আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাকশক্তিহীন বিক্রয়কর্মীদের নিয়ে অনলাইন ভিডিও কমিউনিকেশন (ওভিসি) প্রকাশ করেছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’, যার প্রশংসা করেছেন অনেকে।
ওভিসিতে দেখা যায়, সুপারশপে গিয়ে একটি শিশু বিস্ময়ের সঙ্গে বাকশক্তিহীন বিক্রয়কর্মীদের ইশারা ভাষা ব্যবহার দেখে এবং তা শেখা শুরু করে। তা দেখে শিশুটির মা রীতিমতো অবাক হয়ে যান।
একুশে ফেব্রুয়ারির সকালে প্রচারিত ওই ভিডিওতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন মডেল ও অভিনেত্রী দিলরুবা দোয়েল, শিশু মডেল সাফা ও জান্নাতুল ফেরদৌস। ভিডিওটি নির্মাণ করে স্বপ্নের ক্রিয়েটিভ টিম।
প্রচারের পর থেকে স্বপ্নের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি নিজেদের ওয়ালে শেয়ার দেন অনেকে। চলচ্চিত্র নির্মাতা, সংগীতশিল্পীসহ একাধিক ক্রেতা স্বপ্নের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
স্বপ্নের পেজে কমেন্টে সূর্য বিশ্বাস দীপ্ত নামের এক ক্রেতা লেখেন, ‘আমি যেদিন দেখেছিলাম এমন মানুষরাও সেখানে (স্বপ্ন) সুযোগ পেয়েছে কাজের এবং আমার বিলটাও এমন কারও কাছে দেয়ার সুযোগ হয়েছিল, খুব ভালো লেগেছিল।’
‘চিরকুট’ ব্যান্ডের প্রধান ভোকালিস্ট শারমীন সুলতানা সুমি লেখেন, ‘ব্রিলিয়ান্ট’।
মিউজিক ডিরেক্টর অদিত রহমান ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘বিউটিফুল ওয়ার্ক। সাব্বির নাসির, মাহাদী ফয়সাল এবং পুরো টিমের জন্য ভালোবাসা।’
জান্নাতুল ফেরদৌস নামে স্বপ্নের আরেক ক্রেতা ভিডিওটি দেখে লিখেন, ‘অসাধারণ…প্রথমবার দেখেছিলাম ২০১৯-এ, বনানী আউটলেটে খুবই সাবলীলভাবে ক্যাশ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই খুব হাসিখুশি মনে কাজ করছিল এই বিশেষ আপু, ভাইয়ারা। তখনই ভীষণ রকম ভালো লেগেছিল স্বপ্নের এই উদ্যোগটি।
‘নিজেদের ভেতর প্রশংসাও করছিলাম এমন ব্যতিক্রম কাজের। আজ বিজ্ঞাপনে এত সুন্দরভাবে উপস্থাপন দেখে ভালো লাগাটা বেড়ে গেল।’
স্বপ্নের একাধিক আউটলেটে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ২১ জন বিভিন্ন পদে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন:আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও জ্বালানি সংকটের কারণে বাংলাদেশে শিল্প উৎপাদন চাপে পড়েছে। সেই সঙ্গে প্রভাব পড়েছে পরিষেবা খাতে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশে মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, নীতি অনিশ্চয়তার সঙ্গে বাড়তি উদ্বেগ হিসেবে যোগ হয়েছে বাংলাদেশি পণ্যের বৈদেশিক চাহিদা হ্রাস পাওয়া।
এতে প্রত্যাশিতভাবেই ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হওয়ার কথা বলছে বিশ্বব্যাংক, যা আগের বছর ৭ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। তবে আগামী অর্থবছরে আবারও জিডিপি বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়।
চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ওই তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন সময় দেশের প্রবৃদ্ধি হোঁচট খেতে পারে বলে সতর্ক করে আসছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাধার মুখে পড়তে পারে বলে জানানো হয়।
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু পরে তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছর জিডিপি কমলেও আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়ে ৬ দশমিক ২ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪ এ পৌঁছাবে।
২০২০-২১ অর্থবছরে তা ছিল ৬ দশমিক ৯। আর করোনা মহামারীর ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি কমে ৩ দশমিক ৪ গিয়ে ঠেকে।
বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’- এ বলা হয়, উচ্চ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ, রিজার্ভ সংকট, আর্থ-সামাজিক উত্তেজনাসহ বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আর্থিক খাত ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গত দুই দশক ধরে একাধিক জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয়ে এখানকার আর্থিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে গণবিরোধী ও বাস্তবায়ন অযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই বাজেট সরকারের দুর্নীতির ধারাবাহিকতার ঘোষণাপত্র। এটি স্রেফ দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত অর্থ লুটেরাদের বাজেট।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এমন বক্তব্য তুলে ধরেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একবারের জন্যও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বাজেট পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং উন্নয়ন ব্যয় ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এই অর্থের সংস্থান হবে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আয় থেকে। আর ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা আসবে ঋণ থেকে।
‘রাজস্ব আয়ের ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ পরোক্ষ কর (ভ্যাট) এবং ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর। এরই সঙ্গে সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার প্রত্যাশা করছে। এই বাজেট জনকল্যাণের নয়। এটি বাস্তবতা বিবর্জিত, প্রতারণামূলক, লোক দেখানো বাজেট।’
তিনি বলেন, ‘বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগসহ সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা অর্জনযোগ্য নয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও তা কীভাবে অর্জন হবে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বাজেটে নেই।
