স্বাধীনতার চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড। স্বাধীনতার মাসে পদ্মা ব্যাংকে চালু হলো কিউআর কোড সেবা। মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে এখন থেকে।
‘পদ্মা ওয়ালেট’ অ্যাপে নতুন সার্ভিসটি অন্তর্ভুক্ত করে ডিজিটাল সেবা আরও ত্বরান্বিত করল পদ্মা ব্যাংক। এই ডিজিটাল ও নিরাপদ সেবার আওতায় গ্রাহকরা পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা ও উপশাখা থেকে কার্ড ও চেক বই ব্যবহার না করে দ্রুততার সঙ্গে নগদ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এতে নেই স্বাক্ষর যাচাইয়ের ঝামেলা এবং চেক বহন ও হারানোর ঝুঁকি। ফলে গ্রাহকের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।
সেবাটি পেতে প্রথমেই পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপটি গ্রাহকের স্মার্টফোনে ইনস্টল করতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পদ্মা ব্যাংকের হিসাবধারীরা লগইন করতে পারবেন। পরের ধাপে পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপে দেখানো কিউআর আইকনটি স্পর্শ করে পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা এবং উপশাখায় প্রদর্শিত কিউআর কোড স্ক্যান করে টাকা উত্তোলন করা যাবে।
কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের এই পরিষেবা চালু করায় শতভাগ ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিতের পথে এগিয়ে গেল পদ্মা ব্যাংক।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানে সবসময় অগ্রগামী পদ্মা ব্যাংক। এবার পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপে সংযুক্ত কিউআর কোড স্ক্যান করে নগদ টাকা উত্তোলনের সুবিধা গ্রাহকদের আরও দ্রুত ও নিরাপদে লেনদেনের নিশ্চয়তা দিল।’
ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের শপথের সাথে শামিল হয়েছি আমরাও। ভবিষ্যতে আরও উন্নত, আধুনিক ও নিরাপদ প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা নিয়ে পদ্মা ব্যাংক দেশের সকল গ্রাহকের পাশে থাকার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ব্যাংকিং সকল সেবার জন্য আপনার নিকটস্থ পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা ও উপশাখায় যোগাযোগ করতে পারেন অথবা কল করতে পারেন ১৬৬১২ নম্বরে অথবা ভিজিট করুন https://www.padmabankbd.com।
নবাবগঞ্জবাসীর আর্থিক লেনদেন সহজ এবং দ্রুত করতে প্রযুক্তিনির্ভর উপ-শাখার কার্যক্রম শুরু করেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
নবাবগঞ্জ উপ-শাখা সাদেক আলী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত। এর কার্যক্রম জয়পাড়া শাখার অধীনে পরিচালিত হবে। এ নিয়ে পদ্মা ব্যাংকের নবম উপ-শাখার উদ্বোধন করা হলো।
এই উপ-শাখায় সব ধরনের ব্যাংক হিসাব খোলা, নগদ টাকা জমা ও উত্তোলন, চেক বই ও পে অর্ডার ইস্যু, ক্লিয়ারিং চেক ও পে-অর্ডার জমা, আমানত ও ঋণ সুবিধা, রিয়েল টাইম অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা, ইউটিলিটি বিল জমাসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যাবে।
সোমবার উপ-শাখাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পদ্মা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বদলে যাও বদলে দাও, বদলে যাবে পদ্মা ব্যাংক- স্লোগানে এগিয়ে চলেছে পদ্মা ব্যাংক। অভিজ্ঞ ও দক্ষ এক পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কর্মঠ ও একনিষ্ঠ কর্মীরা। গ্রাহকদের আধুনিক ও মানসম্পন্ন সেবা দিতেই উপশাখার সংখ্যা আমরা বৃদ্ধি করে চলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নবাবগঞ্জ উপশাখার মাধ্যমে ওই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং উন্নয়নে যথাযথ আর্থিক ও প্রতিষ্ঠানিক সেবা দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স হেড সায়ন্তনী ত্বিষাসহ বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি, সমাজকর্মী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
সরকারী সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবির মূল মালিকানায় পরিচালিত চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড দেশজুড়ে ৬০টি শাখা, উপ-শাখা এবং এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে।
এ ছাড়া পদ্মা ব্যাংকের সব শাখা থেকে রেমিট্যান্স সেবা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:আধুনিক ব্যাংকিং সেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সোমবার পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নে শিবপুর এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের উদ্বোধন হয়েছে।
ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জেহাদ প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইন মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আউটলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আউটলেট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বস্ত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক দেশব্যাপী স্বকীয়তা বজায় রেখে দ্রুততার সঙ্গে শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট সম্প্রসারণ করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
