করোনাভাইরাসসহ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব ও অব্যবস্থাপনার কারণে পুঁজিবাজারের লেনদেন গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। এ অবস্থায় বাজারে গতি আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। পুঁজিবাজারকে নিজের গতিতে চলতে না দিয়ে কৃত্রিমভাবে ভালো রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।
পুঁজিবাজারে লেনদেন একেবারেই তলানিতে নেমে এসেছে, সূচক পড়ছেই। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে গেছে। সবার মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা বিরাজ করছে।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে মানুষ পুঁজিবাজার থেকে একেবারেই মুখ ফিরিয়ে নেবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জোর করে পুঁজিবাজার ভালো রাখার যেসব চেষ্টা করেছিল, তার সবগুলোই ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রধানসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছোট-বড় বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের শেষ নেই। তারা বলছেন, বিএসইসির কর্তাব্যক্তিরা শুধু বড় বড় কথাই বলে গেছেন, কাজের কাজ কিছুই করেননি। সে কারণেই বিনিয়োগকারীরা এখন সব হারিয়ে পথে বসেছেন।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার লেনদেন হয়েছে মাত্র ২৫৭ কোটি টাকার শেয়ার। ২০০৭ সালে দেশের পুঁজিবাজারে গড়ে ২০০ কোটি টাকা লেনদেন হতো। লেনদেনের হিসাব করলে বাজার ফিরে গেছে ১৫ বছর আগের অবস্থানে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারকে নিজের গতিতে চলতে না দিয়ে কৃত্রিমভাবে ভালো রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা করতে গিয়ে বাজারের কারসাজি চক্রকে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে। আবার কোম্পানিগুলোর সুশাসনসহ বাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে বেশি মনোযোগ দেয়া হয়েছে পতন ঠেকানোর দিকে। কিন্তু একদিকে অর্থনীতিতে করোনা ভাইরাসসহ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব, অন্যদিকে অব্যবস্থাপনার কারণে পুঁজিবাজারের লেনদেন গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। সব মিলিয়ে দেশের পুঁজিবাজারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নেই বললেই চলে।
কারসাজি ঠেকাতে পারেনি কমিশন
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সমালোচনা করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যে প্রত্যাশা নিয়ে বর্তমান কমিশন গঠন হয়েছিল, তার কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান কমিশন কোনটা মেইনটেইন করেছে? মার্কেট তো আস্থার জায়গা। একটি জায়গায় বিশ্বাস নিয়ে আসতে পেরেছে? সুশাসন নিয়ে এসেছে? আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে পেরেছে? কাউকে সাজা দিয়েছে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ই দেখা যাচ্ছে অনেক কারসাজি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে। তাদের কারসাজির কারণে সেসব শেয়ারের দাম বাড়ছে। আর অন্য শেয়ারের দাম কমছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ পুরো বাজার।’
তিনি বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান থেকে যখন একটা শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়, তখন সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার চাকরি চলে যায়। চাকরি চলে যাওয়াটা তো সমাধান না। যে শেয়ারটা ডাম্পিং হয়েছে সেটা তো ওই প্রতিষ্ঠানের ফান্ডকে ব্লক করে দিয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারী যারা এই শেয়ারটা কিনেছিলেন তারাও ব্লক হয়ে গেছেন।
‘এভাবে যদি বিভিন্ন শেয়ার ও ফান্ড ব্লক হয়ে যায়, সেটা তো আর লিকুইড হয়ে বাজারে আসে না। এতে করে একদিকে যেমন ফান্ড আসছে না, অন্যদিকে গুটিকয়েক শেয়ার নিয়েই কারসাজি চলছে। কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হচ্ছে।
‘তারপরও তেমন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। এতে ৩৫ টাকার শেয়ার হয়ে যায় ৩০০ টাকা, ৮০ টাকার শেয়ার হয়ে যাচ্ছে ১ হাজার টাকা। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে যে তারল্যটা থাকার কথা তা থাকে না। তাই বাজারে এই নেতিবাচক প্রভাব।’
কোম্পানির সুশাসন, হিসাব ব্যবস্থা ঠিক হয়নি
করপোরেট গভর্ন্যান্স বাস্তবায়নের কথা বললেও তার প্রতিফলন দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন মিনহাজ মান্নান ইমন। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘আইপিওর কোনো পরিবর্তন হয়েছে? ব্যালান্স শিটে পরিবর্তন হয়েছে? কোম্পানির মালিকদের চরিত্র সংশোধন হয়েছে? অপরাধের সাজা হয়েছে?’
