক্ষেত্র সর্বোচ্চ ৬০% পর্যন্ত ছাড় উপভোগ করবেন। এ ছাড়া খাবার এবং অন্যান্য সার্ভিসের ওপর ১৫% পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাবে।
আধুনিক ব্যাংকিং সেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গনে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের উদ্বোধন করা হয়েছ।
১৩ সেপ্টেম্বর প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই বুথ উদ্বোধন করেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জেহাদ।
এ সময় ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি করিম এবং ঢাকা রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির ও সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা-২ মোশারফ হোসেন, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ইভিপি ও জেনারেল সার্ভিসেস ডিভিশনের প্রধান জুলফিকার আলী খান, ইভিপি ও ইনভেস্টমেন্ট ডিভিশনের প্রধান এস এম মিজানুর রহমান, বনানী শাখার ব্যবস্থাপক ইকরাম ইলাহী, হেড অব কার্ডস এ এন এম আহসান হাবিব, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে এটিএম বুথ স্থাপনের মাধ্যমে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী ও আশপাশের জনগণের জন্য ব্যাংকিং সেবার পরিধি বাড়াতে সচেষ্ট রয়েছে।
সোনালী ব্যাংক পিএলসি আয়োজিত বাণিজ্যিক অডিট নিষ্পত্তির বিশেষ উদ্যোগ (ক্রাশ প্রোগ্রাম) বাস্তবায়নে অডিট অধিদপ্তর প্রণীত অডিট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেম সফটওয়্যার ব্যবহার নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বুধবার এ অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম।
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর মোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. সাইদুর রহমান সরকার, ব্যাংকের চিফ অডিট অফিসার ইমরান আহমেদ, বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মহসীন মিয়া এবং ট্যাপওয়্যার সলিউশনস লিমিটেডের আইটি সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম।
এ ছাড়া প্রধান কার্যালয়ের এক্সটার্নাল অডিট অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স ডিভিশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. বাবুল হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় প্রধান কার্যালয়ের সব ডিভিশন, সব জেনারেল ম্যানেজারস’ অফিস, স্থানীয় কার্যালয়, সব প্রিন্সিপাল অফিস, সব করপোরেট শাখা এবং সব শাখার বাণিজ্যিক অডিট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আরও পড়ুন:নানা সমীকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা। সরকারের কাছ থেকে নানামুখী সুবিধা নিয়েও হচ্ছে না অবস্থার উত্তরণ। এর মধ্যে আছে পাহাড়সম খেলাপি ঋণ, সুদ হার নিয়ে নানা হিসাব।
বাজার প্রতিযোগিতার এমন সব চ্যালেঞ্জের মধ্যেই ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো ভালো ব্যবসা করে চলেছে। ছয় মাসে এসব ব্যাংকের আমানত ১৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা বেড়ে ৪ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের হাত ধরে ১৯৮৩ সালে দেশে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর নতুন পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংক যেমন এসেছে, তেমনি প্রচলিত ধারার অনেক ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকিং শাখা ও উইন্ডো চালু করেছে। আমানত সংগ্রহ, শিল্প, ব্যবসাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ, প্রবাসী আয় সংগ্রহে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
দেশে বর্তমানে পুরোদমে ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে ১০টি ব্যাংক। সেগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, শাহজালাল ইসলামী, ইউনিয়ন, এক্সিম ব্যাংক, আল-আরাফাহ, আইসিবি ইসলামিক, স্ট্যান্ডার্ড ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এসব ব্যাংকের শাখার সংখ্যা এক হাজার ৬৭১টি।