এ সময় ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি করিম, প্রধান কার্যালয়ের ভিপি ও মার্কেটিং ডিভিশনের প্রধান ইমতিয়াজ আহমেদ সিদ্দিকী, এসএভিপি ও এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের বিভাগীয় প্রধান এ কে এম নূরুল আফসার, শিবপুর এজেন্ট আউটলেটের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, শাখা ব্যবস্থাপক, ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথি ও গ্রাহকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম ব্যাচের ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও)-দের প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদান করেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড। প্রথমবারের মত এই পদে নিয়োগ দিয়েছে ব্যাংক।
১০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ২৪ জন এমটিওর হাতে সনদ তুলে দেন পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান।
বৃহস্পতিবার ব্যাংকের মিরপুর লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ‘স্মার্ট ব্যাংকিং টুওয়ার্ডস এক্সিলেন্স ইন অ্যাসেট কোয়ালিটি’ শীর্ষক মাসব্যাপী বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।
অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ কায়সার আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জে.কিউ.এম. হাবিবুল্লাহ, এফসিএস ও মো. আলতাফ হুসাইন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ শাব্বির ও কাজী মো. রেজাউল করিম।
স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু ছাঈদ মো. ইদ্রিস।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. নাইয়ার আজম, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার ও আবুল ফায়েজ মুহাম্মাদ কামালউদ্দিন, ক্যামেলকো তাহের আহমেদ চৌধুরী, চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকীসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ব্যাংকটির সব জোনপ্রধান, শাখাপ্রধান ও উপশাখা ইনচার্জরা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:সোনালী পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) থেকে সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক, সনদ ও অন্যান্য ফি আদায়ের লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংক পিএলসি এবং এমআরএর মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
এ উপলক্ষে সোমবার এমআরএ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠান হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
এমআরএর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংক পিএলসির সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম।
অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন সোনালী ব্যাংক পিএলসির সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম ও এমআরএর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ।
সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুভাষ চন্দ্র দাস এবং এমআরএর পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ মাজেদুল হক চুক্তিতে সই করেন।
অন্যদের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অমল কৃষ্ণ মন্ডল ও মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস এনডিসি, সোনালী ব্যাংক পিএলসির জেনারেল ম্যানেজার মো. নুরূন নবী, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আতিকুর রহমান, এমআরএর পরিচালক মো. নূরে আলম মেহেদী, উপ-পরিচালক মো. সাহিদুল হাসান এবং বিভিন্ন ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ চুক্তির ফলে সোনালী ব্যাংকের সোনালী পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে অনলাইনে ঘরে বসেই এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ৭৩১টি ও সাময়িক সনদপ্রাপ্ত ৩৫০টি ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাৎসরিক ও সনদ ফিসহ অন্যান্য ফি পরিশোধ করতে পারবে।
‘Sonali e-Sheba’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে দেশ-বিদেশ থেকে দুই মিনিটে ব্যাংক হিসাব খোলা যায়।
অপর দিকে ‘Sonali e-Wallet’ এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকিং লেনদেন করা যায়।
এতে অনলাইনে যাবতীয় ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌছাঁনো সম্ভব হচ্ছে।
আরও পড়ুন:দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকায়। এর মধ্যে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই (জানুয়ারি-মার্চ) বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাতে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৫৭ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