‘চলতি অর্থবছরেও ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সংশোধনী বাজেটে তা পরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এবারও এই প্রবৃদ্ধির টার্গেট অর্জন সম্ভব হবে না। কেননা অর্থনীতি এমনিতেই চাপে আছে।’
মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতি। গত মে মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
‘অর্থনীতিবিদরা মনে করেন বাস্তবে এই মূল্যস্ফীতি ১৮ থেকে ২০ শতাংশের উপরে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এবং খাদ্যের পাশাপাশি তেল, চাল, আদা, চিনি, ডিম, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।’
‘দেশের অর্থনীতি মহাবিপর্যয়ে’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি মহাবিপর্যয়ে রয়েছে। ডলারের সংকট প্রকট। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে প্রায় সব ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। সরকারি হিসাব মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গেছে। আইএমএফের হিসাব বলছে, প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়ায় ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।’
ফখরুল বলেন, ‘২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। পুনঃতফসিলকৃত ঋণ যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত বছরের প্রথম ৯ মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আর গত ৩ মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। দেশে এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রধান কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা।’
তিনি বলেন, ‘গত ৬ বছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চীন ও রাশিয়া থেকে নেয়া কঠিন শর্তের ঋণ শোধ করা শুরু হলে ২০২৪ সাল থেকেই বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সে সময় পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’
‘মধ্যবিত্তের ওপর জুলুম চলছে’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘করযোগ্য আয় না থাকা মানুষেরও ৪৪ ধরনের সেবা নিতে কর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটা মধ্যবিত্তের ওপর জুলুম। প্রশ্ন হলো, যার আয় কম তিনি কি ওইসব রাষ্ট্রীয় সেবা পাবেন না?
‘একদিকে ন্যূনতম আয়কর সীমা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রস্তাব করেছে, অপরদিকে আয় না থাকলেও ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা সাংঘর্ষিক, ন্যায়নীতি বর্জিত এবং আয়ের ওপর করনীতির পরিপন্থি।’
পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো আশার আলো নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেয়ার বাজারে সর্বস্বান্ত হাজার হাজার মানুষের আহাজারি সরকারের কানে পৌঁছায় না। এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শেয়ার বাজারের সংকট দূর হবে বলে কেউ বিশ্বাসও করে না। শেয়ার বাজার বিপর্যয়ের ওপরে গঠিত তদন্ত রিপোর্ট আজও প্রকাশিত হয়নি।’
‘সম্পদ লুটের পাকা বন্দোবস্ত’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে এবার সরকার স্মার্ট লুটপাটের বাজেট দিয়েছে। তারা চুরিতে স্মার্ট। ভোট চুরি, ব্যাংক চুরি, অর্থপাচার- এসব কিছুতেই। স্মার্টলি লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট, সিন্ডিকেট পরিচালনা, জনগণের সম্পদ লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে এই বাজেটে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দেশের প্রধান জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে সরকারের জাবাবদিহিতা থাকে না। দেশের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই জাতীয় সংকট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধমূলক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন জবিউল্লাহ।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় পেঁযাজ আমদানি শুরু হওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দুদিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৪০ টাকা।
সোমবার বিকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসিজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেয়াঁজবাহী ট্রাক আসা শুরু হয়। এ দিন ৫৬ ট্রাকে ১ হাজার ৬৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১৩৩ ট্রাকে ২৭৭৭ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনামসজিদ স্থল বন্দর কাস্টমের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।
আজ সকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। দুপুরে শহরের পুরাতন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে। দুদিন আগেও ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দেশি পেয়াঁজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাঁদলাই এলাকার বাসিন্দা ও পুরাতন বাজারের পেঁয়াজের ব্যবসায়ী একরামুল হক জানান, তিনি রবিবার ৮৮ টাকা কেজি দরে ১ হাজার কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন, সেই পেঁয়াজ এখন লসে বিক্রি করছেন। কেজিতে তার লস হচ্ছে প্রায় ২৮-৩০ টাকা।
মো. পলাশ নামে আরেক মসলা ব্যবসায়ী জানান, দুদিন আগে ৯০-৯৫ টাকায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। গতকাল ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়।
তারপরও বাজারে ক্রেতা নাই বললেই চলে বলে জানান তিনি।
পুরাতন বাজারের অন্যতম পেঁয়াজ আড়তের মালিক আনারুল ইসলাম জানান, তা মঙ্গলবার ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসায় পেয়াজের দাম কমেছে ৩০-৪০ টাকা। আগামীতে আরও কমবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:২ মাস ২২ দিন বন্ধ থাকার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সোমবার রাত ৮ টার দিকে ৩টি ট্রাকে ৭৫ টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
