দেশের পোল্ট্রি খাতে হরিলুটের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটির দাবি, এই খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো গত ৫২ দিনে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশে প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ৩ হাজার ৫০০ টন। প্রান্তিক খামারিদের ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ এখন কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর করপোরেট প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। তবে পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকা পর্যন্ত এসব মুরগি বিক্রি হয়েছে। তাতে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কেজিপ্রতি অন্তত ৬০ টাকা বেশি মুনাফা করেছে।’
বিপিএর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘করপোরেট প্রতিষ্ঠানের (তাদের চুক্তিভিত্তিক ফার্মসহ) মাধ্যমে প্রতিদিন দুই হাজার টন মুরগি বাজারে আসে। সেই হিসাবে প্রতিদিন তাদের অতিরিক্ত মুনাফা হয় ১২ কোটি টাকা। এভাবে গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৫২ দিনে ৬২৪ কোটি টাকা মুরগি বিক্রির মাধ্যমে লাভ করেছে কোম্পানিগুলো। আর এক দিনের মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে তাদের মুনাফা ৩১২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।’
সংগঠনটির দাবি, ‘দেশে প্রতিদিন মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ২০ লাখ। এসব বাচ্চা কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে। একেকটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতিটি এখন ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় দেয়ার কথা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। প্রতিটি বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে কোম্পানিগুলো।’
বিপিএ বলেছে, ‘ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক দামের কারণ প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতি পোষাতে না পেরে খামার বন্ধ করে উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়েছেন। এ সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পোলট্রির ফিড বা খাবার ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রান্তিক খামারি উৎপাদনে গেলে তখন বাজারে দাম কমিয়ে দিয়ে ক্ষতিতে ফেলছে।’
সংগঠনটি আরও বলেছে, ‘পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চা শতভাগ উৎপাদন করে করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তারাই আবার আংশিক ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে। চুক্তিভিত্তিক খামারও রয়েছে তাদের। এতে করে বাজার তাদের দখলে চলে যাচ্ছে। এটা বন্ধ করা না গেলে এই খাতের অস্থিরতা কমানো সম্ভব নয়।’
সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বের সব দেশ ঘুরে গিনেস গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডর্সে নাম ওঠা লেক্সি আলফোর্ড বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে নানা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী এই তরুণী তার ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি শেয়ার করেছেন সেসব অভিজ্ঞতা। কেমন ছিল ভ্রমণ, কোথায় খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে; এতে জানিয়েছেন সে কথা।
ডেইলি মেইল বলছে, লেক্সি মন্দ অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি তালিকা করেছেন ১০টি দেশের। এতে বাংলাদেশের নাম আছে ৯ নম্বরে।
বাংলাদেশসহ ওই ১০টি দেশে তিনি নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এসব দেশ নারীদের ভ্রমণের জনটা কতাটা নিরাপদ, কথা বলেছেন সে প্রসঙ্গেও। তিনি বলেন, মৃত্যুর ইচ্ছা না থাকলে এসব দেশ ভ্রমণ করা উচিত নয়।
লেক্সির মতে তালিকায় এক নম্বরে থাকা আফগানিস্তান একটি সুন্দর দেশ। আফগানিস্তানের ঐতিহ্য, খাবার কিংবা ইতিহাস সবই তাকে মুগ্ধ করেছে। তবে তালেবান ক্ষমতায় বসার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এ দেশ।
লেক্সির করা তালিকায় বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। অনভিজ্ঞদের এ দেশে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত এখানে ছোটখাটো অপরাধ, পকেটমার এবং ডাকাতির মতো হিংসাত্মক অপরাধের হার খুবই বেশি।
লেক্সি বলেছেন, এসব অপরাধ প্রায় প্রতিটি দেশেই ঘটে, তবে মনে রাখবেন, যেহেতু এখানে খুব কম পর্যটক, সেজন্য আপনি যখনই রাস্তায় থাকবেন তখন আপনিই হবেন অপরাধীদের টার্গেট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নারীদের ভ্রমণের জন্য একটি অস্বস্তিকর এবং কঠিন জায়গা। গড়ের তুলনায় এখানে যৌন হয়রানির প্রবণতা বেশি।
এতকিছু সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য একটি অনন্য সাধারণ জায়গা বলে মনে করেন এই পর্যটক। বিশেষ করে সুন্দরবনসহ বেশকিছু জায়গা ঘোরার জন্য অসাধারণ।
লেক্সির তালিকায় ১০ নম্বরে আছে উত্তর কোরিয়ার নাম।
দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’ এখন রাজধানীর মহাখালীতে।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে স্বপ্নর নতুন এ আউটলেট উদ্বোধন করা হয়।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অব রিটেইল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সাইফুল আলম রাসেল, স্বপ্নর রিজিওনাল হেড অব অপারেশন্স আশরাফুল ইসলাম, রিজিওনাল ম্যানেজার অপারেশন্স নাসিরুল কবির, হোটেল জাকারিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া ও পরিচালক মো. আলী হোসেন মিয়াসহ অনেকে।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘স্বপ্ন এখন দেশের ৫৬টি জেলায়। মহাখালীর নতুন এই আউটলেটে আমাদের সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। আশা করছি স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পরিবেশে গ্রাহকরা নতুন এই আউটলেটে নিয়মিত বাজার করবেন।’