অন্যদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর তিন হাজার ৪২ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ঋণ খেলাপি। আর সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত তিনটি ব্যাংকের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বর্তমানে খেলাপি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো এখন নিজেরাই নিজেদের ঋণ পুনঃতফসিল করছে। ফলে ব্যাংক নিজেই খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণের এ তথ্য প্রকৃত চিত্র নয়। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরও বেশি হতে পারে। অনেক ব্যাংক ঋণ আদায় করতে না পেরে তারল্য-সংকটে ভুগছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মার্চে খেলাপি ঋণ দেয়ায় অনেক ব্যাংক দেরি করেছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ফলে বাস্তবে খেলাপি ঋণ এর চেয়েও বেশি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে তা প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। কারণ আইএমএফ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখানোর পক্ষে।
সরকার আইএমএফের কাছে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করে। তার অংশ হিসেবে আইএমএফের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে নানা পরামর্শ দেয় আইএমএফ। সে সময় খেলাপি ঋণকে ব্যাংক খাতের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সে বিষয়েও জানতে চায় বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার তাগিদ দেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বিতরণ করা এসব ঋণের বেশিরভাগই অসৎ উপায় অবলম্বন করে দেয়া হয়েছে। এমন লোকদের ঋণ দেয়া হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে এসব টাকা আর পরিশোধ করছে না।
‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দিন দিন খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আর্থিক খাত দুর্বল হওয়ার কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে নানা রকম কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব খেলাপি ঋণের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেসব বিষয়ে তারা এড়িয়ে যায়।’
আহসান মনসুর বলেন, ‘যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তি দেয়। আর যারা খারাপ কাজ করে তাদের বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয় না।’
আরও পড়ুন:রাষ্ট্র মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশে রেমিট্যান্স আয় বাড়াতে বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে।
রোববার ‘রূপালী ব্যাংক রেমিট্যান্স সেবা কর্মসূচি’ শীর্ষক এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী ছানাউল হক ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
এ সময় কাজী ছানাউল হক দেশের স্বার্থে গ্রাহকদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি রূপালী ব্যাংকে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিত করাই এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।’
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রূপালী ব্যাংকের পুরনো রেমিট্যান্স গ্রাহকদের ব্যাংকে ফিরিয়ে আনা এবং নতুন গ্রাহক সৃষ্টি করাই এ ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য। রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে।’
ক্যাম্পেইনটি ২৮ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ২৭ জুন।
আগামী এক মাসে প্রবাসীরা রূপালী ব্যাংকে টাকা পাঠালেই পাবেন লটারি জেতার সুযোগ।
ক্যাম্পেইন চলাকালে প্রতি সপ্তাহে রূপালী ব্যাংকের রেমিট্যান্স গ্রাহকদের মধ্যে লটারি হবে। প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন বিজয়ী হবেন।
লটারির পুরস্কার হিসেবে রয়েছে পাঁচটি ১০০ সিসি মোটরসাইকেল, পাঁচটি ৪০ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি, পাঁচটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন, পাঁচটি স্মার্টফোন ও পাঁচটি ডিনার সেটসহ ২৫টি পুরস্কার।
এই উদ্যোগের ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হবে, যা ডলার সংকটের মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে আনবে।
ক্যাম্পেইন চলাকালে রূপালী ব্যাংকের সব শাখা ও উপশাখার মাধ্যমে বিতরণ করা ক্যাশ রেমিট্যান্সের বেনিফিসিয়ারীরা ও যে সব গ্রাহক বিদেশ থেকে রূপালী ব্যাংকের চুক্তিবদ্ধ এক্সচেঞ্জ হাউস/ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠাবেন, তারা পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য লটারিতে অংশগ্রহণের জন্য বিবেচিত হবেন।
প্রতি সপ্তাহ শেষে পরবর্তী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লটারির ড্র হবে।
লটারি বিজয়ীদের নাম রূপালী ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে প্রচার করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ডিএমডি তাহমিনা আখতার ও হাসান তানভীর, মহাব্যবস্থাপক মো. হারুনুর রশিদ, মো. ফয়েজ আলম, মোহাম্মদ শাহেদুর রহমান ও মো. ইসমাইল হোসেন শেখ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য