বন্ধের পর এই প্রথম বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭৫ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে রাজধানী ঢাকার আমদানিকারক জারিফ ইন্টারন্যাশনাল।
এ বছরের ১৫ মার্চ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে এতদিন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভির আহমেদ বলেন, ‘আজ ভারত থেকে ৭৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। প্রতি টন পেঁয়াজ ২০০ ডলার (২১,৫৫০ টাকা প্রায়) মূল্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতি টন পেঁয়াজ ৩২০ ডলারের ওপর ডিউটি ও ১০ শতাংশ শুল্ককর পরিশোধ করে প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি খরচ পড়ছে ৩৮.৩৬ টাকা।’
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ‘২ মাস ২২ দিন পর বেনাপোল দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত খালাস করতে পারেন, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে সোমবার থেকে পণ্যটি আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। আমদানির খবরেই পাইকারি বাজারে ৩০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী মজুতদাররা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সোমবার ৬০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রোববার আমদানির ঘোষণার আগপর্যন্ত এ বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ৯০ টাকা। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববারই কেজিতে ২০ টাকা কমে যায়। একদিন পেরোতেই তা আরও ১০ টাকা কমে গিয়েছে।
চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, ‘আমদানির অনুমতির খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই পাইকারি ক্রেতারা পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করে দেন। বিপাকে পড়ে পাইকাররা রোববার ২০ টাকা ও সোমবার আরও ১০ টাকা দাম কমায়।
‘এখন ৬০ টাকা দরে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও ক্রেতা নেই।’
সবাই আমদানির অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন সমিতির সভাপতি।
পেঁয়াজসহ ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য আমদানিকারকদের দুষলেন এ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ, আদাসহ সব পণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য আমদানিকারকরাই দায়ী। তারা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।’
আমদানির অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইপি (অনুমতিপত্র) চট্টগ্রামে আসতে সময় লেগেছে। আমদানিকারকরা আইপি পেয়েছেন তিনটায়। আজ কিছু পেঁয়াজ ঢুকতে পারে। কাল থেকে পুরোদমে ঢুকবে।’
আমদানির পর পেঁয়াজের দাম আরও কমলে দেশের পেঁয়াজ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘যারা অতিরিক্ত পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে, তারাও বিপদে পড়বে।’
এদিকে আমদানির খবরে খুচরা বাজারেও ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
সোমবার নগরীর ২ নম্বর গেইট এলাকার কর্ণফুলী মার্কেটে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আহমদীয়া ট্রেডার্সে ৮০ টাকা, এসএস মার্টে ৮৫ টাকা, কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে ৯৫ টাকা ও কর্ণফুলী ট্রেডার্সে ৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর অক্সিজেন এলাকার আনয়ার স্টোর ও পাঁচলাইশ এলাকার উৎসব সুপারশপে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।
রমজানের পর থেকে দেশের বাজারে হুঁ হুঁ করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। কয়েক দফা বেড়ে ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হতে থাকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ। ওই সময় পাইকারি বাজারে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে।
এর মধ্যে সম্প্রতি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর প্রেক্ষিতে রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার থেকেই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার কথা জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের-শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২০২২ সালে চাহিদার চেয়ে অধিক আমদানির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হন দেশের পেঁয়াজ চাষীরা। তাই চাষীদের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত করতে এবার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে সরকার।
আরও পড়ুন:২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রিতে প্রস্তাবিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস। এছাড়া ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে স্বর্ণালঙ্কার আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ৫০ গ্রাম করাসহ ১১টি প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বাজুস কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাজুসের সহ-সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, সহ-সম্পাদক ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সমিত ঘোষ অপু, সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়ালসহ অন্যরা।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুলস-এ সংশোধনী এনেছে সরকার। সংশোধিত ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন যাত্রী ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের বার বাংলাদেশে আনতে পারবেন। আগে ২৩৪ গ্রাম ওজনের দুটি বার আনার সুযোগ ছিল।