এ ছাড়া প্রচলিত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১১টি ব্যাংকের ২৩টি ইসলামি ব্যাংকিং শাখা রয়েছে। ১৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের রয়েছে ৫৮৮ ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাজার প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জে টিকে থাকতে প্রচলিত ধারার অনেক ব্যাংক শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে যাচ্ছে। কারণ ইসলামি ব্যাংকগুলোতে স্বেচ্ছায় অনেক আমানত আসে।
‘ধর্মপ্রাণ অনেকে এ ধারার ব্যাংকে লেনেদেনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এজন্য আমানতকারীরা দর-কষাকষি করেন না। তাদের বেশিরভাগ আবার একটি ব্যাংকে আমানত রেখেই খুশি থাকেন। তবে ঋণ বিতরণে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে পার্থক্য কিছু নেই।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণায় দেখা যায়, চলতি বছরের ছয় মাস শেষে (জানুয়ারি-জুন) ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে ছয় মাসে এসব ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ১৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা।
আমানত সংগ্রহের দিক থেকে সবার শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর মোট আমানতের ৩৪ দশমিক ৫৩ শতাংশই সংগ্রহ করেছে এই ব্যাংক।
এরপরই রয়েছে যথাক্রমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১০ দশমিক ৭২, এক্সিম ১০ দশমিক ৬২, আল-আরাফাহ ১০ দশমিক ১২, সোশ্যাল ইসলামী ৭ দশমিক ৭২, শাহ্জালাল ইসলামী ৫ দশমিক ৭২, ইউনিয়ন ৫ দশমিক ১৬, স্যান্ডার্ড ৪ দশমিক ১৩, গ্লোবাল ইসলামী ২ দশমিক ৮৫ এবং আইসিবি ইসলামিক দশমিক ২৯ শতাংশ।
এ ছাড়া ইসলামি ব্যাংকিং শাখাগুলোতে মোট আমানতের ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডোগুলোতে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ আমানত রয়েছে। ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের আমানত রাখার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে মুদারাবা আমানত সবচেয়ে বেশি, ৪৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
জুন শেষে ইসলামি ধারার দশ ব্যাংকের বিনিয়োগ ৪ লাখ ২১ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। এ বিনিয়োগের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৮০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে শীর্ষে আছে ইসলামী ব্যাংক। এর পরই রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১২ দশমিক ৯৬, এক্সিম ১০ দশমিক ৭২, আল-আরাফাহ ১০ দশমিক ১১, সোশ্যাল ইসলামী ৭ দশমিক ৮৯, শাহজালাল ইসলামী ৫ দশমিক ৫৫, ইউনিয়ন ৫ দশমিক ৫৬, স্ট্যান্ডার্ড ৪ দশমিক ১৬, গ্লোবাল ২ দশমিক ৯৬ ও আইসিবি ইসলামিক দশমিক ১৯ শতাংশ।
ইসলামি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ‘বাই মুরাবাহ’ সবচেয়ে প্রচলিত। মোট বিনিয়োগের প্রায় ৪৭ দশমিক ২৬ শতাংশ করা হয়েছে এ পদ্ধতিতে। এরপর রয়েছে ‘বাই মুয়াজ্জল’। এ ব্যবস্থায় মোট বিনিয়োগের ২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ করা হয়েছে। বাকি বিনিয়োগ করা হয়েছে বাই সালাম, ইজারা অ্যান্ড ইজারা, বাই ইসতিসনা, মুসারাকাসহ অন্যান্য পদ্ধতিতে।
ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে ব্যবসা ও বাণিজ্য খাতে, ৩৮ দশমিক ০৩ শতাংশ। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে বৃহত্তর শিল্প খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ।
এ ধারার ব্যাংকগুলো আধুনিক ধারার সব ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্য সুকুক বন্ড চালু করেছে। সুদবাহী বিনিয়োগ বন্ডে ইসলামি ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে পারে না বলে নতুন ধরনের এ বন্ড চালু করা হয়েছে। তারল্য ব্যবস্থাপনার নতুন এ মাধ্যমে সরকার চাইলে ইসলামি ব্যাংকগুলো থেকেও মূলধন নিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট প্রবাসী আয়ের ৪২ শতাংশের বেশি এসব ব্যাংকের মাধ্যমে আসে। অবশ্য কেবল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মাধ্যমেই আসে প্রায় ৫৩ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবাসী আয়। জুন শেষে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স পেয়েছে ২২ হাজার ১৯২ কোটি টাকা।
মন্তব্য