সুশাসন প্রতিষ্ঠার আশা দিয়েও রাখতে পারেনি
শিবলী কমিশনের আশার বুলিতে কিছু সময়ের জন্য বাজার চাঙ্গা হলেও পরবর্তী সময়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর কারণ উল্লেখ করে মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের অধীনে যে কারণে বাজার বেড়েছিল, সেগুলো কী কী ছিল? কতগুলো আশার বেলুন তৈরি করেছিলেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করবেন।’
বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি
ডিএসই’র সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন আরও বলেন, ‘তারা কীভাবে বললেন যে ২২ হাজার কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। কোথায় সেটা? স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড পৃথিবীর কোথায় আছে? ডিভিডেন্ড পে করিনি, সেই টাকাটা নিয়ে যাবেন। সেটা কোথায় দেবেন? এভাবে চলতে থাকলে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারবিমুখ হবেন।
ব্রোকারেজ হাউস ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদিক বলেন, ‘সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দেশের পুঁজিবাজারের ওপর কোনো বিশ্বাস নেই। অনেক দিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে শেয়ারটা পড়ে আছে। মানুষ বিক্রি করতে পারছে না, কিনতেও পারছে না। যা কিছু লেনদেন হচ্ছে সেটা হচ্ছে ব্লক মার্কেটে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ আর পুঁজিবাজারের নাম নেবে না।’
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফিন্যান্সের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘মানুষজন বিপদে পড়ে গেছে। পুঁজিবাজার আছে, কিন্তু মানুষ শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না।’
সূচকের পতন ঠেকানোর চেষ্টা কাজ করেনি
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঠেকা দিয়ে সূচকের পতন ঠেকানোর প্রচেষ্টা রয়েছে বর্তমান কমিশনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘কমিশন যদি ভালো কিছু না-ও করতে পারে, তাহলে মার্কেটে ইন্টারফেয়ার করে কেন? তারা কেন ফ্লোর প্রাইস দিয়েছে? সূচক পড়ে গেলে তার জন্য কমিশন দায়ী নয়, সেটা ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের ব্যাপার। সূচকের পড়তির ব্যাপারে কমিশনের এত দুশ্চিন্তা কেন? এখন তো বাজার অচল।’
বড় সমস্যা ফ্লোর প্রাইস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শাব্বির আহমদ বলেন, ‘বড় একটি প্রভাব পড়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে। ইউরোপ থেকে আমেরিকা সব জায়গায় মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে এসেছে। মানুষ বিনিয়োগ না করে টাকা নিজের কাছে রেখে দিচ্ছে।’
আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুদ্দীন বলেন, ‘বাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এখনকার ফ্লোর প্রাইস। এমনিতে তো একটি অর্থনৈতিক সমস্যা আছেই, সেটা তো সারা বিশ্বেই আছে। অন্যান্য দেশে যেটা হয়েছে বাজার কমে গেছে। বায়ার চলে এসেছে।
‘আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সমস্যার রিফ্লেকশন বাজারে ঠিকমতো আসেনি। বাজার মনে করছে শেয়ারের দাম আরেকটু কমবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন। তারা মনে করছেন, সামনে ডলারের দাম আরও বাড়বে। পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইস থাকায় তারা বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন।’
ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পরামর্শ
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। টার্নওভার বেড়ে যাবে। অনেকে লোকসান দিয়েও শেয়ার বেচতে রাজি আছে।
‘অনেক কোম্পানির আয় খারাপ হয়েছে। সেগুলোর দর নিচে যাবে না? কিন্তু ফ্লোর প্রাইসের জন্য আটকে আছে। কেনার লোক নেই।’
যা বললেন বিএসইসি চেয়ারম্যান
বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, ‘এই সপ্তাহটা যাক, আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছি। এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিলে অনেক ফোর্সড সেল হয়ে যাবে। ফোর্সড সেলটা কোনোভাবে বন্ধ করার বুদ্ধি যদি পেতাম তাহলে ভালো হতো।
‘চিন্তাভাবনা করছি, এই সপ্তাহটা সময় দেই। আসলে আমরা তো সব দেখতে পারব না। আমরা হয়তো পিই রেশিও দেখতে পারি। ডিভিডেন্ড পে-আউট রেশিও দেখতে পারি। কিন্তু লেনদেন নিয়ন্ত্রণ কীভাবে করতে পারব? সবাই আমাদের দিকে আঙুল তোলে।’
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য