সংশোধিত ব্যাগেজ রুলকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ জানিয়ে বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এর মাধ্যমে দেশে স্বর্ণ চোরাচালান ও মুদ্রা পাচার অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। কারণ ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিয়ে এর আগে অবাধে সোনার বার বা পিণ্ড দেশে প্রবেশ করছে। আবার চোরাচালানের মাধ্যমে তা বিদেশে পাচার হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে এই পদক্ষেপ বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানিকে উৎসাহিত করবে।
স্বর্ণের বারের মতো ব্যাগেজ রুলের আওতায় অলংকার-গহনা আনার সীমা ১০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করেছে বাজুস। স্থানীয় স্বর্ণ শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় জুয়েলারি শিল্পের দিকে ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করতে এমন পদক্ষেপ দরকার বলে মনে করছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈধভাবে স্বর্ণের চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চ মূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। বর্তমানে জুয়েলারি শিল্পের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। এটা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জুয়েলারি খাতের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা।
বলা হয়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ক কর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা দেয়া দরকার। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১টি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি করছে বাজুস।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বর্ণালঙ্কার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা; ইডিএফ মেশিন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বসিয়ে কাউকে হয়রানি না করা; অপরিশোধিত আকরিক স্বর্ণে আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা; আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী ও ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার ৫ শতাংশ করা।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- হীরা কাটিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানি করা রাফ ডায়মন্ডের নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ; স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ।
স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানি করা কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি দেয়াসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
এছাড়া অস্বাভাবিক শুল্ক হার কমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শুল্ক হার সমন্বয়সহ এসআরও সুবিধা দেয়া ও চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধার করা মোট স্বর্ণের ২৫ শতাংশ সংস্থা সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:চলতি অর্থবছরের মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে গড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ২ শতাংশে উঠেছিল। এতদিন পর্যন্ত সেটিই ছিল সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সোমবার মে মাসের ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা জানিয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মার্চ মাসে আবারও মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ হয়। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসে। তখন সার্বিক বা সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যে বলা হয়েছে, মে মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। এর আগের মাসে যা ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো ২০২২ সালের মে মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিল, এই বছরের মে মাসে তা কিনতে ১০৯ টাকা ৯৪ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। ফলে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে তাদের লেগেছিল ১০৯ টাকা ২৪ পয়সা।
মার্চে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ওই পণ্য বা সেবা পেতে ভোক্তার লেগেছিল ১০৯ টাকা ৩৩ পয়সা। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ ধরে লেগেছিল ১০৮ টাকা ৭৮ পয়সা। আর বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ হওয়ায় ওই পরিমাণ পণ্য বা সেবা পেতে ভোক্তার খরচ হয় ১০৮ টাকা ৫৭ পয়সা।
বিবিএস-এর হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি ও পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে মূল্যস্ফীতির এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। অর্থবছরের প্রথম থেকেই এ প্রবণতা চলছে, যদিও মাঝে কিছুটা নিম্নমুখিতা ছিল।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ঠিক এমন এক সময়ে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। এর পরপরই বাড়ানো হয় সব ধরনের পরিবহন ভাড়া। এই দুইয়ের প্রভাবে বেড়ে যায় প্রায় সব পণ্যের দাম। ফলে পরের মাস আগস্টে মূল্যস্ফীতি এক লাফে বেড়ে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠে যায়।
মাঝে কয়েকটা মাস বাড়ার প্রবণতায় লাগাম থাকলেও রোজাকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এতে ফের বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি।
বিবিএসের হিসাব অনুসারে, মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এপ্রিলে তা ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। মার্চেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল একই।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য