স্বপ্নর অপারেশনস ডিরেক্টর আবু নাছের জানান, উদ্বোধন উপলক্ষে স্বপ্নর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মাসব্যাপী আকর্ষণীয় সব অফার। বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি ছাড়াও থাকছে নগদ মূল্যছাড়।
নতুন আউটলেটের ঠিকানা: হোল্ডিং নম্বর ৩৫, বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়ক (হোটেল জাকারিয়ার নিচে), মহাখালী, ঢাকা।
মহাখালীর আউটলেটের হোম ডেলিভারির জন্য যোগাযোগের নম্বর: ০১৪০১-১৮৮১২১।
আরও পড়ুন:বৈশ্বিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপে জোর দিয়ে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সংঘর্ষ বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ বয়ে আনবে।
সিঙ্গাপুরে এশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা সম্মেলন সাংগ্রি-লা সংলাপে অংশ নিয়ে রোববার এ কথা বলেন তিনি।
লি শাংফুর ভাষ্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিকাশের জন্য পৃথিবী যথেষ্ট বড় জায়গা।
তিনি বলেন, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিভিন্নভাবে (দেশ দুটি) আলাদা, কিন্তু এ কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানো এবং সহযোগিতা গভীর করার ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষেত্র ও সাধারণ আগ্রহ সৃষ্টিতে দুই পক্ষ বিরত থাকতে পারে না।
‘এটি অনস্বীকার্য যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মারাত্মক কোনো সংঘর্ষ বা বিরোধ হবে বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ।’
গণতান্ত্রিক শাসনে থাকা তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর এবং সেমিকন্ডাকটর চিপ রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয় নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয় চীনের। সর্বশেষ শনিবার সংবেদনশীন তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নৌযান, যাকে ‘ইচ্ছাকৃত উসকানির ঝুঁকি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন।
আরও পড়ুন:ভারতের ইতিহাসে বিরতম ট্রেন দুর্ঘটনা। এটিকে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিয়তির পরিহাস কাকে বলে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বাবা-মা কোনোক্রমে রক্ষা পেলেও শেষ হয়ে গিয়েছে তাদের সন্তানরা। নিজে বেঁচে গেলেও এখন সেসব বাবা-মায়ের সব হারানোর বুক ফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাস্থল ও আশেপাশের হাসপাতালগুলো।
৪০ বছর বয়সী লালজি সাগাই। বর্তমানে তার বড় ছেলের ঠাঁই হয়েছে সরো হাসপাতালের মর্গে। আর ছেলের মরদেহ পেতে হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন মা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন বিহারের মধুবনীর বাসিন্দা লালজি সাগাই। উন্নত জীবনের আশা নিয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা।
পেশায় নিরাপত্তাকর্মী লালজি ভেবেছিলেন তার মতোই কাজ করবে দুই সন্তান। কিন্তু নিয়তির লিখন ছিল ভিন্ন।
চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কোচের যাত্রী ছিলেন মা ও দুই ছেলে। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় লালজির ছোট ছেলে ইন্দর বেঁচে গেলেও বড় ছেলে সুন্দরের মৃত্যু হয়।
বালেশ্বরের সরোতে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিজের ছেলের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে লালজি সাগাই বলেন, ‘আমরা ৯ জনের একটি দল চেন্নাই যাচ্ছিলাম। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করি আমি। যেহেতু আমাদের গ্রামে কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, তাই আমি পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয় নিশ্চিত করতে দুই ছেলেকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু নিয়তি আমাদের জন্য এমন কিছু পরিকল্পনা করেছিল, যা আমি দুঃস্বপ্নেও অনুমান করতে পারিনি।’
সাগাই যখন কথা বলছিলেন, কষ্টে তার গলা বুজে আসছিল। বুকফাঁটা কান্না আটকে মধ্যবয়সী মা বলতে থাকেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার বড় ছেলে মারা গিয়েছে। নিজের হাতে ছেলের লাশ সরিয়েছি।’
খরচ যাই হোক, ছেলের মরদেহ নিয়ে গ্রামে ফিরতে চান তিনি।
আরও পড়ুন:ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে আহত ও নিহতের সংখ্যা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটে হাওড়াগামী ব্যাঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই ট্রেনে ছিলেন বাংলাদেশের কয়েকজন যাত্রীও। দুর্ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ না পাওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী। তবে দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের কারো নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র জানিয়েছে। তবে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনগুলোতে ঠিক কয়জন বাংলাদেশি যাত্রী ছিলেন ও তাদের মধ্যে কয়জন আহত হয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, স্থানীয় সাংবাদিকরা হাইকমিশনকে জানিয়েছে যে দুয়েকজন বাংলাদেশি সামান্য আহত হয়েছেন। তারা ওড়িশার সরো সরকারি হাসপাতাল ও বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে দুর্ঘটনার পর থেকে কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর মধ্যে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে তিন জনের একটি দল দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) মারেফত তারিকুল ইসলাম।
কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আহতদের একাংশ কলকাতায় ফিরতে শুরু করেছেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে রাজশাহীর বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সী মো. রাসেলুজ্জামানকে সরো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে নিয়ে স্থানান্তর করা হয়।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সাজ্জাদ আলীও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সে সঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না একাধিক বাংলাদেশিকে। নিখোঁজদের মধ্যে পাবনার বাসিন্দা আসলাম শেখ, খুলনার বাসিন্দা রুপা বেগম খান এবং ঢাকার বাসিন্দা খালেদ বিন আওকাত ও ৩৫ বছর বয়সী মোক্তার হোসেন রয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর একটি হটলাইন নম্বর (৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩) চালু করে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশ থেকে অনেকেই ওই নম্বরে ফোন করে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিচ্ছেন।
উপ-হাইকমিশন তাদের তালিকা তৈরি করছে। হাইকমিশনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালিকা ধরে তাদের খোঁজ নেবে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দমাতে পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর কাছে আরও অস্ত্র চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সে সঙ্গে ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে ফের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মলদোভায় ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিটির সভায় ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানান জেলেনস্কি।
পরে নরওয়ের অসলোতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রস্তাব উঠলে এর পক্ষে ও বিপক্ষে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর নেতারা।
মলদোভার সভায় জেলেনস্কি বলেন, ‘শুধু ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সব দেশগুলোকেই এ দুই জোটে (ন্যাটো ও ইইউ) অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
কারণ হিসেবে, যেসব দেশ কোনো নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে নেই, রাশিয়া তাদের গিলে খেতে চায় বলে মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এ সময় ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছ থেকে আরও সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো (সহযোগিতা) শুধু মানুষের জীবন রক্ষাই করছে না, আক্ষরিক অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজেও সহায়তা করছে।’
রাশিয়াকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই একসময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ মলদোভায় পশ্চিমা দেশগুলো এ সম্মেলন করেছে বলে আল জাজিরার খবরে বলা হয়।
সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক উপস্থিত ছিলেন।
তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি লিথুনিয়ার ভিলনিয়াসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়ে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ সময় ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলেনবার্গ বলেন, ‘ন্যাটোর পরিসর বাড়াতে মস্কোর যে কোনো মাথাব্যাথা নেই, এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত।’
২০০৮ সালে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত জোটের নেতাদের এমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি যা এ সামরিক জোটে কিয়েভের অন্তর্ভুক্তির গতিকে ত্বরান্বিত করে।
ন্যাটো সদস্যভুক্ত মিত্রদের সঙ্গে জোটে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেছে ইউক্রেন। কিন্তু, এ মুহূর্তে দেশটিকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো মোড়ল দেশগুলো।
লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, ‘১৪ বছর ধরে ন্যাটোর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছে কিয়েভ। এ সময়ে তারা দুবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।
‘ইউক্রেনকে আসলেই ন্যাটোর সদস্যপদ দেয়া যাবে কি না এবং তা করা গেলে ঠিক কিভাবে ও কত সময়ের মধ্যে দেয়া যায়, এ বিষয়ে আমাদের একটি ফলপ্রসু আলোচনা করার সময় এসেছে।’
এ সময় ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দিতে তাড়াহুড়া করা হয়ে যাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বায়েরবক বলেন, ‘ন্যাটোর উন্মুক্ত দ্বার নীতি সবসময়ই রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধরত কোনো দেশকে এখন জোটে অন্তর্ভুক্ত করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না।’
তবে হাঙ্গেরি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি (ন্যাটোতে) নিয়ে আসন্ন সম্মেলনে কোনো আলোচনা হবে না।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিদ্যমান উত্তেজনা নিরসনের অংশ হিসেবে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-সানির সঙ্গে চলতি মাসে গোপন বৈঠক করেছেন আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন দল তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হয়বতুল্লাহ আখুনজাদা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকটি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা কাটানোর উপায় নিয়ে আলোচনার বিষয়ে তালেবান নেতৃত্বের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, গত ১২ মে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার শহরে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তালেবানপ্রধান। এর মধ্য দিয়ে বিদেশি কোনো নেতার সঙ্গে প্রথম জ্ঞাত কোনো বৈঠকে অংশ নিলেন আড়ালে থাকতে পছন্দ করা তালেবানপ্রধান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি রয়টার্সকে জানায়, বৈঠকে আলোচ্য বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। তালেবানপ্রধান ও কাতারের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচ্য সব বিষয়াদি সমন্বয় করছে বাইডেন প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপকে এগিয়ে নেয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি আরও জানায়, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতাকে মেয়েদের লেখাপড়া এবং নারীদের কর্মসংস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য